কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মুর্তি তৈরী করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-১৪

সংখ্যা: ১৮১তম সংখ্যা | বিভাগ:

[সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীনের জন্যে এবং অসংখ্য দুরূদ ও সালাম আল্লাহ্ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি। আল্লাহ্ পাক-এর অশেষ রহ্মতে “গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ”-এর ফতওয়া বিভাগের তরফ থেকে বহুল প্রচারিত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, বাতিলের আতঙ্ক ও আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদায় বিশ্বাসী এবং হানাফী মাযহাব-এর অনুসরণে প্রকাশিত একমাত্র দলীল ভিত্তিক যামানার তাজদীদী মুখপত্র “মাসিক আল বাইয়্যিনাত” পত্রিকায় যথাক্রমে- ১. টুপির ফতওয়া (২য় সংখ্যা) ২. অঙ্গুলী চুম্বনের বিধান (৩য় সংখ্যা) ৩. নিয়ত করে মাজার শরীফ যিয়ারত করা (৪র্থ সংখ্যা) ৪. ছবি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় হারাম হওয়ার ফতওয়া (৫ম-৭ম সংখ্যা) ৫. জুমুয়ার নামায ফরযে আইন ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (৮ম-১০ম সংখ্যা) ৬. মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী সম্পর্কে ফতওয়া (১১তম সংখ্যা) ৭. কদমবুছী ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১২তম সংখ্যা) ৮. তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী ও বিদ্য়াতে সাইয়্যিয়াহ্ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩তম সংখ্যা) ৯. ফরয নামাযের পর মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪-২০তম সংখ্যা) ১০. ইন্জেকশন নেয়া রোযা ভঙ্গের কারণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২১-২২তম সংখ্যা) ১১. তারাবীহ্-এর নামাযে বা অন্যান্য সময় কুরআন শরীফ খতম করে উজরত বা পারিশ্রমিক গ্রহণ করা জায়িয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৩-২৪তম সংখ্যা) ১২. তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৫-২৯তম সংখ্যা) ১৩. দাড়ী ও গোঁফের শরয়ী আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩০-৩৪তম সংখ্যা) ১৪. প্রচলিত তাবলীগ জামায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৫-৪৬তম সংখ্যা) ১৫. আযান ও ছানী আযান মসজিদের ভিতরে দেয়ার আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৪৭-৫০তম সংখ্যা) ১৬. দোয়াল্লীন-যোয়াল্লীন-এর শরয়ী ফায়সালা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে  ফতওয়া (৫১-৫২তম সংখ্যা) ১৭. খাছ সুন্নতী টুপি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে  ফতওয়া (৫৩-৫৯তম সংখ্যা) ১৮. নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে  ফতওয়া (৬০-৮২তম সংখ্যা) ১৯. ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারকের আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ফতওয়া (৮৩-৯৬তম সংখ্যা) ২০. শরীয়তের দৃষ্টিতে আখিরী যোহ্র বা ইহ্তিয়াতুয্ যোহ্রের আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৯৭-১০০তম সংখ্যা)  ২১. জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১০১-১১১তম সংখ্যা) এবং  ২২. হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১১২-১৩১তম সংখ্যা) ২৩. খাছ সুন্নতী ক্বমীছ বা কোর্তা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪০তম সংখ্যা) ২৪. হানাফী মাযহাব মতে ফজর নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করা নাজায়িয ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩২-১৫২তম সংখ্যা) ২৫. ইসলামের দৃষ্টিতে বিশ্বকাপ ফুটবল বা খেলাধুলা’র শরয়ী আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (১৫৫তম সংখ্যা) ২৬. হানাফী মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক তথা রুমাল, পাগড়ী, কোর্তা, লুঙ্গি, চাদর ইত্যাদি পরিধান বা ব্যবহার করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৫৩-১৬০তম সংখ্যা)   ২৭.  ইসলামের  নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬১-১৭৫তম সংখ্যা) পেশ করার পর ১৬৮তম সংখ্যা থেকে-

২৮তম ফতওয়া হিসেবে

“কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরী করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করে আসতে পারায় মহান আল্লাহ পাক-এর দরবার শরীফে শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।

“কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরী করা, করানো ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” দেয়ার কারণ

সুন্নতের পথিকৃত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, দ্বীন ইসলামের নির্ভীক সৈনিক, সারা জাহান থেকে কুফরী, শিরক ও বিদ্য়াতের মূলোৎপাটনকারী, বাতিলের আতঙ্ক এবং আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদায় বিশ্বাসী একমাত্র দলীলভিত্তিক তাজদীদী মুখপত্র- “মাসিক আল বাইয়্যিনাত” পত্রিকায় এ যাবৎ যত লেখা বা ফতওয়াই প্রকাশ বা পত্রস্থ হয়েছে এবং ইনশাআল্লাহ হবে তার প্রতিটিরই উদ্দেশ্য বা মাকছূদ এক ও অভিন্ন। অর্থাৎ “মাসিক আল বাইয়্যিনাত”-এ এমন সব লেখাই পত্রস্থ হয়, যা মানুষের আক্বীদা ও আমলসমূহ পরিশুদ্ধ ও হিফাযতকরণে বিশেষ সহায়ক।

বর্তমানে ইহুদীদের এজেন্ট হিসেবে মুসলমানদের ঈমান আমলের সবচেয়ে বেশী ক্ষতি করছে যারা, তারা হলো ‘ওহাবী সম্প্রদায়’। ইহুদীদের এজেন্ট ওহাবী মতাবলম্বী উলামায়ে ‘ছূ’রা হারাম টিভি চ্যানেলে, পত্র-পত্রিকা, কিতাবাদী ও বক্তব্য বা বিবৃতির মাধ্যমে একের পর এক হারামকে হালাল, হালালকে হারাম, জায়িযকে নাজায়িয, নাজায়িযকে জায়িয বলে প্রচার করছে। (নাঊযুবিল্লাহ)

স্মরনীয় যে, ইহুদীদের এজেন্ট, ওহাবী মতাবলম্বী দাজ্জালে কায্যাব তথা উলামায়ে ‘ছূ’রা প্রচার করছে “ছবি তোলার ব্যাপারে ধর্মীয় কোন নিষেধাজ্ঞা নেই” (নাউযুবিল্লাহ)। সম্প্রতি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, “নির্বাচন কমিশনার বলেছে, ছবি তোলার বিরুদ্ধে বললে জেল-জরিমানা হবে, নির্বাচন কমিশনার ভোটার আই.ডি কার্ডের জন্য ছবিকে বাধ্যতামূলক করেছে এবং ছবির পক্ষে মসজিদে, মসজিদে প্রচারণা চালাবে বলেও মন্তব্য করেছে। আর উলামায়ে ‘ছূ’রা তার এ বক্তব্যকে সমর্থন করে বক্তব্য দিয়েছে যে, “রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে পুরুষ-মহিলা সকলের জন্যেই ছবি তোলা জায়িয।” (নাঊযুবিল্লাহ)। শুধু তাই নয়, তারা নিজেরাও অহরহ ছবি তুলে বা তোলায়।

অথচ তাদের উপরোক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, চরম বিভ্রান্তিকর ও কুফরীমূলক। তাদের এ বক্তব্যের কারণে তারা নিজেরা যেরূপ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তদ্রুপ তাদের উক্ত কুফরীমূলক বক্তব্য ও বদ্আমলের কারণে সাধারণ মুসলমানগণ ই’তিক্বাদী বা আক্বীদাগত ও আ’মালী বা আমলগত উভয় দিক থেকেই বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

কারণ, তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে যারা এ আক্বীদা পোষণ করবে যে, “রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে ছবি তোলা জায়িয” তারা ঈমানহারা হয়ে কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী হবে। কারণ শরীয়তের দৃষ্টিতে হারাম বা নাজায়িযকে হালাল বা জায়িয বলা কুফরী। কেননা কিতাবে স্পষ্টই উল্লেখ আছে যে,

استحلال المعصية كفر.

অর্থাৎ, “গুণাহের কাজ বা হারামকে হালাল মনে করা কুফরী।” (শরহে আক্বাইদে নাসাফী।)

অতএব, বলার আর অপেক্ষাই রাখেনা যে, উলামায়ে “ছূ”দের উক্ত বক্তব্য সাধারণ মুসলমানদের আক্বীদা বা ঈমানের জন্য বিশেষভাবে হুমকিস্বরূপ।

অনুরূপ “ছবি তোলার ব্যাপারে ধর্মীয় কোন নিষেধ নেই বা রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে সকলের জন্যে ছবি তোলা জায়িয” উলামায়ে “ছূ”দের এ কুফরীমূলক বক্তব্য মুসলমানদের আমলের ক্ষেত্রেও বিশেষ ক্ষতির কারণ। কেননা যারা তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে ছবি তুলবে (যদিও হারাম জেনেই তুলুক না কেন) তারা আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব কর্তৃক নিষিদ্ধকৃত কাজে তথা হারাম কাজে মশগুল হবে যা শক্ত আযাব বা কঠিন গুণাহের কারণ। কেননা হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে-

قال حدثنا الاعمش عن مسلم قال كنا مع مسروق فى دار يسار بن نمير فراى فى صفته تماثيل فقال سمعت عبد الله قال سمعت النبى صلى الله عليه وسلم يقول ان اشد الناس عذابا عند الله المصورون.

অর্থঃ হযরত আ’মাশ রহমতুল্লাহি আলাইহি মুসলিম রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি মাসরূক রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর সঙ্গে ইয়াসার ইবনে নুমাইয়-এর ঘরে ছিলাম, তিনি তাঁর ঘরের মধ্যে প্রাণীর ছবি দেখতে পেলেন, অতঃপর বললেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর নিকট শুনেছি, তিনি বলেন, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “নিশ্চয়ই মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তিকে আল্লাহ পাক কঠিন শাস্তি দেবেন, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তোলে বা আঁকে।” (বুখারী শরীফ ২য় জিঃ, পৃঃ ৮৮০)

উক্ত হাদীছ শরীফ-এর ব্যাখ্যায় “উমদাতুল ক্বারী শরহে বুখারীতে” উল্লেখ আছে,

وفى التوضيح قال اصحابنا وغيرهم صورة الحيوان حرام اشد االتحريم وهم من الكبائر.

অর্থঃ ‘তাওদ্বীহ’ নামক কিতাবে উল্লেখ আছে যে, হযরত উলামায়ে কিরামগণ প্রত্যেকেই বলেন, জীব জন্তুর ছবি বা প্রতিমূর্তি নির্মাণ করা হারাম, বরং শক্ত হারাম এবং এটা কবীরাহ গুণাহর অন্তর্ভুক্ত।

অতএব, নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, উলামায়ে “ছূ”দের উক্ত বক্তব্য ও বদ আমলের কারণে সাধারণ মুসলমানগণ ছবি তুলে প্রকাশ্য হারাম কাজে মশগুল হয়ে কঠিন আযাবের সম্মুখীন হবে যা আমলের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে ক্ষতিকর।

কাজেই, যারা এ ধরণের কুফরী আক্বীদায় বিশ্বাসী ও কুফরী বক্তব্য প্রদানকারী তারা ও হক্ব সমঝদার মুসলমানগণ ঈমান ও আমলকে যেন হিফাযত করতে পারে অর্থাৎ মূর্তি বা ছবিসহ সকল বিষয়ে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদা অনুযায়ী আক্বীদা পোষণ করতে পারে এবং কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস মোতাবেক আমল করে আল্লাহ পাক-এর রিযামন্দী হাছিল করতে পারে সে জন্যেই “কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরী করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ফতওয়াটি” পূণরায় প্রকাশ করা হলো।

পূর্ব প্রকাশিতের পর

চট্টগ্রামস্থ পটিয়া খারিজী মাদ্রাসার দেওবন্দী মৌলভীরা ভোটার আইডি কার্ডের জন্য ছবি তোলাকে জায়িয বলে সুস্পষ্ট কুফরী করেছে।

(প্রথম অংশ)

চট্টগ্রামস্থ পটিয়া খারিজী মাদ্রাসার অখ্যাত মুখপত্র “মাসিক আত তাওহীদ” আগস্ট’০৮ সংখ্যায় “ভোটার আইডি কার্ডের জন্য ছবি তোলা” সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে লিখেছে “…… ভোটার আইডি কার্ড যা ন্যাশনাল আইডি কার্ড হিসেবে পরিচিত। যা না হলে মানুষের রাষ্ট্রিয় পরিচয়ের ক্ষেত্রে অনেক জটিলতায় পড়তে হয়। তাই ফিক্বাহবিদগণ ন্যাশনাল আইডি কার্ডের জন্য ফটো তোলা জায়িয বলেছেন এবং তাতে শরীয়তের দৃষ্টিতে কোন সমস্যাও হবে না। (নাউযূবিল্লাহ)

তাদের উক্ত বক্তব্যের জবাবে প্রথমত বলতে হয় যে, পটিয়ার খারিজী মৌলভীরা উক্ত বক্তব্যের মাধ্যমে এটাই প্রমান করলো যে, তারা মূলতঃ সরকারের দালালী করে ইহুদী নাছারাদের এজেন্ডাসমূহই একের পর এক বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।

যেহেতু ইহুদী-নাছারারা মুসলমানের চরম পরম শত্রু তাই তারা সর্বদাই সচেষ্ট আছে ছলে, বলে, কৌশলে মুসলমানদের ঈমান-আমল নষ্ট করার। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কুরআন শরীফের “সূরা মায়িদা-এর ৮২নং আয়াত শরীফে ইরশাদ করেন,

لتجدن اشد الناس عداوة للذين امنوا اليهود والذين اشركوا.

অর্থঃ “তোমরা তোমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসেবে পাবে ইহুদীদেরকে। অতঃপর যারা মুশরিক তাদেরকে।”

অর্থাৎ, ইসলাম ও মুসলমানের সবচেয়ে বড় শত্রু হলো প্রথমতঃ ইহুদীরা, দ্বিতীয়তঃ মুশরিকরা, আর তৃতীয়তঃ হচ্ছে নাছারারা। এক কথায় সকল বিধর্মীরাই ইসলাম ও মুসলমানের শত্রু। তাই বর্ণিত রয়েছে-

الكفر  ملة   واحدة

অর্থঃ  “সমস্ত কাফিরেরা মিলে এক ধর্ম।” অর্থাৎ, কোন কোন বিষয়ে তাদের নিজেদের মধ্যে মতভেদ থাকলেও ইসলাম ও মুসলমানের ক্ষতিসাধনে তারা সবাই একজোট। ইহুদী-খ্রিস্টান, হিন্দু-বৌদ্ধ, মজুসী ও মুশরিক তারা সবাই মিলে সর্বদাই চেষ্টা করে থাকে কি করে মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা যায় এবং তাদের ঈমান আমল নষ্ট করে কাফিরের পরিনত করা যায়।

এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক ‘সূরা বাক্বারার’ ১০৯ নং আয়াত শরীফে ইরশাদ করেন,

ود كثير من اهل الكتاب لو يردونكم من بعد ايمانكم كفارا حسدا من عند انفسهم.

অর্থঃ “ইহুদী-নাছারা তথা আহলে কিতাবদের মধ্যে অনেকেই প্রতিহিংসাবশত চায় যে, মুসলমান হওয়ার পর তোমাদেরকে কোন রকমে কাফির বানিয়ে দিতে।”

কাজেই, বিধর্মীরা যেহেতু ইসলাম ও মুসলমানদের চরম পরম শত্রু তাই তারা হিংসার বশবর্তী হয়েই মুসলমানদের ঈমান-আমল নষ্ট করে কাফির বানানোর লক্ষ্যেই ইসলাম ও মুসলমানের নামে বা ছূরতে প্রথমতঃ বাতিল ফিরক্বাগুলো আবিষ্কার করে।

স্মর্তব্য, ইহুদী-নাছারা তথা বিধর্মীদের ষড়যন্ত্র এখানেই থেমে যায়নি। এর পর তারা সৃষ্টি করলো বাহাই ও কাদিয়ানী ফিরক্বা যার মাধ্যম দিয়ে অসংখ্য মুসলমানকে “খতমে নুবুওওয়াতের” মত একটি গুরুত্বপূর্ণ আক্বীদা থেকে সরিয়ে কাফির ও চির জাহান্নামী বানিয়ে দিয়েছে। কারণ ইসলামী শরীয়তের ফায়ছালা মোতাবেক যারাই খতমে নুবুওওয়তকে অস্বীকার করবে তারাই কাফির ও চির জাহান্নামী হবে।

উল্লেখ্য, মুসলমানদের ঈমান-আমল বিনষ্ট করে চিরজাহান্নামী করার বিধর্মীয় ষড়যন্ত্র এখনও অব্যাহত আছে। ইহুদী-নাছারা তথা বিধর্মীরা এখন কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ নিয়ে পড়া-শোনা করে, ইউরোপ আমেরিকায় অনেক ইহুদী-নাছারা রয়েছে যারা কুরআনে হাফিয ও হাফিযে হাদীছ। প্রশ্ন হচ্ছে তারা ইহুদী-নাছারা হয়ে কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ পড়ছে কেন? আর তার উপর গবেষণাই বা করছে কেন? কি তাদের উদ্দেশ্য?

মূলত এর মধ্যেও রয়েছে তাদের গভীর ষড়যন্ত্র! তারা কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ গবেষণ া করে এমন বিষয়গুলো বের করে যে বিষয়গুলো দিয়ে মুসলমানদের ঈমান-আমল নষ্ট করে কাফির ও জাহান্নামী করা যায়। একটি উদাহরণ দিলেই বিষয়টি সকলের নিকট স্পষ্ট হয়ে উঠবে। যেমন হাদীছ শরীফে রয়েছে,

الديوث لا يدخل الجنة

অর্থাৎ, দাইয়ূছ কখনো জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (নাসায়ী, মুসনাদে আহমদ)

ইহুদী-নাছারারা উক্ত হাদীছ শরীফ গবেষণা করে সিদ্ধান্ত নিল যে, যেকোন মূল্যে মুসলমানদেরকে দাইয়ূছ বানিয়ে দিতে হবে। অর্থাৎ বেপর্দা করে দিতে হবে। এলক্ষে তারা কাজ শুরু করেছে এবং অনেকটা সফলও হয়েছে। আজ সারা বিশ্বের অধিকাংশ মহিলাই চরম বেপর্দা। তারা আজ পুরুষের সাথে একই অফিসে চাকুরী করছে, লেখা-পড়া করছে, সিনেমা করছে, গান গাইছে, রাজনীতি করছে, খেলা-ধূলা করছে। অর্থাৎ নানানভাবে আজকে মহিলাদেরকে বেপর্দা করা হচ্ছ।

আর এক্ষেত্রে ইহুদী-নাছারারা রয়েছে পরোক্ষভাবে আর প্রত্যক্ষভাবে কাজ করে যাচ্ছে, মুসলিম দেশের সরকার ও উলামায়ে ‘ছূ’-এর দল। ইহুদীদের এজেন্ট মুসলিম দেশের সরকার ও  উলামায়ে “ছূ”রা ইহুদীদের পরিকল্পনা অনুযায়ী মুসলমানদের ঈমান-আমল ধ্বংস করার লক্ষে হারাম টিভি চ্যানেল, পত্র-পত্রিকা, কিতাবাদি ও বক্তব্য বা বিবৃতির মাধ্যমে একের পর এক হারামকে হালাল, হালালকে হারাম, জায়িযকে নাজায়িয, নাজায়িযকে জায়িয বলে প্রচার করছে। যেমন- তারা প্রচার করছে- ফরয নামাযের পর মুনাজাত করা বিদ্য়াত ও হারাম। নিয়ত করে রওযা শরীফ ও মাযার শরীফ যিয়ারত করা বিদ্য়াত, শবে বরাত পালন করা বিদ্য়াত, তরাবীহ নামায জরুরী কোন নামায নয়, আট রাকায়াত তারাবীহ  পড়লেই চলে ইত্যাদি ইত্যাদি। (নাউযুবিল্লাহ)

অথচ উল্লিখিত প্রতিটি বিষয়ই কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ তথা শরীয়তসম্মত এবং তন্মধ্যে কোনটা সুন্নত আবার কোনটা ফরয।

পক্ষান্তরে উলামায়ে ‘ছূ’ তথা দুনিয়াদার মাওলানারা টেলিভিশন, সিনেমা, নাটক, নোবেল, বেপর্দা হওয়া, নারী নেতৃত্ব মানা, ভোট দেয়া, রোযা অবস্থায় ইনজেকশন নেয়া, মহিলাদের জামায়াতের জন্যে মসজিদে যাওয়া, মহিলাদের বাইরে বের হওয়ার সময় হাত ও মুখ খোলা রাখা, হরতাল করা, লংমার্চ করা, গণতন্ত্র করা, ব্লাসফেমী আইন চাওয়া, মৌলবাদী দাবী করা, কুশপুত্তলিকা দাহ করা, টিভি চ্যানেলে প্রোগ্রাম বা অনুষ্ঠান করা ইত্যাদি নাজায়িয কাজগুলোকে জায়িয বলে প্রচার করছে। (নাউযুবিল্লাহ)

অর্থাৎ, তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, মুসলমানদেরকে ইসলাম থেকে সরিয়ে, ইবাদত থেকে সরিয়ে অনৈসলামিক ও হারাম কাজে মশগুল করে দিয়ে বেঈমান করে দেয়া।

ঠিক এরূপ আরেকটি সুক্ষ্ম ষড়যন্ত্র হচ্ছে ছবির বিষয়টি। কারণ তারা হাদীছ শরীফে পেয়েছে,

عن عبد الله بن مسعود رضى الله تعالى عنه قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول ان اشد الناس عذابا عند الله المصورون.

অর্থঃ “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, আমি শুনেছি আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তিকে আল্লাহ পাক কঠিন শাস্তি দিবেন, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তোলে বা আঁকে।” (বুখারী শরীফ)

عن ابى طلحة رضى الله تعالى عنه قال قال النبى صلى الله عليه وسلم لا تدخل الملئكة  بيتا فيه  كلب  ولا تصاوير.

অর্থঃ হযরত আবু তালহা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “ঐ ঘরে রহমতের ফেরেশ্তা প্রবেশ করে না, যে ঘরে প্রাণীর ছবি বা কুকুর থাকে।” (বুখারী শরীফ, কিতাবুললিবাছ, বাবুত তাছবীর, ২য় জিঃ ৮৮০ পৃষ্ঠা)

অর্থাৎ ছবির আমলটা যদি মুসলমানদের মধ্যে জারী করে দেয়া যায় তবে সহজেই তাদেরকে আল্লাহপাক-এর রহমত থেকে দূরে সরিয়ে লা‘নতগ্রস্থ করে জাহান্নামী করে দেয়া সম্ভব। তাই তারা আজ মুসলমানদের মাঝে ছবির ব্যাপক প্রচলন করার ও প্রতি ক্ষেত্রে ছবিকে বাধ্যতামূলক করার জন্য উঠে পরে লেগেছে।

তাদের দালাল ও গোলাম রাজা-বাদশা ও ধর্মব্যবসায়ী উলামায়ে ‘ছূ’দের মাধ্যমে প্রচারণা চালাচ্ছে ও ফতওয়া দেয়াচ্ছে যে, “ছবি তোলার ব্যাপারে ধর্মীয় কোন নিষেধাজ্ঞা নেই এবং পুরুষ-মহিলা সকলের জন্য ছবি তোলা জায়িয।” (নাউযুবিল্লাহ)

অতএব, বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এটা মূলতঃ ইহুদী-নাছারাদেরই একটি সুক্ষ্ম ষড়যন্ত্র। অর্থাৎ ইহুদী নাছারারা তাদের পরিকল্পনাসমুহ বাস্তবায়নের লক্ষে রাজা-বাদশা অর্থাৎ সরকার ও উলামায়ে ‘ছূ’ রা ধর্মব্যবসায়ীদেরকে ব্যবহার করছে।

কারণ হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে

قال النبى صلى الله عليه وسلم صنفان من امتى اذا صلحوا صلح الناس واذا فسدوا فسد الناس الامراء والفقهاء.

অর্থঃ “নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, আমার উম্মতের দুই প্রকার লোক তারা যদি ইছলাহপ্রাপ্ত হয় তবে সকল মানুষই ইছলাহপ্রাপ্ত হবে। আর তারা যদি বিভ্রান্ত বা গুমরাহ হয় তবে অনেকেই বিভ্রান্ত বা গোমরাহ হবে।”

হাদীছ শরীফ-এ আরো ইরশাদ হয়েছে,

عن زياد بن حدير قال قال  لى عمر بن  الخطاب  رضى الله تعالى عنه هل تعرف ما يهدم الاسلام قلت لا قال يهدمه زلة العالم وجدال المنافق بالكتاب وحكم الائمة المضلين.

অর্থঃ “হযরত যিয়াদ ইবনে হুদাইর রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ইসলামের ক্ষতি হয় কাদের মাধ্যমে আপনি কি জানেন? জবাবে আমি বললাম না। তখন তিনি বলেন, ১. আলিমদের পদস্খলন, ২. মুনাফিকদের কিতাব নিয়ে তর্ক-বিতর্ক, ৩. গুমরাহ শাসকদের গুমরাহীমূলক আদেশ নির্দেশ। এই তিন প্রকার লোক ইসলামের ক্ষতি করে থাকে।”

উল্লিখিত হাদীছ শরীফ দ্বারা এটাই বুঝা যাচ্ছে যে, দুই প্রকার লোক অর্থাৎ রাজা-বাদশা, আমীর-উমারা ও আলিম-উলামা আল্লাহ পাক না করুন এরা যদি গুমরাহ বা বিভ্রান্ত হয়ে যায় তবে এদের দ্বারাই ইসলামের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়।

মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু ইহুদীরা এটাকেই ইসলাম ও মুসলমানদের ক্ষতিসাধনে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হিসেবে গ্রহণ করে সে লক্ষ্যে কাজ শুরু করে। তারা টাকা আর ক্ষমতার লোভ দেখিয়ে মুসলিম দেশগুলোর রাজা-বাদশা বা প্রেসিডেন্ট প্রধান মন্ত্রীদেরকে তাদের অনুগত করে নেয়। অথবা সুকৌশলে বা গণতন্ত্রের মাধ্যমে তাদের পছন্দের লোককে ক্ষমতায় বসাচ্ছে। আর তাদের মাধ্যমে একটার পর একটা কুরআন সুন্নাহ বিরোধী আইন বা আমল মুসলমানদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে। পাশাপাশি সরকারের দালাল দুনিয়ালোভী, ক্ষমতালোভী উলামায়ে ‘ছূ’ বা ধর্মব্যবসায়ীদের দ্বারা উক্ত হারাম বিষয়গুলোকে হালাল বলে ফতওয়া দেয়াচ্ছে। তারই একটি হলো- ছবিযুক্ত ভোটার আইডি কার্ড।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার যখন ইহুদী-নাছারাদের প্রতারণায় পরে ছবিযুক্ত আইডি কার্ড করার ঘোষণা দিল এবং বললো যে, ছবি বিরুদ্ধে বললে জেল-জরিমানা হবে।” তখন কোন মহল থেকেই এর কোন প্রতিবাদ করা হয়নি।

প্রতিবাদ করেছেন শুধুমাত্র মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী। তার শক্ত ও তীব্র প্রতিবাদের কারণে তত্ত্বাবধায়ক সরকার তার পূর্ব অবস্থান থেকে সরে আসে এবং ছবি ছাড়াও আইডি কার্ড করা যাবে বলে ঘোষণা দেয়। কিন্তু পরক্ষণেই সরকারের দালাল উলামায়ে ‘ছূ’ বা ধর্মব্যবসায়ী মৌলভীরা সিইসির সাথে সাক্ষাত করে ঘোষণা দিল যে, “ছবি তোলার ব্যাপারে ধর্মীয় কোন নিষেধাজ্ঞা নেই।” নাউযুবিল্লাহ। রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে পুরুষ মহিলা সকলের জন্যই ছবি তোলা জায়িয।” নাউযুবিল্লাহ। শুধু তাই নয় তারা ছবির পক্ষে মসজিদে মসজিদে প্রচারণা চালাবে বলেও অঙ্গীকার করে। নাউযুবিল্লাহ।

তারই ধারাবাহিকতায় পটিয়ার খারিজী দেওবন্দী মৌলভীরা ভোটার আইডি কার্ডের পক্ষে বলে নিজেদেরকে সরকার ও ইহুদী-নাছারাদের এক নম্বর দালাল হিসেবে সাব্যস্ত করলো। অর্থাৎ তারা প্রমাণ করলো যে তারা আসলেই উলামায়ে ‘ছূ’ বা ধর্মব্যবসায়ী।

আর এদের প্রসঙ্গেই হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে,

عن انس رضى الله تعالى عنه  قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ويل لامتى من علماء السوء يتخدون هذا العلم تجارة يبيعونها من امراء زمانهم ربحا لانفسهم لا اربع الله تجارتهم.

অর্থঃ হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, আমার উম্মতের মধ্যে যারা উলামায়ে “ছূ” তাদের জন্য আফ্সুস অর্থাৎ তারা জাহান্নামী হবে। তারা ইলমকে ব্যবসা হিসেবে গ্রহণ করতঃ তাদের যুগের শাসকদের নিকট থেকে অর্থ ও পদ লাভের প্রচেষ্টা চালিয়ে থাকে। আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসকল উলামায়ে ছু’দের বিরুদ্ধে এই বলে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন যে, “আয় আল্লাহ পাক! যারা নিজেদের ইলম দ্বারা দুনিয়াবী সরকারের সাথে ব্যবসা করতে চায় তাদের ব্যবসায় বরকত দিবেন না। (কানযুল উম্মাল)

এ সকল উলামায়ে ছূ’ বা দুনিয়াদার তথা ধর্মব্যবাসায়ী মৌলবীদেরকে হাদীছ শরীফে দাজ্জালে কাযযাব বা মিথ্যাবাদী দাজ্জাল বলে এদের থেকে উম্মতদেরকে দূরে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

অতএব, বলার অপেক্ষা রাখে না যে, যারা ভোটার আইডি কার্ডের জন্য ছবি তোলাকে জায়িয বলে তারা কস্মিনকালেও হক্কানী আলিম নয়। বরং তারাই হচ্ছে হাদীছ শরীফে বর্ণিত দাজ্জালে কাযযাব তথা উলাময়ে ছূ’। এদের ওয়ায শোনা ও এদেরকে অনুসরণ করা সম্পূর্ণ হারাম। কেননা আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন,

ولاتطع من اغفلنا قلبه عن ذكرنا واتبع هواه وكان امره فرطا.

অর্থঃ তোমরা ঐ ব্যক্তিকে অনুসরণ করো না যার অন্তর আমার যিকির থেকে গাফিল। এবং যে ব্যক্তি নফসের অনুসরণ করে এবং যে ব্যক্তির কাজগুলো শরীয়তের খিলাফ। (সূরা কাহাফ-২৮) অর্থাৎ যাদের আমল শরীয়তের খিলাফ তাদেরকে অনুসরণ করা হারাম।

আর হাদীছ শরীফৈ ইরশাদ হয়েছে,

 عن ابن سيرين رحمة الله عليه  قال فانظروا عمن تاخذون  دينكم.

অর্থাৎ, হযরত ইবনে সিরীন রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা কার নিকট থেকে দ্বীন বা ইলম গ্রহণ করছো তা লক্ষ্য করো।” (মুসলিম, মিশকাত, মাছাবীহুস্ সুন্নাহ)

অর্থাৎ ভোটার আইডি কার্ডের জন্য ছবি তোলাকে যারা জায়িয বলে তাদের ফতওয়া অনুসরণ করা ও তাদের পিছনে নামায পড়া সম্পূর্ণ হারাম। কারণ শরীয়তের দৃষ্টিতে হারামকে হালাল মনে করা কুফরী।

কেননা কিতাবে স্পষ্টই উল্লেখ আছে যে,

استحلال المعصية كفر.

অর্থাৎ, “গুণাহের কাজ বা হারামকে হালাল মনে করা কুফরী।” (শরহে আক্বাইদে নাসাফী।)

তাদের উক্ত বক্তব্যের জবাবে দ্বিতীয়তঃ বলতে হয় যে, তারা লিখেছে ভোটার আইডি কার্ডের জন্য ছবি তোলা জরুরী। অর্থাৎ ভোটার হওয়া জরুরী বিষয়। নাউযুবিল্লাহ।

অথচ ইসলামের নামে ভোট-নির্বাচন করা, ভোট দেয়া, চাওয়া পদপ্রার্থী হওয়া সম্পূর্ণরূপে হারাম।

কারণ ভোট তথা নির্বাচনভিত্তিক গণতন্ত্রের উৎপত্তি হয় আখেরী রাসূল, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জমিনে আগমণের অনেক পূর্বে। যার প্রবর্তক হচ্ছে ইহুদী ও নাছারা।

নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি। কেননা নির্বাচনের মাধ্যমেই গণতন্ত্র বাস্তবায়িত হয়। আর নির্বাচনের প্রয়োজন তখনই হয় যখন কোন পদে একাধিক ব্যক্তি প্রার্থী হয়। একাধিক প্রার্থীর মধ্যে উক্ত পদ একজনকে দেয়ার লক্ষ্যেই নির্বাচনে অনুষ্ঠিত হয়। আর উক্ত নির্বাচন ভোট প্রয়োগের মাধ্যমেই বাস্তবায়িত হয়। তাই সংক্ষেপে প্রমাণসহ নির্বাচনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস নিম্নে তুলে ধরা হলো-

নির্বাচনের প্রাচীন ইতিহাস

প্রাচীন গ্রীসে খ্রীস্টপূর্ব পঞ্চম এবং ষষ্ঠ শতাব্দীতে নির্বাচন প্রথা চালু ছিল। এছাড়া রোমান সিনেটেও এ পদ্ধতি চালু ছিল। তবে Election সম্পর্কে ধর্ম, মিথলজি বিষয়ক Encyclopedia Man, Myth’s Magic   এ বলা হয়েছে- Election, the world is derived from the Greek word eloge (choice) The idea is basic to the traditional structure of Christian theology. অর্থাৎ ইলেকশন বা নির্বাচন শব্দটি উৎসরিত হয়েছে বা উৎপত্তি লাভ করেছে গ্রীক শব্দ বষড়মব হতে যার অর্থ ছিল পছন্দ। নির্বাচনের ধারণা প্রাচীন খ্রীস্টীয় ধর্মতত্ত্বের ব্যাখ্যার উপর প্রতিষ্ঠিত।

 এ ব্যাখ্যাটি এরূপ যে, তাদের  God নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তিবর্গ অথবা জাতিকে বিশেষ কোন দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে তার বিধান চালাতেন। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে, The idea that God specially choses certain individuals or nations for some peculiar role in the scheme of his providence is khown as election.

উল্লেখ্য, খ্রীস্টান ধর্মতত্ত্বে নির্বাচনের ধারণাটি অদৃষ্টবাদ থেকে এসেছে। এ সম্পর্কে বলা হয়েছেঃ ln Christian theology the idea of election became associated with predestination, খ্রীস্টানদের আরো ধারণা যে, তাদের খোদার পছন্দনীয় বা বষবপঃবফ  অবশ্যই স্বল্প হবে।

Many are called buf few are chosen (Mathew-22-14)

মূলকথা হচ্ছে, নির্বাচন খ্রীষ্টীয় ধর্মতত্ত্বের সাথে বিশেষভাবে সম্পূক্ত একটি বিষয়। এ বিষয়ে Man, Myth & Encyclopedia Magic, আরো বলা হয়েছে, However that the doctrine of election found its most notable expression in Christianity.

আধুনিক কালের ইতিহাস

তবে আধুনিক ভোটদান ব্যবস্থার সূত্রপাত ঘটে ইংল্যান্ডে ১৬৮৮ সালে। ইংল্যান্ডে ১৬৮৮ সালে বিপ্লবের পর রাজনৈতিক ক্ষমতা পার্লামেন্টের হাতে চলে যায়। পালামেন্ট ১৮৩২ সালে প্রথম সংস্কার আইনে সমস্ত মধ্যবিত্ত শ্রেণীকে ভোটাধিকার দেয়। এরপর পর্যায়ক্রমে ১৮৬৭ সালে কারখানার শ্রমিকদের ১৮৮৪ সালে কৃষি মজুরদের, ১৯১৮ সালে সীমিত সংখ্যক নারীদের এবং ১৯২৮ সালে সকল নারীদের ভোটাধিকার দেয়া হয়।

১৯১৮ সালের পূর্বে বৃটেনে বিশ্ব বিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েটরা সাধারণ কেন্দ্র ও বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্র এ দু’টি কেন্দ্রের ভোটাধিকারী ছিল। পরবর্তীতে অর্থাৎ ১৯১৮ সালে এ সকল পদ্ধতির সমাপ্তি ঘটিয়ে একুশ বছর বা তদুর্ধ বয়সের সকল সম্প্রদায়ের জন সার্বজনিন ভোটাধিকার দেয়া হয়।

অপরদিকে আমেরিকায় ১৮৭০ খৃস্টাব্দে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে বলা হয় যে, কোন ব্যক্তিকেতার জাতি, ধর্ম অথবা পূর্ব দাসত্বের জন্য ভোটদানের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। ১৯৩৩ সালে সপ্তদশ সংশোধনীতে সিনেট সদস্যদের, জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটের নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয়। ১৯২০ সালে মহিলা ভোটাধিকার স্বীকৃত হয়। ১৯৭১ সালে ভোটারদের বযস সীমা কমিয়ে ১৮ বছরে আনা হয়।

ভোটের প্রকারভেদ ও ব্যালট প্রথা

ইসলামের নামে ভোট প্রধাও সম্পূর্ণ হারাম। কারণ ভোট হচ্ছে এমন একটি সিদ্ধান্ত নেয়ার পদ্ধতি যাতে প্রত্যেক ব্যক্তি পারে তার পছন্দনীয়কে চিহ্নিত করতে বা প্রকাশ করতে এবং যে পছন্দের বেশী হয়, তাই গ্রহণযোগ্য হয়।

উল্লেখ্য, সংবিধানে ভোটদানের জন্য কিছু শর্ত-শারায়েত করা হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে দু’টি। (১) বাংলাদেশের নাগরিক হওয়া, (২) ভোটদাতার বয়স আঠারো বছরের কম নয়।

আর এক্ষেত্রে যে অযোগ্যতা, তা হলো- (১) কোন আদালত তাকে অপ্রকৃতিস্থ বলে ঘোষণা করেনি। (২) ১৯৭২ সালের বাংলাদেশে যোগসাজসকারী (বিশেষ ন্যায় পীঠ) আদেশের অধীন কোন অপরাধের জন্য দ-িত হননি।

উল্লেখ্য, ভোট হলো দু’প্রকার- (১) প্রকাশ্য ভোটদান, (২) গোপনে ভোটদান।

প্রকাশ্য ভোটদান ব্যবস্থায় ভোটদানকারীরা বিপরীত পক্ষীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তাই এটি সর্বত্রই পরিত্যক্ত হয়েছে। আর গোপনে ভোটদান ব্যবস্থায় ভোটদানকারীরা কারো দ্বারা কোন প্রকার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না, তারা তাদের ভাষায় নির্ভয়ে ও স্বাধীনভাবে সার্বভৌমত্ত্ব বজায় রেখে ভোট প্রদান করতে পারে। তাই ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোট প্রথা প্রায় সর্বত্রই চালু রয়েছে।

ব্যালট

ব্যালট হচ্ছে একটি কাগজের শীট, যার দ্বারা গোপন ভোট প্রদান করা হয়। Ballot ‘ব্যালট’ শব্দটি এসেছে ইটালী Ballotia (ব্যালোটা) হতে। যার অর্থ হচ্ছে, ছোট বল। এটি এভাবে উৎপত্তি হয়েছে যে, প্রাচীনকালে এর দ্বারা ভোট গ্রহন করা হতো এবং গ্রীসে এই পদ্ধতির প্রচলন ছিল। জনতার দরবারে অথবা আইন সভায় খ্রীস্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীতে এই পদ্ধতি চালু ছিল। সাধারণতঃ সাদা এবং কালো বল হ্যাঁ এবং না বোধক ভোটে ব্যবহৃত হতো। অপরদিকে আমেরিকায় উপনিবেশিক কালের শুরুতে সীম শস্যকণা ব্যালট হিসেবে ব্যবহৃত হতো।

উল্লেখ্য, কোন কোন সংগঠন এখনো নতুন সদস্য গ্রহণে ভোটাভুটিতে সাদা এবং কালো বলের ব্যবহার করে থাকে। বর্তমানে গণতান্ত্রিক দেশসমূহে কাগজের ব্যালট বা ব্যালট পেপার নির্বাচনে ভোটারদের ছদ্মনাম হিসেবে কাজ করে এবং এভাবেই অধিকাংশ ভোটারের ইচ্ছা প্রকাশ পায়।

গোপন ভোটদানের পদ্ধতি হিসেবে ব্যালট পেপার ব্যবহারের প্রথম প্রামাণিক ঘটনা ঘটে ১৬২৯ সালে আমেরিকার চার্চে। অতঃপর আমেরিকান ঔপনিবেশে এই ব্যালট পেপারের প্রচলন ছড়িয়ে পড়ে। এরপরে ধীরে ধীরে ব্যালট পেপারের অনেক সংস্কার হয় এবং পরবর্তীতে একই কলামে বিভিন্ন দলের প্রতীক সংযুক্ত হয়, যা সাধারণতঃ বর্ণমালা অনুযায়ী সংযুক্ত হয়।

উল্লেখ্য, ১৯৫০ সালের মধ্যে এই ব্যালট প্রথা প্রায় সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। অতএব, প্রমাণিত হলো ভোটের মাধ্যমে নেতা বা শাসক নির্বাচনের বর্তমান যে পদ্ধতি রয়েছে তা ইহুদী থেকে উৎপত্তি ঘটেছে এবং ইহুদী থেকে উৎপত্তি ঘটেছে এবং ইহুদী ও নাছারাদের দ্বারা প্রবর্তিত ও প্রচারিত এবং প্রসারিত হয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে।

স্মরণীয় যে, ইসলামের নামে গণতন্ত্র, নির্বাচন, ভোট ইত্যাদি হারাম ও কুফরী হওয়ার আরো একটি বড় কারণ হলো, গণতন্ত্রের মূল বিষয় বা ভিত্তিসমূহের মধ্যে অন্যতম হলো সার্বভৌমত্ত্ব জনগণের। অর্থাৎ জনগণই হচ্ছে গণতন্ত্রের বা সার্বভৌমত্ত্বের মূল।

অথচ আল্লাহ পা বলেন, “সর্বভৌমত্ত্ব স্বয়ং আল্লাহ পাক-এর।” এ প্রসঙ্গে সূরা মায়িদার ১২০ নং আয়াত শরীফে ইরশাদ হয়েছে,

لِلّٰهِ مُلْكُ السَّمٰوٰتِ وَالارْضِ وَمَا فِيْهِنَّ وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ  قَدِيْرٌ.

অর্থঃ আসমান ও যমীন এবং এর মধ্যে যা কিছু রয়েছ, সমস্ত কিছুরই মালিক আল্লাহ পাক। আর তিনিই সমস্ত কিছুর উপর ক্ষমতাবান।”

পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ হয়েছে,

هُوَ اللهُ الْخَالِقُ الْبَارِئُ  الْـمُصَوِّرُ لَهُ الْاَسْمَآءُ الْحُسْنٰى يُسَبِّحُ لَهٗ  مَا فِى السَّمٰوٰتِ  وَالْاَرْضِ وَهُوَ الْعَزِيْزُ الْحَكِيْمُ.

অর্থঃ তিনিই আল্লাহ তায়ালা, স্রষ্টা, উদ্ভাবক, রূপদাতা, উত্তম নামসমূহ তাঁরই। আসমান ও যমীন যা কিছু আছে সবই তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রান্ত প্রজ্ঞাময়।” (সূরা হাশর-২৪)

অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে,

قُلِ اللّٰهُمَّ مٰلِكَ الْـمُلْكِ تُؤْتِى الْـمُلْكَ مَنْ تَشَآءُ وَتَنْزِعُ الْـمُلْكَ مِمَّنْ تَشَآءُ وَتُعِزُّ مَنْ تَشَآءُ وَتُذِلُّ مَنْ تَشَآءُ بِيَدِكَ الْخَيْرُ اِنَّكَ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ.

অর্থঃ “বলুন, (হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আয় আল্লাহ পাক! সমগ্র রাজ্যের মালিক আপনি। আপনি রাজন্য যাকে ইচ্ছা প্রদান করেন এবং যাকে ইচ্ছা করেন রাজন্য ছিনিয়ে নেন। আর যাকে ইচ্ছা সম্মানদান করেন আর যাকে ইচ্ছা অপমানে পতিত করেন। আপনারই হাতে রয়েছে যাবতীয় কল্যাণ। নিশ্চয়ই আপনি সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাশীল। (সূরা আল ইমরান-২৬)

অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে,

وَللهِ مَا فِى السَّمٰوٰتِ وَمَا فِى الْاَرْضِ يَغْفِرُ لِـمَنْ يَّشَآءُ وَيُعَذِّبُ مَنْ يَّشَآءُ وَاللهُ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ

অর্থঃ- আর যা কিছু আসমান ও যমীনে রয়েছে, সেসবই মহান আল্লাহ পাক-এর। তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন, যাকে ইচ্ছা আযাব দান করবেন। আর আল্লাহ পাক হচ্ছেন, ক্ষমাকারী, করুণাময়। (সূরা আলে ইমরান-১২৯)

এছাড়া অনুরূপ আয়াত “সূরা আনয়াম-১৭,৫৭, সূরা ফাতির-১০, সূরা বাক্বারা-১১৭, সূরা শুরা-৭৩, সূরা আনয়াম-৯৫, সূরা মু’মিন-৬৮, সূরা আল ফুরকান-২, সূরা হাদীদ-৩, সূরা আস সাফফাত-১৮০-১৮২, সূরা জাছিয়াত-৩৬-৩৭সহ আরো অনেক আয়াতশরীফে মহান আল্লাহ পাক-এর সার্বভৌমত্বের কথা লিপিবদ্ধ রয়েছে।

কাজেই, “সার্বভৌমত্ত্ব জনগণের” একথা বলা ও মানাকুফরী। অবশ্য যদিও কেউ কেউ বলে থাকে যে, “সার্বভৌমত্ত্ব জনগণের” এটা আমরা মানিনা অথচ তারা পূর্ণরূপেই ইসলামের নামে গণতন্ত্র মানে ও করে। তাদের জন্য আফসুস, তারা এত অজ্ঞ যে,তারা গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্ত্বই বা কাকে বলে সে বিষয়ে তাদের বিন্দুতম জ্ঞান নেই বললেই চলে।

কারণ গণতন্ত্রে জনগণকে যে সার্বভৌমত্ত্বের অধিকারী বলা হয়েছে, সে সার্বভৌমত্ত্বের বহিঃপ্রকাশই ঘটে ভোট প্রয়োগের মাধ্যমে। অর্থাৎ গণতন্ত্রে জনগণ ভোট দেয়ার ব্যাপারে কারো মুখাপেক্ষী নয় এবং সে ভোট কাকে দেবে বা দেবে না, সে বিষয়েও কারো কাছে তাকে জবাবদিহি করতে হয় না।

মূলতঃ যারা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে বা তা সমর্থন করে,তারা সার্বভৌমত্ত্ব যে জনগণের, আল্লাহ পাক-এর নয়, তাই ইচ্ছায় হোক, অনিচ্ছায়ই হোক মেনে নেয় এবং ভোট দানের মাধ্যমে তার বহিঃপ্রকাশ ঘটায়।

মূলকথা হলো- ইসলামের দৃষ্টিতে ইসলামের নামে ভোট-নির্বাচন করা শরীয়তসম্মত নয়। কারণ ভোট-নির্বাচন সম্পূর্ণরূপেই ইহুদী-নাছারা তথা বেদ্বীন-বদদ্বীনদের বানানো মনগড়া নিয়ম-নীতি বা তর্জ-তরীকা। যা মুসলমানদের জন্য অনুসরণ করা সম্পূর্ণই হারাম।

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে মাসিক আল বাইয়্যিনাত-এর ১৬০তম সংখ্যা থেকে ১৭৫তম সংখ্যা পাঠ করুন।

অতএব, ইসলামের নামে ভোট চাওয়া ও ভোট দেয়াই যেহেতু ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম। তাই হারাম কাজের জন্য ছবি তোলা কস্মিনকালেও জায়িয ও জরুরী হতে পারে না। এটাকে জরুরী বলা কাট্টা কুফরী।

পটিয়ার খারিজী মৌলভীদের বক্তব্যের জবাবে তৃতীয়তঃ বলতে হয় যে, তারা যে লিখেছে “ভোটার আইডি কার্ডের জন্য ছবি তোলাকে ফিক্বাহবিদগণ জায়িয বলছেন। নাউযুবিল্লাহ।

তাদের এ বক্তব্য ফিক্বাহবিদগণের নামে চরম পর্যায়ের মিথ্যাচারিতার শামিল এবং হারামকে হালাল বলার কারনে কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভূক্ত হয়েছে।

মূলতঃ অনুসরনীয় কোন ফিক্বাহবিদ “ভোটার আইডি কার্ডের জন্য ছবি তোলাকে জায়িয বলেছেন” এর স্বপক্ষে পটিয়ার খারিজী মৌলভীরা যদি একটি দুর্বল দলীলও পেশ করতে পারে তবে তাদেরকে একশ কোটি টাকা পুরুস্কার দেয়া হবে। ইনশাআল্লাহ। ক্বিয়ামত পর্যন্ত কেন, অনাদিকাল পর্যন্ত কোশেশ করলেও তারা একটি দলীলও পেশ করতে পারবে না।

বস্তুতঃ হাদীছ শরীফে যেহেতু মুতলাক বা সাধারণভাবে অর্থাৎ বিনা শর্ত শারায়িতে সর্বক্ষেত্রের জন্যই ছবি তোলাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাই অনুসরনীয় তাফসীরবিদ, হাদীছবিদ ও ফিক্বাহবিদ সকলেই মুতলাক বা আমভাবে অর্থাৎ সর্বক্ষেত্রের জন্যই ছবি তোলাকে হারাম বলে ফতওয়া দিয়েছেন। যা পটিয়ার খারিজী মৌলভীদের মুরুব্বী দেওবন্দীদের কিতাবেও উল্লেখ আছে। নিম্নে এ সম্পর্কে কতিপয় দলীল প্রমান উল্লেখ করা হলো-

হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে-

قال حدثنا الاعمش عن مسلم قال كنا مع مسروق فى دار يسار بن نمير فراى فى صفته تماثيل فقال سمعت عبد الله قال سمعت النبى صلى الله عليه وسلم يقول ان اشد الناس عذابا عند الله المصورون.

অর্থঃ হযরত আ’মাশ রহমতুল্লাহি আলাইহি মুসলিম রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি মাসরূক রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর সঙ্গে ইয়াসার ইবনে নুমাইয়-এর ঘরে ছিলাম, তিনি তাঁর ঘরের মধ্যে প্রাণীর ছবি দেখতে পেলেন, অতঃপর বললেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর নিকট শুনেছি, তিনি বলেন, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “নিশ্চয়ই মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তিকে আল্লাহ পাক কঠিন শাস্তি দেবেন, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তোলে বা আঁকে।” (বুখারী শরীফ ২য় জিঃ, পৃঃ ৮৮০)

عن عبد الله بن عمر رضى الله تعالى عنه اخبره ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ان الذين يصنعون هذه الصور يعذبون يوم القيمة يقال لهم احيوا ما خلقتم.

অর্থঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। সাইয়্যিদুনা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “যারা প্রাণীর ছবি তৈরী করবে, ক্বিয়ামতের দিন তাদের কঠিন শাস্তি দেয়া হবে এবং তাদেরকে বলা হবে, যে ছবিগুলো তোমরা তৈরী করেছে, সেগুলো মধ্যে প্রাণ দাও।” (বুখারী শরীফ ২য় জিঃ, ৮৮০পৃষ্ঠা, মুসলিম শরীফ ২য় জিঃ ২১০ পৃষ্ঠা)

عن عائشة رضى الله تعالى عنها ان النبى صلى الله عليه وسلم لم يكن يترك فى بيته شيئا فيه تصاليب الا  نقضه

অর্থঃ হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বর্ণনা করেন যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘরে প্রাণীর ছবি বা ছবিযুক্ত সকল জিনিস (থাকলে) ধ্বংস করে ফেলতেন। (বুখারী শরীফ ২য় জিঃ ৮৮০ পৃষ্ঠা, মিশকাত শরীফ ৩৮৫ পৃষ্ঠা)

عن ابى زرعة قال دخلت مع ابى هريرة رضى الله تعالى عنه دار بالمدينة فرأ ها اعلاها مصورا يصور قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول ومن اظلم ممن ذهب يخلق كخلقى فليخلقوا حبة وليخلقوا ذرة.

অর্থঃ হযরত আবু যুররা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, আমি হযরত আবু হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর সঙ্গে মদীনা শরীফ-এর ঘরে প্রবেশ করলাম, অতঃপর তিনি ঘরের উপরে এক ছবি অংকণকারীকে ছবি অঙ্কন করতে দেখতে পেলেন এবং বললেন, আমি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি তিনি বলেছেন, মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তি অধিক অত্যাচারী, যে ব্যক্তি আল্লাহ পাক-এর সদৃশ্য কোন প্রাণীর ছূরত সৃষ্টি করে। তাকে বলা হবে একটি শস্যদানা সৃষ্টি কর অথবা একটি পিপিলিকা সৃষ্টি কর। (বুখারী শরীফ ২য় জিঃ, ৮৮০ পৃষ্ঠা)

عن ابى حجيفة عن ابيه ان النبى صلى الله عليه وسلم نهى عن ثمن الدم وثمن الكلب وكسب البغى ولعن اكل الربى وموكله والواشمة والمستوشمة والمصور.

অর্থঃ হযরত আবু হুযাইফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন, “হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রক্তের দাম ও কুকুরের দাম নিতে এবং ব্যভিচারকারীনীর উপার্জন নিষেধ করেছেন এবং যে ঘুষ খায়, যে ঘুষ দেয়, যে অংগে উলকি আঁকে এবং যে আঁকায়, আর যে ছবি অঙ্কন করে, এদের সবার উপর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লা’নত দিয়েছেন।” (বুখারী শরীফ ২য় জিঃ, ৮৮১ পৃষ্ঠা)

عن عائشة  رضى الله تعالى عنها قالت دخل على رسول الله صلى الله عليه وسلم وانا مسترة بقرام فيه صورة فتلون وجهه ثم تناول الستر فهتكه ثم قال ان من اشد الناس عذابا يوم القيمة الذين يشبهون بخلق الله تعالى.

অর্থঃ হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বলেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার নিকট আসলেন। প্রাণীর ছবিযুক্ত একখানা চাদর গায়ে দেয়া ছিলাম। এটা দেখে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর চেহারা মুবারক রঙ্গিন হয়ে গেল। অতঃপর তিনি চ চাদরখানা নিয়ে ছিঁড়ে ফেললেন এবং বললেন, “ক্বিয়ামতের দিন মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তির কঠিন শাস্তি হবে, যে ব্যক্তি আল্লাহ পাক-এর সৃষ্টির সাদৃশ্য (কোন প্রাণীর ছূরত) তৈরি করে।” (মুসলিম শরীফ ২য় জিঃ, ২০০ পৃষ্ঠা)

এ সম্পর্কে মুসলিম শরীফ ২য় জিঃ ২০১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-

عن ابى معاوية رضى الله تعالى عنه ان من اشد اهل النار يوم القيمة عذابا المصورون.

অর্থঃ হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত, “নিশ্চয়ই ক্বিয়ামতের দিন দোযখবাসীদের মধ্যে ঐ ব্যক্তির কঠিন আযাব হবে, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি আঁকে বা তোলে।”

عن سعيد قال جاء رجل الى ابن عباس فقال انى رجل اصور هذه الصور فافتنى فيها فقال له ادن منى فدنا منه ثم قال ادن منى فدنا حتى وضع يده على راسه وقال انبئك بما سمعت من رسول الله صلى الله عليه وسلم وسمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول كل مصور فى  النار يجعل له بكل  صورة صورها نفسا فيعذبه فى جهنم وقال ان كنت لا بد فا علا فاصنع الشجر وما لا نفس له.

অর্থঃ হযরত সাঈদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, এক ব্যক্তি হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর নিকট এসে বলল, আমি এমন এক ব্যক্তি যে প্রাণীর ছবি অঙ্কন করি, সুতরাং এ ব্যাপারে আমাকে ফতওওয়া দিন। হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তাকে বললেন, তুমি আমার নিকটবর্তী হও। সে ব্যক্তি তাঁর নিকটবর্তী হল। পুনরায় বললেন, তুমি আরো নিকটবর্তী হও। সে আরো নিকটবর্তী হলে হযরত ইবেেন আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তার মাথায় হাত রেখে বললেন, আমি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এ ব্যাপারে যা বলতে শুনেছি তোমাকে তা বলব। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “প্রত্যেক প্রাণীর ছবি তৈরীকারীই জাহান্নামে যাবে এবং আল্লাহ পাক প্রত্যেকটি ছবিকে প্রাণ দিবেন এবং সেই ছবিগুলো তাদেরকে জাহান্নামে শাস্তি দিতে থাকবে। এবং ইবনে আব্বাস রদ্বিাল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, তোমার যদি ছবি আঁকতেই হয় তবে, গাছ-পালা বা প্রাণহীণ বস্তুর ছবি আঁক। (মুসলিম শরীফ ২য় জিঃ পৃঃ ২০২)

عن ابى هريرة رضى الله تعالى عنه قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول قال الله تعالى ومن اظلم ممن ذهب يخلق كخلقى فليخلقوا ذرة اوليخلقوا حبة او شعيرة

অর্থঃ হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, আমি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি- তিনি বলেছেন, “আল্লাহ পাক বলেন, মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তি অধিক অত্যাচারি, যে ব্যক্তি আল্লাহ পাক-এর সৃষ্টির সাদৃশ্য কোন প্রাণীর ছূরত তৈরী করে। তাদেরকে বলা হবে, তাহলে তোমরা একটি পিঁপিলিকা অথবা একটি শস্য অথবা একটি গম তৈরী করে দাও।” (মিশকাত শরীফ পৃঃ ৩৮৫)

عن عائشة رضى الله تعالى عنها عن النبى صلى الله عليه وسلم قال ان اشد الناس عذابا يوم القيمة الذين يضاهون  بخلق الله.

অর্থঃ হযরত আয়িশা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা হতে বর্ণিত। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “নিশ্চয়ই ক্বিয়ামতের দিন ঐ ব্যক্তির কঠিন শাস্তি হবে, যে ব্যক্তি আল্লাহ পাক-এর সৃষ্টির সাদৃশ্য কোন প্রাণীর ছূরত তৈরী করবে।” (মিশকাত পৃঃ ৩৮৫)

মিশকাত শরীফ এর ৩৮৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-

عن عبد الله بن مسعود رضى الله تعالى عنه قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول اشد الناس عذابا عند الله المصورون.

অর্থঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, আমি আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আল্লাহ পাক ঐ ব্যক্তিকে কঠিন শাস্তি দিবেন, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তোলে বা আঁকে।

عن ابى هريرة رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم يخرج عنق من النار يوم  القيمة لها عينان تبصران اذنان تسمعان ولسان ينطق يقول انى وكلت بثلثة بكل جبار عنيد وكل من دعا مع الله الها اخر وبالمصورين.

অর্থঃ হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ক্বিয়ামতের দিন এমন একটি আগুনের গর্দান বের হবে, যার দুটো চক্ষু থাকবে। যা দ্বারা সে দেখতে পাবে। দুটো কান থাকবে, যা দ্বারা সে শুনতে পাবে। একটি মুখ থাকবে, যা দ্বারা সে কথা বলবে। গর্দানটি বলবে, নিশ্চয়ই আমাকে তিন ব্যক্তির অভিভাবক বানানো হয়েছে- ১. প্রত্যেক আহঙ্কারী অত্যাচার লোকের ২. যারা আল্লাহ পাক-এর সাথে অন্যকেও প্রভু ডাকে, ৩. যারা প্রাণীর ছবি তৈরী করে। (মিশকাত শরীফ পৃ ঃ ৩৮৬)

عن جابر رضى الله تعالى عنه قال نهى رسول الله صلى الله عليه وسلم عن الصورة فى البيت ونهى ان يصنع ذلك.

অর্থঃ হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘরের মধ্যে প্রাণীর ছবি রাখতে নিষেধ করেছেন এবং ওটা তৈরী করতেও নিষেধ করেছেন। (তিরমিযি ১ম জিঃ পৃঃ ২০৭)

عن جابر رضى الله تعالى عنه ان النبى صلى الله عليه وسلم امر عمر بن الخطاب زمن الفتح وهو بالبطحاء ان ياتى الكعبة  فيمحو كل صورة فيها فلم يدخلها النبى صلى الله عليه وسلم حتى محيت كل صورة  فيها.

অর্থঃ হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কা বিজয়ের সময় হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে হুকুম করলেন, তিনি যেন পাথর দিয়ে ক্বাবা ঘরের সমস্ত মূর্তি বা চিত্রগুলো ধ্বংস করে দেন।

হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ক্বাবা ঘরের মূর্তি বা চিত্রগুলো ধ্বংস না করা পর্যন্ত ক্বাবা ঘরে প্রবেশ করলেন না।” (আবু দাউদ শরীফ ২য় জিঃ ২১৯ পৃষ্ঠা)

عن عيسى بن حميد قال سال عقبة الحسن قال ان فى مسجدنا ساحة فيها تصاوير قال انحروها.

অর্থঃ হযরত ঈসা বিন হুমাইদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত- তিনি বলেন, হযরত ওকবাতুল হাসান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, আমাদের মসজিদে প্রাণীর ছবিযুক্ত একখানা কাপড় রয়েছে। তখন হযরত ঈসা বিন হুমাঈদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, তুমি (মসজিদ থেকে) ওটা সরিয়ে ফেল। (মুছান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ২য় জিঃ, ৪৬ পৃষ্ঠা)

عن ابى عثمان قال حدثنى لبابة عن امها وكانت تخدم عثمان بن عفان ان عثمان ابن عفان كان يصلى الى تابوت فيه تماثيل فامر به فحك.

অর্থঃ হযরত আবূ উসমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত- তিনি বলেন,  লোবাবাহ তার মাতা হতে আমার নিকট বর্ণনা করেন যে, তার মাতা হযরত উসমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর খিদমতে ছিলেন, আর হযরত উসমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু প্রাণীর ছবিযুক্ত একটি সিন্দুকের দিকে নামায পড়ছিলেন। অতঃপর হযরত উসমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর আদেশে ওটা নিশ্চিন্ন করে ফেলা হলো। (মুছান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ২য় জিঃ ৪৬ পৃষ্ঠা)

عن اسامة رضى الله تعالى عنه قال دخلت مع النبى صلى الله عليه وسلم الكعبة فرايت فى البيت صورة فامرنى فاتيته بدلو من الماء فجعل يضرب  تلك  الصورة  ويقول قاتل الله قوما  يصورون ما لا يخلقون.

অর্থঃ হযরত উসামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গে পবিত্র কা’বা ঘরে প্রবেশ করলাম। আমি কা’বা ঘরের ভিতরে প্রাণীর ছবি দেখতে পেলাম। অতঃপর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হুকুমে আমি পাত্রে করে পানি নিয়ে আসলাম।

হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঐ ছবিগুলোতে পানি নিক্ষেপ করলেন এবং বললেন, “আল্লাহ পাক ঐ গোত্রের সাথে জিহাদ ঘোষণা করেছেন, যে গোত্র এরূপ প্রাণীর ছূরত তৈরী করে। যা সে তৈরী করতে অক্ষম অর্থাৎ জীবন দিতে পারে না। (মুছান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৮ম জিঃ ২৯৬ পৃষ্ঠা, তাহাবী ২য় জিঃ ৩৬৩ পৃষ্ঠা)

عن ابن مسعود قال اشد الناس عذابا يوم القيامة رجل قتل نبيا او قتله نبى او رجل يضل الناس بغير العلم او مصور يصور التماثيل.

অর্থঃ হযরত ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, মানুষের ঐ ব্যক্তিদের ক্বিয়ামতের দিন কঠিন শাস্তি হবে, যারা কোন নবী আলাইহিস সালামকে শহীদ করেছে অথবা কোন নবী আলাইহিস সালাম যাদেরকে হত্যা করেছেন এবং ঐ সমস্ত লোক যারা বিনা ইলমে মানুষদেরকে গোমরাহ করে এবং যারা প্রাণীর ছবি তৈরী করে। (মুসনাদে আহমদ ২য় জিঃ ২১৭ পৃষ্ঠা)

উমদাতুল ক্বারী, ফতওয়ায়ে ছিদ্দীক্বিয়া ৩৭৮ পৃষ্ঠা ও আজ জাওয়াজির ২য় জিঃ ৩৩ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-

وفى التوضيح قال اصحبنا وغيرهم صورة  الحيوان حرام اشد التحريم وهم من الكبائر سواء صنعه لما يمتهن او لغيره فحرام بكل حال لان فيه مضاهاة لخلق الله وسواء كان فى ثوب او بساط او دينار اودرهم او فلس او اناء او حائط.

অর্থঃ ‘তাওজীহ’ নামক কিতাবে উল্লেখ আছে যে, জীব জন্তুর ছবি বা প্রতিমূর্তি নির্মাণ করা হারাম, বরং কঠোর হারাম। এটা কবীরাহ গুনাহ। চাই ওটাকে যতœ বা সম্মান প্রদর্শন করুক কিংবা অন্য যে কোন উদ্দেশ্যেই বানিয়ে থাকুক। কেননা এরূপ কাজে আল্লাহ পাক-এর সৃষ্টির অনুকরণ করা হয়। ওটা বস্ত্রে, বিছানায়, মোহরে, মুদ্রায়, পয়সায়, পাত্রে কিংবা প্রাচীর গাত্রে যে কোন স্থানে আঁকা বা নির্মাণ করা হারাম।

 শরহে মুসলিম, নববী ও ফতওয়ায়ে ছিদ্দীকীয়া কিতাবের ৩৭৮ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-

وهذه الاحاديث صريحة فى تحريم تصوير الحيوان وانه  غليظة  التحريم ايضا فيه  وما من لم يقصد بها العبادة ولمضاهاة  فهو فاسق  صاحب  ذنب كبير.

অর্থঃ উক্ত হাদীছ শরীফসমূহে প্রাণীর ছবি তৈরী করা বা মূর্তি নির্মাণ করা হারাম হওয়া সম্মন্ধে প্রকাশ্যেই বলা হয়েছে। এটা তৈরী বা নির্মাণ করা জঘন্যতম পাপের কাজ ও হারামও বটে। উক্ত কিতাবে আরও আছে, যদি কেউ মূর্তি বা প্রাণীর ছবি পূজা বা সৃষ্টির অনুকরণের জন্য নাও বানিয়ে থাকে তবুও সে ফাসিক হবে এবং কবীরাহ গুণাহে গুণাহগার হবে। (শরহে মুসলিম, নববী, ফতওয়ায়ে ছিদ্দীকিয়াহ পৃঃ ৩৭৮)

قال اصحابنا وغيرهم من العلماء تصوير صورة للحيوان حرام   شديد التحريم وهو من الكبائر لانه  متوعل عد عليه  بهذا الو عيد الشد يد المذ كور فى  الا حاديث سواء صنعه فى ثوب او بساط او دينار  او درهم

অর্থঃ আমাদের মাশায়িখগণ ও উলামাগণ বলেছেন যে, প্রাণীর ছবি তৈরী করা হারাম, এমনকি গুরুতর হারাম। এটা কবীরাহ গুণাহ। কেননা এরূপ কাজের জন্য বিশেষ ভীতিপ্রদ অবস্থা হাদীছ শরীফে উল্লেখ করা হয়েছে। ওটা কাপড়ে, বিছানায়, মোহরে কি টাকা-পয়সায় কিংবা যে কোন স্থানে আঁকা থাকনা কেন তা সমান কথা। (মিরকাত শরহে মিশকাত, ফতওয়ায়ে ছিদ্দীকিয়াহ ৩৭৯ পৃষ্ঠা, নাইলুল আওতার ২য় জিঃ ১০৫ পৃষ্ঠা)

جاءت الاحاديث الصحيحة الصريحت با لنهى عن صناعة التماثيل وعن تصوير ما فيه روح. سواء اكان انسانا ام حيوانا ام طيرا.

অর্থঃ ছহীহ্ হাদীছসমূহে প্রাণীর ছবি বা মূর্তি তৈরী করা সম্বন্ধে প্রকাশ্যেই নিষেধ করা হয়েছে। ওটা মানুষের হোক বা জানোয়ারের কি পাখির হোক সমান  কথা অর্থাৎ হারাম। (ফিকহুস সুন্নাহ ৩য় জিঃ, পৃঃ ৪৯৮)

جاءت الاحاديث الصحيحة الصريحة بالنهى عن صناعة التماثيل وعن تصوير ما فيه روح سواء اكان انسانا ام حيوانا ام طيرا.

অর্থঃ প্রাণীর ছবি তৈরী করা হারাম, যদি তা পূর্ণ দেহ বিশিষ্ট হয়। (কিতাবুল ফিক্হ আল মাযাহিবিল আরবায়াহ ২য় জিঃ পৃঃ ৪১)

واما  تصوير الحيوان ان كانت كاملة الاعضاء فانها لا تحل (يعنى حرام)

অর্থঃ  প্রাণীর ছবি তৈরী করা হারাম, যদি তা পুর্ণ দেহবিশিষ্ট হয়। (কিতাবুল ফিক্বহ আলা মাযাহিবিল আরবায়াহ ২য় জিঃ ৪১ পৃষ্ঠা)

واما اتخاذ المصور بحيوان فان كان معلقا على حائط سواء كان له ظل اولا اوثوبا ملبوسا اوعمامة او نحوذلك فهو حرام.

অর্থঃ প্রণীর ছবি চাই ওটা প্রাচীর গাত্রে ঝুলানো থাকুক, চাই ওটা দেহবিশিষ্ট হোক কিংবা আঁকা হোক অথবা পরিধেয় বস্ত্র অথবা পাগড়িতে আঁকা থাকুক সর্বাবস্থায় ব্যবহার করা হারাম। (শরহে মিরকাত, ফতওয়ায়ে ছিদ্দীকিয়াহ পৃঃ ৩৮৩, নাইলুল আওতার ২য় জিঃ, পৃঃ ১০৫)

تصویر بنانا یا بنوانا بہر حال حرام ہے خواہ دستی ہو یا عکسی ہو  دونو کا ایک حکم ہے.

অর্থঃ প্রাণীর ছবি তৈরী করানো প্রত্যেক অবস্থায় হারাম। চাই হাতে হোক অথবা ক্যামেরায় উভয়ের একই হুকুম অর্থৎ হারাম। (বাহারে শরীয়ত ৩য় জিঃ, পৃঃ ১২৩)

جاندار کی تصور بنانا اور بنوانا ناجائز  اور حرام ہے خواہ دستی  ہو یا عکسی ہو دونو  تصویر ہیں اور تصویر کا حکم رکتھی ہیں.

অর্থঃ প্রাণীর ছবি তৈরী করা এবং তৈরী করানো নাজায়িয এবং হারাম, চাই হাতে হোক অথবা অন্য কোন পদ্ধতিতে হোক উভয়ের একই হুকুম অর্থাৎ উভয়ই ছবি। (কিফায়াতুল মুফতী ৯ম জিঃ ২২৮ পৃষ্ঠা)

فوٹو  گرافی کے ذریعہ سے جانداروں کی    تصویر یں بنانا یا بنوانا اسکا پیشا کرنا  ناجائز  ہے کیونکہ فوٹو گرافی کی تصویر بھی تصویر ہے بلکہ اعلی درجہ کی کامل تصویر ہے.

অর্থঃ ক্যামেরার দ্বারা প্রাণীর ছবি আঁকা বা করানো এবং ওটার পেশাও নাজায়িয। কেননা ক্যামেরার ছবিও উচ্চমানের পরিপূর্ণ ছবি। তাই ছবির হুকুমসমূহ ওটার উপর বর্তাবে। (কিফায়াতুল মুফতী ৯ম জিঃ ২৩৪ পৃষ্ঠা)

جاندار کی تصویر کھینچنا یا کھیچوانا مطلقا ناجائز اور حرام ہے. خوا ہ قلم سے کھینچنی جائے یا فوٹوسے لی جائے سب کا ایک حکم ہے اور احادیث وعبارات فقیہسے معلوم ہوا کہ جاندار تصویر بنانا مطلقا نا جائز ہے.

অর্থঃ প্রাণীর ছবি তৈরী করা বা করানো মুতলাক বা আমভাবেই হারাম। কলম দ্বারা হোক অথবা ক্যামেরার মাধ্যমে অর্থাৎ যে পদ্ধতিতেই হোক না কেন সকলের একই হুকুম অর্থাৎ হারাম। (কেননা) ছহীহ হাদীছ শরীফসমূহ এবং ফিকহি ইবারতসমূহের দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, প্রাণীর ছবি তৈরী করা নাজায়িয ও হারাম। (ফতওয়ায়ে নঈমিয়াহ ৪৮ পৃষ্ঠা)

بعض لوگ سمجھتے ہیں کہ حدیث میں جس تصویر کشتی کی ممانعت ہے وہ ہاتھو سے جو تصویر  بنانے کے متعلق ہے اور کیمرہ سے جو تصویر  اتاری جاتی ہے یہ خیال غلط اور فاسد ہے اصل مقصد تصویر  بنانے کی حرمت ہے خواہ کسی آلہ سے بنائی جائے.

অর্থঃ কিছু লোকের ধারণা, হাদীছ শরীফে হাত দ্বারা প্রাণীর ছবি তৈরী করা হারাম করা হয়েছে ক্যামেরার দ্বারা নয়। এটা তাদের ভুল এবং ভ্রান্ত ধারণা। মূলতঃ হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রাণীর ছবি হারাম হওয়াই মূল উদ্দেশ্য ওটা যে পদ্ধতিতেই হোক না কেন। (তোহফায়ে খাওয়াতীন ৯১২ পৃষ্ঠা)

جیسے قلم سے تصویر کھینچنا ناجائز ہے ایسے ہے فوٹو سے تصویر بنانا پریس پرچھاپنا یا سانچھہ اور مشین وغیرہ میں دھالنا بھی ناجائز ہے.

অর্থঃ কলম দ্বারা যেরূপ প্রাণীর ছবি তৈরী করা নাজায়িয (ও হারাম) তদ্রুপ ক্যামেরা, প্রেস, ছাঁচ, মেশীন ইত্যাদির দ্বারাও প্রাণীর ছবি তৈরী করা নাজায়িয (ও হারাম) (জাদীদ মাসায়িল কে শরয়ী আহকাম ৪৪ পৃষ্ঠা)

تصویر کھینچنا اور کھنچوانا جدید طریق فوٹو گرافی سے ایساہی حرام ہے جیسا کہ دستی تصویر کھینچنا اور کھینچوانا ممنوع اور حرام ہے اور کہنا اسکا  ایسا ہی حرام ہے جیسا کہ دستی تصویر کا رکھنا ایسے فعل کا فاسق ہے اور امام بنانا اسکا حرام ہے اور  نماز اسکے پیچھے مکروہ تحریمی ہے.

অর্থঃ আধুনিক যেকোন পদ্ধতিতে প্রাণীর ছবি তৈরী করা বা তৈরী করানো, হাতে তৈরী করা বা তৈরী করানোর মতোই হারাম ও নাজায়িয এবং প্রাণীর ছবি রাখাও তদ্রুপ হারাম। উক্ত আমলকারী ব্যক্তি ফাসিক এবং ইমাম নিযুক্ত করা হারাম। এবং তার পিছনে নামায পড়া মাকরূহ তাহরীমী। (ফতওয়ায়ে দারুল উলুম দেওবন্দ ১ম জিঃ ৭৪২ পৃষ্ঠা)

উপরোক্ত দলীলভিত্তিক আলোচনা দ্বারা অকাট্যভাবেই প্রমাণিত হলো যে,  শরীয়ত বিনা শর্ত-শারায়িত অর্থাৎ মুতলাক্ব বা আমভাবেই ছবি তোলাকে নিষিদ্ধ করেছে। তাই অনুসরনীয় সকল ফিক্বাহবিদ, হাদীছবিদ, তাফসীরবিদ মুতলাক্ব বা আমভাবেই ‘ছবি’ তোলাকে হারাম ফতওয়া দিয়েছেন। কাজেই “ফিক্বাহবিদগণ জরুরতে ছবি তোলাকে জায়িয বলেছেন” একথা ডাহা মিথ্যা ও দলীলবিহীন।

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মুর্তি তৈরী করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-১১

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মুর্তি তৈরী করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-১২

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মানহানীকারীদের একমাত্র শরঈ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড এবং তৎসংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে আখাছ্ছুল খাছ সম্মানিত বিশেষ ফতওয়া মুবারক (৩০তম পর্ব)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিন মুবারক উনাদের সম্মানিত আমল মুবারকসমূহ উনাদের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫৭তম পর্ব)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে- মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক যারা ভাঙবে, ভাঙ্গার কাজে সাহায্য-সহযোগিতা করবে বা সমর্থন করবে তাদের প্রত্যেকের শরঈ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ও তৎসংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া- (পর্ব-৩১)