শুধু আজকের প্রেক্ষাপটে নয়, অতীত ইতিহাস হতেই ইহুদী-খ্রীষ্টানরা মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু মুসলিম সন্ত্রাসবাদ নয়, মার্কিন হামলার পিছনে কি ইহুদী-খ্রীষ্টানরাই দায়ী নয়? -১০

সংখ্যা: ১০৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

(গত সংখ্যার পর)

মূলতঃ ইহুদী জাতি তাদের ধর্মীয় চেতনাগত ভাবেই মুসলিম বিদ্বেষী। তাদের ধর্মগ্রন্থ ‘তালামুদ’-এ দুনিয়ার অ-ইহুদী তথা মুসলমান জনগোষ্ঠী সম্পর্কে নিম্নলিখিত চেতনাবোধ পাওয়া যায়ঃ

১. অ-ইহুদী তথা মুসলিম জনগোষ্ঠীর ধন-সম্পদের কোন মালিকানা নেই। ধন-সম্পদের প্রকৃত মালিক ইহুদী জাতি। অ-ইহুদীদের তথা মুসলমানদের অর্জিত ধন-সম্পদ ন্যায়তঃই ইহুদীগণ দখল করে নিতে পারে। ২. অ-ইহুদী তথা মুসলিম জনগোষ্ঠী ও তাদের ধন-সম্পদের উপর কর্তৃত্ব করার জন্যই খোদা ইহুদী জাতিকে দুনিয়াতে মনোনীত করেছেন। ৩. মানুষ যেমন সৃষ্ট জীবের মধ্যে শ্রেষ্ঠ, তেমনি ইহুদী জাতিও মাটির পৃথিবীতে বসবাসকারী সমগ্র মানব গোষ্ঠীর মধ্যে শ্রেষ্ঠ। কারণ ইহুদী ছাড়া সকল মানুষের মধ্যেই পশুত্ব ও পাপ-প্রবৃত্তি রয়েছে। ৪. খোদা ইহুদী জাতিকে অ-ইহুদী তথা মুসলমানদের নিকট থেকে সুদ আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং বিনা সূদে অ-ইহুদী তথা মুসলমানদের ধার দিতে নিষেধ করেছেন।      মূলতঃ এহেন তীব্র মুসলমান বিদ্বেষী মনোভাব নিয়েই ইহুদীদের পদচারণা। তাদের চক্রান্ত খুবই সুদূর প্রসারী। আজকের ইসরাইলের পিছনে তাদের চক্রান্তের নীল নক্শা প্রণীত হয়েছিলো বহু পূর্ব থেকেই।

ফরাসী রাষ্ট্রবিপ্লব ইহুদীদের জন্য মুক্তির পয়গাম বহন করে আনে। ইহুদীদের রচিত বিশ্বব্যাপী চক্রান্তের পরিকল্পনা পুস্তক প্রটোকল থেকে  জানা যায় যে, ফরাসী রাষ্ট্রবিপ্লবের পরিকল্পনা ও পরিচালনায় ইহুদী ষড়যন্ত্রকারীদেরই গোপন হাত ক্রিয়াশীল ছিল। এ বিপ্লবের ফলে ঊনিশ শতকের  শেষাংশে ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, জার্মানী, হল্যান্ড, বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, নরওয়ে, অষ্ট্রিয়া এবং সুইজারল্যান্ড ইহুদীদের পূর্ণ নাগরিক অধিকার দান করে। কিন্তু পূর্ব-ইউরোপে ইহুদীদের তখনও ঘৃণার চোখে দেখা হতো এবং সেখানে আজাদীর সুখ থেকে এরা সম্পূর্ণ বঞ্চিত ছিল। ঊনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে অষ্ট্রিয়ার ইহুদী সাংবাদিক থিউডর হার্টজেল সর্বপ্রথম ইহুদীদের মধ্যে আজাদীর প্রেরণা সৃষ্টি করে। এজন্য তাকে ইহুদীবাদের জনক বলা হয়।

শুরুতে থিউডর হার্টজেল ফিলিস্তিনে  ইহুদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কোন পরিকল্পনা করেনি। সে বরং ইংরেজদের পরামর্শে পূর্ব-আফ্রিকায় একটি আজাদ ইহুদী রাষ্ট্র স্থাপন করতে আগ্রহী ছিল। কিন্তু অন্যান্য ইহুদী নেতাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করার পর তার মনোভাব পরিবর্তিত হয় এবং তার লুব্ধ দৃষ্টি ফিলিস্তিনের প্রতি আকৃষ্ট হয়।

হার্টজেল তার উদ্দেশ্য সিদ্ধির জন্য একদিকে দুনিয়ার বিভিন্ন দেশের শাসকদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে দেয় এবং অপর দিকে তুরস্কের সুলতান দ্বিতীয় আবদুল হামিদ এর সঙ্গে দেখা করে ফিলিস্তিনে বসবাসের অন্য অনুমতি প্রার্থনা করে। এরপর ইহুদীরা অত্যন্ত চাতুর্যের সাথে সুলতানকে ৫কোটি পাউন্ড অর্থসাহায্য দিয়ে তুর্কী খিলাফতের অর্থ নৈতিক সঙ্কট দূরীকরণের ইচ্ছা প্রকাশ করে। সুলতান আবদুল হামিদ ইহুদীদের অসদুদ্দেশ্য বুঝতে পেরেই তাদের আবেদন নাকচ করে দেন এবং স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন যে, তাঁর জীবদ্দশায় ইহুদী সম্প্রদায় কখনও ফিলিস্তিনে বসবাস করার অনুমতি পাবেনা।

থিউডর হার্টজেল সুলতান আবদুল হামিদের নিকট থেকে নিরাশ হয়ে পুনরায় ইংরেজদের সঙ্গে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় এবং ১৮৯৭ সালের ২৯শে আগষ্ট সুইজারল্যান্ডে ইহুদী-কংগ্রেসের বৈঠক আহ্বান করে। উক্ত বৈঠকে নিম্নরূপ ফায়সালা গৃহীত হয়।

১. ফিলিস্তিনকে ইহুদীরাজ্যে পরিণত করার উদ্দেশ্যে ইহুদীদের  সুপরিকল্পিত উপায়ে কৃষি ও ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে অগ্রসর করতে হবে। ২. সমগ্র দুনিয়ার ইহুদীদের সংঘবদ্ধ করার জন্য আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় পর্যায়ে সংগঠন গড়ে তুলতে হবে। ৩. ইহুদীদের মধ্যে প্রবল জাতীয় চেতনা সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে বিশেষ কর্মসূচী গ্রহণ করতে হবে। ৪. পূর্বোক্ত তিনদফা কর্মসূচীর সঙ্গে সঙ্গে ফিলিস্তিনে ইহুদী রাষ্ট্র কায়েম করার জন্য প্রয়োজনীয় চেষ্টা-তদ্বির অব্যাহত রাখতে হবে।    এরপর সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে ইহুদী সম্প্রদায় মুসলমানদের বিরুদ্ধে নানাবিধ চক্রান্ত জাল বিস্তার করে। ইংরেজদের সাথে মিলে তারা আরব ও অনারবদের মধ্যে ঘৃণা ও বিদ্বেষ সৃষ্টির মাধ্যমে তুর্কী খিলাফতের অধীনে নিয়োজিত আরব অফিসার ও সৈন্যদের মনে তুর্কী সুলতানের প্রতি বিদ্বেষ সৃষ্টি করার কাজ জোরেশোরে শুরু করে। আঞ্চলিকতাবাদ ও ভাষাগত জাতীয়তার সস্তা ও মুখরোচক শ্লোগানের সাহায্যে মুসলমানদের মধ্যে ফাটল সৃষ্টি করে তাদের দুর্বল করার এ হীন প্রচেষ্টা নব্য সমাজকে খুব সহজেই আকৃষ্ট করে এবং এর ফলে আরব-তুর্কী সম্পর্ক বিনষ্ট হয়। আরব-অনারব দ্বন্দ্বের ফলে মুসলিম শক্তি দুর্বল হয়ে যায় এবং ‘ফ্রি-ম্যাসন’ আন্দোলনের প্রভাবে কামাল পাশার ইসলাম বিরোধী তৎপরতা ইহুদীদের উদ্দেশ্য সিদ্ধির পথ প্রশস্ত করে দেয়।

 -সাইয়্যিদ মুহম্মদ আলমগীর, ঢাকা।

“ফজলুর জিহালতীর জবাব” সত্যিই রাজারবাগীদের নিকট ‘দ্বীনে রেযাখানী’ নিরাপদ নয় সংশোধনী না সূক্ষ্ম প্রতারণা?

“ভারতে মুসলমানদের উপর হিন্দুদের বর্বরতা ও পৈশাচিক আক্রমণ; প্রাচীন কাল হতেই হিন্দুদের এই নির্মম প্রবণতা” ঐতিহাসিক দলীল সম্বলিত একটি অনুসন্ধানী রচনা-৩

ইল্মে আক্বলিয়ার দৈন্য এবং বিলায়েতের অনুপস্থিতির কারণে প্রকৃত আলিমে দ্বীন তৈরী হচ্ছে না

প্রসঙ্গঃ গণতন্ত্র; এখনই চরম সময়, বিষয়টি ভাবিবার- ৬

আকবরের আমলের উলামায়ে ‘ছূ’দের উত্তরাধিকারী মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে॥ দ্বীনে ইলাহীর আদলে দ্বীনে জুমহুরী প্রচলনে তারা এক হয়েছে-১