হযরত ইব্রাহীম বিন আদহাম রহমতুল্লাহি আলাইহি বলিয়াছেন, যেই সব কারণে তোমাদের দোয়া কবুল হয়না তাহার মধ্যে অন্যতম হইল, “তোমরা অহরহ মানুষকে মৃত্যুবরণ করিতে দেখ কিন্তু তাহার পরেও নিজেদের মৃত্যু সম্পর্কে নছিহত হাছিল করনা।” চাক্ষুষ ঘটনা প্রত্যক্ষ করিবার পরও প্রিয়জনের বিয়োগে উহার তাৎক্ষণিক বেদনা গ্রহণের পরও সেই সম্পর্কে উদাসীন থাকা সম্পর্কেই মাহবুবে ইলাহী হযরত ইব্রাহীম বিন আদহাম রহমতুল্লাহি আলাইহি সতর্ক করিয়াছেন। উদাহরণটা যেন ঐ রকম- কাহারো গতর ফোঁড়া-পাঁচড়া ভর্তি হইয়া গিয়াছে কিন্তু তাহার পরও নোংরা পানিতে মাখামাখি করা ছাড়িতে রাজী না হইতে চাওয়া। বরং ফোঁড়া-পাচঁড়া, চুলকাইয়া চুলকাইয়া জ্বালা-যন্ত্রণা ভোগ করা কিন্তু তাহার পরও মলম লাগাইতে প্রবৃত্ত না হওয়া। উপরন্ত চুলকানির জ্বালা মিটাইবার খেয়ালে ফের ঐ নোংরা পানিতেই নামিয়া পুনরায় আরো বেশী মাত্রায় জ্বালা-যন্ত্রনায় দগ্ধ হওয়া। এইরকমই বলিতে হয় যে, প্রথাগত অথবা প্রচারিত গণতান্ত্রিক তথা নির্বাচনী হাঙ্গামায় আমাদের জীবন বার বার বিপর্যস্থ হইলেও, আমরা উহা হইতে পরিত্রাণ লাভের জন্য নূতন করিয়া নূতন নির্বাচনী হাঙ্গামায় জড়াইয়া পড়িতেছি। ইহাতে যে উদাহরণ কৃত ফোঁড়া-পাঁচড়া ওয়ালা ব্যক্তির মত আমাদের জাতীয় জীবনের ক্ষত আরও বাড়িতেছে সেইদিকে আমরা ইচ্ছা করিয়াই নজর দিতেছিনা। অবস্থাদৃষ্টে প্রতিভাত হয়, ঐ বাহ্যিক জ্বালা-যন্ত্রণার পরিমাণ যতই বেশী হউক না কেন আমাদের অন্তর আর বিবেক যেন একবারে অনুভূতি শুন্য হইয়া গিয়াছে। অন্তরের অনুভূতি কেবল ভোঁতাই নহে বরং কুরআন শরীফে উল্লিখিত সেই মহর পরা দিলের মিছদাক হইয়া গিয়াছে। চারিদিকে কেবল গুঞ্জন, খুব সামান্যই বাদ-প্রতিবাদ। পত্র-পত্রিকায় কিঞ্চিৎ লেখা-লেখি। সিটি করপোরেশন নির্বাচন লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষিত সন্ত্রাসীরাও প্রার্থী দেশের ৩টি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এবার সন্ত্রাসী ও তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীদেরই প্রভাব বজায় থাকবে। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় তাদের অবস্থান বলতে গেলে সংখ্যাগরিষ্ঠ। ঢাকা, খুলনা ও রাজশাহীর মোট ১শ’ ৫১টি ওয়ার্ডে তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ও বিভিন্ন মামলার আসামী মিলে ২৫০জনের মনোনয়নপত্র বৈধ হিসেবে গণ্য হয়েছে। এদের মধ্যে তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ৩৭ জন। ঢাকায় পুরস্কার ঘোষিত ৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে। গত ৩০ শে মার্চ প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। ২৫ শে এপ্রিল সিটি করপোরেশন নির্বাচন। রাজশাহীতে হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামীর মেয়র প্রার্থী পদে মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে। বিভিন্ন সুত্র থেকে পাওয়া খবর অনুসারে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা অনুযায়ী ঢাকায় ২শ’ খুলনায় ২৬ এবং রাজশাহীতে ২০জন সন্ত্রাসী এবং তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী এবার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ওয়ার্ড কমিশনার পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এদের একটি অংশ ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়নে নির্বাচন করছে। ঢাকা মহানগরীতে ২০০ সন্ত্রাসী ও মামলার আসামীর মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৭ জন তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। এর মধ্যে ৩ জনকে ধরার জন্য ২ মাস পূর্বে ১ লাখ টাকা পুরস্কার করে ঘোষণা করেছে। খুলনায় ৩১টি ওয়ার্ডে ২৬ সন্ত্রাসীর মধ্যে ৮ জন তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী। ১৮ জন বিভিন্ন ফৌজদারী মামলার আসামী। এর মধ্যে ১২/১৩টি মামলার আসামীও আছে। রাজশাহীতে ২০জন সন্ত্রাসী প্রার্থীর মধ্যে ১২জন তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী, ৮জন ফৌজদারী মামলার আসামী। কোটিপতি ব্যবসায়ী সেলিমকে হত্যা মামলার চাজশিটভুক্ত আসামী মেয়র প্রার্থী। কমিশনার প্রার্থী চোরা কারবারিও রয়েছে, কমিশনার প্রার্থীদের মাঝে। (দৈনিক সংবাদ-৮-৪-০২ ঈঃ) সিটি নির্বাচনকে ঘিরে অস্ত্র সংগ্রহ আর সন্ত্রাসীদের দলে ভেড়ানোর প্রতিযোগিতা সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজধানীতে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবসা জমে উঠেছে। একই সংগে পেশাদার সন্ত্রাসীদের দলে ভেড়ানোর প্রতিযোগিতাও চলছে। এ অবস্থায় নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, সহিংস ঘটনার আশংকা ততোই বাড়ছে। তফসিল ঘোষণার পর থেকেই রাজধানীতে উত্তেজনা দেখা দেয়। বিরোধী দল নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় ক্ষমতাসীন দলীয় প্রার্থীরা খুব সহজেই কমিশনার পদে জিততে পারবে এই আশায় ৯০ টি ওয়ার্ডে সরকার দলীয় লোকেরা মনোয়ন পায়। শেষ পর্যন্ত দল থেকে একজন মনোনয়ন পেলেও বাকিরা প্রার্থীতা প্রত্যাহার না করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় প্রতি ওয়ার্ডে টান টান উত্তেজনা চলছে। এসব ওয়ার্ডে বি এন পি দলীয় মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে বি এন পি-র বিদ্রোহী প্রার্থী। বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে বি এন পি কেন্দ্রীয়পর্যায়ের কিছু কিছু নেতা আবার মদদ দিচ্ছে। এরপরও রয়েছে তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীদের প্রার্থী হওয়া। যেসব ওয়ার্ডে সন্ত্রাসী প্রার্থী হয়নি, তারা কোন না কোন প্রার্থীকে বিভিন্নভাবে সমর্থন করছে। (দৈনিক ভোরের কাগজ-৮-৪-০২ ইঃ) রাজধানীতে নির্বাচনী সহিংসতায় আহত ৭ , ওয়ার্ড কমিশনার প্রার্থী গুলিবিদ্ধ। (দৈনিক প্রথম আলো-৮-৪-০২ ঈঃ) খুলনায় সন্ত্রাসী প্রার্থীদের ধরতে পারেনি পুলিশ রাজধানীতে সন্ত্রাসী হামলায় কমিশনার প্রার্থীসহ আহত ১০। (দৈনিক যুগান্তর-৮-৪-০২ ঈঃ) রাজশাহীতে কমিশনার প্রার্থীর বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে প্রতিপক্ষ সমর্থকরা। (দৈনিক যুগান্তর-৮-৪-০২ ঈঃ) বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ৮ জনের বিরুদ্ধে রয়েছে সন্ত্রাসের অভিযোগ। চিহ্নিত সন্ত্রাসী প্রার্থীরা কাগজপত্রে পলাতক হলেও গ্রেফতারে সাহস নেই পুলিশের ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছেনা। কয়েক মাস আগেও এরা ছিলো পুলিশের খাতায় পলাতক। এখন তাদের অধিকাংশই সরকার দলের মনোনয়ন নিয়ে প্রার্থী হয়েছে। এ কারণে তাদের গ্রেফতার করা পুলিশের সাহসে কুলাচ্ছেনা। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ৮ ওয়ার্ড কমিশনারের মধ্যে ৫ জনের বিরুদ্ধেই রয়েছে সন্ত্রাস সৃষ্টি ও সন্ত্রাস লালনের অভিযোগ। এদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে অর্ধশতাধিক মামলাও রয়েছে। পুলিশের সূত্রগুলো বলেছে, এবারের নির্বাচনে ৩১জন প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মামলা থাকলেও ১৫জন চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও অস্ত্রবাজ। এরা বিগত কয়েক মাস আগেও রাতে বাসায় ঘুমাতে পারত না। এদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ রাতের ঘুম অনেকটা হারাম করে দিয়েছিল। এখন এরা প্রকাশ্যে নির্বাচনী প্রচরণায় নেমেছে। পুলিশ প্রহরায় এরা নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছে। গ্রেফতারের বদলে পুলিশ তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। এই ১৫ জন সন্ত্রাসীর মধ্যে ৩ জন টপটেরর ও ৩ জন গডফাদার রয়েছে বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, সম্প্রতি পুলিশের শীর্ষ পর্যায়ে বৈঠকে এই চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু এরা দাগী সন্ত্রাসী ও বহু মামলার আসামী হলেও কেবল সরকারী দলের মনোনয়ন লাভের কারণে পুলিশ গ্রেফতার করছেনা। একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, “সরকারি দল যাদের মনোনয়ন দিয়েছে তাদের গ্রেফতার করলে চাকরি থাকবে না। আমরা ওদের সামনে পড়লে চোখ বন্ধ করে থাকি।” (উল্লেখ এটি কেবল বর্তমান সময়েই নয় সব দাবীকৃত গণতান্ত্রিক সরকারর সময়েও একই অবস্থা দৃষ্ট।) সূত্র জানায়, এবারের নির্বাচনে সরকার কর্তৃক পুরস্কার ঘোষিত অনেক টপটেরর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। যাদেরকে ধরিয়ে দিলে এক লাখ করে টাকা পুরুস্কারের ঘোষণা থাকলেও এরা নির্বাচন করছে। … অথচ পুলিশ বলছে এদের পাওয়া যাচ্ছেনা। ঢাকার আন্ডার ওয়ার্ল্ডের অন্যতম নিয়ন্ত্রক টপটেরর এক প্রার্থী নির্বাচন করেছে ৮৩ নং ওয়ার্ড থেকে। বহু মামলার পলাতক আসামী এই প্রার্থী সরকারী দলের প্রার্থী। এ কারণে পুলিশ তাকে নিরাপত্তা দিচ্ছে। একই ওয়ার্ড থেকে নির্বাচন করছে আরেক গডফাদার। কারাগারে থেকেই সে নির্বাচনী তৎপরতা চালাচ্ছে। ৮২ ও ৮৩ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে আরেক সন্ত্রাসী। ৪৪ নং ওয়ার্ডে সরকারী দলের প্রার্থী জনৈক টপটেরর দু’সপ্তাহ্ আগেও পুলিশ-বিডিআর তার বাসায় অভিযান চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে। তাকে পুলিশ গ্রেফতার তো দূরের কথা মোহাম্মদপুর থানা রীতিমত তোয়াজ করে চলছে। ৪৪ নং ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে আরেক সন্ত্রাসী। পুরান ঢাকায় ১০২ মামলার আসামী টপটেরর এক প্রার্থী নির্বাচন করছে পুলিশি নিরাপত্তায়। ফার্মগেট এলাকা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে কারাগারে আটক কুখ্যাত এক সন্ত্রাসী পুলিশের খাতায় পলাতক হলেও সে প্রকাশ্যেই চালাচ্ছে নির্বাচনী কর্মকান্ড। ঢাকার আন্ডার ওয়ার্ল্ডের আরেক ক্ষমতাধর ব্যক্তি বহু মামলার আসামী হলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে ২৩ নং ওয়ার্ড থেকে। কয়েক মাস আগে জেল থেকে মুক্তি পেয়েছে সে। ৭২ নং ওয়ার্ডের এক সন্ত্রাসী প্রার্থী পুলিশ কয়েক মাস আগে খুঁজলেও এখন প্রকাশ্যে নির্বাচনী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। ৭৬ নং ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে মাদক ব্যবসায়ীদের সর্দার এক টেরর ৭১ নং ওয়ার্ডে দাঁড়িয়েছে অধনালুপ্ত কান্দুপট্টি পতিতালয়ের এক সর্দার চার বছর পালিয়ে থাকার পর সরকার দলের সে মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচন করছে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ৮ জনই বড় সন্ত্রাসী। ভয়ে এদের বিরুদ্ধে কেউ প্রার্থী হয়নি। জানা গেছে, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতরা সম্ভব্য প্রার্থীদের ভয়-ভীতি, প্রাণ নাশের হুমকীসহ বিভিন্ন ভাবে হয়রানির সংকেত দেয়। .. নির্বাচন কমিশন কার্যালয়সহ বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে মহড়া দিয়েছে তাদের সশস্ত্র বাহিনী। এরপরও লুকোচুরির মাধ্যমে কয়েকটি ওয়ার্ডে মনোনয়ন পত্র দাখিল করলেও শেষ পর্যন্ত প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়। ৫১ নং ওয়ার্ডের এর (কমিশনার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত) আন্ডার ওয়ার্ল্ডের অন্যতম নেতা এখনও রয়েছে তার বিশাল বাহিনী। ২১ নং ওয়ার্ডের এক প্রার্থী আন্ডার ওয়ার্ল্ডের রিং মাষ্টার নামে পরিচিত। এ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিশাল বাহিনী নিয়ে মহাখালী বাস টার্মিনাল দখল করে ব্যপক সমালোচিত হয়। ৫৬ নম্বরের এক সন্ত্রাসী প্রার্থী পুলিশের খাতায় পলাতক। সে তার বিশাল বাহিনী নিয়ে ফুলবাড়িয়া টার্মিনাল দখল করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়। ৮১ নম্বরে আরেক প্রার্থী ঢাকার আন্ডার ওয়ার্ল্ডের সাথে সম্পৃক্ত। ৫৭ নং, ৬০ নং, ৬৩ নং ৭৪ নম্বরের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতদের সন্ত্রাসী লালনের অভিযোগ রয়েছে। (দৈনিক আজকের কাগজ ৭-৪-২০০২ ঈঃ) ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষিত থাকলেও চার সন্ত্রাসী অবাধে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছে আসন্ন ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ওয়ার্ড কমিশনার প্রার্থী রাজধানীর চার শীর্ষ সন্ত্রাসী তাদের মনোনয়ন পত্র প্রত্যহার করেনি। সরকার এদের গ্রেফতারের জন্য মাথাপিছু অর্ধ লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করলেও তারা নিজ নিজ এলাকায় নানা কৌশল অবলম্বন করে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছে। (প্রথম আলো-০২-০৪-০২ঈঃ) শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান, পতিতা পল্লীর সর্দার, ১০২ মামলার আসামী সবাই প্রার্থী সিটি নির্বাচনে॥ নাম শুনলে পুলিশেরও পিলে চমকে উঠে বিরোধী দলবিহীন ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এবারের ওয়ার্ড কমিশনার প্রার্থীদের নামের তালিকা শুনলে ভোটার তো দূরের কথা, পুলিশেরই পিলে চমকে উঠার মতো অবস্থা। শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান, পতিতা পল্লীর সর্দার, ১০২ মামলার আসামী, পুরস্কার ঘোষিত টপটেরর, মোষ্ট ওয়ান্টেড আসামীরা হচ্ছে এবারের ওয়ার্ড কমিশনার পদপ্রার্থী। এসব প্রার্থীর নাম শুনলে এলাকায় বাঘে-মহিষে এক ঘাটে পানি খাওয়ার মত অবস্থায় অনেকেই বিজয়ী হওয়ার পথে রয়েছে। সরকারের প্রভাবশালী মহলের পরোক্ষ কিংবা প্রত্যক্ষ ছত্রছায়ায় তারা প্রার্থী হওয়ায় পুলিশ প্রশাসন রীতিমত বিপাকে পড়েছে। পুলিশের উচ্চ পর্যায় সূত্রে এই খবর জানা গেছে। রাজাকার কমান্ডার, শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে বাঙ্গালী নিধনে অংশগ্রহণকারী পুরান ঢাকায় কমিশনার পদপ্রার্থী। পুরনো ঢাকায় ওয়ার্ড কমিশনার পদে প্রার্থী হয়েছে কান্দু পট্টি পতিতা পল্লীর সর্দার। পতিতা সমিতির অর্থ আত্মসাৎকারী এই প্রার্থী দীর্ঘদিন বিদেশ পালিয়েছিলো। পুরান ঢাকার আরেক প্রার্থীর বিরুদ্ধে খুনসহ ১০২টি মামলা রয়েছে। পুলিশ সূত্র জানায়, নানা বিশেষণের এই সব ওয়ার্ড কমিশনার প্রার্থীর সিংহভাগেরই বিজয়ী হওয়া প্রায় নিশ্চিত। (দৈনিক জনকক্ত-০২-০৪-০২ঈ) সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ব্যাপক সহিংসতার আশংকা। কমিশনার পদপ্রার্থী দুই শতাধিক তালিকা ভুক্ত সন্ত্রাসী ॥ সরকার উদাসীন। ঢাকা, খুলনা ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে ওয়ার্ড কমিশনার পদে তালিকাভুক্ত দুই শতাধিক শীর্ষ সন্ত্রাসী অংশ নিলেও এদের ব্যাপারে সরকারের উদাসীনতার কারণে নির্বাচনে ব্যাপক সহিংসতার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। .. প্রধান বিরোধী দল বিহীন এই নির্বাচনে বিনা বাধায় জয়ের প্রত্যাশা নিয়ে ক্ষমতাসীন জোট সরকারের হয়ে অধিকাংশ সন্ত্রাসী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, প্রভাবশালী মহলের চাপ ও ঝামেলা এড়াতে পুলিশ প্রশাসন নিজেরা কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না। ফলে সহিংসতার আশংকা ও শীর্ষ সন্ত্রাসীরা জন প্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশী। সূত্র জানায়, শুধু ঢাকাতেই শতাধিক তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী পদপ্রার্থী হয়েছে। এদের মধ্যে ৪ জন হচ্ছে সম্প্রতি যে ২৩ জন শীর্ষ টপটেররকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পুরস্কার ঘোষনা করেছে, সেই তালিকাভুক্ত। ঢাকার ৯০টি ওয়ার্ডের মধ্যে প্রতি ওয়ার্ডে ২ থেকে ৪ জন সন্ত্রাসী অংশ নিচ্ছে। পুলিশের সামনে এসব সন্ত্রাসীরা সদলবলে প্রচারণা চালাচ্ছে। একাশ্যে মিছিল-মির্টিং করছে। ঢাকার বাইরে অন্য দুটি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনী চিত্রও প্রায় একই। নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করতে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়া হয়নি বলে মহা পুলিশ পরিদর্শক আইজিপি জানান। তিনি জানান, তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের নির্দেশ আলাদাভাবে দেয়ার প্রয়োজন নেই। তাদের পেলেই পুলিশ ধরবে এটাই পুলিশের কাজ। কে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে কে নিচ্ছে না তা বিবেচ্য নয়। গ্রেফতার না হওয়ার জবাবে তিনি বলেন, আত্মগোপন করেই তারা তাদের সাঙ্গ-পাঙ্গদের দ্বারা নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছে বলে তিনি দাবী করেন। মোট কতজন তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে তার হিসাব রয়েছে কিনা জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি নেতিবাচক জবাব দেন। (দৈনিক ভোরের কাগজ-০২-০৪-০২ঈ) স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে নেমেছে মোষ্ট ওয়ান্টেড সন্ত্রাসীরা মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও নগরীর চিহ্নিত ও পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীরা ওয়ার্ড কমিশনার প্রার্থী হিসেবে তাদের মনোনয়ন পত্র প্রত্যহার করেনি। অনেক সন্ত্রাসী জেলের ভিতর থেকেও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। এছাড়া পুলিশের তালিকাভুক্ত ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর অন্যতম পেশাদার খুনী এক ৪১ নং ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী হয়েছে। ৪৩ নং ওয়ার্ডে ৫৯ নং ওয়ার্ডে শীর্ষ সন্ত্রাসী প্রার্থী হয়েছে। পুলিশের তালিকায় মোষ্ট ওয়ান্টেড এই সন্ত্রাসীদের পুলিশ খুঁজছে। এক প্রার্থী শীর্ষ সন্ত্রাসী এখন স্বতন্ত্র হিসেবে ২০ নং ওয়ার্ডে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছে। মিরপুর ৩ নং ওয়ার্ডে কমিশনার প্রার্থীর বিরুদ্ধে রয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী, সাধারণ মানুষের বাড়ী ও জমি দখলসহ বিভিন্ন অভিযোগ। মিরপুর বেনারসী পল্লীর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও তাঁতীরা তার হাতে জিম্মি। থানায় তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন মামলার অভিযোগ আছে। মগবাজারের ৫৪নং ওয়ার্ড থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজেই সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত। মিরপুর ২নং ওয়ার্ড থেকে নির্বাচন করছে এমন এক প্রার্থী যার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী, হত্যা ও জমি জালিয়াতি ইত্যাদির অভিযোগে মিরপুর, পল্লবী ও মোহাম্মদপুর থানা মিলে ১৬টি মামলা রয়েছে। (দৈনিক ইনকিলাব-০১-০৪-০২ঈঃ) তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীরা নির্বাচনী প্রচারে॥ মৌখিক নির্দেশ পেয়ে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেনা ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড কমিশনার নির্বাচনে সন্ত্রাসী প্রার্থীদের নিয়ে পুলিশের বড় সমস্যা। মন্ত্রীরা এবং নির্বাচন কমিশনও অবশেষে এদের গ্রেপ্তার করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু পুলিশ জানাচ্ছে, তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী হলেও প্রার্থীদের মধ্যে যারা সরকার দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাদের গ্রেপ্তার না করার জন্য উর্ধ্বতন মহলের মৌখিক নির্দেশ রয়েছে। তবে অন্য কোন রাজনৈতিক দলের আশ্রিত সন্ত্রাসী প্রার্থীসহ যে চার শীর্ষ সন্ত্রাসীকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে তাদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন গোয়েন্দা পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ঢাকায় ৯০ নং ওয়ার্ডের মধ্যে ৬৫টিতে সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে। (দৈনিক প্রথম আলো-০৫-০৪-০২ঈঃ) সাংবাদিকদের কে এম পি কমিশনার॥ কে সি সি নির্বাচনে ওয়ার্ড কমিশনার পদে ৮ প্রার্থী মোষ্ট ওয়ান্টেড আসামি খুলনা মেট্টোপলিটন পুলিশ (কে এম পি) কমিশনার মোখলেসুর রহমান বলেছেন, আসন্ন খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী কমিশনার প্রার্থীদের মধ্যে মোষ্ট ওয়ান্টেড আসামী রয়েছে ৮জন। এদের মধ্যে ২৪ নং ওয়ার্ডের কমিশনার প্রাথী আসাদুজ্জামান লিটুর বিরুদ্ধে ১৪টি এবং ২৬ নং ওয়ার্ডের এক কমিশনার প্রার্থী বিরুদ্ধে রয়েছে ১০টি মামলা। এরা পলাতক। এছাড়া আরো ১৮ প্রার্থী রয়েছে যারা বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। (দৈনিক প্রথম আলো-৮-৪-০২ ঈঃ) খুলনা সিটি নির্বাচনঃ ঝুঁকি পূর্ণ কেন্দ্র-১৪০, সন্ত্রাসী প্রার্থী- ৮, আসামী প্রার্থী-১৮ আসন্ন খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ১৪০টি কেন্দ্রকে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। পুলিশের মতে, খুলনায় ৩১ ওয়ার্ডে ২৪১টি ভোট কেন্দ্র। ১০১টি কম ঝুঁকিপূর্ণ। ৯৪ সালের সর্বশেষ নির্বাচনে কেসিসির ৮ ওয়ার্ডে অর্ধ শতাধিক ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র ছিল। সূত্র জানায়, এবারের নির্বাচনে কিছু নতুন মুখ এসেছে। যারা লিষ্টেড টেরর। এদের কারণে সাধারণ জনগণের ভোট প্রদানে বাধা সৃষ্টির আশংকা করা হচ্ছে। (দৈনিক যুগান্তর ৮-৪-০২ ঈঃ) পাঠক! নির্বাচন কাহারা করে অথবা নির্বাচন কাহাদের হাতে, সাম্প্রতিক সিটি কর্পোরশন নির্বাচনে এইগুলো হইতেছে কতিপয় টুকরা খবর। তবে এই কথা ধরিয়া লইবার কোন অবকাশ নাই যে, জাতীয় নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে, সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসী নির্ভর তথা পেশীশক্তি ও কালোটাকা সম্পৃক্ত এইবারের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। বরং সব সময়ের জাতীয় নির্বাচনেই এইসব সন্ত্রাসী এই ধরণের পেশী শক্তি ও কালো টাকার অবাধ ব্যবহার হয়। সাধারণ মানুষ তাহার কিছু খবর পায় আর কিছু পায়না। কিছু বুঝে আর কিছু বুঝেনা। মৌখিক কিছু উষ্মা প্রকাশ করে, কিছু করেনা। কারণ সাধারণ মানুষ এখনও এই ধারণার মধ্যে ঘুরপাক খাইতেছে যে, নির্বাচন আবশ্যিক ও অপরিহার্য এবং যথাযথ। দুষ্টরা তাহার অসদ্ব্যবহার করিতেছে মাত্র।
মূলতঃ এই বোধ সাধারণ মানুষের ভিতর হইতে বাহির হইয়া আসে নাই। বরং ইহা তাহার উপর চাপাইয়া দেওয়া হইয়াছে। গণতন্ত্র আর নির্বাচনের জনক, পৃষ্ঠপোষক ইহুদী-খৃষ্টানরা আর তাহাদের পদলেহী উলামায়ে ‘ছু’রা এই বিশ্বাস সাধারণ মানুষের মাঝে ঢুকাইয়া দিয়াছে। সেই বিশ্বাস মানুষের অন্তরে এতই বদ্ধমূল হইয়াছে গিয়াছে যে, উহারা ধুঁকিয়া ধুকিয়া মরিবে, পড়িয়া পড়িয়া মার খাইবে; কিন্তু তাহার পরেও যেন সেই বিজাতীয়, বিধর্মীয়, অমানবিক, পাশবিক নির্বাচনের জালের শৃঙ্খলেই আবদ্ধ থাকিবে। বলা যাইতে পারে, ইহা এক অদ্ভূত মানসিকতা। সাক্ষাৎ ইবলিসের ওয়াস্ ওয়াসা। উলামায়ে ‘ছূ’দের ঘৃণ্য অপতৎপরতা।
মূলতঃ উলামায়ে ‘ছু’রা এই দেশের সাধারণ মানুষকে আহমক বানাইয়া রাখিয়াছে।
আহমকের ধর্ম হইল সে প্রথমবার মলমূত্র তাহার পায়ে লাগিলে তাহা হইতে সরিয়া পড়েনা। বরং হাত দিয়া ধরিয়া আরো ভালোভাবে জানিতে চাহে। ইহার পরে নাকের নিকট লইয়া নিশ্চিত হইতে চাহে। এই যে সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসীদের অবাধ আধিপত্য তাহার পরেও সেই নির্বাচন সম্পর্কে বীতশ্রদ্ধ না হওয়া কি আহমকের পরিচয় নহে। না, আহমকের মত পায়ে বিষ্ঠা লাগাইবার পরও সাবধান হইবার প্রবৃত্তি অনেকের নাই। আহমকের ন্যায় হাত দিয়া ধরিবার কায়দায় ইহারপরও এই নির্বাচনকে গ্রহণ করিতে উহারা আশ্বস্থ হয় এই ভাবিয়া যে, সুযোগ পাইয়া সন্ত্রাসীরা তৎপর হইয়াছে। কিন্তু ইহা যে অস্বাভাবিক সুযোগ নহে বরং ইহাই যে কুপমন্ডুক নির্বাচনের অনিবার্য পরিণতি তাহা হৃদয়ঙ্গম করিতে সাধারণ মানুষের আর কতকাল ব্যায় হইবে? খোদ সরকারী কর্মচারীরাও নির্বাচনের যাতাকলে নিষ্পেষিত হইতেছেন কিন্তু তাহার পরেও উপলদ্ধি করিতে পারিতেছেন না। নির্বাচনে সন্ত্রাসীরা প্রার্থী হওয়ায় দায়িত্ব পালনে সরকারী কর্মকর্তাদের অনীহা
সন্ত্রাসীরা প্রার্থী হওয়ায় বিভিন্ন মন্ত্রনালয়, সরকারী অধিদপ্তর ব্যাংক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চিঠি দিলেও বেশীর ভাগ সরকারী প্রতিষ্ঠানেই দায়িত্ব পালনে অনীহা দেখাচ্ছে। প্রতিটি অফিসই নানা ওজর-আপত্তি দেখাচ্ছে। নির্বাচনী দায়িত্বে ২৮ হাজার কর্মকর্তার প্রয়োজন থাকলেও গত কাল পর্যন্ত পাওয়া গেছে ১৮ হাজার। (আজকের কাগজ)
ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ৫৭০ জন কমিশনার প্রার্থীর মধ্যে পুলিশের তালিকাভুক্ত অর্ধশতাধিক সন্ত্রাসী থাকায় এ অনীহা। (দৈনিক আজকের কাগজ-৩-৪-০২ঈঃ) কিন্তু এত কিছুর পরও তাহারা খোদ নির্বাচনকে অস্বীকার করিতে বড়ই অপ্রস্তুত। বরং আহমকের তৃতীয়বারের মত বিষ্ঠা নাকের নিকট লাগাইয়া দেখিতে তাহারা ইচ্ছুক। নির্বাচনকে অবাধ কর, সুষ্ঠ কর, স্বচ্ছ কর ইত্যকার দাবী উচ্চারণ করিতে তাহারা বড়ই নিবেদিত। কিন্তু এই নির্বাচন যে কোনদিনই অবাধ হইতে পারেনা, সুষ্ঠ হইতে পারেনা, স্বচ্ছ হইতে পারেনা তাহা কি আহমকের ন্যায় নাসিকারন্ধ্রে বিষ্ঠা লাগাইবার পরেও তাহারা ঠাওর করিতে পারিবেন না? সন্ত্রাস কেন হইতেছে? দাবীকৃত গণতান্ত্রিক সরকারের অব্যবস্থাপনায়ই সন্ত্রাস হইতেছে। সন্ত্রাসী কেন পয়দা হইতেছে? দাবীকৃত গণতান্ত্রিক সরকারের অনৈতিক ও অনৈসলামিক দর্শনের কারণেই হইতেছে। পুলিশ কেন সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করিতে পারিতেছেনা? সরকারের নির্বাচনী স্বার্থবাদের কারণেই পারিতেছেনা। নির্বাচন সুষ্ঠ পরিচালনা ও তদারকির জন্য যে নির্বাচনী কমিশন সে কমিশন তাহা হইলে কি করিতেছে। নির্বাচন কমিশন শুধু বলিতেই পারিতেছে কিন্তু গণতান্ত্রিক নির্বাচনের নিয়ম অনুযায়ী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের নির্বাহী ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের নাই।
তদুপরি গণতান্ত্রিক নির্বাচনের এই সংবিধানে এমন কথা লেখা নাই যে সন্ত্রাসীরা নির্বাচন করিতে পারিবেনা। হাজার অপরাধী হইয়াও পেশীশক্তি, প্রতিপত্তি ও অর্থবিত্তের দুষ্ট প্রভাবে সন্ত্রাসীর সাজা না হয় অথবা দীর্ঘমেয়াদী বিলম্বিত হয় তাহা হইলেও গণতান্ত্রিক নির্বাচনের সংবিধানের নীতিমালা হিসাবে তাহাকে গ্রেফতার করা যাইবেনা, নির্বাচনে দাঁড়াইতে নিষেধ করা যাইবেনা বরং সরকার তাহার রাজনৈতিক প্রয়োজনে উহাদেরই পুলিশ প্রটেকশন দিয়া জামাই আদর করিতে পারবে ইহাই হইল গণতান্ত্রিক নির্বাচনের তথা সংবিধানের তত্ত্বকথা। হালে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সন্ত্রাসীদের নির্বাচন করিবার পেছনে, গ্রেফতার না হইবার পেছনে ঐ একই কথা। কিন্তু তাহার পরেও নির্বাচনকে এইরূপ খোলা বিষ্ঠার ন্যায় উপস্থাপন করা হইবে, নির্বাচনের জনক ইহুদী-নাছারা গোষ্ঠী তত বোকা নহে। আইওয়াশ বলিয়া একটা কথা আছে। কাজেই দৃশ্যত নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করিবার অভিধায় তাহারা বার হাজার পুলিশ, স্রহস্রাধিক আর্মি, আর্মড ব্যাটালিয়ন, পুলিশ ইত্যাদি নামাইবে, নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠ করিবার নিমিত্তে। পত্রিকায় বলা হইয়াছে, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে এই প্রথম সেনা মোতায়েন হচ্ছে আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে। ভোটাররা যাতে নির্বিঘেœ ভোট কেন্দ্রে গিয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন তা নিশ্চিত করতেই সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে। বৈঠক শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এম এ সাঈদ সংবাদিকদের বলেন, আমাদের ১ অক্টোবরের মতো একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। তাই সেনা মোতায়েনসহ আরো বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আমরা চাই দুষ্ট লোকেরা সরে যাক। উল্লেখ্য, আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সন্ত্রাসীরা প্রার্থী হওয়ায় ইতোমধ্যে জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনে ব্যাপক সহিংসতার আশংকা করা হচ্ছে। এই কারণে নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করতে সরকারি-বেরসকারী কর্মকর্তারা অনীহা প্রকাশ করছেন। নির্বাচনে সহিংসতার অশংকার কারণেই সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে বলে জানা যায়। (দৈনিক ভোরের কাগজ-০৫-৪-০২ঈঃ) আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সিইসিতে বৈঠক সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে কঠোর পদক্ষেপ অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে আগামী ২৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য ঢাকা, খুলনা এবং রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোট গ্রহণ প্রশ্নে নির্বাচন কমিশন কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। নির্বাচনে প্রতিবন্ধকতা এবং জাল ভোট প্রদানের অভিযোগে গ্রেফতারকৃতদের তৎক্ষনিক সামরিক ট্রায়ালে বিচার করা হবে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সন্ত্রাসী ও মাস্তানসহ অশুভ শক্তি প্রতিহত করতে এ সময় সেনাবাহিনী মোতায়েন থাকবে। (দৈনিক দিনকাল-০৫-০৪-০২ঈঃ)
মূলতঃ নির্বাচনী প্রক্রিয়ার উদাহরণ জনৈক ওলী আল্লাহ্র সেই কলসির মত। যাহার সমস্ত গতর জুড়িয়া ভরপুর রহিয়াছে মলমুত্র, শুধু উপরে মুখের ভাগে রহিয়াছে কতগুলো পদ্মফুল। অবশেষে অনিবার্যভাবে উহা বহনকারীর সর্বাঙ্গে পড়িয়া তাহা মহা অপবিত্র, দুর্গন্ধযুক্ত, লাঞ্ছিত এবং বিপর্যস্থ করিয়া তোলে। তাই বলি আর কতকাল নির্বাচনী পদ্মফুলের আহবানে তাকাইয়া থাকা হইবে? উহা বহন করিতে গিয়া যে নির্বাচনী বিষ্ঠায় সর্বাঙ্গ ক্রমাগতভাবে নাস্তানাবুদ হইতেছে তাহার পরেও কি হুঁশ আসিবেনা? অথচ মুসলমান দাবী করিলে একটি হাদীস শরীফই যথেষ্ট ছিল, “যে ক্ষমতা চায় তার প্রতি লা’নত।” আর গণতন্ত্রীরা নির্বাচনপন্থীরা সবসময় ক্ষমতাই চাহে। তাই এ প্রক্রিয়ায় সমস্তটাই লা’নত।
সেই লা’নতের কারণেই নির্বাচনে সন্ত্রাস, সন্ত্রাসী, পেশীশক্তি, অপকৌশল, কুটকৌশল, ছিনতাই, মারা-মারি, হত্যা, গুম, রাহাজানি, মিথ্যা প্রচার, ছলনা ইত্যাদির এত প্রভাব। কাজেই আর দেরী নহে এখনই সময় আসিয়াছে এই লা’নতী গণতন্ত্র সম্পর্কে ভাবিবার।
-মুহম্মদ ওয়ালীউল্লাহ্, বাসাবো, ঢাকা।