হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (২৪৫): رِضَاء (রিদ্বা) উনার মাক্বাম এবং তা হাছিলের পন্থা পদ্ধতি

সংখ্যা: ২৮৬তম সংখ্যা | বিভাগ:

রিদ্বা উনার মাক্বামে অধিষ্টিত কতিপয় আউলিয়ায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম

হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্রতম রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের ফায়সালা মুবারকের প্রতি সদা-সর্বদা  সন্তুষ্ট থাকেন। কখনো কোন বিষয়ে তার ব্যত্যয় ঘটে না। এমনকি স্বপ্নেও যদি কোন আদেশ-নিষেধ আসে সেটাও পালনে সর্বদা পালন করে থাকেন। এ ব্যাপারে উনারা ফানা বা বিলীন। দুনিয়াবী কোন বাঁধাই উনাদের প্রতিবদ্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে না। কুতুবুল আকতাব, কাবীরুল আউলিয়া, হুজ্জাতুল আউলিয়া খাজা সাইয়্যিদুনা হযরত শায়েখ মুহম্মদ জালালুদ্দীন রহমাতুল্লাহি। তিনি একদিন উনার সম্মানিত আওলাদ (সন্তান) গণকে নিয়ে একটি মজলিসে  বসা ছিলেন। সে সময় হঠাৎ চোখ বন্ধ করে কয়েক মহূর্ত অতিবাহিত করলেন। অতঃপর চোখ খুলে বললেন, হে আমার সম্মানিত আওলাদগণ! সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মাখদূম জাহানিয়া রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার বিছাল শরীফের সময় একেবারেই নিকটবর্তী। উনার হায়াত মুবারক পূর্ণতাপ্রাপ্ত হয়েছে।

মহান আল্লাহ পাক তিনি আমার হায়াত মুবারক থেকে কিছু অংশ সাইয়্যিদুনা হযরত মাখদূম জাহানিয়া রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনাকে দান করা আদেশ মুবারক করেছেন। এ ব্যাপারে তোমাদের অভিমত কি?  সম্মানিত আওলাদগণ বললেন, আপনি নিজের হায়াত অপরকে দিয়ে আমাদের থেকে বিদায় নিবেন? আমরা কিভাবে তা সমর্থন করতে পারি?

উক্ত মজলিসে সুলত্বানুল আরিফীন হযরত খাজা আবু বকর শিবলী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উপস্থিত ছিলেন। তিনি বললেন, হযরত! বন্ধু তথা মহান আল্লাহ পাক তিনি যা আদেশ মুবারক করেন তা দ্বিধাহীন চিত্তে পালন করুন। আল-আওলাদগণের আপত্তি কর্ণপাত করবেন না। অন্যথায় মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মুবারক উনার বিঘœ ঘটতে পারে।

একথা শুনে সুলত্বানুল আউলিয়া সাইয়্যিদুনা হযরত শায়েখ জালালুদ্দীন রহমাতুল্লাহি আলাইহি খুবই আনন্দিত হলেন। অতঃপর তিনি নিজের বড় ছেলে খাজা আব্দুল কাদীর রহমাতুল্লাহি আলাইহি ব্যতীত সবাইকে বিদায় করে দিলেন। সবাই চলে গেলেন। তিনি বড় ছেলেকে বললেন, তুমি আমার দু পায়ের উপর দাঁড়িয়ে চোখ বন্ধ করো। তিনি তাই করলেন। কিছুক্ষণ পর চোখ খুলে দেখলেন, উনারা উভয়ে দিল্লী শহরে সাইয়্যিদুনা হযরত মাখদূম জাহানিয়া রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার শয্যার পার্শ্বে উপস্থিত রয়েছেন। সাথে অনেক লোক উনার শয্যার পার্শ্বে উনার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের অপেক্ষায় অপেক্ষমান। সুলত্বানুল আউলিয়া সাইয়্যিদুনা হযরত শায়েখ জালালুদ্দীন রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত মাখদূম জাহানিয়া রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার শিয়রে গিয়ে সালাম করলেন। সাইয়্যিদুনা হযরত মাখদূম জাহানিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি চোখ  মুবারক মেলে সালামের জাওয়াব দিলেন। সুলত্বানুল আউলিয়া সাইয়্যিদুনা হযরত শায়েখ জালালুদ্দীন রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার গলা  মুবারক জড়িয়ে ধরে বললেন, উঠুন। সাথে সাথে তিনি উঠে বসলেন। সুলত্বানুল আউলিয়া সাইয়্যিদুনা হযরত শায়েখ জালালুদ্দীন রহমাতুল্লাহি আলাইহি বললেন, অজু করতঃ দু রাকায়াত নামায আদায় করুন। শায়খুল মাশায়িখ সাইয়্যিদুনা হযরত মাখদুম জাহানিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অজু  করতঃ দু রাকায়াত নামায আদায় করলেন। সুলত্বানুল আউলিয়া সাইয়্যিদুনা হযরত শায়েখ জালালুদ্দীন রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনাকে বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্রতম আদেশ মুবারক অনুযায়ী আমি আমার হায়াত মুবারক হতে আপনাকে দশ  বছর হাদিয়া করলাম। সুবহানাল্লাহ! একথা বলেই তিনি চলে গেলেন। বাহিরে এসে স্বীয় পুত্রকে নিজের দু পায়ের উপর দাঁড় করিয়ে চোখ বন্ধ করতে বললেন। আর পূর্বের ন্যায় মুহুর্তের মধ্যে পানিপথে এসে পৌঁছলেন। এদিকে শায়খুল মাশায়িখ সাইয়্যিদুনা হযরত  মাখদূম জাহানিয়া রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি সম্পূর্ণরূপে সুস্থ হয়ে গেলেন। এই বিস্ময়কর ঘটনা মুহুর্তের মধ্যে চতুর্দিকে পৌঁছে গেল। এমন কি দিল্লীর স¤্রাটের কানে যেতে সময় লাগলো না।

ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার: মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৫১)

ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছারল: মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৫২)

ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার: মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৫৩)

ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৫৪)

ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৫৫)