ইসলামের দৃষ্টিতে প্রাণীর ছবি আঁকা, রাখা, দেখা হারাম॥ মুজাদ্দিদে আ’যমের অনবদ্য তাজদীদ

সংখ্যা: ১২৭তম সংখ্যা | বিভাগ:

আবূ দাউদ শরীফের হাদীছ শরীফে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ ফরমান, “নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক এই উম্মতের মাঝে প্রত্যেক হিজরী শতকের শুরুতে একজন মুজাদ্দিদ পাঠাবেন। যিনি সমসাময়িক যুগে সব বেশরা-বিদয়াত নির্মূলকরবেন।”  প্রসঙ্গতঃ বর্তমান যামানায় যে বিদয়াতী গোষ্ঠী মুসলিম বিশ্বকে বিপর্যস্ত করছে, এক কথায় বলতে গেলে তা হচ্ছে ছবি। বিষয়টি যত বেশী ফিকির করা যাবে তত বেশী উপলব্ধি হবে। ইসলামের দৃষ্টিতে প্রাণীর ছবি আঁকা রাখা দেখা হারাম। এ ফতওয়ার তাৎক্ষণিক বিরোধিতাকারী এবং ঘোর প্রতিবাদকারী একটি মহল নিজেদের  প্রগতিবাদী বা সুশীল সমাজ বলে দাবী করেন।  প্রাণীর ছবি আঁকা, রাখা, দেখা হারাম এ কথা শুনলে এরা আঁতকে উঠেন। প্রাণীর ছবি হারাম এ কথার মাঝে তারা বর্তমান সভ্যতার বিলুপ্তির গন্ধ খঁুঁজে পান। আধুনিক বৈজ্ঞানিক জয়যাত্রার কবর দেখেন। কিন্তু সত্যিকার অর্থে তাদের এ বোধ ও প্রচার এক ধরনের ভাবালুতা ছাড়া অন্য কিছুই নয়। কারণ সুই থেকে আরম্ভ করে রকেট পর্যন্ত কোন কিছুই প্রাণীর ছবির জন্য আটকে থাকবেনা। কাজেই সেসবের সাথে ইসলামের কোন বিরোধ নেই। কিন্তু ইসলামের বিরোধ সেখানেই যখন সুইয়ের প্যাকেটে প্রাণীর ছবি ছাপানো হয়, যখন মহাকাশ যাত্রীর ছবি পেপারে পত্রস্থ হয়। এখানে তথাকথিত সুশীল সমাজ দাবী করতে পারেন যে, ছবি ছাড়া গোটা সংবাদ মাধ্যম অচল হয়ে পড়বে। তাদের এ কথার জবাবে তখন উল্টো প্রশ্ন আমাদের করতে হয় যে, প্রাণীর ছবি নির্ভর সংবাদ মাধ্যম বজায় রেখে তারা কি পারছেন কথিত বিশ্ব বিবেক তথা মানবধিকার অক্ষুণœ রাখতে? গোটা বিশ্বে যখন শ’শ’ কোটি লোক নাঙ্গা, ভূখা রয়েছে, যখন সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকা, ইংল্যান্ড একের পর এক দেশ দখল করে নিচ্ছে, দুর্বল দেশগুলোকে করদ রাজ্যে পরিণত করছে; তখন এই প্রাণীর ছবি নির্ভর সংবাদ মাধ্যম কি বিবেক জাগ্রত করতে পারছে? চেতনাবোধ কি উজ্জীবিত করতে পারছে? সংগ্রামী বিপ্লবী মনোভাব কি তৈরী করতে পারছে এবং তা কতটুকুই বা ফলপ্রসু হতে পারছে? উল্লেখ্য, প্রাণীর ছবি নির্ভর ব্যবস্থার আপাত মধুর শ্লোগানের বিপরীতে সত্যিকার আবহের প্রাসঙ্গিক দিকটিও আমাদের  ভেবে দেখতে হবে। ছবি প্রযুক্তির শীর্ষে আরোহণকারী এবং প্রায় সর্বত্র ছবির মাধ্যমে মনিটরকারী দেশ খোদ আমেরিকায়ই বলা চলে সবচেয়ে বেশী সন্ত্রাস, ব্যভিচার, নারীর সম্ভ্রম হরণ, দুর্নীতি ইত্যাদি কাজ বল্গাহীনভাবে হয়। শুধু তাই নয় বরং পারিবারিক বন্ধন ও মূল্যবোধ সেখানে এতই ঠুনকো ও বিপর্যস্থ যে সেখানকার জীবনকে মানবীয় জীবন না বলে যান্ত্রিক জীবন বা পশুর জীবন বলেই সাব্যস্ত করতে হয়। সুতরাং বলতে হয় ছবি নির্ভর সর্বাধুনিক প্রযুক্তি মানব জীবনে কিছু উপযোগ দিয়েছে মাত্র। কিন্তু মানবাত্মার উৎকর্ষতা দিতে পারেনি, মানব মনের শান্তি বা সমৃদ্ধির যোগান দিতে পারেনি। বরং বলতে হয় যে প্রাণীর ছবি নির্ভর সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ক্ষমতাধর ব্যক্তি বা রাষ্ট্রকে যেভাবে হায়েনার মত হিংস্র করে তুলছে তাতে এসব হায়েনার হাতে গোটা বিশ্ব তথা সভ্যতাই হুমকির সম্মুখীন। বুশ বা ব্লেয়ার এবং আমেরিকা বা ইংল্যান্ডের উদাহরণ কি এ ক্ষেত্রে যথেষ্ট নয়? প্রশ্ন উঠতে পারে যে ছবি সম্পর্কে কেন ইসলামে এত বেশী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে? কেন বুখারী শরীফে বলা হয়েছে, “কেয়ামতের দিন সবচেয়ে বেশী শাস্তি হবে ঐ ব্যক্তির যে ছবি তোলে বা আঁকে? পাশাপাশি প্রশ্ন হতে পারে কেন বর্তমান যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম ইমামুল আ’ইম্মা কুতুবুল আলম, মুহ্ইস্ সুন্নাহ, আওলাদে রসূল রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী ছবির বিরুদ্ধে এত কঠোরভাবে বলছেন? উপরোক্ত প্রশ্ন দু’টির প্রথমটির জবাব হচ্ছে, এর মূল কারণ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক এবং তার রসূল সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামই জানেন। আর দ্বিতীয়টির জবাব হচ্ছে যে, যেহেতু ছবি সম্পর্কে আল্লাহ পাক বা তাঁর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, সেহেতু সেই কথাই বেমেছাল রূহানী কুয়তের সাথে তুলে ধরছেন বর্তমান যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আ’ইম্মা, কুতুল আলম, আওলাদে রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী। আর তাঁর তাজদীদী দিকটিও অনুভব করা কঠিন কিছু নয়। আজ মুসলমানরা যে ইসলামী মূল্যবোধ থেকে অনেক দূরে সরে গেছে, আজ মুসলমানদের গায়ে ইসলামী পোশাক নেই, ইসলামী চাল-চলন নেই, মুসলমানরা পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়ছেনা, মুসলমানরা আজকে ওয়াজ মাহফিলে যাচ্ছেনা, ইসলামী বই পুস্তক পড়ছেনা, কুরআন শরীফ পড়ছেনা, হাদীছ শরীফ পড়ছেনা, পর্দা করছেনা, মুসলমান সমাজেই যে আজ চরিত্রহীনতা ব্যাপক বিস্তার লাভ করছে, মুসলমানদের ভেতরেই যে আজ ইসলাম বৈরী মনোভাব তৈরী হচ্ছে, মুসলমানই যে আজ ইসলামের বিরুদ্ধে বলছে খতিয়ে দেখলে দেখা যাবে যে এর মূলে রয়েছে ছবি। ছবিই মুসলমানদের আজকে পর নারী আসক্ত করছে, চরিত্রহীনতায় নিমজ্জিত করছে। কারণ বলতে গেলে স্যাটেলাইট বা আকাশ সংস্কৃতি তথা মিডিয়ার মাধ্যমেই মূলতঃ মুসলমান চরিত্রহীনতার ছবক ব্যাপকভাবে পেয়েছে। সমীক্ষায় দেখা যায় এদেশের প্রেক্ষাপটে আশির দশকে যখন প্রথম ভিডিও ভিসিপির ব্যাপক চল হল তখন থেকেই আশঙ্কাজনক হারে যুব সমাজের চরিত্র নষ্ট হতে লাগল, তারা ইসলাম বিমুখ হতে লাগল। কাজেই বলতে হয় যে, এই ছবি যদি নিষিদ্ধরূপে পালিত হত তাহলে টিভি, সিনেমা, ভিসিআর,  ভিডিও, সিডি, বিবস্ত্র নারীর পোষ্টার তথা বিজ্ঞাপন ইত্যাদি কিছুই থাকতনা। ফলতঃ  সেসব উপাদান মূলতঃ অনিবার্যভাবে মুসলমানদের চরিত্র তথা মন মানসিকতাকে নষ্ট করে দিচ্ছে, তার কিছুই থাকত না। বলাবাহুল্য, এগুলো হলো শয়তানের আযান। কাজেই এই আযানকেই যদি বন্ধ করে দেয়া যেত তাহলে সব শয়তানি এমনিতেই বন্ধ হয়ে যেত। এবং মুসলমান আজকের মত এতটা ইসলাম বিমুখ থাকতনা বরং তারা অনেক বেশী ইসলামী চেতনায় উজ্জীবিত থাকত, পবিত্র থাকত ঈমানী জজবায় জাগ্রত থাকত।  কিন্তু আশ্চর্য হলেও সত্যি যে বর্তমানে এ উপলব্ধি আর কারো নেই। কেবলমাত্র যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আ’ইম্মা, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শীদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলীই তার বেমেছাল রূহানী সমৃদ্ধতার প্রেক্ষিতে এ অনবদ্য তাজদীদী কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। মূলতঃ শুধুমাত্র এই তাজদীদী প্রক্রিয়া দ্বারাই গোটা মুসলিম সমাজের ঈমানী আবহ ফিরিয়ে আনা সম্ভব, মুসলমানদের হারানো গৌরব ও ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা সম্ভব। আর এ অনবদ্য তাজদীদের প্রেক্ষিতেই বলতে হয় যে মুজাদ্দিদুয্ যামান, ইমামুল আ’ইম্মা, কুতুবুল আলম, মুহ্ইস্ সুন্নাহ আওলাদে রসূল সাধারণ মুজাদ্দিদ নন বরং তিনি মুজাদ্দিদে আ’যম।

-মুহম্মদ ওয়ালীউর  রহমান, ঢাকা।

আকবরের আমলের উলামায়ে ‘ছূ’দের উত্তরাধিকারী মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে দ্বীন-ই-ইলাহীর আদলে দ্বীন-ই-জুমহুরী প্রচলনে তারা এক হয়েছে-৩

আকবরের আমলের উলামায়ে ‘ছূ’দের উত্তরাধিকারী মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে দ্বীন-ই-ইলাহীর আদলে দ্বীন-ই-জুমহুরী প্রচলনে তারা এক হয়েছে-৩

প্রসঙ্গঃ গণতন্ত্র; এখনই চরম সময়, বিষয়টি ভাবিবার- ৯

“ভারতে মুসলমানদের উপর হিন্দুদের বর্বরতা ও পৈশাচিক আক্রমণ; প্রাচীন কাল হতেই হিন্দুদের এই নির্মম প্রবণতা” ঐতিহাসিক দলীল সম্বলিত একটি অনুসন্ধানী রচনা-৫

শুধু আজকের প্রেক্ষাপটে নয়, অতীত ইতিহাস হতেই ইহুদী-খ্রীষ্টানরা মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু মুসলিম সন্ত্রাসবাদ নয়, মার্কিন হামলার পিছনে কি ইহুদী-খ্রীষ্টানরাই দায়ী নয়? -১৩