প্রসঙ্গঃ গণতন্ত্র; এখনই চরম সময়, বিষয়টি ভাবিবার- ৬

সংখ্যা: ১০৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

তাহার আগ পর্যন্ত তাহারা ছিলেন, যখন রাষ্ট্রীয় অতিথির সম্মানে দেয়া ভোজ সভায়, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রীয় রীতি অনুযায়ী গান-বাজনা শুরু হইল তখন প্রথমে নতমুখে বাহির হইলেন এক মাওলানা মন্ত্রী। অতঃপর তাহাকে অনুসরণ করিলেন বৃদ্ধ শাইখ। বয়সে কম হইলেও, বাহিরে বিষোদগার করিলেও কার্যতঃ এই বৃদ্ধ শাইখ বরাবরই উক্ত মাওলানাকে অনুসরণ করিয়া থাকেন। পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন যে, এই মাওলানারাই উক্ত বৃদ্ধ শাইখ গংকে ছলে বলে কৌশলে তথাকথিত ইসলামী রাজনীতির মাঠে নামাইয়াছিলেন।

এক্ষণে আক্বীদাগত, আদর্শগত ফারাক ঢের থাকিলেও কায়েমী স্বার্থবাদ আর নফ্সানিয়াতের কারণে দুজনেই একসাথে গলাগলি করিয়া তথাকথিত ইসলামী রাজনীতির নামে গণতন্ত্রের ছবক মশ্ক করিতেছেন। নারী নেতৃত্বের প্রতি চরম আনুগত্য প্রকাশে আশ্চর্যজনক পটুতা দেখাইতেছেন। এইদিকে নারী নেতৃত্বের সহিত তাহাদের দহরম, মহরমের তথা উষ্ণ সম্পর্কের খবর পত্রিকার পাতাও দখল করিতেছে। খবরে প্রকাশ, কিছুদিন পূর্বে এই বৃদ্ধ শাইখ যখন অসুস্থ হইয়া পড়িয়াছিলেন তখন নেত্রী আমেরিকায় থাকায় তাহার নির্দেশে তাহার বিশেষ দূত, তাহার পক্ষ হইতে উক্ত শাইখের কাছে ফুলের তোড়া লইয়া হাজির হইয়াছিলেন। এইদিকে ইসলামের নামে রাজনীতি করিলেও, ইসলামের নামেই বিরাট বিবাদ বিসম্বাদ নিজেদের মধ্যে বিরাজমান থাকিলেও, নেত্রীর সুদৃষ্টি আকর্ষণে তাহারা মহিলা নেত্রীর রোগমুক্তির কামনায় একযোগে সুর উঠাইয়াছিলেন। কিন্তু কথা হইল এত মানিক-জোড় সম্পর্ক থাকিবার পরও তাহারা ইসলামী রাজনীতিক হিসাবে ইসলামী দাবীগুলি নেত্রীর দ্বারা বাস্তবায়ন করিতে পারিতেছেন না! কার্যতঃ নেত্রীর কাছে উত্থাপন পর্যন্ত করিতে সাহস পাইতেছেন না। কারণ খোদ নেত্রী নয়, নেত্রীর সিনিয়র মন্ত্রীরাই তাহাদের ইতিমধ্যে একথা শুনাইয়া রপ্ত করিয়া দিয়াছেন যে, এই দেশ গণতান্ত্রিক দেশ, এই সরকার গণতান্ত্রিক সরকার। গণতান্ত্রিক প্রশাসনে, রাষ্ট্রীয় প্রটোকলে ইসলামী নিয়ম-কানুন অচল। কাজেই সামান্য অসুস্থতার কারণে, সুদূর আমেরিকা থাকিলেও নেত্রীর নির্দেশে তাহার কাছে শুভেচ্ছা বার্তারূপে ফুলের তোড়া পাঠানো হইলেও, বর্তমানে খোদ নেত্রী উপস্থিত থাকিবার পরও থাই প্রধান মন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াতরা-এর সম্মানে আয়োজিত নৈশভোজে উক্ত শাইখ গং এবং মাওলানা মন্ত্রীকে দাওয়াত করা হইলেও তাহাদের সম্মানে নেত্রী গান-বাজনার আয়োজন বন্ধ করিলেন না। কারণ ইহাই গণতন্ত্রের নিয়ম। ৯ জুলাই’০২ হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত এই নৈশভোজ হইতে  অবশেষে প্রথমে উক্ত মাওলানা মন্ত্রী এবং তাহার পর বৃদ্ধ শাইখ নত মুখে বাহির হইয়া আসিয়াছিলেন। কিন্তু এইখানেও থাকিয়া যায় কথা। প্রশ্ন উঠে ইহার দ্বারা কি উক্ত ব্যক্তিদ্বয় এই প্রমাণ করিতে চাহিয়াছিলেন না যে, আয়োজিত এই গান-বাজনার অনুষ্ঠান অনৈসলামিক আর তাহারা ইসলামী রাজনীতিক। গান শোনা তাহাদের পক্ষে শোভা পায়না। মূলতঃ এই যদি হইয়া থাকে বক্তব্য তাহা হইলে বলিতে হয় আরো কথা। কারণ এই গান-বাজনার পূর্বে কি উক্ত ব্যক্তিদ্বয় উক্ত অনুষ্ঠানে অজস্র নারী মুখ দর্শন করিয়া নিজেদের নফ্সকে অনৈসলামিক আনন্দের সুযোগ দেন নাই? বিশেষতঃ তাহাদের নেত্রী এবং তাহার পাশে থাই প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রীর চেহারার দিকে বক্তৃতাকালে  যে তাহারা তাকাইয়াছিলেন অথবা ইতিপূর্বে যে নেত্রীর সহিত বহুবার এক টেবিলে বসিয়া বৈঠক করিয়াছিলে, খাওয়া-দাওয়া করিয়াছিলেন, একই গাড়ীতে চড়িয়া ফিরিয়াছিলেন, একই মঞ্চ হইতে গণতন্ত্রের পক্ষে উদাত্ত আহবান করিয়াছিলেন তখন ইসলাম কোথায় ছিল? কুরআন শরীফ কি ইসলামের ভিত্তি নহে? আর কুরআন শরীফে কি স্বয়ং আল্লাহ্ পাক চৌদ্দজনের বাহিরে দেখা-সাক্ষাৎ নিষেধ করিয়া দেন নাই? তাহা হইলে কুরআন শরীফের কথায়ও তিনি কর্ণপাত করিতেছেন না কেন? নাকি নিজেকে শাইখুল হাদীস দাবী করেন দেখিয়া, ভাবিয়া বসিয়া আছেন যে, দাবীকৃত শাইখুল হাদীস হিসাবে তাহাকে হাদীসের উপর আমল করিলেই চলিবে, কুরআন শরীফের উপর আমল না হইলেও চলিবে। কিন্তু গলদটা তো সেইখানেও জাহির হইয়া পড়িতেছে। কারণ এই হাদীস শরীফেই তো ব্যক্ত হইয়াছে, “যে জাতির প্রধান হয় মহিলা সে জাতির প্রতি আল্লাহ্ পাক-এর লা’নত।”

হাদীস শরীফে আরো ব্যক্ত হইয়াছে, “যে ঘরে ছবি থাকে সে ঘরে রহমতের ফেরেশতা থাকেনা।”

কাজেই দেখা যাইতেছে যে, তিনি শাইখুল হাদীস দাবী করিলেও, হাদীস শরীফের ভাষ্য অনুযায়ী লা’নতী আমলে নিজেদের জড়াইয়া ফেলিয়াছেন। আর এই লা’নতই তাহাদেরকে ঠেলিয়া দিয়াছে লা’নতপ্রাপ্ত, গযবপ্রাপ্ত ইহুদী-খ্রীষ্টানদের পথ গণতন্ত্র করিতে। যেই গণতান্ত্রিক রীতি অনুযায়ী বেপর্দা চলিতে হয়, নারী নেতৃত্ব, ভোট-নির্বাচন, মদ, সুদ-ঘুষ ইত্যাদি সব অনৈসলামী কাজ তথা হারাম কাজ জায়িয করিতে হয়।

কাজেই এখনই চরম সময় এই লা’নতী ‘গণতন্ত্র’ সম্পর্কে ভাবিবার। সেই সাথে লা’নতগ্রস্থ তথাকথিত ইসলামী রাজনীতিকদের সম্পর্কেও সচেতন হইবার। মহান আল্লাহ্ পাকই তাওফীক দানের মালিক।

 -মুহম্মদ ওয়ালীউল্লাহ, বাসাবো, ঢাকা।

“ফজলুর জিহালতীর জবাব” সত্যিই রাজারবাগীদের নিকট ‘দ্বীনে রেযাখানী’ নিরাপদ নয় সংশোধনী না সূক্ষ্ম প্রতারণা?

“ভারতে মুসলমানদের উপর হিন্দুদের বর্বরতা ও পৈশাচিক আক্রমণ; প্রাচীন কাল হতেই হিন্দুদের এই নির্মম প্রবণতা” ঐতিহাসিক দলীল সম্বলিত একটি অনুসন্ধানী রচনা-৩

শুধু আজকের প্রেক্ষাপটে নয়, অতীত ইতিহাস হতেই ইহুদী-খ্রীষ্টানরা মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু মুসলিম সন্ত্রাসবাদ নয়, মার্কিন হামলার পিছনে কি ইহুদী-খ্রীষ্টানরাই দায়ী নয়? -১০

ইল্মে আক্বলিয়ার দৈন্য এবং বিলায়েতের অনুপস্থিতির কারণে প্রকৃত আলিমে দ্বীন তৈরী হচ্ছে না

আকবরের আমলের উলামায়ে ‘ছূ’দের উত্তরাধিকারী মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে॥ দ্বীনে ইলাহীর আদলে দ্বীনে জুমহুরী প্রচলনে তারা এক হয়েছে-১