সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম এবং হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের নাম মুবারক উনার সাথে “আলাইহিস সালাম” লেখার অকাট্য দলীল

সংখ্যা: ২৫৭তম সংখ্যা | বিভাগ:

হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ও হযরত খুলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের নাম মুবারক উনার সাথে “আলাইহিস সালাম” লিখলে ওহাবী, সালাফী ও খারেজীরা বিভিন্ন চু-চেরা করে থাকে। তারা অভিযোগ করে থাকে ‘আলাইহিস সালাম’ লেখা নাকি শুধুমাত্র হযরত নবী রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের জন্য খাছ, অন্য কারো ক্ষেত্রে ‘আলাইহিস সালাম’ ব্যবহার করা যাবে না। নাউযুবিল্লাহ। এমনকি পবিত্র নাম মুবারক উনার সাথে ‘আলাইহিস সালাম’ লেখার কারনে অনেক ওহাবীরা শিয়া বলেও অপবাদ দেয়ার মত ধৃষ্টতা দেখায়। নাউযুবিল্লাহ। অথচ ‘আলাইহিস সালাম’ লেখা শিয়াদের বৈশিষ্ট নয় বরং আলাইহিস সালাম লেখা পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ এবং ইমাম ও মুহাদ্দিছ উনাদের বক্তব্য দ্বারা প্রমানিত। ‘আলাইহিস সালাম’ বাক্যটির অর্থ হলো উনার উপর সালাম অর্থাৎ খাছ শান্তি বর্ষিত হোক। উল্লেখ্য, এক মুসলমান অপর মুসলমানের সাথে সাক্ষাত হলে সালাম দেয়া ও নেয়া পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদেরই নির্দেশ মুবারক। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عن حضرت عبد الله بن عمرو رضى الله تعالى عنه ان رجلا سال رسول الله صلى الله عليه وسلم اى الاسلام خير قال تطعم الطعام وتقرء السلام على من عرفت ومن لـم تعرف

অর্থ : হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। এক ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জিজ্ঞেস করলেন, ইসলামের কোন বিষয়টি উত্তম? তিনি বললেন, (ক্ষুধার্তকে) খাদ্য খাওয়ানো এবং পরিচিত ও অপরিচিত সকল মুসলমানকে সালাম দেয়া। সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ  কিতাবুল ঈমান : হাদীছ শরীফ নম্বর ২৮)

এক মুসলমানের উপর আরেক মুসলমানের সদ্ব্যবহারের ছয়টি হক্ব রয়েছে। তারমধ্যে প্রথমটিই হচ্ছে يسلم عليه اذا لقيه অর্থাৎ যখন কারো সাথে সাক্ষাৎ হবে তাকে সালাম দিবে।” (তিরমিযী শরীফ, কিতাবুল আদব: হাদীছ শরীফ নম্বর ২৭৩৬)

মূল কথা হলো, একজন মুসলমান আরেকজন মুসলমানের সাথে সালাম বিনিময়ের যে উদ্দেশ্য; কোন মুসলমানের নামের সাথে আলাইহিস সালাম ব্যবহারের সে একই উদ্দেশ্য। এছাড়া একজনের সালাম আরেকজনের নিকট পৌঁছানোর মাসয়ালা হলো: সে বলবে যে, অমুক ব্যক্তি আপনাকে সালাম দিয়েছেন। এর উত্তরে সালামের উত্তরদাতা বলবেন- وعليك وعليه السلام অর্থাৎ: আপনার প্রতি এবং যিনি সালাম পাঠিয়েছেন উনার প্রতিও সালাম অর্থাৎ শান্তি বর্ষিত হোক।”

দেখা যাচ্ছে, সালাম প্রেরণকারী ব্যক্তির সালামের জাওয়াব দানকালে উনার ক্ষেত্রে ‘আলাইহিস সালাম’ ব্যবহৃত হচ্ছে। কাজেই, বলার সুযোগই নাই যে, ‘আলাইহিস সালাম’ বাক্যটি হযরত নবী ও রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের জন্যই খাছ, বরং অন্যান্যদের ক্ষেত্রেও ‘আলাইহিস সালাম’ ব্যবহার করা পবিত্র শরীয়ত উনার দ্বারাই প্রমাণিত।

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

قل الحمد لله وسلام على عباده الذين اصطفى

অর্থ: হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলুন, সমস্ত প্রশংসাই মহান আল্লাহ পাক উনার জন্যে এবং সালাম বা শান্তি বর্ষিত হোক উনার মনোনীত বান্দা উনাদের প্রতি।” (পবিত্র সূরা নমল শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৯)

রঈসুল মুফাসসিরীন হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত এক রেওয়ায়েতে আছে, পবিত্র আয়াত শরীফ-এ عباده الذين اصطفى ‘মনোনীত বান্দা’ বলতে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে বোঝানো হয়েছে। হযরত ইমাম ছুফিয়ান ছাওরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিও এ মতই গ্রহন করেছেন। মূলত عباده الذين اصطفى এ আয়াতে কারীমা দ্বারা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারাসহ সমস্ত আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদেরকে বোঝানো হয়েছে। (তাফসীরে মাযহারী, তাফসীরে কুরতুবী, ইবনে কাছীর, তাফসীরে কবীর ইত্যাদি)

উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীর থেকে স্পষ্ট জানা গেলো হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম ও আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের শান মুবারকেও ‘আলাইহিস সালাম’ বা সালামের বিষয় বলা হয়েছে।

আমরা প্রতিদিন যে নামাজে তাশাহুদ পাঠ করি, সেখানে এই কথা বলি, السلام علينا وعلى عباد الله الصالـحين  অর্থ: মহান আল্লাহ পাক উনার প্রদত্ব সালাম, রহমত, বরকত আমাদের উপর অর্থাৎ সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের উপর এবং মহান আল্লাহ পাক উনার যারা ছালিহীন বা নেককার বান্দা উনাদেরও উপর।” ‘আলাইহিস সালাম’ ব্যবহার যদি শুধু হযরত নবী রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের জন্য খাছ হতো তবে তাশাহহুদে এই দোয়া থাকলো কেন? এখান থেকেও প্রমান হলো ‘আলাইহিস সালাম’ নেককার বান্দাদের বেলায় ব্যবহার করা যায়।  সুবহানাল্লাহ।

পবিত্র সূরা নমল শরীফ উনার উক্ত আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় বিখ্যাত মুফাস্সির হযরত ইসমাঈল হাক্কী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-

والارجح فى مثل حضرت لقمان عليه السلام و حضرت مريم عليها السلام و حضرت الـخضر عليه السلام و حضرت الاسكندر عليه السلام الـمختلف فى نبوته ان يقال رضى الله عنه او عنها ولو قال عليه السلام او عليها السلام لا بأس به.

অর্থ: অতএব প্রণিধানযোগ্য উদাহরণ হলো: হযরত লুক্বমান আলাইহিস, হযরত মারইয়াম আলাইহাস সালাম, হযরত খিযির আলাইহিস সালাম, হযরত সেকেন্দার যুল ক্বরনাইন আলাইহিস সালাম। উনাদের নবী হওয়ার ব্যাপারে ইখতিলাফ থাকার কারণে উনাদের শানে রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু অথবা আনহা বলা হয়। আর কেউ যদি উনাদের শানে ‘আলাইহিস সালাম’ অথবা ‘আলাইহাস সালাম’ বলে, এতে কোনই অসুবিধা নেই।” (তাফসীরে রূহুল বয়ান ৭ম খ- ২২৮ পৃষ্ঠা)

মূলকথা হলো: উল্লেখিত ব্যক্তি উনারা কেউই নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম ছিলেন না। বরং উনারা প্রত্যেকেই ছিলেন বিশেষ শ্রেণীর ওলীআল্লাহ। এখন উনাদের শানে যদি ‘আলাইহিস সালাম’ কিংবা ‘আলাইহাস সালাম’ ব্যবহারে কোন রকম অসুবিধা বা নিষেধ না থাকে তাহলে অন্যান্য বিশেষ শ্রেণীর পুরুষ ওলীআল্লাহ কিংবা মহিলা ওলীআল্লাহ উনাদের শানে অসুবিধা বা নিষেধ হবে কেন?

‘আলাইহিস সালাম’ ব্যবহার করা

কি নতুন কিছু ???

না, মোটেও নতুন কিছু নয়। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার কিতাবে অসংখ্য স্থানে হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের নাম মুবারকের শেষে ‘আলাইহিস সালাম’ বলা হয়েছে। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার অন্যতম কিতাব “ছহীহ বুখারী” শরীফে একাধিক স্থানে হযরত আলী আলাইহিস সালাম, হযরত ফাতিমা আলাইহাস সালাম, হযরত হুসাইন আলাইহিস সালাম এভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। ‘আলাইহিস সালাম’ ব্যবহার যদি শিয়া হয় তবে কি ওহাবীরা হযরত ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে শিয়া বলবে? নাউযুবিল্লাহ!

আদ-দারু শুয়াব, কাহেরা মিশর থেকে প্রকাশিত বুখারী শরীফ উনার ৪৯৪৭ নম্বর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ইবারতটা নিম্নে দেয়া হলো:

حَدَّثَنَا يَحْيَى حَدَّثَنَا وَكِيعٌ ، عَنِ الأَعْمَشِ عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ ، عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمنِ ، عَنْ عَلِيّ عَلَيْهِ السَّلاَمُ قَالَ : كُنَّا جُلُوسًا عِنْدَ النَّبِيّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ إِلاَّ وَقَدْ كُتِبَ مَقْعَدُه مِنَ الْجَنَّةِ وَمَقْعَدُه مِنَ النَّارِ فَقُلْنَا يَا رَسُولَ اللهِ أَفَلاَنَتَّكِلُ قَالَ : لاَ اعْمَلُوا فَكُلٌّ مُيَسَّرٌ ثُمَّ قَرَأَ

উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার সনদটা পড়ে দেখুন। “হযরত আলী আলাইহিস সালাম” লেখা আছে। এখানেই শেষ নয় এই পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার সনদে ‘আলাইহিস সালাম’ ব্যবহার নিয়ে সালাফীদের মূল ওয়েব সাইট যঃঃঢ়://িি.িধযষধষযফববঃয.পড়স/ এ একটা প্রশ্ন প্রকাশিত হয়। প্রশ্নকারী জানতে চায় উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফে ‘আলাইহিস সালাম’ আছে কিনা? জবাবে সালাফীরাও স্বীকার করতে বাধ্য হয় যে উক্ত হাদীছ শরীফে হযরত আলী আলাইহিস সালাম লেখা আছে। (তথ্যসূত্র: যঃঃঢ়://ধৎপযরাব.রং/ৎডঋফন)। বুখারী শরীফের-

 باب الـمرأة تطرح عن المصلى شيئا من الأذى

এর ৫২০ নম্বর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে হযরত ফাতিমা আলাইহাস সালাম বলা হয়েছে। পবিত্র হাদীস শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে-

 وَضَعَه بَيْنَ كَتِفَيْهِ وَثَبَتَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم سَاجِدًا فَضَحِكُوا حَتّى مَالَ بَعْضُهُمْ إِلى بَعْضٍ مِنَ الضَّحِكِ فَانْطَلَقَ مُنْطَلِقٌ إِلى فَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلاَمُ – وَهىَ جُوَيْرِيَةٌ فَأَقْبَلَتْ تَسْعى

ইবারতটা দেখুন যেখানে সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার নাম মুবারক উনার সাথে ‘আলাইহাস সালাম’ বলা হয়েছে, সেখানে আন্ডার লাইন করে দেয়া হয়েছে। দেখা গেলো ছহীহ বুখারী শরীফে আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্যতম সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার নাম মুবারকের সাথেও “আলাইহাস সালাম” লেখা আছে। শুধু তাই নয় আহলে বাইত শরীফ উনার তৃতীয় ইমাম হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারকের সাথেও “আলাইহিস সালাম” লেখা আছে। প্রমান দেখুন-

حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ الْحُسَيْنِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ ، قَالَ : حَدَّثَنِي حُسَيْنُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مُحَمَّدٍ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أُتِيَ عُبَيْدُ اللهِ بْنُ زِيَادٍ بِرَأْسِ الْحُسَيْنِ عَلَيْهِ السَّلاَمُ  فَجُعِلَ فِي طَسْتٍ فَجَعَلَ يَنْكُتُ وَقَالَ فِي حُسْنِه شَيْئًا فَقَالَ أَنَسٌ كَانَ أَشْبَهَهُمْ بِرَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم  وَكَانَ مَخْضُوبًا بِالْوَسْمَةِ

