সাইয়্যিদুল আওলিয়া, মাহবূবে সুবহানী, কুতুবে রব্বানী, গওছুল আ’যম, মুজাদ্দিদুয যামান, ইমামুর রাসিখীন, সুলত্বানুল আরিফীন, মুহিউদ্দীন, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি (১৩)

সংখ্যা: ২১৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

রিয়াজত-মাশাক্কাত:

পূর্ব প্রকাশিতের পর

একবার সাইয়্যিদুল আওলিয়া, মাহবূবে সুবহানী, গাউছুল আ’যম, আওলাদে রসূল, মুহিউদ্দীন হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার মুরীদদের একটি ঘটনা বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেন- “একদা আমি নির্জনে একাকী অবস্থান করছিলাম। এমন সময় হঠাৎ এক ব্যক্তি আমার কাছে এসে বললেন, আমাকেও আপনার সাথে থাকার অনুমতি দান করুন। আমি বললাম, ঠিক আছে। ওই ব্যক্তি বললেন, একটি শর্তে যে, আপনি আমার আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করবেন না। আমি বললাম, ঠিক আছে, আমি কোনমতেই আপনার আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করব না। ওই ব্যক্তি বললেন, আচ্ছা, আপনি এখানেই অবস্থান করুন আমি এখনই আসছি, আর আমার না আসা পর্যন্ত আপনি কোথাও যাবেন না। এ কথা বলে তিনি গায়েব (অদৃশ্য) হয়ে গেলেন। এক বৎসর অতিবাহিত হওয়ার পর তিনি ফিরে আসলেন। আমি তখনও সেখানে অবস্থান করছিলাম। এক মুহূর্ত আমার নিকট বসে আবার দাঁড়ালেন এবং বললেন, আমি ফিরে না আসা পর্যন্ত আপনি এই স্থান ত্যাগ করবেন না। একথা বলে আবারও তিনি অদৃশ্য হয়ে গেলেন। আমি আবারও সেখানে অবস্থান করে ইবাদত-বন্দেগী, যিকির-ফিকিরে নিমগ্ন রইলাম। তৃতীয় বছরের মাথায় তিনি যখন ফিরে এলেন তখন উনার হাতে ছিল রুটি আর দুধের পেয়ালা। তিনি বললেন, আমি আব্বাস খিজির আলাইহিস সালাম। আমার উপর নির্দেশ এসেছে আপনার সাথে বসে পানাহার করার। তারপর আমরা দুজনে একসাথে বসে পানাহার করলাম। তারপর বললেন, বাগদাদ চলুন। অনন্তর আমরা দুজনে বাগদাদ শহরে চলে এলাম।” (নাফহাতুল উনস, হযরত বড়পীর ছাহিব উনার জীবনী মুবারক-১৪)

তিনি যখন উনার এ অবস্থার কথা উপস্থিত লোকদের সামনে বর্ণনা করছিলেন তখন কেউ জিজ্ঞাসা করল- এই তিন বছর আপনি কীভাবে ক্ষুধা নিবারণ করতেন? তিনি বললেন, বনের ঘাস ও পাতা খেয়ে ক্ষুধা কমিয়ে নিতাম।

‘তবাকাতে হানাবিল’-এ উল্লেখ আছে, একবার তিনি উনার এক মুরীদকে বললেন, রিয়াজত-মাশাক্কাত তথা সাধনায় আমার মনে হঠাৎ আকাঙ্খা জাগে যে, বাজার থেকে কিছু খাদ্যবস্তু কিনে আনি; কিন্তু আমি এদিক-ওদিক ঘুরতে থাকি। আরেক দিন আমার মনে ওই একই আকাঙ্খা জাগ্রত হলে হঠাৎ আমার সামনে গাছের একটি পাতা পড়লো। তাতে লেখা ছিল যে, ‘সুদৃঢ় ধর্ম বিশ্বাসীদের কোন প্রবৃত্তি থাকে না; তা তো দুর্বল ঈমানদারদের মধ্যে সৃষ্ট হয়।’ তিনি বলেন- এই লেখা পাঠ করে আমি আমার অন্তর থেকে পানাহারের স্থূল প্রবৃত্তিকে বিদায় করে দিলাম। তিনি উনার পবিত্র যবানীতে আরও বর্ণনা করেছেন, একবার বাগদাদে দুর্ভিক্ষের কারণে লোকজন দলে দলে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে থাকে। কয়েক দিন ধরে পানাহারের সামান্যতম সামগ্রীও আসত না। কেননা অন্য লোকেরা সেই বস্তুই খেতো যা আমি খেতাম। যখন আমি ঘাস বা পাতা খাওয়ার জন্য আকাঙ্খা করতাম তখন দেখতাম অন্য ফকীররাও তারই সন্ধানে গাছতলায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমি লজ্জিত ও বেদনাহত হয়ে ওই বস্তু তাদের জন্য ছেড়ে দিতাম আর নিজে অনাহারে থাকতাম। যেন ওই বছরগুলিতে ক্ষুধা নিবৃত্তির জন্য জঙ্গলের ঘাস ও গাছগুলির পাতায়ও টান পড়েছিল।

তিনি বাগদাদ শরীফ-এর এক গম্বুজে এগারো বছর যাবৎ ইবাদত ও রিয়াজত করেছেন। এরই কারণে লোকেরা উনারই স্মরণে এই গম্বুজের নাম রেখেছেন ‘বুরজে-আজমী’ বা আজমী গম্বুজ। যা আজও এই নামে স্মরণীয় হয়ে আছে। এই ইবাদতের সময়ে তিনি একবার এই মর্মে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলেন যে, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত আমাকে গায়েবী বস্তু দিয়ে পানাহার করানো না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমি কিছুই খাব না।’ অতএব, চল্লিশ দিন পর্যন্ত গায়েব থেকে কোনো খাদ্য-পানীয় না আসায় তিনি কিছুই পানাহার করলেন না। চল্লিশ দিন পরে এক ব্যক্তি এসে রুটি ও আরো কিছু খাদ্যবস্তু দিয়ে অদৃশ্য হয়ে গেল। খাদ্যবস্তু দেখে উনার হৃদয়-মন তা খাওয়ার জন্য আকুল হয়ে উঠল; কিন্তু তিনি বললেন- ‘মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আমি প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করবো না।’ কিছুক্ষণ পরে শায়খুল উলামা ওয়াল মাশায়িখ হযরত আবু সাঈদ মুবারক মাখযুমী রহমতুল্লাহি আলাইহি এলেন এবং বললেন, ‘আবদুল কাদির! কী ব্যাপার? তিনি উত্তর দিলেন, ‘মহান আল্লাহ পাক উনার সন্নিধানপ্রাপ্তির জন্য আত্মা পাগলপারা হয়ে উঠেছে।’ একথা শুনে তিনি বললেন- ‘আপনি আমার গৃহে চলে আসতে পারেন।’ আমি স্থির সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছি যে, যতক্ষণ পর্যন্ত মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ হতে স্পষ্ট আদেশ না আসবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমার প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করব না। তিনি এই সিদ্ধান্তেই অটল ছিলেন। এমতাবস্থায় হযরত খিজির আলাইহিস সালাম আগমন করলেন এবং বললেন- ‘আসুন আমার সাথে এবং হযরত আবু সাঈদ মুবারক মাখযুমী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কাছে চলুন। তিনি রওনা হলেন। পৌঁছে দেখলেন, হযরত আবু সাঈদ মুবারক মাখযুমী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার জন্যই অপেক্ষা করছেন।’ উনাকে দেখে তিনি বললেন, ‘হে আবদুল কাদির! আমিই হযরত খিজির আলাইহিস সালাম উনাকে পাঠিয়েছিলাম। পরিণামে হযরত খিজির আলাইহিস সালাম তিনি আপনাকে এই পর্যন্ত নিয়ে এসেছেন।’ তারপর হযরত আবু সাঈদ মুবারক মাখযুমী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে নিজের গৃহে নিয়ে গেলেন এবং নিজহাতে উনাকে পানাহার করালেন। এমনকি খুব সন্তুষ্ট হলেন। তারপর খিলাফতের সনদ প্রদান করলেন।

ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর স্মরণে- একজন কুতুবুয্ যামান-এর দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান-১২৯

ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর স্মরণে- একজন কুতুবুয্ যামান-এর দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান-১৩০

ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর স্মরণে- একজন কুতুবুয্ যামান-এর দীদারে মাওলার দিকে প্রস্থান-১৩১

ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দা’ওয়াত, আফদ্বালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর স্মরণে- একজন কুতুবুয্ যামান-এর দীদারে মাওলার দিকে প্রস্থান-১৩২

ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দাওয়াত, আফদ্বালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আযম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর স্মরণে- একজন কুতুবুয্ যামান-এর দীদারে মাওলার দিকে প্রস্থান-১৩৩