(ধারাবাহিক)
বৃটিশ তদন্তকারী টিম রিপোর্ট দিয়েছে যে, গোধরায় ট্রেনে হিন্দুদের যে বগীতে মুসলমানরা বাইরে থেকে আগুন লাগিয়েছিলো বলে অভিযোগ তুলেছিল সে অভিযোগ সম্পূর্ণই ভিত্তিহীন। তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে যে, উক্ত ট্রেনে বাইরে থেকে আগুন লাগানোর কোন উপায় ছিলনা। তদন্তে এও প্রমাণিত হয়েছে যে, আগুন লাগানো হয়েছে পরিকল্পিতভাবে ভিতর থেকেই। বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, মুসলমানদের শহীদ করার জন্য একটা বানানো মওকা তৈরী করাই ছিল মূল উদ্দেশ্য। মূলতঃ মুসলমানদের প্রতি নির্মম হত্যা লীলা চালানোর ব্যাপারে ভারতের হিন্দুরা যে কত গভীর নীল-নকশা তৈরী করতে পারে তা খুব সূক্ষ্মভাবে ফিকির না করলে বুঝে উঠা দায়। সম্প্রতি খুব ফলাও করে প্রচার করা হচ্ছে যে ভারতের প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন একজন মুসলমান। পর্যবেক্ষক মহল বলেছেন যে, এর দ্বারা বিশ্ববাসীকে প্রতারণা করা হচ্ছে। ভারতে নিমর্ম মুসলিম হত্যাকান্ড ঘটানোর পর একজন মুসলমানকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করার মাধ্যমে তারা সাম্প্রদায়িক অথবা মুসলমান বিদ্বেষী নয় বলে প্রচার করতে চায়। অর্থাৎ তাদের ভাষায় শিখন্ডির মত একজন মুসলমানকে প্রেসিডেন্ট পদে বসিয়ে তারা সম্প্রীতির মুখোশকে আগলে রাখতে চায়। বর্তমান যামানার মুজাদ্দিদ, ইমামুল আইম্মা, মুহ্ইস সুন্নাহ্, কুতুবুল আলম, আওলার্দু রসূল রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তাঁর খোদায়ী জবানে বলেন, ভারতের মুসলমান নামধারী প্রেসিডেন্ট তথা আমলা মন্ত্রীরা মূলতঃ হিন্দুদের চেয়ে খারাপ। এরা কেবলমাত্র নামেই মুসলমান। কিন্তু আক্বীদায়, অনুভবে, আসলে চরম হিন্দু। যাদের দ্বারা হিন্দুদের চেয়েও বেশী ক্ষতি হয়। ডক্টর জাকির হোসেন ও ফখরুদ্দীন আলীর পর ৩য় মুসলিম প্রেসিডেন্ট বলে প্রচারিত আবুল পাকির জয়নুল আবেদীন আব্দুল কালামের ক্ষেত্রে এ কথা সর্বোত প্রযোজ্য। এপি সূত্রে জানা যায়, “জনাব কালাম মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেও নিজেকে মুসলিম হিসেবে পরিচয় দেননা। তিনি প্রতিদিন হিন্দুশাস্ত্র পাঠ করেন। তিনি একজন নিরামিষভোজী। তিনি ইসলাম ধর্মের পরিবর্তে হিন্দু ধর্মেরই অনুসারী।” (ইনকিলাব/২১শে জুন/০২) অতএব, বুঝতে বাকী থাকেনা যে হিন্দুরা কত গভীর ষড়যন্ত্রকারী। এদিকে গুজরাটের আহমেদাবাদে শহীদ হয়ে যাওয়া লাখ লাখ মুসলমানদের রক্ত না শুকাতেই ফের গত ১২ জুলাই গুজরাটের খেদা শহরে চালানো হয়েছে তাদের উপর হত্যাক্রমণ।
মূলতঃ এটা তাদের আকস্মিক এবং বিচ্ছিন্ন প্রয়াস নয় বরং এটা তাদের সমন্বিত এবং সুচিন্তিত আক্রমণ। আর ফ্রন্ট লাইনে যদিও দু’চারটি সংগঠন থাকে তবু এর পেছনে মূলতঃ গোটা ভারতীয় হিন্দুদেরই জোরালো সমর্থন সক্রিয়ভাবে কাজ করে। গত সংখ্যার পরে এই সংখ্যায় এ ধরণের আরো আলোচনা করা হলো-
বিশ্ব হিন্দু পরিষদ
১৯৬৪ সালের আগস্ট মাসে বোম্বাইতে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের লোকেরা মিলিত হয়ে হিন্দুধর্মের নামে হিন্দুদের একত্রিত করার জন্য স্থাপন করে ‘বিশ্ব হিন্দু পরিষদ।’ হিন্দু সাম্প্রদায়িক দল হিসেবে আর. এস. এস. এবং শিবসেনার সঙ্গে আর একটি সংগঠন ক্রমাগত শক্তি বৃদ্ধি করছে, এটি হলো বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। ১৯৬৪ সালের ২৯শে আগষ্ট সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হয়। শৈব, শাক্ত, বৈষ্ণব, আর্য সমাজ, লিঙ্গায়েত, জৈন ইত্যাদি সম্প্রদায়ের সাধু-সন্ন্যাসীদের “হিন্দু একতা” বা “হিন্দু জাগরণের” নামে এটি ব্যাপক মঞ্চে জমায়েতের উদ্দেশ্যেই বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সৃষ্টি। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ হিন্দু রাষ্ট্রের শ্লোগান নিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে। এই বিষয়ে আর. এস. এস.-এর কাছেও তারা আদর্শগত ঋণ স্বীকার করেছে। “বর্তমান ভারতকে অখন্ড তথা পুনর্বিভাজনের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে ডাক্তারজীর (আর এস. এস. এর. প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ হেডগেয়ার) হিন্দু রাষ্ট্রচেতনাকেই জাগ্রত করতে হবে। হিন্দুত্ব ছাড়া ভারতের অখন্ডতা রক্ষা হবে না।” (সভাপতি, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, পশ্চিমবঙ্গ শাখা, স্বস্তিকা-৯ জানুয়ারি, ১৯৮৯)।
১৯৭৯ সালে প্রয়াগে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের দ্বিতীয় সম্মেলন থেকে “হিন্দু একতা” ও ‘হিন্দু জাগরণের” কর্মসূচী গৃহীত হয়। ১৯৮৮ সালের ২৫শে মার্চ নেপালে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সম্মেলনে সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক শ্রী অশোক সিংহল একবিংশ শতাব্দীকে “হিন্দু একতার শতাব্দী” হিসেবে চিহ্নিত করে।
(চলবে) -মুহম্মদ মাহবুবুর রহমান, ঢাকা।
ইল্মে আক্বলিয়ার দৈন্য এবং বিলায়েতের অনুপস্থিতির কারণে প্রকৃত আলিমে দ্বীন তৈরী হচ্ছে না