কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৯

সংখ্যা: ১৯৬তম সংখ্যা | বিভাগ:

[সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন-এর জন্যে এবং অসংখ্য দুরূদ ও সালাম আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি। আল্লাহ পাক-এর অশেষ রহ্মতে æগবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ”-এর ফতওয়া বিভাগের তরফ থেকে বহুল প্রচারিত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, বাতিলের আতঙ্ক ও আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদায় বিশ্বাসী এবং হানাফী মাযহাব-এর অনুসরণে প্রকাশিত একমাত্র দলীলভিত্তিক যামানার তাজদীদী মুখপত্র æমাসিক আল বাইয়্যিনাত” পত্রিকায় যথাক্রমে- ১. টুপির ফতওয়া (২য় সংখ্যা) ২. অঙ্গুলী চুম্বনের বিধান (৩য় সংখ্যা) ৩. নিয়ত করে মাজার শরীফ যিয়ারত করা (৪র্থ সংখ্যা) ৪. ছবি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় হারাম হওয়ার ফতওয়া (৫ম-৭ম সংখ্যা) ৫. জুমুয়ার নামায ফরযে আইন ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (৮ম-১০ম সংখ্যা) ৬. মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী সম্পর্কে ফতওয়া (১১তম সংখ্যা) ৭. কদমবুছী ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১২তম সংখ্যা) ৮. তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী ও বিদ্য়াতে সাইয়্যিয়াহ্ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩তম সংখ্যা) ৯. ফরয নামাযের পর মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪-২০তম সংখ্যা) ১০. ইন্জেকশন নেয়া রোযা ভঙ্গের কারণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২১-২২তম সংখ্যা) ১১. তারাবীহ্-এর নামাযে বা অন্যান্য সময় কুরআন শরীফ খতম করে উজরত বা পারিশ্রমিক গ্রহণ করা জায়িয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৩-২৪তম সংখ্যা) ১২. তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৫-২৯তম সংখ্যা) ১৩. দাড়ী ও গোঁফের শরয়ী আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩০-৩৪তম সংখ্যা) ১৪. প্রচলিত তাবলীগ জামায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৫-৪৬তম সংখ্যা) ১৫. আযান ও ছানী আযান মসজিদের ভিতরে দেয়ার আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৪৭-৫০তম সংখ্যা) ১৬. দোয়াল্লীন-যোয়াল্লীন-এর শরয়ী ফায়সালা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে  ফতওয়া (৫১-৫২তম সংখ্যা) ১৭. খাছ সুন্নতী টুপি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে  ফতওয়া (৫৩-৫৯তম সংখ্যা) ১৮. নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে  ফতওয়া (৬০-৮২তম সংখ্যা) ১৯. ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারকের আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ফতওয়া (৮৩-৯৬তম সংখ্যা) ২০. শরীয়তের দৃষ্টিতে আখিরী যোহ্র বা ইহ্তিয়াতুয্ যোহ্রের আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৯৭-১০০তম সংখ্যা)  ২১. জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১০১-১১১তম সংখ্যা) এবং  ২২. হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১১২-১৩১তম সংখ্যা) ২৩. খাছ সুন্নতী ক্বমীছ বা কোর্তা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪০তম সংখ্যা) ২৪. হানাফী মাযহাব মতে ফজর নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করা নাজায়িয ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩২-১৫২তম সংখ্যা) ২৫. ইসলামের দৃষ্টিতে বিশ্বকাপ ফুটবল বা খেলাধুলা’র শরয়ী আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (১৫৫তম সংখ্যা) ২৬. হানাফী মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক তথা রুমাল, পাগড়ী, কোর্তা, লুঙ্গি, চাদর ইত্যাদি পরিধান বা ব্যবহার করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৫৩-১৬০তম সংখ্যা)   ২৭.  ইসলামের  নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬১-১৭৫তম সংখ্যা) পেশ করার পর ১৬৮তম সংখ্যা থেকে-

২৮তম ফতওয়া হিসেবে

æকুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করে আসতে পারায় মহান আল্লাহ পাক-এর দরবার শরীফ-এ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা, করানো ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার কারণ

সুন্নতের পথিকৃত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, দ্বীন ইসলামের নির্ভীক সৈনিক, সারা জাহান থেকে কুফরী, শিরক ও বিদ্য়াতের মূলোৎপাটনকারী, বাতিলের আতঙ্ক এবং আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদায় বিশ্বাসী একমাত্র দলীলভিত্তিক তাজদীদী মুখপত্র- æমাসিক আল বাইয়্যিনাত” পত্রিকায় এ যাবৎ যত লেখা বা ফতওয়াই প্রকাশ বা পত্রস্থ হয়েছে এবং ইনশাআল্লাহ হবে তার প্রতিটিরই উদ্দেশ্য বা মাকছূদ এক ও অভিন্ন। অর্থাৎ æমাসিক আল বাইয়্যিনাত”-এ এমন সব লেখাই পত্রস্থ হয়, যা মানুষের আক্বীদা ও আমলসমূহ পরিশুদ্ধ ও হিফাযতকরণে বিশেষ সহায়ক।

বর্তমানে ইহুদীদের এজেন্ট হিসেবে মুসলমানদের ঈমান আমলের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে যারা, তারা হলো ‘ওহাবী সম্প্রদায়’। ইহুদীদের এজেন্ট ওহাবী মতাবলম্বী উলামায়ে ‘ছূ’রা হারাম টিভি চ্যানেলে, পত্র-পত্রিকা, কিতাবাদি ও বক্তব্য বা বিবৃতির মাধ্যমে একের পর এক হারামকে হালাল, হালালকে হারাম, জায়িযকে নাজায়িয, নাজায়িযকে জায়িয বলে প্রচার করছে। (নাঊযুবিল্লাহ)

স্মরণীয় যে, ইহুদীদের এজেন্ট, ওহাবী মতাবলম্বী দাজ্জালে কায্যাব তথা উলামায়ে ‘ছূ’রা প্রচার করছে æছবি তোলার ব্যাপারে ধর্মীয় কোন নিষেধাজ্ঞা নেই”। (নাউযুবিল্লাহ) সম্প্রতি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, æনির্বাচন কমিশনার বলেছে, ছবি তোলার বিরুদ্ধে বললে জেল-জরিমানা হবে, নির্বাচন কমিশনার ভোটার আই.ডি কার্ডের জন্য ছবিকে বাধ্যতামূলক করেছে এবং ছবির পক্ষে মসজিদে, মসজিদে প্রচারণা চালাবে বলেও মন্তব্য করেছে। আর উলামায়ে ‘ছূ’রা তার এ বক্তব্যকে সমর্থন করে বক্তব্য দিয়েছে যে, æরাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে পুরুষ-মহিলা সকলের জন্যেই ছবি তোলা জায়িয।” (নাঊযুবিল্লাহ) শুধু তাই নয়, তারা নিজেরাও অহরহ ছবি তুলে বা তোলায়।

অথচ তাদের উপরোক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, চরম বিভ্রান্তিকর ও কুফরীমূলক। তাদের এ বক্তব্যের কারণে তারা নিজেরা যেরূপ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তদ্রুপ তাদের উক্ত কুফরীমূলক বক্তব্য ও বদ্ আমলের কারণে সাধারণ মুসলমানগণ ই’তিক্বাদী বা আক্বীদাগত ও আ’মালী বা আমলগত উভয় দিক থেকেই বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

কারণ, তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে যারা এ আক্বীদা পোষণ করবে যে, æরাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে ছবি তোলা জায়িয” তারা ঈমানহারা হয়ে কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী হবে। কারণ শরীয়তের দৃষ্টিতে হারাম বা নাজায়িযকে হালাল বা জায়িয বলা কুফরী। কেননা কিতাবে স্পষ্টই উল্লেখ আছে যে,

استحلال المعصية كفر.

অর্থাৎ æগুনাহের কাজ বা হারামকে হালাল মনে করা কুফরী।” (শরহে আক্বাইদে নাসাফী।)

অতএব, বলার আর অপেক্ষাই রাখেনা যে, উলামায়ে æছূ”দের উক্ত বক্তব্য সাধারণ মুসলমানদের আক্বীদা বা ঈমানের জন্য বিশেষভাবে হুমকিস্বরূপ।

অনুরূপ æছবি তোলার ব্যাপারে ধর্মীয় কোন নিষেধ নেই বা রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে সকলের জন্যে ছবি তোলা জায়িয” উলামায়ে æছূ”দের এ কুফরীমূলক বক্তব্য মুসলমানদের আমলের ক্ষেত্রেও বিশেষ ক্ষতির কারণ। কেননা যারা তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে ছবি তুলবে (যদিও হারাম জেনেই তুলুক না কেন) তারা আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব কর্তৃক নিষিদ্ধকৃত কাজে তথা হারাম কাজে মশগুল হবে যা শক্ত আযাব বা কঠিন গুনাহের কারণ। কেননা হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে-

قال حدثنا الاعمش عن مسلم قال كنا مع مسروق فى دار يسار بن نمير فراى فى صفته تماثيل فقال سمعت عبد الله قال سمعت النبى صلى الله عليه وسلم يقول ان اشد الناس عذابا عند الله المصورون.

অর্থঃ হযরত আ’মাশ রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত মুসলিম রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণনা করেন তিনি বলেন, আমি হযরত মাসরূক রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর সঙ্গে ইয়াসার ইবনে নুমাইর-এর ঘরে ছিলাম, তিনি উনার ঘরের মধ্যে প্রাণীর ছবি দেখতে পেলেন, অতঃপর বললেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর নিকট শুনেছি, তিনি বলেন, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, æনিশ্চয়ই মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তিকে আল্লাহ পাক কঠিন শাস্তি দেবেন, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তোলে বা আঁকে।” (বুখারী শরীফ ২য় জিঃ, পৃঃ ৮৮০)

উক্ত হাদীছ শরীফ-এর ব্যাখ্যায় æউমদাতুল ক্বারী শরহে বুখারীতে” উল্লেখ আছে,

وفى التوضيح قال اصحابنا وغيرهم صورة الحيوان حرام اشد االتحريم وهم من الكبائر.

অর্থঃ ‘তাওদ্বীহ’ নামক কিতাবে উল্লেখ আছে যে, হযরত উলামায়ে কিরামগণ প্রত্যেকেই বলেন, জীব জন্তুর ছবি বা প্রতিমূর্তি নির্মাণ করা হারাম বরং শক্ত হারাম এবং এটা কবীরা গুাহর অন্তর্ভুক্ত।

অতএব, নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, উলামায়ে æছূ”দের উক্ত বক্তব্য ও বদ আমলের কারণে সাধারণ মুসলমানগণ ছবি তুলে প্রকাশ্য হারাম কাজে মশগুল হয়ে কঠিন আযাবের সম্মুখীন হবে যা আমলের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে ক্ষতিকর।

কাজেই, যারা এ ধরনের কুফরী আক্বীদায় বিশ্বাসী ও কুফরী বক্তব্য প্রদানকারী তারা ও হক্ব সমঝদার মুসলমানগণ ঈমান ও আমলকে যেন হিফাযত করতে পারে অর্থাৎ মূর্তি বা ছবিসহ সকল বিষয়ে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদা অনুযায়ী আক্বীদা পোষণ করতে পারে এবং কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস মোতাবেক আমল করে আল্লাহ পাক-এর রিযামন্দি হাছিল করতে পারে সে জন্যেই æকুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ফতওয়াটি” পুনরায় প্রকাশ করা হলো।

 

প্রাণীর মূর্তি, ভাস্কর্য তৈরি করা-করানো, ছবি তোলা-তোলানো, আঁকা-আঁকানো, রাখা-রাখানো হারাম ও নাজায়িয হওয়ার অকাট্য ও নির্ভরযোগ্য দলীল প্রমাণ

 

স্মর্তব্য যে, নির্ভরযোগ্য ও সর্বজনমান্য প্রায় হাদীছ শরীফ, হাদীছ শরীফ-এর ব্যাখ্যাগ্রন্থ ও ফিক্বাহ-ফতওয়ার কিতাবেই æপ্রাণীর মূর্তি, ভাস্কর্য তৈরি করা-করানো, ছবি তোলা-তোলানো, আঁকা-আঁকানো, রাখা-রাখানো হারাম ও নাজায়িয” বলে উল্লেখ আছে। নিম্নে সেসকল কিতাবসমূহ থেকে ধারাবাহিকভাবে এ সম্পর্কিত দলীল প্রমাণ তুলে ধরা হলো-

 

আল মু’জামুছ ছগীর লিত্ ত্ববারানী

 

এ কিতাবখানা হাদীছ শরীফ-এর ছহীহ কিতাব। কিতাবখানা লিখেছেন মুহাদ্দিছ হাফিয আল্লামা আবু ক্বাসিম সুলাইমান বিন আহমদ বিন আইউব বিন মুত্বীর খাময়ী শামী ত্ববারানী রহমতুল্লাহি আলাইহি। জন্ম মুবারক: ২৬০ হিজরী। ওফাত মুবারক: ৩৬০ হিজরী। এ কিতাবে প্রাণীর ছবি সম্পর্কে যা উল্লেখ আছে তা হলো-

(৩৩১)

عن بن عمر رضى الله تعالى عنه ان النبى صلى الله عليه وسلم قال: يبعث المصورون يوم القيامة فيقال احيوا ما خلقتم.

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন: ক্বিয়ামতের দিন প্রাণীর ছবি অঙ্কনকারীদেরকে উঠানো হবে, আর তাদেরকে বলা হবে তোমরা যা তৈরি করেছ তাতে প্রাণ দাও (কিন্তু তারা এতে সক্ষম হবে না)। (বাবুল মীম মিন ইসমিহী মুহম্মদ ২য় খ- ২০৭ পৃষ্ঠা)

 

আল মু’জামুল আওসাত লিত্ ত্ববারানী

 

এ কিতাবখানা হাদীছ শরীফ-এর ছহীহ কিতাব। কিতাবখানা লিখেছেন মুহাদ্দিছ হাফিয আল্লামা আবু ক্বাসিম সুলাইমান বিন আহমদ বিন আইউব বিন মুত্বীর খাময়ী শামী ত্ববারানী রহমতুল্লাহি আলাইহি। এ কিতাবে প্রাণীর ছবি সম্পর্কে যা উল্লেখ আছে তা হলো-

(৩৩২)

عن ابن عمر رضى الله تعالى عنه ان النبى صلى الله عليه وسلم قال يعذب المصورون يوم القيامة ويقال لهم احيوا ما خلقتم

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, ছবি অঙ্কনকারীদেরকে ক্বিয়ামতের দিন শাস্তি দেয়া হবে এবং বলা হবে তোমরা যা তৈরি করেছো তাতে প্রাণ দাও। (কিন্তু তারা প্রাণ দিতে পারবেনা) (৬ষ্ঠ খ- ১৩৭ পৃষ্ঠা প্রকাশনা: দারুল হারামাঈন ক্বাহিরাহ ১৪১৫ হিজরীতে ছাপানো)

(৩৩৩)

عن عبد الله رضى الله تعالى عنه عن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال اشد الناس عذابا المصورون.

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি ইরশাদ করেন, ঐ সমস্ত ব্যক্তির কঠিন আযাব হবে যারা ছবি আকে তোলে বা দেখে। (৭ম খ- ৩৭৭ পৃষ্ঠা)

(৩৩৪)

عن عبد الله بن عباس رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من صور صورة كلف يوم القيامة ان ينفخ فيه الروح.

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, সাইয়্যিদুনা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি আঁকে বা তোলে, ক্বিয়ামতের দিন তাতে প্রাণ দেয়ার জন্য তার প্রতি চাপ সৃষ্টি করা হবে। (পরিচ্ছেদ: মান ইসমুহু উছমান ৪র্থ খ- ১০৩ পৃষ্ঠা)

(৩৩৫)

عن عائشة عليها السلام قالت دخل على رسول الله صلى الله عليه وسلم وفى البيت ستر منضوب  فيه صور فعرفت الغضب فى وجه رسول الله صلى الله عليه وسلم فقظعته.

অর্থ: হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা সাইয়্যিদুনা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার কাছে আসলেন, তখন আমার ঘরে প্রাণীর ছবিযুক্ত পর্দা ছিল। আমি এ অবস্থায় হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার চেহারা মুবারকে গোস্বার চিহ্ন দেখলাম। অতএব, আমি উক্ত পর্দা ছিড়ে ফেললাম। (পরিচ্ছেদ: মান ইসমুহু হারূন ৯ম খ- ১৪১ পৃষ্ঠা)

(৩৩৬)

عن ابى طلحة رضى الله تعالى عنه عن النبى صلى الله عليه وسلم قال لا تدخل الملائكة بيتا فيه كلب ولا تصاوير.

অর্থ: হযরত আবূ ত্বলহাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণনা করেন। তিনি ইরশাদ করেন, যে ঘরে কুকুর ও প্রাণীর ছবি থাকে সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না। (২য় খ- ৮৯ পৃষ্ঠা)

(৩৩৭)

عن عائشة علها السلام قالت دخل على  رسول الله صلى الله عليه وسلم وانا مستترة بقرام فيه صور فهتكه وقال ان اشد الناس عذابا يوم القيامة الذين يشبهون بخلق الله عز وجل.

অর্থ: হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, একদা সাইয়্যিদুনা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার কাছে আসলেন, তখন আমি একটি প্রাণীর ছবিযুক্ত কাপড় লটকিয়েছিলাম। তিনি (এটা দেখে) ছিড়ে ফেললেন এবং বললেন, ক্বিয়ামতের দিন ঐ সমস্ত ব্যক্তির কঠিন শাস্তি হবে যারা আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লা-উনার সৃষ্টির সাদৃশ্য কিছু তৈরি করে। (২য় খ- ২১২ পৃষ্ঠা)

 

আল মু’জামুল কবীর লিত তবারানী

 

এ কিতাবখানা হাদীছ শরীফ-এর ছহীহ কিতাব। কিতাবখানা লিখেছেন মুহাদ্দিছ হাফিয আল্লামা আবু ক্বাসিম সুলাইমান বিন আহমদ বিন আইউব বিন মুত্বীর খাময়ী শামী ত্ববারানী রহমতুল্লাহি আলাইহি। এ কিতাবে প্রাণীর ছবি সম্পর্কে যা উল্লেখ আছে তা হলো-

(৩৩৮)

عن اسامة بن زيد رضى الله تعالى عنه ان النبى صلى الله عليه وسلم دخل البيت فراى صورا فدعا بما فجعل يمحوها ويقول قاتل الله قوما يصورون ما لا يخلقون.

অর্থ:  হযরত উসামাহ বিন যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই সাইয়্যিদুনা হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন (মক্কা বিজয়ের পর) কা’বা শরীফ-এ প্রবেশ করলেন তখন সেখানে প্রাণীর ছবি দেখতে পেলেন। অতএব পানি নিয়ে আসতে বললেন এবং পানি দিয়ে প্রাণীর ছবি নিশ্চিহ্ন করলেন। আর বললেন, আল্লাহ পাক ওই সম্প্রদায়কে ধ্বংস করুন যারা প্রাণীর ছবি তৈরি করে, কিন্তু তাতে প্রাণ দিতে পারে না। (পরিচ্ছেদ উসামা বিন যায়িদ বিন হারিছাহ হুব্বি রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১ম খ- ১৬৬ পৃষ্ঠা। প্রকাশনা: মাকতাবাতুল উলূম ওয়াল হিকাম-মুছেল)

(৩৩৯)

عن ابن مسعود رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اشد الناس عذابا يوم القيامة رجل قتل نبيا او قتله نبى او رجل يضل الناس بغير علم او مصور يصورون التماثيل.

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাইয়্যিদুনা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, ক্বিয়ামতে দিন ঐ সমস্ত ব্যক্তির কঠিন শাস্তি হবে। ১. এমন ব্যক্তি যে কোন নবী-রসূল আলাইহিস্ সালাম-উনাদেরকে শহীদ করেছ, ২. এমন ব্যক্তি- যাকে কোন নবী-রসূল আলাইহিস্ সালাম হত্যা করেছেন। ৩. এমন ব্যক্তি- যে ইলম শূন্যতার কারণে কাউকে গোমরা করেছে, ৪. এমন ছবি অঙ্কণকারী যে, প্রাণীর ছবি অঙ্কন করে। (পরিচ্ছেদ আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ হাযলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ১০ম খ- ২১১ পৃষ্ঠা)

(৩৪০)

عن ابى ايوب رضى الله تعالى عنه عن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال لا تدخل الملائكة بيتا فيه كلب ولا صورة.

অর্থ: হযরত আবূ আইউব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি ইরশাদ করেন, রহমতের ফেরেশতা উনারা ঐ ঘরে প্রবেশ করেন না, যে ঘরে কুকুর ও প্রাণীর ছবি থাকে। (পরিচ্ছেদ: খালিদ বিন যায়িদ বিন কালীব আবূ আইউব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ৪র্থ খ- ১২১ পৃষ্ঠা)

(৩৪১)

عن ابن عباس رضى الله تعالى عنه قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول لا تدخل الملائكة بيتا فيه صورة تمثال والمصورون يعذبون يوم القيامة فى النار يقول لهم الرحمن قوموا الى ما صورتم فلا يزالون يعذبون حتى تنطق الصورة ولا تنطف.

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আমি সাইয়্যিদুনা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে শুনেছি, তিনি বলেছেন, ওই সমস্ত ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না যে ঘরে প্রাণীর ছবি থাকে। প্রাণীর ছবি অঙ্কনকারীদেরকে ক্বিয়ামতের দিন জাহান্নামে শাস্তি দেয়া হবে। রহমান আল্লাহ পাক তিনি তাদেরকে বলবেন, তোমরা যেগুলি তৈরি করেছ সেগুলির দিকে যাও। ছবিগুলো তাদেরকে শাস্তি দিতেই থাকবে এমনকি কথা বলবে। কিন্তু ব্যক্তিরা (অঙ্কণকারী) কথা বলতে পারবে না। (পরিচ্ছেদ: আহাদীছু আব্দিল্লাহ বিন আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ১১ খ- ১৯৬ পৃষ্ঠা)

(৩৪২)

عن ابن عباس رضى الله تعالى عنه ان النبى صلى الله عليه وسلم قال من صور صورة كلف يوم القيامة ان ينفخ فيها الروح وليس بنافخ ابدا ويعذب عليه.

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই সাইয়্যিদুনা হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তৈরি করবে, ক্বিয়ামতের দিন তাতে প্রাণ দেয়ার জন্য তাকে চাপ সৃষ্টি করা হবে। কিন্তু সে কখনো প্রাণ দিতে পারবে না, আর তাকে শাস্তি দেয়া হতেই থাকবে। (পরিচ্ছেদ: আহাদীছ আব্দিল্লাহ বিন আব্বাস ১১ খ- ৩১৬ পৃষ্ঠা)

(৩৪৩)

عن عبد الله رضى الله تعالى عنه قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول اشد الناس عذابا يوم القيامة المصورون.

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন। আমি সাইয়্যিদুনা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি উনার থেকে শুনেছি। তিনি ইরশাদ করেছেন, ক্বিয়ামতের দিন প্রাণীর ছবি তৈরিকারী ব্যক্তিদের সবচেয়ে বেশি আযাব হবে। (পরিচ্ছেদ: আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ হাযলী ১০ম খ- ১৫৭ পৃষ্ঠা)

 

আল মুস্তাদরাক আলাছ ছহীহাঈন

 

এ কিতাবখানা ছহীহ হাদীছ শরীফ-এর কিতাব। কিতাবখানা লিখেছেন আল্লামা মুহাদ্দিছ আবু আব্দিল্লাহ মুহম্মদ বিন আব্দুল্লাহ হাকিম নীসাবূরী রহমতুল্লাহি আলাইহি। জন্ম মুবারক: ৩২১ হিজরী, ইন্তিকাল: ৪৫০ হিজরী। এ কিতাবে প্রাণীর ছবি সম্পর্কে যা উল্লেখ আছে তা হলো-

(৩৪৪)

عن على رضى الله تعالى عنه عن النبى صلى الله عليه وسلم قال لا تدخل الملائكة بيتا فيه صورة ولا كلب ولا جنب.

অর্থ: হযরত আলী কাররামাল্লাহ ওয়াজহাহু রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণনা করেন। তিনি ইরশাদ করেন, রহমতের ফেরেশতা উনারা ঐ সমস্ত ঘরে প্রবেশ করেন না, যে ঘরে প্রাণীর ছবি, কুকুর ও অপবিত্রতা থাকে। (কিতাবুত ত্বহারাত ১ম খ- ২৭৮ পৃষ্ঠা প্রকাশনা: দারুল কুতুবিল ইলমিয়া বাইরুত লেবানন)

 

ছহীহ ইবনু খুযাইমাহ

 

এ হাদীছ শরীফখানা হাদীছ শরীফ-এর ছহীহ কিতাব। অত্র কিতাবখানা লিখেছেন আল্লামা আবূ বকর মুহম্মদ বিন ইসহাক বিন খুযাইমাহ সুলামী নীসাবূরী রহমতুল্লাহি আলাইহি। জন্ম: ২২৩ হিজরী, ইন্তিকাল: ৩১১ হিজরী। এ কিতাবে প্রাণীর ছবি সম্পর্কে যা উল্লেখ আছে তা হলো-

(৩৪৫)

عن عبد الله بن عباس رضى الله تعالى عنه ……..

فقال جبريل عليه السلام لرسول الله صلى الله عليه وسلم. انا لا ندخل بيتا فيه صورة ولا كلب.

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, আমরা (রহমতের ফেরেশতারা) এমন ঘরে প্রবেশ করিনা, যে ঘরে প্রাণীর ছবি ও কুকুর থাকে। (বাবু ইসতিহবাবি নাদ্বহিল আরদ্ব ১ম খ- ১৫০ পৃষ্ঠা, প্রকাশনা: আল মাকতাবুল ইসলামী বইরূত)

 

আস সুনানুল কুবরা লিল বাইহাক্বী

 

এ কিতাবখানা হাদীছ শরীফের ছহীহ কিতাব। কিতাবখানা লিখেছেন হযরত আল্লামা আবূ বকর আহমদ বিন হুসাইন বিন আলী বিন আব্দুল্লাহ বিন মূসা খুসরাওজিরাদী বাইহাক্বী শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি। জন্ম মুবারক: ৩৮৪ হিজরী, ওফাত মুবারক: ৪৫৮ হিজর। এ কিতাবে প্রাণীর ছবি সম্পর্কে যা উল্লেখ আছে তা হলো-

(৩৪৬)

عن عبد الله بن نجى عن ابيه قال سمعت عليا يقول قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لا تدخل الملائكة بيتا فيه صورة ولا جنب ولا كلب.

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ বিন নুজা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার পিতা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে শুনেছি, তিনি বলেন। সাইয়্যিদুনা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, রহমতের ফেরেশতা উনারা ঐ সমস্ত ঘরে প্রবেশ করেন না, যে ঘরে প্রাণীর ছবি, অপবিত্রতা ও কুকুর থাকে। (২১৪- বাবু কারাহিয়াতিল নাওমিল জুনুব ১ম খ- ২০১ পৃষ্ঠা, প্রকাশনা: মাজলিসু দায়িরাতিল মায়ারিফিন নিযামিয়াতি কায়িনাহ ফিল হিন্দ বিবালদাতি হাইদারাবাদ)

(৩৪৭)

عن الزهرى اخبرنى القاسم بن محمد بن ابى بكرن الصديق رضى الله تعالى عنه ان عائشة عليها السلام اخبرته ان رسول الله صلى الله عليه وسلم دخل عليها وهى مستترة بقرام فيه صورة تماثيل فتلون وجهه ثم اهوى الى القرام فهتكه بيده ثم قال ان اشد الناس عذابا يوم القيامة الذين يشبهون بخلق الله عز وجل.

অর্থ: হযরত শিহাব যুহরী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমার কাছে খবর দিয়েছেন হযরত ক্বাসিম বিন মুহম্মদ বিন আবূ বকর ছিদ্দীক্ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। নিশ্চয়ই হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম-উনার কাছে খবর দিয়েছেন যে, নিশ্চয়ই একদা সাইয়্যিদুনা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ঘরে প্রবেশ করলেন, যখন তিনি একখানা পর্দা লটকিয়েছিলেন যাতে অনেক প্রাণীর ছবি ছিল। ইহা দেখে উনার চেহারা মুবারক লাল হয়ে গেল। তাই তিনি পর্দাটির কাছে গেলেন এবং নিজ হাত মুবারক দ্বারা ছিড়ে ফেললেন। অতঃপর বললেন, ক্বিয়ামতের দিন ঐ সমস্ত ব্যক্তির কঠিন আযাব হবে, যারা আল্লাহ পাক-উনার সৃষ্টির সাদৃশ্য কোন কিছু তৈরি করে। (৩৬- বাবুল মাদ্ঊ ইয়ারা ফিল মাওদ্বায়ি ৭ম খ- ২৬৭ পৃষ্ঠা)

(৩৪৮)

عن جابر رضى الله تعالى عنه ان النبى صلى الله عليه وسلم امر عمر بن الخطاب رضى الله تعالى عنه زمن الفتح وهو بالبطحاء ان ياتى الكعبة فيمحو كل صورة فيها فلم يدخلها النبى صلى الله عليه وسلم حتى محيت كل صورة فيها.

অর্থ: হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই সাইয়্যিদুনা হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মক্কা বিজয়ের সময় বাত্বহা নামক স্থানে হযরত উমর বিন খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে কা’বা শরীফে প্রবেশ করে সমস্ত প্রাণীর ছবি ভাস্কর্য মূর্তিগুলো ধ্বংস করতে বললেন। যতক্ষণ পর্যন্ত সেগুলি ধ্বংস করা হয়নি ততক্ষণ হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সেখানে প্রবেশ করেননি। (৩৬- বাবুল মাদঊ ইয়ারা ফিল মাওদ্বায়ি ৭ম খ- ২৬৮ পৃষ্ঠা)

(৩৪৯)

عن ابن مسعود رضى الله تعالى عنه ان رجلا صنع له طعاما فدعاه فقال ا فى البيت صورة؟ قال نعم فابى ان يدخل حتى كسر الصورة ثم دخل.

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই এক ব্যক্তি উনার জন্য খাবার প্রস্তুত করে উনাকে দাওয়াত করলেন। তখন তিনি বললেন তোমার ঘরে কি প্রাণীর ছবি, মূর্তি আছে? সে ব্যক্তি বললেন হ্যাঁ আছে। তাই তিনি উক্ত ঘরে প্রবেশ করতে অস্বীকৃতি জানালেন, উক্ত প্রাণীর ছবি-মূর্তি ধ্বংস না করা পর্যন্ত। যখন ধ্বংস করা হলো তখন প্রবেশ করলেন। (৩৬- বাবুল মাদঊ ইয়ারা ফিল মাওদ্বয়ি ৭ম খ- ৩৬৮ পৃষ্ঠা)

(৩৫০)

عن عكرمة رضى الله تعالى عنه يقول سمعت ابن عباس رضى الله تعالى عنهما يقول قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من صور صورة عذب وكلف ان ينفخ فيها وليس بنافخ.

অর্থ: হযরত ইকরামা রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে শুনেছি, তিনি বলেছেন। সাইয়্যিদুনা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তৈরি করে (কিয়ামতের দিন) তাকে শাস্তি দেয়া হবে এবং তাতে প্রাণ দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হবে। কিন্তু সে তাতে প্রাণ দিতে সক্ষম হবে না। (৩৭- বাবুত তাশদীদ ফিল মানয়ি ৭ম খ- ২৬৯ পৃষ্ঠা)

(৩৫১-৩৬৯)

عن عبد الله بن مسعود رضى الله تعالى عنه يقول سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول ان اشد الناس عذابا عند الله يوم القيامة المصورون.

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আমি সাইয়্যিদুনা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে শুনেছি তিনি বলেছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক-উনার কাছে কিয়ামতের দিন ওই ব্যক্তির কঠিন শাস্তি হবে যে প্রাণীর ছবি তোলে, আঁকে, রাখে দেখে। (৩৭- বাবুত তাশদীদ ফিল মানয়ি ৭ম খ- ২৬৮ পৃষ্ঠা, বুখারী শরীফ, ফতহুল বারী, উমদাতুল কারী, ইরশাদুস সারী, শরহুল কিরমানী, তাইসীরুল বারী, মুসলিম শরীফ, শরহুন নববী, আল মুফহিম, ফতহুল মুলহিম, মিশকাত শরীফ, মিরকাত শরীফ, শরহুত ত্বীবী, আত তা’লীকুছ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব, লুময়াত, আশয়াতুল লুময়াত, মিরয়াতুল মানাজীহ)

(৩৭০)

عن عائشة عليها السلام انها اشترت نمرقة فيها تصاوير فلما راها رسول الله صلى الله عليه وسلم قام على الباب فلم يدخل فعرفت فى وجهه الكراهية فقلت يا رسول الله صلى الله عليه وسلم اتوب الى الله والى رسوله ماذا اذنبت فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم ما بال هذه النمرقة؟ فقلت اشتريتها لك لتقعد وتوسدها فقال ان اصحاب هذه الصور يوم القيامة يعذبون يقال لهم احيوا ما خلقتم. وقال ان البيت الذى فيه الصور لا تدخله الملائكة.

অর্থ: হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম একদা একটি গদি ক্রয় করলেন যাতে প্রাণীর ছবি ছিল। যখন হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা দেখলেন তখন তিনি ঘরের দরজায় দাড়িয়ে গেলেন, ঘরে প্রবেশ করলেন না। উনার চেহারা মুবারকে অসন্তুষ্টির ছাপ প্রকাশ পেল। আমি তখন বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমি আল্লাহ পাক ও উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনাদের কাছে এ কাজের জন্য ক্ষমা চাচ্ছি। হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, আপনি এটা কেন কিনেছেন? আমি জবাব দিলাম আপনার বসা ও হেলান দেয়ার জন্য। তিনি বললেন, নিশ্চয়ই এরকম প্রাণীর ছবি চর্চাকারীদেরকে ক্বিয়ামতের দিন আযাব দেয়া হবে আর বলা হবে তোমরা যা তৈরি করেছ, তাতে প্রাণ দাও। তিনি আরো বললেন, যে সমস্ত ঘরে প্রাণীর ছবি থাকে সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না। (৩৬- বাবুল মাদঊ ইয়ারা ফিল মাওদ্বয়ি ৭ম খ- ২৬৬ পৃষ্ঠা)

(৩৭১-৩৮০)

عن ابى زرعة رضى الله تعالى عنه قال دخلت مع ابى هريرة رضى الله تعالى عنه دار مروان فرأى فيها تصاوير فقال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول ومن اظلم ممن ذهب يخلق خلقا كخلقى فليخلقوا ذرة او ليخلقوا حبة او ليخلقوا شعيرة.

অর্থ: হযরত আবূ যুরয়াহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আমি একদা হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-উনার সঙ্গে মারওয়ান-এর ঘরে প্রবেশ করলাম। সেখানে তিনি প্রাণীর ছবি দেখতে পেলেন এবং বললেন, আমি সাইয়্যিদুনা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে শ্রবন করেছি যে, তিনি ইরশাদ করেছেন, (হাদীছে কুদসীতে এসেছে) ওই ব্যক্তি অধিক অত্যাচারী যে ব্যক্তি আমার সৃষ্টির সাদৃশ্য কোন কিছু তৈরি করে। তাকে বলা হবে সে যেন একটি কণা তৈরি করে অথবা একটি দানা তৈরি করে, নতুবা একটি শস্য তৈরি করে। (৩৭ বাবুত তাশদীদ ফিল মানয়ি ৭ম খ- ২৬৮ পৃষ্ঠা, বুখারী শরীফ, ফতহুল বারী, উমদাতুল ক্বারী, ইরশাদুস সারী, তাইসীরুল বারী, মুসলিম শরীফ, শরহুন নববী, আল মুফহিম, ফতহুল মুলহিম)

(৩৮১-৩৮৭)

عن عون بن ابى جحيفة قال سمعت ابى قال ان رسول الله صلى الله عليه وسلم نهى عن ثمن الدم وعن ثمن الكلب ومهر البغى ولعن اكل الربا ومؤكله والواشمة والمستوشمة ولعن المصور. اخرجه البخارى.

অর্থ: হযরত আউন বিন আবূ জুহাইফাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমি আমার পিতা (হযরত আবূ জুহাইফাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) উনার থেকে শুনেছি তিনি বলেছেন, নিশ্চয়ই সাইয়্যিদুনা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রক্তের মূল্য, কুকুরের মূল্য ও ব্যভিচারে মূল্য নিষেধ করেছেন। মদ পানকারী, মদ প্রস্তুতকারী, অঙ্গে উল্কি ধারণকারী ও উল্কি অঙ্কণকারী প্রত্যেকের প্রতি লা’নত দিয়েছেন। আর প্রাণীর ছবি অঙ্কণকারীর প্রতিও অভিসম্পাত বর্ষণ করেছেন। (১১৪- বাবুন নাহী আন ছামানিল কালব ৬ষ্ঠ খ- ২৬৯ পৃষ্ঠা, বুখারী শরীফ, ফতহুল বারী, উমদাতুল কারী, ইরশাদুস সারী, শরহুল কিরমানী, তাইসীরুল বারী)

 

আস সুনানুছ ছগীর লিল বাইহাক্বী

 

এ কিতাবখানা হাদীছ শরীফের ছহীহ কিতাব। কিতাবখানা লিখেছেন হযরত আল্লামা আবূ বকর আহমদ বিন হুসাইন বিন আলী বিন আব্দুল্লাহ বিন মূসা খুসরাওজিরাদী বাইহাক্বী শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি। এ কিতাবে প্রাণীর ছবি সম্পর্কে যা উল্লেখ আছে তা হলো-

(৩৮৮)

عن ابى طلحة رضى الله تعالى يقول سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول لا تدخل الملائكة بيتا فيه كلب ولا صورة تماثيل.

অর্থ: হযরত আবূ ত্বলহাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আমি সাইয়্যিদুনা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে শুনেছি তিনি বলেছেন, রহমতের ফেরেশতা ঐ সমস্ত ঘরে প্রবশ করেননা যে ঘরে কুকুর ও প্রাণীর ছবি থাকে। (আস সুনানুছ ছগীর লিল বাইহাক্বী বাবুন জিমাউ আবওয়াবিছ ছিদাক্ব ৫ম খ- ৪৬৮ পৃষ্ঠা)

 

মা’রিফাতুস সুনান ওয়াল আছার

লিল বাইহাক্বী

এ কিতাবখানা হাদীছ শরীফের ছহীহ কিতাব। কিতাবখানা লিখেছেন হযরত আল্লামা আবূ বকর আহমদ বিন হুসাইন বিন আলী বিন আব্দুল্লাহ বিন মূসা খুসরাওজিরাদী বাইহাক্বী শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি। এ কিতাবে প্রাণীর ছবি সম্পর্কে যা উল্লেখ আছে তা হলো-

(৩৮৯-৩৯৫)

عن ابن عباس رضى الله تعالى عنه عن ابى طلحة رضى الله تعالى عنه ان النبى صلى الله عليه وسلم قال  لا تدخل الملائكة بيتا فيه كلب ولا صورة .

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি হযরত আবূ ত্বলহাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণনা করেন। নিশ্চয়ই সাইয়্যিদুনা হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, ঐ সমস্ত ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না, যে ঘরে কুকুর ও প্রাণীর ছবি থাকে। (মা’রিফাতুস সুনান ওয়াল আছার লিল বাইহাক্বী বাবুন নাহী আন বাইয়িল কিলাব ৯ম খ- ৪১৬ পৃষ্ঠা, বুখারী শরীফ, ফতহুল বারী, উমদাতুল কারী, ইরশাদুস সারী, শরহুল কিরমানী, তাইসীরুল বারী)

(৩৯৬)

عن ابن عباس رضى الله تعالى عنه ان النبى صلى الله عليه وسلم قال من صور صورة عذب وكلف ان ينفخ فيها وليس بنافخ.

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। সাইয়্যিদুনা হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি (বা মূর্তি, ভাস্কর্য) তৈরি করবে, কিয়ামতের দিন তাকে আযাব দেয়া হবে এবং তাতে প্রাণ দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হবে, কিন্তু সে তাতে প্রাণ দিতে সক্ষম হবে না। (বাবুল ওয়ালীমাহ ১২ খ- ৬৮ পৃষ্ঠা)

 

শুয়াবুল ঈমান লিল বাইহাক্বী

 

এ কিতাবখানা হাদীছ শরীফের ছহীহ কিতাব। কিতাবখানা লিখেছেন হযরত আল্লামা আবূ বকর আহমদ বিন হুসাইন বিন আলী বিন আব্দুল্লাহ বিন মূসা খুসরাওজিরাদী বাইহাক্বী শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি। এ কিতাবে প্রাণীর ছবি সম্পর্কে যা উল্লেখ আছে তা হলো-

(৩৯৭)

عن ابن عباس رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من صور صورة عذب حتى ينفخ فيها وليس بنافخ.

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, সাইয়্যিদুনা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি অঙ্কন করে তাকে শাস্তি দেয়া হবে, যতক্ষণ তাতে সে প্রাণ না দিবে। কিন্তু সে তাতে প্রাণ দিতে পারবে না। (শুয়াবুল ঈমান লিল বাইহাক্বী ফাছলুন ফির রুইয়াল লাতী হিয়া নি’মাতুন ৪র্থ খ- ১৯১ পৃষ্ঠা দারুল কতুবিল ইলমিয়াহ বইরূত)

(৩৯৮)

عن ابى طلحة الانصارى رضى الله تعالى عنه قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم لا تدخل الملائكة بيتا فيه كلب ولا تماثيل.

অর্থ: হযরত আবূ ত্বলহা আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আমি সাইয়্যিদুনা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে শুনেছি। তিনি ইরশাদ করেন, ঐ সমস্ত ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না, যে ঘরে কুকুর ও প্রাণীর ছবি থাকে। (ফাছলুন ফী যীনাতিল বয়ূত ৫ম খ- ১৮৭ পৃষ্ঠা)

(৩৯৯-৪০৪)

عن عائشة عليها السلام قالت دخل على رسول الله صلى الله عليه وسلم وقد استتريت بقرام فيه تماثيل فلما راه تلون وجهه وهتكه بيده وقال اشد الناس يوم القيامة عذابا الذين يشبهون بخلق الله.

অর্থ: হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, একদা সাইয়্যিদুনা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার কাছে আসলেন তখন আমি একখানা ছবিযুক্ত পর্দা লটকিয়েছিলাম। যখন তিনি তা দেখলেন উনার চেহারা মুবারক লাল হয়ে গেল এবং পর্দাটি নিজ হাত মুবারক দ্বারা ছিড়ে ফেললেন এবং বললেন ক্বিয়ামতের দিন ঐ সমস্ত ব্যক্তির কঠিন শাস্তি হবে যারা আল্লাহ পাক-উনার সৃষ্টির সাদৃশ্য কোন কিছু তৈরি করে। (ফাছলুন ফী যীনাতিল বয়ূত ৫ম খ- ১৮৮ পৃষ্ঠা, মুসলিম শরীফ, শরহুন নববী, ফতহুল মুলহিম, মুফহিম, মুছান্নাফ ইবনে আবী শাইবাহ)

(৪০৫)

عن ابن عباس رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ان اشد الناس عذاب يوم القيامة من قتل نبيا او قتله نبى او قتل احد ولديه والمصورون وعالم لم ينتفع بعلمه.

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, সাইয়্যিদুনা হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, ক্বিয়ামতের দিন কয়েক প্রকার ব্যক্তির কঠিন শাস্তি হবে। ১. যে ব্যক্তি কোন নবী-রসূল আলাইহিস সালাম-উনাকে শহীদ করেছে। ২. কোন নবী-রসূল আলাইহিস সালাম কাউকে হত্যা করেছেন। ৩. যে তার পিতা-মাতাকে হত্যা করেছে। ৪. প্রাণীর ছবি অঙ্কনকারী। ৫. এমন আলিম যে তার ইলম দ্বারা উপকার লাভ করতে পারেনি। (বাবুন হাদীছু জারীরুল আবিদ ফী ফদ্বলি হিফয ৬ষ্ঠ খ- ১৯৭ পৃষ্ঠা)

ফতওয়া বিভাগ- গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ হানাফী মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক তথা রুমাল, পাগড়ী, কোর্তা লুঙ্গি চাদর ইত্যাদি পরিধান বা ব্যবহার করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৭

ফতওয়া বিভাগ- গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ হানাফী মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক তথা রুমাল, পাগড়ী, কোর্তা, লুঙ্গি, চাদর ইত্যাদি পরিধান বা ব্যবহার করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৮

ইসলামের নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া— (১)

ফতওয়া বিভাগ-গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ ইসলামের নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া- (২)

ফতওয়া বিভাগ- গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ ইসলামের নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-(৩)