পাপিষ্ঠ ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহি ও তার সমর্থনকারীদের ব্যাপারে সঠিক ফায়ছালা

সংখ্যা: ২৫৭তম সংখ্যা | বিভাগ:

পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে খাছ ও মূল ফায়ছালা বা ফতওয়া হচ্ছে পাপিষ্ঠ ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহি সে নিজে এবং তার অনুসারী ও সমর্থনকারীরা কেউই মুসলমান উনাদের অন্তর্ভুক্ত নয়। বরং তারা প্রত্যেকেই কাট্টা কাফির, চির মালউন ও চিরজাহান্নামী হবে। শুধু এতটুকুই নয় বরং ক্বিয়ামত অর্থাৎ অনন্তকাল পর্যন্ত ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহিকে যারা সমর্থন করবে, তার ছানা ছিফত করবে এবং যারা তাকে লা’নাতুল্লাহি আলাইহি বলতে চুঁ চেরা, ক্বীল-ক্বাল করবে বা সন্দেহ সংশয় প্রকাশ করবে তারাও প্রত্যেকেই কাট্টা কাফির চির মালউন ও চির জাহান্নামী হবে।

কেউ কেউ পাপিষ্ঠ ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহিকে তাবিয়ী ও তার নামে রহমতুল্লাহি আলাইহিও বলে থাকে। নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! আবার কেউ তাকে ছাহাবী ও তার নামে রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলে। নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! কিন্তু পাপিষ্ঠ ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহির নামে ছাহাবী, তাবিয়ী, রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, রহমতুল্লাহি আলাইহি ইত্যাদি কোনটিই বলা যাবে না। কেননা ছাহাবী, তাবিয়ী, রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, রহমতুল্লাহি আলাইহি ইত্যাদি বলার জন্য যেসব শর্ত রয়েছে সেসব শর্ত তার মধ্যে নেই।

ছাহাবী হওয়ার জন্য শর্ত হচ্ছে- সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দেখা, উনার প্রতি ঈমান আনা ও উনার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করা এবং ঈমানের সাথে ইনতিকাল করা। পাপিষ্ঠ ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহি সে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দেখেনি। তার জন্ম হচ্ছে আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত খিলাফত মুবারক কালে ২৪ হিজরী সনে। তাই তাকে ছাহাবী, রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলার প্রশ্নই উঠেনা।

অনুরূপ তাকে তাবিয়ীও বলা যাবে না। কেননা সম্মানিত তাবিয়ী হওয়ার জন্যও শর্ত-শারায়িত রয়েছে। কেউ তাবিয়ী হওয়ার জন্য কোন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে ঈমানের সাথে দেখা এবং আরো শর্ত হচ্ছে ঈমানের সাথে ইনতিকাল করা। উক্ত শর্তসমূহ পাপিষ্ঠ ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহির মধ্যে না থাকার করণে তাকে তাবিয়ী ও রহমতুল্লাহি আলাইহি ইত্যাদি কোনটিই বলা যাবে না।

মূলতঃ কাট্টা কাফির, মালউন ও চিরজাহান্নামী কাবিল ও কিনানের মতোই সেও কাট্টা কাফির, মালউন ও চিরজাহান্নামী।

কাবিল মহান আল্লাহ পাক উনার নবী ও রসূল হযরত আদম ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সন্তান। সে মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ মুবারক অমান্য করে স্বীয় ভাই হযরত হাবিল আলাইহিস সালাম উনাকে শহীদ করেছে। এ কুফরী আমলের কারণে সে কাট্টা কাফির ও চিরজাহান্নামী হয়ে গেছে। নাউযুবিল্লাহ!

অনুরূপ হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার ছেলে কেনান, সেও মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ মুবারক উনার বিপরীত কাফির মুশরিকদের পরামর্শ গ্রহণ এবং তাদের সাথে চলাফেরা করার কারণে কাট্টা কাফির ও চিরজাহান্নামী হয়ে যায়। তার কুফরী আমলের কারণে সে কিশতীতে উঠতে পারেনি। সে মহাপ্লাবনে অথৈই পানিতে হাবডুবু খেতে খেতে বেঈমান অবস্থায় অর্থাৎ কুফরী অবস্থায় মারা যায় এবং জাহান্নামের কঠিন আযাবে গ্রেফতার হয়ে যায়। নাউযুবিল্লাহ!

একইভাবে আখিরী উম্মতের জন্য নাজাত লাভ করার কিশতী হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা। উনাদেরকে যারা মুহব্বত করবে, সম্মান করবে, খিদমত করবে শুধুমাত্র তারাই নাজাত পাবে। মুহব্বত, সম্মান ও খিদমত মুবারকের পরিবর্তে উনাদের প্রতি যারা  বিদ্বেষ পোষণ করবে বিরোধিতা করবে, আসম্মান, অপদস্ত করবে, কষ্ট দিবে তারা ঈমানহারা হয়ে কাট্টা কাফির অবস্থায় মারা যাবে এবং চিরজাহান্নামী হবে। অথচ সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের যিনি সম্মানিত ইমাম হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনাকে কারবালার প্রান্তরে অত্যন্ত নির্মমভাবে শহীদ করা হয় পাপিষ্ঠ ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহির হুকুমেই! নাউযুবিল্লাহ!

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, কারবালার প্রান্তরে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এবং উনার সম্মানিত সঙ্গী সাথী ও অনুসারী উনাদেরকে যারা শহীদ করবে তারা এবং তাদের যারা সমর্থনকারী সকলেই আমার শাফায়াত থেকে বঞ্চিত থাকবে।

সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنِ حَضْرَتْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ الله تعالى عَنْهُمَا قَالَ اَوْحَى الله تَعَالَى إِلَى مُحَمَّدٍ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنّى قَتَلْتُ بِيَحْيَى بْنِ زَكَرِيَّا سَبْعِينَ الْفًا وَاِنّى قَاتِلٌ بِابْنِ ابْنَتِكَ سَبْعِينَ أَلْفًا وَسَبْعِينَ أَلْفًا.

অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট সম্মানিত ওহী মুবারক করেন যে, নিশ্চয়ই আমি হযরত ইয়াহইয়া ইবনে যাকারিয়া আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত শাহাদাত মুবারক উনার সাথে সংশ্লিষ্ট সত্তর হাজার লোককে কাফফারা বাবদ নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছি, ধ্বংস করে দিয়েছি। সুবহানাল্লাহ! আর নিশ্চয়ই আমি আপনার লখতে জিগার, আওলাদ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার যিনি সম্মানিত আওলাদ ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত শাহাদাত মুবারক উনার সাথে সংশ্লিষ্ট যারা থাকবে, তাদের সত্তর হাজার এবং সত্তর হাজার তথা এক লক্ষ চল্লিশ হাজার লোককে কাফফারা বাবদ নিশ্চিহ্ন করে দিবো, ধ্বংস করে দিবো।” সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরকে হাকিম শরীফ ৩/১৯৫, খছায়িছুল কুবরা শরীফ ২/২১৪, ইমতা‘উল আসমা’ ১২/২৩৭, শরহুয যারক্বানী ‘আলাল মাওয়াহিব ১০/১৫২ ইত্যাদি)

কাজেই, পাপিষ্ঠ ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহিকে সমর্থন করা, ভালো বলা, তাবিয়ী বলা, রহমতুল্লাহি আলাইহি ইত্যাদি বলা থেকে বিরত থাকতে হবে, সতর্ক থাকতে হবে। অন্যথায় তার বা তার দলের অনুসারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী হতে হবে।

আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শাফায়াত মুবারক ব্যতীত কেউই নাজাত ও জান্নাত লাভ করতে পারবে না।

-আল্লামা মুফতী সাইয়্যিদ আবূ আহমদ খুবাইব

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম