হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (২৪৩) رِضَاء (রিদ্বা) উনার মাক্বাম এবং তা হাছিলের পন্থা পদ্ধতি

সংখ্যা: ২৮৪তম সংখ্যা | বিভাগ:

রিদ্বার মাক্বামে অধিষ্টিত ব্যক্তিত্বগণের ফযীলত-মর্যাদা:

যারা রিদ্বার মাক্বাম হাছিল করেন মহান আল্লাহ পাক তিনি বিভিন্নভাবে উনাদের প্রশংসা করেছেন।

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ وَرَضُوْا عَنْهُ

অর্থ: মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদের উপর (রিদ্বার মাক্বাম প্রাপ্ত) সন্তুষ্ট। আর উনারাও মহান আল্লাহ পাক উনার উপর সন্তুষ্ট। (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা বাইয়্যিনাত শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১০০)

মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-

وَرِضْوَانٌ مِّنَ اللهِ أَكْبَرُ

অর্থ: মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি- রেযামন্দি মুবারকই সর্বাপেক্ষা বড় নিয়ামত মুবারক। (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা তওবা শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৭২)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত আছে। মহান আল্লাহ পাক তিনি মু’মিনগণকে (জান্নাতে) স্বীয় দীদার মুবারক দেয়ার উদ্দেশ্যে জাহির হবেন। তিনি উনাদের উদ্দেশ্যে ইরশাদ মুবারক করবেন- হে জান্নাতবাসীগণ! তোমরা আমার কাছে কি চাও? উনারা বলবেন, আয় বারে ইলাহী! আমরা আপনার সন্তুষ্টি ও রেযামন্দি মুবারক চাই। আপনি আমাদের উপর সবসময় রাজী-খুশি ও সন্তুষ্ট থাকুন।

উল্লেখ্য যে, জান্নাতবাসীগণ সবসময় মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দীদার মুবারক লাভ করার পরও উনার সন্তুষ্টি-রেযামন্দি মুবারক লাভ করার জন্য আবেদন জানাবেন। এর দ্বারাও বুঝা যায় যে, মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি-রেযামন্দি মুবারক জান্নাতের চরম-পরম পর্যায়ের নিয়ামত মুবারকের অন্তর্ভুক্ত।

স্মর্তব্য যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি জান্নাত-বাসীগণকে সর্বশেষ যে নিয়ামত মুবারক দান করবেন তা হবে, “মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক।” মহান আল্লাহ পাক তিনি জান্নাত ও জাহান্নামের মাঝামাঝি স্থানে একটি কালো ভেড়ার ছূরতে মৃত্যুকে মৃত্যু দান করবেন। অতঃপর জান্নাতবাসীদেরকে উদ্দেশ্য করে বলবেন, হে জান্নাতবাসীগণ! আজকে তোমাদেরকে শ্রেষ্ঠতম নিয়ামত দান করা হবে। উনারা বলবেন, হে বারে ইলাহী! আর কোন নিয়ামত মুবারক দেয়া বাকী রয়েছে। আপনি আমাদেরকে সকল নিয়ামত মুবারকই দান করেছেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করবেন, আজ তোমাদেরকে আমার সন্তুষ্টি মুবারক দান করলাম। অর্থাৎ আজ থেকে আমি তোমাদের উপর আর কখনো অসন্তুষ্ট হবো না। সুবহানাল্লাহ!

রিদ্বার মাক্বামের ফযীলত সম্পর্কে বর্ণিত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফসমূহ। একদিন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কতিপয় হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে উদ্দেশ্য  করে বললেন, আপনারা কি মু’মিন? উনারা জাওয়াবে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ!! ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমরা তো মু’মিনই। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পূনরায় জিজ্ঞাসা করলেন, আপনাদের সম্মানিত ঈমান উনার আলামত বা চিহ্ন কি?

প্রতি উত্তরে উনারা বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনার দয়া দান-ইহসানে আমরা বিপদে ছবর করি, নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করি এবং মহান আল্লাহ পাক উনার ফায়সালা বা বিধানের উপর সন্তুষ্ট থাকি। একথা শুনে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! নিঃসন্দেহে আপনারা মু’মিন।

অপর বর্ণনায় এসেছে, এই সম্প্রদায়ের লোক তথা রিদ্বার মাক্বাম হাছিলকারীগণ হাকীম বা বিজ্ঞ এবং হক্কানী-রব্বানী আলিম। পরিপূর্ণ ইলিম ও আমলের কারণে উনাদের হাল বা অবস্থা হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুবারক হাল বা অবস্থার অনুরূপ। সুবহানাল্লাহ!

বর্ণিত আছে, সেই ব্যক্তির জন্য সুসংবাদ যে ব্যক্তি দ্বীন ইসলামে দাখিল হয়েছে অতঃপর প্রয়োজন পরিমাণ রিযিকের উপর সন্তুষ্ট রয়েছে। কেননা পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত আছে-

مَنْ رَضِىَ مِنَ اللهِ تَـعَالٰى بالْقَلِيْلَةِ مِنَ الرِّزْقِ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى مِنْهُ بِالْقَلِيْلِ مِنَ الْعَمَلِ

অর্থ: যে ব্যক্তি অল্প রিযিক পেয়েই মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি সন্তুষ্ট থাকবে মহান আল্লাহ পাক তিনি তার অল্প আমলেই তার প্রতি সন্তুষ্ট হবেন। সুবহানাল্লাহ!

ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৫৬)

ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছারল ল মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৫৭)

মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৫৮)

মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (১৬৭)

মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (১৬৮)