চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৪৯

সংখ্যা: ২০৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

-আল্লামা আবুল বাশার মুহম্মদ রুহুল

বর্তমান সংখ্যার আলোচনা: ইহুদীদের মদদপুষ্ট হয়ে এবং সউদী ওহাবী শাসকগোষ্ঠীর অর্থে সাহায্যপ্রাপ্ত হয়ে সারা বিশ্বে একটি হিজরী ক্যালেন্ডার অনুসরণের অলীক স্বপ্ন নিয়ে একটি ভুঁইফোঁড় সংগঠন সারা দেশে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।

‘জবধষ ঐরুৎর ঈধষবহফধৎ ওসঢ়ষবসবহঃধঃরড়হ ঈড়ঁহপরষ ইধহমষধফবংয’ নামে এই সংগঠনটি সারা বিশ্বে একটি হিজরী ক্যালেন্ডার অনুসরণের পক্ষে অর্থাৎ সারা বিশ্বে একদিনে ঈদ পালন করার পক্ষে নানা প্রচারণা চালাচ্ছে এবং এ সম্পর্কে ৯০টি খোঁড়া যুক্তি দাঁড় করিয়েছে। আমরা ধারাবাহিকভাবে তাদের বর্ণিত শরীয়তের খিলাফ এই মনগড়া যুক্তির শরীয়তসম্মত এবং সঠিক মতামত প্রকাশ করবো ইনশাআল্লাহ। যেন সাধারণ মুসলমানগণ চাঁদের তারিখ নিয়ে বিভ্রান্তিতে না পড়ে। তারা লিখেছে-

 (পূর্ব প্রকাশিতের পর)

৩৭ নম্বর মতামত: প্রত্যেক চন্দ্রমাসের দৈর্ঘ্য  (মোট দিনের সংখ্যা) সারা পৃথিবীর সকল জায়গায় সমান হবে। (২:১৮৫)

৩৮ নম্বর মতামত: পবিত্র কুরআন শরীফ অনুযায়ী আমরা একটি বিশ্ব চাঁদ ক্যালেন্ডার প্রস্তুত এবং তা অনুসরণ করতে পারি।

৩৭ নম্বর মতামতের জবাব: হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত হয়েছে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “যে আমার নামে মিথ্যাচারিতা করে, সে যেন তার স্থান জাহান্নামে নির্ধারণ করে নেয়।” এখন কেউ যদি মহান আল্লাহ পাক উনার কালাম পাক-এ যা ইরশাদ হয়নি তা নিজের মতো করে উল্লেখ করে আয়াত শরীফ হিসেবে চালিয়ে দিতে চায় তাদের স্থান যে জাহান্নামের অতল গহ্বরে হবে এতে কোন সন্দেহ নেই। সারা বিশ্বে একদিনে ঈদ পালন করার লক্ষ্যে যুক্তি দিতে গিয়ে এ সকল মিথ্যাবাদী, কাজ্জাব গোষ্ঠী, তাদের ৩৭ নম্বর মত প্রকাশ করে ব্রাকেটে উল্লেখ করেছে ২:১৮৫ অর্থাৎ সূরা বাক্বারার ১৮৫ নম্বর আয়াত শরীফ তার দলীল। অথচ সূরা বাক্বারার ১৮৫ নম্বর আয়াত শরীফ-এ এ রকম কোন তথ্যের উল্লেখ নেই। শুধু সূরা বাক্বারা নয়, কুরআন শরীফ-এর কোন আয়াত শরীফ-এ উল্লেখ নেই যে, প্রত্যেক চন্দ্রমাসের দৈর্ঘ্য সারা পৃথিবীর সকল জায়গায় সমান হবে।

চাঁদ একটি উপবৃত্তাকার কক্ষপথে পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। চাঁদ মাসে একবার পৃথিবী এবং সূর্যের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থান করে তখন তার অন্ধকার দিকটি পৃথিবীর দিকে এবং আলোর দিকটি সূর্যের দিকে থাকে, আর এ অবস্থাকে বলা হয় অমাবস্যা। সমস্ত পৃথিবীর যে কোন অঞ্চলে দিন-রাত্রি থাকুক না কেন অমাবস্যা একটা নির্দিষ্ট সময়ে সংঘটিত হয়। কিন্তু অমাবস্যা দিয়ে কখনো চন্দ্রমাস গণনা করা হয় না। চন্দ্রমাস গণনার শরীয়তের নির্দেশ হচ্ছে অমাবস্যার পর যখন কোন অঞ্চলের সন্ধ্যায় চাঁদ (হিলাল) প্রথম দৃশ্যমান হবে, তখন চাঁদ দেখে নতুন চন্দ্রমাস শুরু হবে। সেদিন চাঁদ দেখা না গেলে পূর্ববর্তী মাসটি ৩০ দিনে পূর্ণ হবে। অর্থাৎ চন্দ্রমাস কখনো ২৯ দিনে হয়, কখনো ৩০ দিনে হয়। আবার যে অঞ্চলে দেখা যাবে তারা ২৯ দিনে গণনা করবে। আর যারা দেখতে পাবে না তারা ৩০ দিনে গণনা করবে। অর্থাৎ সারা বিশ্বে সকল জায়গায় চন্দ্রমাসের দৈর্ঘ্য (মোট দিনের সংখ্যা) সমান হবে না। চন্দ্রমাসের দৈর্ঘ্য যে সমান হবে না তা হাদীছ শরীফ দ্বারাই প্রমাণিত। যেমন হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “তোমরা চাঁদ দেখে রোযা কর, চাঁদ দেখে রোযা থেকে বিরত থাক (ইফতার কর)। আর যদি মেঘের কারণে চাঁদ দেখা না যায় তবে মাস ত্রিশ দিনে পূর্ণ কর।”

অথচ এ সকল মিথ্যাবাদীর দল নিজেদের মত প্রতিষ্ঠা করার জন্য নিজেদের মতকে কুরআন শরীফ-এর আয়াত শরীফ হিসেবে চালিয়ে দেয়ার ধৃষ্টতা দেখাচ্ছে। নাঊযুবিল্লাহ!

৩৮ নম্বর মতামতের জবাব: এ সকল কাজ্জাব গোষ্ঠী কি কুরআন শরীফ থেকে কোন দলীল দিতে পারবে যেখানে “একটি বিশ্ব চাঁদ ক্যালেন্ডার” প্রস্তুতের আদেশ রয়েছে। কখনোই পারবে না। তাহলে কুরআন শরীফ নিয়ে মিথ্যাচারিতা করার এতটা দুঃসাহস তারা পেলো কোথায়? তবে কি তারা ইহুদী-মুশরিকের উচ্ছিষ্টভোগী হয়ে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে? বরং তাদের নফসের মতের বিপরীত আদেশ কুরআন শরীফ-এ রয়েছে।

যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনার কাছে তারা বাঁকা চাঁদ সম্পর্কে জানার আর্জি পেশ করেছে, আপনি বলুন এটি হচ্ছে সময় নির্ধারক এবং হজ্জের সময় ঠিক করার মাধ্যম।” পবিত্র হজ্জ পবিত্র মক্কা শরীফ-এ গিয়ে পালন করতে হয়, ফলে হজ্জের সময় নির্ধারণ করতে হলে মক্কা শরীফ-এ হিলালের অবস্থা অনুযায়ী সময় ঠিক করতে হবে। অর্থাৎ মাস গণনা করতে হবে আবার “সময় ঠিক করার মাধ্যম” অর্থাৎ সকল অঞ্চল তাদের নিজ নিজ এলাকার হিলালের অবস্থান অনুযায়ী, দেখা অনুযায়ী সময় গণনা করবে, মাস নির্ধারণ করবে। কিন্তু কোথাও উল্লেখ নেই যে একটি বিশ্ব পঞ্জিকা রচনা করতে হবে এবং অনুসরণ করতে হবে। তথাকথিত ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক কুরআন শরীফ-এর ইলম হাছিল না করে মনগড়া ব্যাখ্যা করে যাচ্ছে। তাদের উচিত এই লিখিত মিথ্যাচারিতার কাফফারা হিসেবে লিখিতভাবে মুসলমানগণের কাছে ক্ষমা চাওয়া। নতুবা তাদের জন্য অপেক্ষা করছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।

বিশ্বের জন্য ১৪৩২ হিজরীর পবিত্র

যিলক্বদ মাসের চাঁদের রিপোর্ট

জিরো মুন (অমাবস্যা) সংঘটিত হবে ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১১, মঙ্গলবার, সকাল ১১টা ০৯ মিনিটে (আন্তর্জাতিক সময় অনুযায়ী)।

অমাবস্যার দিন অর্থাৎ ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১১, মঙ্গলবার সউদী আরবে পবিত্র যিলক্বদ মাসের চাঁদ দেখা যাবার কোন সম্ভাবনা নেই।

বাংলাদেশের জন্য ১৪৩২ হিজরীর পবিত্র

যিলক্বদ মাসের চাঁদের রিপোর্ট

বাংলাদেশের স্থানীয় সময় অনুযায়ী জিরো মুন (অমাবস্যা) সংঘটিত হবে ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১১, মঙ্গলবার বিকাল ৫টা ০৯ মিনিটে।

বাংলাদেশে পবিত্র যিলক্বদ মাসের চাঁদ তালাশ করতে হবে ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১১, বুধবার সন্ধ্যায়।

সেদিন ঢাকায় সূর্যাস্ত ৫টা ৪৯ মিনিটে এবং চন্দ্রাস্ত ৬টা ১৫ মিনিটে। অর্থাৎ সূর্যাস্ত এবং চন্দ্রাস্তের সময়ের পার্থক্য ২৭ মিনিট। সূর্যাস্তের সময় চাঁদ দিগন্তরেখার প্রায় ৬ ডিগ্রী উপরে অবস্থান করবে এবং চাঁদ খুঁজতে হবে ২৫৪ ডিগ্রী আজিমাতে। সেদিন চাঁদ দেখার সম্ভাবনা কম।

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রসচিব, স্বরাষ্ট্র যুগ্মসচিব (রাজনৈতিক) মহোদয়-এর প্রতি- খোলা চিঠি বিষয়: ৭১-এ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান গ্রহণকারী একমাত্র দরবার শরীফ, মুক্তিযুদ্ধোত্তর সময় থেকেই জামাত-শিবিরের তীব্র বিরোধিতা ও দমনকারী, * গত দু’দশক ধরে জঙ্গি কওমী, ধর্মব্যবসায়ী তথা জামাত-জোটের বিরুদ্ধে দীপ্ত অবস্থান গ্রহণকারী, ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’-এর নামে ‘আল বাইয়্যিনাত’কে কালো তালিকাভুক্তি করায় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বুদ্ধিজীবী মহল, সুশীল সমাজ, ধর্মপ্রাণ মানুষ হতবাক ও বিস্মিত এবং বিশেষভাবে মর্মাহত। * পাশাপাশি সংবাদপত্রে প্রকাশিত ৩৪টি জঙ্গি সংগঠনের মধ্যে ‘আল বাইয়্যিনাত’-এর নাম না থাকলেও তা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। * পক্ষান্তরে বাকি ২২টি জঙ্গি সংগঠনের দীর্ঘদিনের সক্রিয়তা থাকলেও তাদেরকে বাদ দিয়ে গত শুক্রবার মাত্র ১২টি কালো তালিকাভুক্ত করায় সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা রিপোর্ট নিয়ে বিশেষ জোরালো প্রশ্ন উঠেছে। এমনকি ২৬শে এপ্রিল-২০০৯ রোববারের ‘দৈনিক আমাদের সময়’ পত্রিকায়ও প্রকাশিত হয়েছে যে, ‘বগুড়ার হিযবুল্লাহর নাম নেই কেন?’ অথচ তা একটি চিহ্নিত অস্ত্রধারী সংগঠন। * অপরদিকে ‘আল বাইয়্যিনাত’কে জঙ্গি বলা হবে ইতিহাসের সবচাইতে নির্মম অপবাদ এবং মহা মিথ্যাচার আর জামাতী-জঙ্গিদের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কন্ঠস্বরের প্রতি চরম ও গভীর ষড়যন্ত্র। কারণ, তাতে কওমী, জামাতী ও জঙ্গিরা তথা ধর্মব্যবসায়ীরাই মহা উপকৃত ও শক্তিশালী হবে যেহেতু ‘আল বাইয়্যিনাত’-এর মতো কেউই ওদের হাক্বীক্বত উন্মোচন করতে পারবে না। * উপরোল্লিখিত সঙ্গতকারণে ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’-এর নামে ‘আল বাইয়্যিনাত’কে কথিত কালো তালিকা থেকে বাদ দেয়া প্রসঙ্গে।

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬০

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-৯

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-২৮

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-১৯ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস ওহাবী ফিরক্বাসহ সবগুলো বাতিল ফিরক্বা ইহুদী-নাছারাদের আবিষ্কার! তাদের এক নম্বর দালাল