দেখুন আন্ডার লাইনকৃত অংশে হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক উনার সাথে “ আলাইহিস সালাম” লেখা রয়েছে।

মজার কথা হচ্ছে, বর্তমানে পবিত্র হাদীছ শরীফ বা বিভিন্ন কিতাবের অন্যতম ভা-ার হচ্ছে “মাকতাবায়ে শামেলা” এবং “জামিউল কালিম”। শামেলাতে দশ হাজারেরও বেশি কিতাবের সমাহার রয়েছে। আর জামিউল কালিমে রয়েছে ১৪০০ কিতাব। ইসলামী গবেষনার সাথে যারা জড়িত তারা সকলেই এই দুইটা সফ্টওয়ার কমবেশি ব্যবহার করেন। এই দুইটা সফ্টওয়ারে আন্ডারলাইনকৃত অংশ সার্চ করে দেখুন। দেখবেন হুবহু ‘আলাইহিস সালাম’ সহ এই পবিত্র হাদীছ শরীফ পেয়ে যাবেন। মাকতাবায়ে শামেলাতে বুখারী শরীফ উনার রেফারেন্সে ৯ স্থানে সম্মানিত হযরত আহলে বাইত শরীফ উনাদের নাম মুবারকের সাথে ‘আলাইহিস সালাম’ রয়েছে। সুবহানাল্লাহ। ‘জামিউল কালিম’ সফ্টওয়ারে সার্চ করে দেখুন, একই ফলাফল পাওয়া যাবে। কথা হচ্ছে মূল কিতাবে ‘আলাইহিস সালাম’ না থাকলে তারা সফ্টওয়ারে কেন ‘আলাইহিস  সালাম’ লিখলো? অর্থাৎ অবশ্যই হযরত ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের নাম মুবারকের সাথে ‘আলাইহিস সালাম’ ব্যবহার করেছেন।

অনলাইনে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার অনুসন্ধানের অন্যতম ওয়েবসাইট হচ্ছে যঃঃঢ়://ষরনৎধৎু.রংষধসবিন.হবঃ/, এই সাইটে এই লিংকে (যঃঃঢ়://নরঃ.ষু/২বঔীভণ৩) ক্লিক করুন। এবার সনদটা একটু পড়ে দেখুন। খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম উনার নাম মুবারকের সাথে ‘আলাইহিস সালাম’ লেখা। এই ওয়েবসাইট সার্চের জন্য ওহাবী সালাফী, দেওবন্দীরাও ব্যবহার করে থাকে। ‘আলাইহিস সালাম’ লেখা জায়িয না থাকলে এই ওয়েবসাইটে নাম মুবারক উনার সাথে ‘আলাইহিস সালাম’ লিখা হলো কেন?

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার অন্যতম নির্ভযোগ্য কিতাব ‘সুনানে দারু কুতনীর” ৯ জায়গায় আফদ্বালুন নাছ বা’দাল আম্বিয়া হযরত ছিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম উনার নাম মুবারকে সাথে “হযরত আবু বকর ছিদ্দীক আলাইহিস সালাম” ও ৩৪ স্থানে খলীফাতুল মুসলিমীন আমীরুল মু’মিনীন হযরত ফারুকে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নাম মুবারকের সাথে “হযরত উমর আলাইহিস সালাম” লেখা আছে। কয়েকটি ইবারত উল্লেখ করা হলো-

حدثنا أبو بكر، أحمد بن محمد بن إسماعيل الآدمي قال : نا محمد بن الحسين الحنيني، قال : نا عبد العزيز بن محمد الأزدي، قال : نا حفص بن غياث ، قال : سمعت جعفر بن محمد، يقول : ما أرجو من شفاعة علي عليه السلام شيئا، إلا وأنا أرجو من شفاعة ابى بكر عليه السلام مثله ، ولقد ولدني مرتين

উক্ত কিতাবের ফাদ্বায়িলুছ ছাহাবা অধ্যায়ে এই পবিত্র হাদীছ শরীফ রয়েছে। যেখানে হযরত ছিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম উনার নাম মুবারকের সাথে ‘আলাইহিস সালাম’ লেখা আছে। যা মাকতাবায়ে শামেলাতেও পাওয়া যাবে।

দারু কুতনী কিতাবের “ফাদ্বায়িলুছ ছাহাবা অধ্যায়ে” আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত ফারুকে আযম আলাইহিস সালাম উনার নাম মুবারকের সাথে “আলাইহিস সালাম” লেখা আছে। নিম্নে ইবারত ও সনদ দেয়া হলো:

حدثنا محمد بن منصور بن أبي الجهم ، نا السري بن عاصم ، قال : نا أبو معاوية ، عن الحجاج بن أرطأة ، عن من ، أحبوه ، عن الشعبي ، قال : قال على عليه السلام : لم أكن لأحل عقدة عقدها عمر عليه السلام

মাকতাবায়ে শামেলাতে দারু কুতনী কিতাবে হযরত ফারূকে আযম আলাইহিস সালাম উনার নাম মুবারকের সাথে “ আলাইহিস সালাম” লিখে অনুসন্ধান করলে ৩৪ স্থানে নাম মুবারকের সাথে আলাইহিস সালাম পাওয়া যায়।  যদি এই লেখা গুলো শিয়াদের হতো তবে শিয়ারা কি হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম ও হযরত ফারুকে আযম আলাইহিস সালাম উনাদের নাম মুবারকের সাথে ‘আলাইহিস সালাম’ লিখতো? শিয়ারাতো উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষ করে থাকে। নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক। নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক। নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক। হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম ও হযরত ফারুকে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাদের নাম মুবারকের সাথে আলাইহিস সালাম থাকাই প্রমাণ করে ইমাম মুজতাহিদগণ হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম ও খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের নাম মুবারকের সাথে ‘আলাইহিস সালাম’ লিখতেন ও বলতেন।

পবিত্র হাদীছ শরীফের অন্যতম সফ্টওয়ার “জামিউল কালিমে” ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কিতাবুয যুহদ এর দলীল আছে। উক্ত কিতাবে একটা অধ্যায় আছে যার নাম হচ্ছে-

زُهْدُ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ عَلَيْهِ السَّلامُ

উপরোক্ত ইবারতে আ-ারলাইনকৃত অংশে দেখা যাচ্ছে আফদ্বালুন নাছ বা’দাল আম্বিয়া হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার নাম মুবারকের সাথে আলাইহিস সালাম’ লেখা রয়েছে। অর্থাৎ বিখ্যাত মুহাদ্দিছ ও যামানার ইমাম হযরত ইমাম অহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কিতাব থেকেও ‘আলাইহিস সালাম’ লেখা প্রমাণিত হলো।

সুতরাং স্পষ্টভাবে হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম ও হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের নাম মুবারকের সাথে আলাইহিস সালাম লেখা আছে। এত স্পষ্ট দলীল থাকার পরও কি করে ওহাবী সালাফী, দেওবন্দীরা বলে ‘আলাইহিস সালাম’ এই দোয়াটি হযরত নবী রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের জন্য খাছ?  ওহাবীদের কাছে প্রশ্ন মাকতাবায়ে শামেলা ও জামিউল কালিম কি শিয়াদের বানানো? বুখারী শরীফ, সুনানে দারু কুতনী, কিতাবুয যুহুদ সহ অসংখ্য স্থানে যেখানে ‘আলাইহিস সালাম’ বলা আছে সেখানে ওহাবীদের আপত্তির কারণ কি হতে পারে? এটা নিশ্চয়ই আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম ও হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি ইয়াযীদের মত বিদ্বেষ পোষণ নামান্তর।

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মুজাদ্দিদ, যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ইমামুল আ’ইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, ক্বাইয়্যুমুয্ যামান, কুতুবুল আলম, হুজ্জাতুল ইসলাম, সুলত্বানুল আউলিয়া ওয়াল মাশায়িখ, ছাহিবু সুলত্বানিন নাছীর, মাহিউল বিদয়াহ, রসূলে নুমা, গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, ইমামুল উমাম, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আস সাফফাহ, হাবীবুল্লাহ্, আওলাদে রসূল, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি এবং উনার পূত পবিত্র মহা সম্মানিত হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা হচ্ছেন আখাচ্ছুল খাছ আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অর্ন্তভুক্ত। সূতরাং উনাদের শান মুবারকেও আলাইহিস সালাম ব্যবহার করতে হবে। সুবহানাল্লাহ!

-খাজা মুহম্মদ নূরুদ্দীন

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম