সাইয়্যিদুল আওলিয়া, মাহবূবে সুবহানী, কুতুবে রব্বানী, গওছুল আ’যম, মুজাদ্দিদুয যামান, ইমামুর রাসিখীন, সুলত্বানুল আরিফীন, মুহিউদ্দীন, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি (১২)

সংখ্যা: ২১৭তম সংখ্যা | বিভাগ:

রিয়াজত-মাশাক্কাত:

ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত ত্বরীকত, সাইয়্যিদুল আওলিয়া, মাহবূবে সুবহানী, কুতুবে রব্বানী, গাউছুল আ’যম, মুজাদ্দিদে যামান, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি নিযামিয়া মাদরাসায় অধ্যয়নকালে বাগদাদ শরীফ-এর বিভিন্ন আওলিয়ায়ে কিরাম  তথা পীর মাশায়িখগণের দরবার শরীফ-এ যাতায়াত করতেন। মাদরাসায় ইলমে ফিকাহ তথা জাহিরী ইলিম হাছিলের পাশাপাশি বাতিনী ইলিম তথা ইলমে তাছাউফ হাছিলের লক্ষ্যেই ছিল সেই যাতায়াত। তিনি অতি অল্প বয়সেই এই উপলব্ধির চরম স্তরে পৌঁছেছিলেন যে, শুধু ইলমে ফিক্বাহ তথা জাহিরী ইলিম দ্বারা কখনোই মঞ্জিলে মাকসুদে পৌঁছা তথা আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুহব্বত-মা’রিফাত হাছিল করা, তায়াল্লুক-নিছবত তথা নৈকট্য যা প্রধান লক্ষ্য-উদ্দেশ্য তাতে পৌঁছা কখনোই সম্ভব নয়।

উপরোন্তু ইলমে তাছাউফ ব্যতীত ইলমে ফিক্বাহ দ্বারা অনেকাংশে গোমরাহী বা পথভ্রষ্টতাই বৃদ্ধি পাবে। পরিশেষে ঈমান হারা হয়ে কবরে যাওয়ারও সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি এটাও উপলব্ধি করেছিলেন যে, আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের আদেশ-নিষেধগুলো ভালভাবে হৃদয়াঙ্গম করা এবং তা নিখুঁতভাবে পালন করা তথা হাক্বীক্বী ঈমানদার, হাক্বীক্বী মুসলমান হওয়ার জন্য ইলমে তাছাউফ হাছিল করা আবশ্যক।

তিনি নিযামিয়া মাদরাসা হতে সববিষয়ে সর্বোচ্চ ডিগ্রি লাভের পর পরেই বাগদাদ শরীফ-এর তৎকালীন ত্বরীকতের বিশিষ্ট ইমাম, কামিল-মুকাম্মিল শায়েখ হযরত আবু সাঈদ মুবারক মাখযুমী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার হাত মুবারকে বাইয়াত হন। উনার দরবার শরীফ-এ হাজির হয়ে তিনি উনার আদেশানুসারে যিকির-ফিকির, রিয়াজত-মাশাক্কাতে আত্মনিয়োগ করেন। অতি অল্প সময়ে শায়েখ উনার খাছ ফায়েজ-তাওয়াজ্জুহ, দোয়া পেয়ে মা’রিফাত-মুহব্বতের অতি উঁচু স্তরে পৌঁছেন। তিনি স্বীয় শায়েখ হযরত আবূ সাঈদ মুবারক মাখযুমী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নির্দেশে কয়েক বৎসর উনার ছোহবতে থাকলেন। পরে উনার ইজাযত পেয়ে অন্যত্র চলে যান।

“আখবারুল আখইয়ার” কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, তিনি বাগদাদ শরীফ-এ অবস্থানকালের প্রসঙ্গে বলেছেন, আমি পঁচিশ বছর যাবৎ ইরাকের বনে-জঙ্গলে, পাহাড়ে-প্রান্তরে রিয়াজত-মাশাক্কাত তথা সাধনার মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করেছি। চল্লিশ বছর যাবৎ ইশার ওযু দিয়ে ফজরের নামায পড়েছি। আর পনেরো বছর যাবৎ ইশার পর থেকে ফজরের ওয়াক্ত পর্যন্ত প্রত্যেক দিন একবার করে কুরআন শরীফ খতম করেছি। তিন দিন থেকে শুরু করে চল্লিশ দিন পর্যন্ত না খেয়ে একাদিক্রমে রোযা রেখেছি। তিনি আরো বর্ণনা করেছেন- ‘আমি প্রথম দিকেই নিজের শরীরকে একটি দড়ি দিয়ে বেঁধে এক প্রান্তের সাথে অন্য প্রান্তের খাটের সাথে বেঁধে নিতাম যাতে ঘুম এলে টান পড়ার সাথে সাথে ঘুম ভেঙ্গে যায়। তারপর আমার মধ্যে জজবা বা অভ্যন্তরীণ প্রেরণা জাগ্রত হলে আমি জঙ্গলের দিকে বেড়িয়ে পড়তাম। দিগি¦দিক জ্ঞানশূন্য হয়ে এদিকে-ওদিকে ঘুরতে থাকতাম। কখনো কখনো চিৎকার দিয়ে উঠতাম। প্রায়শই আমি বেহুঁশ ও নির্জীব হয়ে পড়ে থাকতাম। তিনি আরো বলেন, এক রাতে আমি নামাযের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলাম। হঠাৎ আমার মনে আকাঙ্খা জাগলো যে, আমার একটু আরাম করে নামায পড়া উচিত। তা এজন্য যে, আমার শরীরের উপর আমার হক্ব রয়েছে। আমি তৎক্ষণাৎ দাঁড়িয়ে গেলাম আর যে স্থানটিতে আমার মনে এই আকাঙ্খা জেগে উঠেছিল, ওখানেই এক পায়ে দাঁড়িয়ে কুরআন শরীফ পাঠ করে খতম করলাম। যাতে আমার মনে এই আকাঙ্খা আর না জেগে উঠে।

একই প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেছেন, ক্রমশ: আমার সাধনার ধারা এর চেয়েও কঠোর করতে লাগলাম। প্রথম একটি বছর আমি বাগদাদ শরীফ থেকে পনের মাইল দূরবর্তী প্রাচীন মাদায়েন শহরের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে কাটালাম। তথায় বন্য ফল-মূল খেয়ে আমি জীবন ধারণ করেছিলাম। তখন আমি একমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার যিকির-ফিকিরের মাধ্যমেই সময় অতিবাহিত করতাম।

আমি কয়েক বছর কারখের জনশূন্য প্রান্তরে কাটিয়েছি। সেখানে আমার খাদ্য ছিলো স্বাদহীন বন্যখেজুর। আর পরিধেয় বস্ত্র বলতে কেবল একটি পশমের তৈরি জামা। আমার প্রতি সহানুভূতিশীল একটি লোক এসময় বনজঙ্গল থেকে আমার জন্য ওই খাদ্য সরবরাহ করতো। এ সময় আমি চলা ফেরা করতাম পাদুকাহীনভাবে। পাদুকা আমার ছিলোও না। খালি পায়ে কণ্টকাকীর্ণ বন্য পথে চলে আমার দু’পায়ের তলায় চালনির মতো ছিদ্র হয়ে গিয়েছিলো। বয়সে তখন আমি পূর্ণ যুবক। এটা মানুষের রঙিন আশা-আকাঙ্খা ও আবেগ-উচ্ছ্বাসের সময়। জীবনের এ যুগ সন্ধিক্ষণেই মানুষ প্রধানত: কুপ্রবৃত্তির কাছে আত্মসমর্পণ করে থাকে। কিন্তু আমি মহান আল্লাহ পাক উনার মেহেরবানীতে এরূপ যাবতীয় ভোগ-লালসার ঊর্ধ্বে ছিলাম। এমনকি কখনো আমার মনে সুস্বাদু খাবার গ্রহণ, সুন্দর পোশাক পরিধান বা উত্তম গৃহে জীবন যাপনের খেয়াল পর্যন্ত আসতো না। তাছাড়া পার্থিব যে কোনো ধরনের শান্তি, মান-মর্যাদা বা প্রভুত্ব, কর্তৃত্বের লালসা আমার অন্তরে জাগতো না। এগুলোর প্রতি আমি ছিলাম সবসময় উদাসীন। আমার প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ একমাত্র আল্লাহ উনার সাথেই নিমগ্ন থাকতো। আমার সমস্ত কামনা-বাসনা, চিন্তা-চেতনা ও কল্পনা মহাসত্তা মহান আল্লাহ পাক উনার দিকে ছাড়া অন্য কোনো দিকে ধাবিত হতো না। আর যাতে আমার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, মন-প্রাণ চিরকাল একই অবস্থায় থাকে, সেই তায়াল্লুক-নিসবতের যেন কোন বিঘœ না ঘটে সে সাধনায় নিজেকে সবসময় নিয়োজিত রাখতাম। পরবর্তী জীবনে মহান আল্লাহ পাক তিনি আমার এই সাধনা কবুল করে হৃদয়ের বাসনা পূর্ণ করেছেন।

ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর স্মরণে- একজন কুতুবুয্ যামান-এর দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান-১২৮

ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর স্মরণে- একজন কুতুবুয্ যামান-এর দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান-১২৯

ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর স্মরণে- একজন কুতুবুয্ যামান-এর দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান-১৩০

ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর স্মরণে- একজন কুতুবুয্ যামান-এর দীদারে মাওলার দিকে প্রস্থান-১৩১

ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দা’ওয়াত, আফদ্বালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর স্মরণে- একজন কুতুবুয্ যামান-এর দীদারে মাওলার দিকে প্রস্থান-১৩২