সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদুল ঈদিল আ’যম, সাইয়্যিদুল ঈদিল আকবার ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করার কারণে অর্থাৎ পবিত্র বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করায় আবু লাহাব কাট্টা কাফির হওয়া সত্ত্বে¡ও জাহান্নামে থেকে ফায়দা লাভ

সংখ্যা: ২২১তম সংখ্যা | বিভাগ:

আল্লামা হযরত ইবনে হাজার আসকালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিশ্বখ্যাত গ্রন্থ “ফতহুল বারী” কিতাবের ৯ম খ-, ১১৮ পৃষ্ঠায় এবং আল্লামা হযরত বদরুদ্দীন আইনী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার রচিত বিশ্বখ্যাত কিতাব “উমদাতুল ক্বারী”-এর ২০তম খ- ৯৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেন-

وذكر السهيلى ان العباس رضى الله تعالى عنه قال لـما مات ابو لـهب رايته فى منامى بعد حول فى شر حال فقال ما لقيت بعد كم راحة الا ان العذاب يخفف عنى فى كل يوم اثنين وذلك ان النبى صلى الله عليه وسلم ولد يوم الاثنين وكانت ثويبة بشرت ابا لـهب بـمولده فاعتقها.

অর্থ : “হযরত ইমাম সুহাইলী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উল্লেখ করেন যে, হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আবু লাহাবের মৃত্যুর এক বছর পর তাকে স্বপ্নে দেখি যে, সে অত্যন্ত (কঠিন) দুরবস্থায় রয়েছে। সে (আবু লাহাব) বললো, (হে ভাই হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু!) আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নেয়ার পর আমি কোন শান্তির মুখ দেখিনি। তবে হ্যাঁ, প্রতি সোমবার শরীফ যখন আগমন করে তখন আমার থেকে সমস্ত আযাব লাঘব করা হয়, আমি শান্তিতে থাকি। হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আবু লাহাবের এ আযাব লাঘব হয়ে শান্তিতে থাকার কারণ হচ্ছে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উনার দিন ছিল সোমবার শরীফ। সেই সোমবার শরীফ-এ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উনার সুসংবাদ নিয়ে আবু লাহাবের বাঁদী হযরত সুয়াইবা আলাইহাস সালাম তিনি আবু লাহাবকে জানালেন; তখন আবু লাহাব উক্ত বিলাদত শরীফ উনার খুশির সংবাদ শুনে খুশিতে আত্মহারা হয়ে হযরত সুয়াইবা আলাইহাস সালাম উনাকে তৎক্ষণাৎ আযাদ করে দেয়।” সুবহানাল্লাহ! (মাওয়াহিবুল লাদুননিয়াহ ১ম খ-, শরহুয যারকানী ১ম খ-, ২৬০ পৃষ্ঠা)

পবিত্র “ছহীহ বুখারী শরীফ” উনার দ্বিতীয় খণ্ডের ৭৬৪ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-

قال حضرت عروة وثويبة مولاة لابى لـهب كان ابو لـهب اعتقها فارضعت النبى صلى الله عليه وسلم فلما مات ابو لـهب اريه بعض اهله بشر حيبة قال له ماذا لقيت قال ابو لـهب لـم الق بعد كم غير انى سقيت فى هذه بعتاقتى ثويبة.

অর্থ : “হযরত উরওয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, হযরত সুয়াইবা আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন আবু লাহাবের বাঁদী। আবু লাহাব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ-এ খুশি হয়ে উনার খিদমত করার জন্য উনাকে আযাদ করে দিয়েছিল। এরপর আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে (হযরত সুয়াইবা আলাইহাস সালাম) তিনি দুধ পান করান। অতঃপর আবু লাহাব যখন মারা গেলো (তার কিছুদিন পর) তার পরিবারের একজন অর্থাৎ তার ভাই হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি স্বপ্নে দেখলেন যে, আবু লাহাব সে ভীষণ কষ্টের মধ্যে নিপতিত আছে। তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তোমার সাথে কিরূপ ব্যবহার করা হয়েছে।’ আবু লাহাব উত্তরে বললো, ‘যখন থেকে আপনাদের কাছ থেকে দূরে রয়েছি তখন থেকেই ভীষণ কষ্টে আছি। তবে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে তথা খুশিতে আত্মহারা হয়ে বাঁদী হযরত সুয়াইবা আলাইহাস সালাম উনাকে দু’আঙ্গুলের ইশারায় আযাদ করার কারণে সেই দু’আঙ্গুল হতে সুমিষ্ট ঠাণ্ডা ও সুশীতল পানি পান করতে পারছি।” (উমদাতুল ক্বারী ২০ খণ্ড, ৯৩ পৃষ্ঠা)

আল্লামা হযরত ইবনু কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিখ্যাত গ্রন্থ “আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া” গ্রন্থের ১ম খ-ের ৩৩২ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেন-

قال للعباس انه ليخفف على فى مثل يوم الاثنين قالوا لانه لـما بشرته ثويبة بميلاد ابن اخيه محمد بن عبد الله اعتقها من ساعته فجوزى بذلك لذلك.

অর্থ : “আবু লাহাব হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে বললো, ‘(হে ভাই হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু!) অবশ্যই এ কঠিন আযাব সোমবার শরীফ উনার দিন লাঘব করা হয়।’ আল্লামা হযরত সুহাইলী রহমতুল্লাহি আলাইহি ও অন্যান্যরা বলেন, হযরত সুয়াইবা আলাইহাস সালাম তিনি আবু লাহাবকে তার ভাতিজা হযরত খাজা আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার নূরী আওলাদ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ-এর সুসংবাদ দেন। তৎক্ষণাৎ সে খুশিতে উনাকে মুক্ত করে দেয়। এই কারণেই আযাব লাঘব হয়ে থাকে।” (মা ছাবাতা বিস সুন্নাহ ১ম/৮৩ পৃষ্ঠা।)

এ প্রসঙ্গে আরও উল্লেখ আছে; যা বিশ্বখ্যাত ঐতিহাসিক আল্লামা হযরত ইয়াকুব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার “তারিখে ইয়াকুবী” গ্রন্থের ১ম খ-, ৩৬২ পৃষ্ঠায় লিখেন-

قال النبى صلى الله عليه وسلم رايت ابا لهب فى النار يصيح العطش العطش فيسقى من الماء فى نقر ابهامه فقلت بم هذا فقال بعتقى ثويبة لانها ارضعتك.

অর্থ : “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, আমি আবু লাহাবকে দেখেছি জাহান্নামের আগুনে নিমজ্জিত অবস্থায় চিৎকার করে বলছে, পানি দাও! পানি দাও!! অতঃপর তার বৃদ্ধাঙ্গুলীর গিরা দিয়ে পানি পান করানো হচ্ছে। আমি তাকে বললাম, কি কারণে এ পানি পাচ্ছো? আবু লাহাব বললো, আপনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে হযরত সুয়াইবা আলাইহাস সালাম উনাকে মুক্ত করার কারণে এই ফায়দা পাচ্ছি। কেননা তিনি আপনাকে দুধ মুবারক পান করিয়েছেন।”

এ প্রসঙ্গে “মাওলাহিবুল লাদুননিয়া” কিতাবের বিখ্যাত শরাহ “শরহুয যারকানী” কিতাবের ১ম খ-ের ২৬১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-

 قال ابن الجزرى فاذا كان هذا الكافر الذى نزل القران بذمه جوزى فى النار بفرحه ليلة مولد النبى صلى الله عليه وسلم به فما حال المسلم الـموحد من امته عليه السلام يسر بـمولده ويبذل ما تصل اليه قدرته فى محبته صلى الله عليه وسلم لعمرى انما يكون جزاؤه من الله الكريم ان يدخل بفضله العميم جنات النعيم.

অর্থ : “হযরত ইবনুল জাযরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আবু লাহাবের মতো কাট্টা কাফির যার নিন্দায় পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে পবিত্র আয়াত শরীফ ও পবিত্র সূরা শরীফ পর্যন্ত নাযিল হয়েছে, তাকে যদি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উনার রাত্রিতে আনন্দিত হয়ে খুশি প্রকাশ করার কারণে জাহান্নামেও তার পুরস্কার দেয়া হয়ে থাকে তবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মতের কোন মুসলমান যদি পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে তার সাধ্যানুযায়ী টাকা-পয়সা ইত্যাদি খরচ করে তাহলে তাদের অবস্থা কিরূপ হবে? নিশ্চয়ই খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি উনার ফযল ও করমে অবশ্যই অবশ্যই তাকে নিয়ামতপূর্ণ জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।”  সুবহানাল্লাহ!  (মা ছাবাতা বিসসুন্নাহ ১ম খ-, ৮৩ পৃষ্ঠা)

-মাওলানা মুফতী মুহম্মদ আলমগীর হুসাইন

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম