বর্তমান ট্রানজিট ব্যবস্থা দেশের জন্য আত্মঘাতি তারপরেও বিনা ফিতে ট্রানজিট সুবিধা নিচ্ছে ভারত ফি বিহীন ট্রানজিটে বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্যতা এবং স্বাধীনতার চেতনা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে

সংখ্যা: ২৫৭তম সংখ্যা | বিভাগ:

অভিজ্ঞমহলের মতে, ট্রানজিট চুক্তিটি এমন ব্যাপক পরিসরে হওয়া উচিত, যেখানে অবকাঠামো থেকে শুরু করে ট্রানজিটের মাশুল সমন্বিতভাবে নির্ধারিত হয়। ট্রানজিটের মাশুল নির্ধারণের ক্ষেত্রে আরো বেশি স্বচ্ছতা দরকার। অথচ বর্তমান কাঠামোয় কিসের ভিত্তিতে মাশুল নির্ধারণ করা হয়েছে, সে সম্পর্কে আমরা সুস্পষ্টভাবে কিছু জানি না।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ট্রানজিটের প্রয়োজনে অবকাঠামো তৈরি করতে হবে। ট্রানজিটের মাশুল ও সারচার্জের মাধ্যমে আদায় হওয়া অর্থেই সেই অবকাঠামো তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। এক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ট্রানজিট ও ট্রান্সপোর্টেশন প্রটোকলের উদাহরণ। উল্লেখ্য, সেখানে সারচার্জ, দূষণ চার্জ, রক্ষণাবেক্ষণ চার্জসহ নানা ধরনের মাশুল রয়েছে।

নৌ-প্রটোকলের আওতায় মাশুল আরোপ করে জুনে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নিয়মিত ট্রানজিট শুরু হয়। ট্রানজিট সুবিধার আওতায় ভারতের কলকাতা থেকে একটি চালান বাংলাদেশের নৌ ও সড়কপথ ব্যবহার করে আশুগঞ্জ হয়ে আগরতলায় গেছে। ট্রানজিটের ক্ষেত্রে প্রতি টন পণ্যের জন্য মাশুল নির্ধারিত হয় ১৯২ টাকা। এর মধ্যে ১৩০ টাকা পাবে শুল্ক কর্তৃপক্ষ, ৫২ টাকা পাবে সড়ক বিভাগ এবং নৌমন্ত্রণালয় পাবে ১০ টাকা।

যদিও সরকারের পক্ষ থেকে ট্যারিফ কমিশনের নেতৃত্বে গঠিত ট্রানজিট-সংক্রান্ত মূল (কোর) কমিটি নৌপথে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে টনপ্রতি ১ হাজার ৫৮ টাকা মাশুল আদায়ের প্রস্তাব করেছিল। শেষপর্যন্ত যে মাশুল নির্ধারণ করা হয়েছে, তা কোর কমিটির প্রস্তাবিত মাশুলের চেয়ে পাঁচগুণেরও কম।

এ মাশুল নির্ধারণ নিয়েই প্রশ্ন তুলে বলতে হয়, ‘কীভাবে, কিসের ভিত্তিতে এবং কারা ট্রানজিটের মাশুল নির্ধারণ করেছে, কেউই তা জানে না। অথচ এক্ষেত্রে অধিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।’

এখানে উল্লেখ্য, শিলিগুড়ি থেকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে পণ্য পরিবহন খরচের চেয়ে যদি বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে পণ্য পরিবহন খরচ বেশি হয়, তাহলে ভারত শিলিগুড়ি করিডর ব্যবহারে বেশি আগ্রহী হবে। এমনটিই ঘটেছিল খাদ্যশস্য পরিবহনের ক্ষেত্রে। এর ফলে দেড় বছর কোনো ধরনের পণ্য পরিবহন বন্ধ ছিল। পরে চার্জ কমানোর ফলে আবারো ট্রানজিটের আওতায় পণ্য পরিবহন শুরু হয়।

ট্রানজিটের ক্ষেত্রে একাধিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যকার সমন্বয়হীনতাকে বড় সমস্যা ‘ট্রানজিটের মূল দায়িত্বের সঙ্গে তিন থেকে চারটি বিভাগ জড়িত। কিন্তু এসব বিভাগের মধ্যে সমন্বয়ের কার্যকর কোনো কৌশল এখন পর্যন্ত আমাদের নেই।’

পর্যবেক্ষক মহল মনে করে যে, ট্রানজিটের সুবিধা বাংলাদেশ নয়, ভারতের জন্য। কারণ কলকাতা থেকে আগারতলা যেতে দীর্ঘপথ ব্যবহার করতে হতো। আগারতলা যেতে শিলিগুড়ি, আসাম, মেঘালয়, করিমগঞ্জ হয়ে পাড়ি দিতে হতো ১ হাজার ৫৬০ কিলোমিটার পথ। এজন্য সময় লাগত আট দিন বা ১৯২ ঘণ্টা। ট্রানজিট ব্যবহারে কলকাতা-ঢাকা-আগরতলা পথে যেতে সেই দূরত্ব এক হাজার কিলোমিটার কমে হয়েছে ৫৫৯ কিলোমিটার। চালানটি গেছে ৫১ ঘণ্টায়। তাই এই সুযোগ বাংলাদেশের কোনো কাজে আগেও লাগেনি, সামনেও লাগবে না বলে মনে করা হচ্ছে।

বর্তমানে ধার্যকৃত প্রতিটনে ট্রানজিট ফি (শুল্ক) ৫৮০ টাকা, যা কমিয়ে ১৩০ টাকা করার প্রস্তাব করেছে ভারত। এনবিআরের পক্ষ থেকে প্রতিটন পণ্যের জন্য ট্রানজিট ফি ৫৮০ টাকা (৭ ডলার) নির্ধারণের বিষয়ে বলা হয়, প্রক্রিয়াকরণ বাবদ খরচ ১০, ট্রানশিপমেন্ট বাবদ ২০, স্ক্যানিং ব্যয় ৩০০, মার্চেন্ট ওভারটাইম ৪০, নিরাপত্তা ১০০, পণ্য এসকর্ট ফি ৫০, অটোমেশন ফি ১০ এবং অন্যান্য ফি ধরা হয় ৫০ টাকা। ভারত অবশ্য এই ফি বেশি উল্লেখ করে তা কমিয়ে বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার নীতিমালা অনুসরণের পরামর্শ দেয়। এই নীতিমালা অনুসরণ করা হলে প্রতিটন পণ্যের ক্ষেত্রে ট্রানজিট ফি ২ থেকে ৩ ডলারের বেশি হবে না।

বলাবাহুল্য, বাংলাদেশ ভারতের দ্বারা একের পর এক শোষণের শিকার হলেও ভারত কৌশলে বাংলাদেশের কাছ থেকে তাদের নিজস্বার্থ আদায় করে নিচ্ছে। যার একটি অন্যতম উদাহরণ হলো এই ট্রানজিট। অথচ বাংলাদেশ সংবিধানের ১৪৩নং অনুচ্ছেদে বর্ণিত হয়েছে-

(১) আইনসঙ্গতভাবে প্রজাতন্ত্রের উপর ন্যস্ত যেকোনো ভূমি বা সম্পত্তি ব্যতীত নিম্নলিখিত সম্পত্তিসমূহ প্রজাতন্ত্রের উপর ন্যস্ত হইবে।

(ক) বাংলাদেশের যেকোনো ভূমির অন্তঃস্থ সমস্ত খনিজ ও অন্যান্য মূল্যসম্পন্ন সামগ্রী;

(খ) বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় পানিসীমার অন্তরবর্তী মহাসাগরের অন্তঃস্থ কিংবা বাংলাদেশের মহীসোপানের উপরিস্থ মহাসাগরের অন্তঃস্থ সমস্ত ভূমি, খনিজ ও অন্যান্য মূল্যসম্পন্ন সামগ্রী; এবং

(গ) বাংলাদেশে অবস্থিত প্রকৃত মালিকবিহীন যেকোনো সম্পত্তি।

উপরোক্ত অনুচ্ছেদে যেমন বাংলাদেশের উপর বাংলাদেশী প্রজাসাধারণের মালিকানা প্রতিভাত হয়েছে তেমনি এ মালিকানা সাপেক্ষে বিদেশের সাথে চুক্তির ক্ষেত্রেও জনগণের অবগতির কথা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।

বাংলাদেশ সংবিধানের ১৪৫নং ‘ক’ অনুচ্ছেদে বর্ণিত হয়েছে- ‘বিদেশের সহিত সম্পাদিত সমস্ত চুক্তি রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করা হইবে এবং রাষ্ট্রপতি সংসদে পেশ করিবার ব্যবস্থা করিবেন।’

ট্রানজিট চুক্তির সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনীতির বিষয় ছাড়াও সার্বভৌমত্বের বিষয়টি জড়িত। কাজেই এ চুক্তি সম্পাদনের আগে জনগণের মতামত গ্রহণ করা এবং লাভ-ক্ষতির বিষয়গুলো গভীরভাবে অনুধাবন করা আবশ্যক।

না জানানোর কারণে ভারতের সাথে ট্রানজিটের ক্ষেত্রে সম্পন্ন চুক্তিতে কী আছে, আর কী নেই তা বোধগম্য নয়। তবে যেহেতু বাংলাদেশের উপর দিয়ে মালামাল পরিবহন হবে, নিরাপত্তার বিষয়টি চলে আসে। সেক্ষেত্রে হোস্ট সরকারকে (বাংলাদেশ) বিষয়টি পরিষ্কার করতে হবে।

পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন, দেশের নিরাপত্তা বিঘিœত করে এমন সিদ্ধান্ত কোনো উন্মাদ-পাগল ছাড়া কেউ নিতে পারে না। পাশাপাশি উল্লেখ্য, পৃথিবীর বহু দেশে ট্রানজিট আছে। কিন্তু এত সস্তায় কোথাও নেই। আবার এর অনেক ভয়ঙ্কর দিকও রয়েছে। ভারতের পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে বাংলাদেশের নৌবন্দরগুলোয় পতিতালয় গড়ে উঠবে। কারণ বর্তমান রাষ্ট্রব্যবস্থায় বন্দর কেন্দ্রিক পতিতালয় গড়ে উঠেছে। অপরদিকে ভারতে এইডস মহামারি আকারে। সেক্ষেত্রে ভারতীয় ট্রাক চালকদের মাধ্যমে বাংলাদেশেও এইচআইভি ছড়াবে। যা উদ্বেগের বিষয়।

সঙ্গতকারণেই আমরা মনে করি, ট্রানজিট দেয়ার  সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী, রাষ্ট্রের স্বার্থ বিরোধী। সমালোচক মহল বলেন, রাষ্ট্রকে ব্যক্তিগত মনে করে সরকার দিল্লির কাছে আত্মাকে বন্ধক রাখতে পারে না। অভিজ্ঞ মহল মনে করেন, বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য আছে, এটাকে নিজের দেশ মনে করে এমন কোনো সরকারের পক্ষে ট্রানজিটের ফাঁদে পা দেয়ার কথা না।

-আল্লামা মুহম্মদ তা’রীফুর রহমান

খতমে নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির “ইসলামী শরীয়তের হুকুম মুতাবিক যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হয় যেমন-  কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩ দিন এরপর তওবা না করলে তাদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।”

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৩

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১২

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২১

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩১