মহাঅধঃপতনের মুখে দেশের সমাজ ব্যবস্থা। যিনা-ব্যভিচার বৃদ্ধি পেয়ে প্রতিনিয়ত ডাস্টবিন কিংবা নর্দমায় মিলছে নবজাতকের লাশ। রাষ্ট্রে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে বিবাহ প্রথাকে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বিকৃতমনা থেকে রক্ষা করতে সরকারকে এখনই যিনা-ব্যভিচার ও এর উৎস্যগুলোর বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করতে হবে।

সংখ্যা: ২৮৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

বাংলাদেশ ৯৮ভাগ মুসলিম অধ্যুষিত একটি দেশ। বাংলাদেশের রাষ্ট্রদ্বীন পবিত্র ইসলাম। স্বাভাবিকভাবেই তাই সমাজব্যবস্থায় নীতি-নৈতিকতা এবং উন্নত চারিত্রিক গুণাবলির সংমিশ্রন হওয়ার কথা ছিলো জনগনের মধ্যে। কিন্তু পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে শুধু কাগুজেভাবে রাষ্ট্রদ্বীন ঘোষণা করায় এবং পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার আদর্শ বাস্তবিকপক্ষে প্রয়োগ না করায় দেশের সমাজ ব্যবস্থা আজ কলুষিত হয়ে পড়েছে। সমাজে বাড়ছে নানা ঘৃণ্য অপকর্ম। যা আইয়্যামে জাহেলিয়াতের যুগকেও হার মানাচ্ছে। আইয়্যামে জাহেলিয়াতের যুগে আরবে যেভাবে নারী শিশুদের জীবন্ত মাটিতে পুঁতে ফেলা হতো বর্তমানেও ডাস্টবিনের নোংরা ময়লার স্তুপে, নর্দমায় কিংবা জঙ্গলে, ঝোপ ঝাড়ে প্রায় প্রতিদিনই মিলছে জীবিত কিংবা মৃত নবজাতক। পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে ডাস্টবিনে কুড়িয়ে পাওয়া নবজাতকের সংখ্যা। এ ঘটনা এখন আর কাউকে আলোড়িত করে না। একটি সমাজ ও রাষ্ট্রের অধঃপতন কতটা হলে ডাস্টবিনে নবজাতকের ছিন্নভিন্ন লাশ পাওয়া যায়, কুকুর নিয়ে টানাহেচড়া করে তা সহজেই অনুমেয়। বিশেষজ্ঞরা বলছে, বর্তমান সমাজে পাশ্চাত্যের সভ্যতাবিবর্জিত অপসংস্কৃতি, পর্ণগ্রাফির আগ্রাসন, ভারতীয় টিভি সিরিয়ালের মাধ্যমে পরকীয়ায় উৎসাহিতকরণের মাধ্যমেই মূলত এ সকল ঘটনা সংঘঠিত হচ্ছে।

রাজধানীসহ সারাদেশে গত ৬ বছরে ২১১ নবজাতকের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদেরকে ডাস্টবিন, জঙ্গল, পার্ক, শহরের অলি-গলি ও রাস্তার পাশ থেকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গত দুই মাসে শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকেই ৫টি নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বেশিরভাগ সময়ই তাদের শরীর পচন ধরা অবস্থায় ছিল। এমনকি কাকেও ঠুকরে খেয়েছে এবং কুকুর টানা-হেঁচড়া করছিল।

এসব ঘৃণ্য অপকর্মের ঘটনা রাষ্ট্রে কিংবা সমাজে কিন্তু এমনিতেই ঘটছে না কিংবা সাম্প্রতিক সময়ে এসে ঘটছে না। দীর্ঘকাল ধরে একদিকে আধুনিকতার নামে সমাজে বিস্তার করানো হয়েছে সামাজিক অবক্ষয়, ইন্টারনেটের ভয়াবহতা, মাদকের আগ্রাসন, পর্নোগ্রাফি, অবাধ মেলামেশা। অন্যদিকে, সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে মানুষকে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার আদর্শ-অনভূতি থেকে দুরে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। ফলে যেখানে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি শিশুদের বাগানের সুবাসে পরিপূর্ণ ফুল হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন সেই নিরীহ শিশুদের জায়গা হচ্ছে ডাস্টবিনে কিংবা কুকুরের মুখে। নাউযুবিল্লাহ!

বর্তমান সমাজে বিবাহকে নিরুৎসাহিত করে বিবাহবহির্ভূত অনৈতিক সম্পর্ককে প্রমোট করা হচ্ছে। আর এর ফলস্বরূপ পাশ্চাত্যের বয়ফ্রেন্ড-গার্লফ্রেন্ড নামক ঘৃণ্য অপসংস্কৃতি দেশের যুব প্রজন্মের মধ্যে নেশার মতো বিস্তার ঘটছে। আর এর সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গর্ভপাত। দেশের আইন অনুযায়ী গর্ভপাত নিষিদ্ধ হলেও এর মাত্রা জ্যামিতিক হারে বাড়ছে। শুধু ২০১৪ সালেই দেশে প্রায় ১২ লাখ গর্ভপাত করানো হয়। গর্ভপাত ছাড়াও প্রায় চার লাখ ৩০ হাজার এমআর হয়েছে। ২০১৪ সালেই সন্তান নষ্টের পরিমাণ ছিল প্রায় ১৬ লাখেরও বেশি। যেখানে দেশে মোট গর্ভের সংখ্যা সাড়ে ৪২ লাখ। এই পাপাচারে অবিবাহিত মেয়েরা সবচেয়ে বেশি জড়িত। কথিত বয়ফ্রেন্ডের সাথে অবৈধ মেলামেশার ফলে যখনই গর্ভবতী হচ্ছে, তখনই গোপন পাপ ঢাকতে ডাস্টবিন অথবা গর্ভপাতের পথ বেছে নিচ্ছে। আর এ থেকে স্পস্ট হচ্ছে যে, উন্নয়নের মহাসড়কে দেশ এগিয়ে গেলেও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মূল্যবোধের অভাবে চরম অবক্ষয়ের দিকে চলে যাচ্ছে সমাজ ও রাষ্ট্র।

প্রসঙ্গত, কোনো জাতির মধ্যে কিংবা রাষ্ট্রের মধ্যে যখন যিনা-ব্যভিচার ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়ে, মানুষের আচরণের মধ্যে পশুত্বভাব লক্ষণীয় হয়ে পড়ে তখন সেই জাতি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে যায়। যা ঐতিহাসিকভাবেই প্রমাণিত। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি ঠিক সেই পর্যায়ের দিকেই ধাবিত হচ্ছে। আর এখনও যদি এটির লাগাম টেনে না ধরা হয় তাহলে অদুর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কিংবা যুবা শক্তি একটি বিকৃত পাশ্চাত্যবাদী মানসিকতা নিয়ে বড় হবে।

আমরা মনে করি, রাষ্ট্রব্যবস্থায় সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার আদর্শের প্রতিফলন না হওয়ার কারণেই আজ রাস্তায় রাস্তায় নবজাতক পড়ে থাকছে। কারণ সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে যিনা-ব্যভিচারকে কঠোরভাবে বর্জন করা হয়েছে এবং কঠোর শাস্তি ঘোষণা করা হয়েছে। মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেছেন, তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেও না, অবশ্যই এটা অশ্লীল ও নিকৃষ্ট আচরণ’ (পবিত্র সূরা বণী ইসরাইল: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩২)। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে যিনা-ব্যভিচারের শাস্তি সম্পর্কে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যিনাকারীরা উলংগ অবস্থায় এমন এক চুলার মধ্যে থাকবে যার অগ্রভাগ হবে অত্যন্ত সংকীর্ণ আর নিম্নভাগ হবে প্রশস্ত উহার তলদেশে অগ্নি প্রজ্বলিত থাকবে তাদেরকে তাতে দগ্ধ করা হবে। তারা মাঝে মধ্যে সেখান থেকে বের হয়ে যাওয়ার কাছাকাছি অবস্থায় পৌছে যাবে; অতঃপর আগুন যখন স্তমিত হয়ে যাবে তখন তাতে তারা আবার ফিরে যাবে। আর তাদের সাথে এই আচরণ কেয়ামত পর্যন্ত করা হবে। (বুখারী শরীফ)। অর্থাৎ সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে যিনা-ব্যভিচারের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে, নির্দেশনা মুবারক রয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রীয়ভাবে এসকল নির্দেশনা মুবারক প্রচার করা হয়না। ফলে বাংলাদেশের নাগরিক জীবন আজ একটি কুলষিত পথে হাটছে।

বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার নিজেদের পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের সরকার হিসেবে দাবী করে থাকে। কিন্তু তাদের দাবির বিপরীতে তাদের আচরণ একে অপরের সঙ্গে সাংঘর্ষিত অবস্থানে আছে। তাই সরকার যদি সত্যিকার অর্থেই পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার পক্ষের সরকার হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করতে চায় তাহলে সরকারের জন্য উচিত হবে অনতিবিলম্বে রাষ্ট্র ব্যবস্থায় সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার আদর্শ-অনুভূতির সন্নিবেশ ঘটানো। পাশাপাশি দেশ থেকে পাশ্চাত্যের নোংরা সকল অপসংস্কৃতি, ভারতীয় টিভি-সিরিয়াল, পর্ণগ্রাফি, মাদক ইত্যাদির বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করা এবং রাষ্ট্র থেকে সেগুলো সমূলে উৎখাত করা। যুব প্রজন্মের মধ্যে নীতি-নৈতিকতা ও সামাজিক মূল্যবোধের প্রচার ও প্রসার করা। আর তাতেই এ জাতি কিংবা এ দেশ যিনা-ব্যভিচারের নোংরা পাপাচার থেকে রক্ষা পাবে।

রাজধানীর বায়ুতে বাড়ছে সিসা ও নিকেল।  বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে ৩৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হলেও

রাজধানীবাসী দৈহিক, মানসিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে মহাক্ষতিকর বায়ু দূষণ রোধে সরকারের ভ্রুক্ষেপ নেই।

রাজধানীর জনজট স্থানান্তর বা রাজধানীর বিকেন্দ্রীকরণ করলেই কেবল দূষণমুক্ত নিরাপদ রাজধানী নিশ্চিত হবে।

খতমে নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির “ইসলামী শরীয়তের হুকুম মুতাবিক যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হয় যেমন-  কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩ দিন এরপর তওবা না করলে তাদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।”

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৩

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১২

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২১

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩১