(গত সংখ্যার পর)
ইতোপূর্বে এই লিখায় আলোচিত হয়েছে যে, প্রটোকল পুস্তকটি ইহুদীদের বিশ্বব্যাপী ষড়যন্ত্রেরই কায়েদা কানুন। এ প্রটোকল নিজেই ইহুদীদের চক্রান্ত সম্পর্কে স্পষ্ট সাক্ষী। ১৯৬৮ সালের মে মাসের ‘উর্দূ ডাইজেষ্ট’ পত্রিকায় ‘আল ইয়াহুদু আ’লমী’ নামক আরবী পুস্তকের তরজমা প্রকাশিত হয়। ঐ পুস্তক পাঠে জানা যায় যে, ইহুদী জাতি সমগ্র দুনিয়ায় চক্রান্ত-জাল বিস্তারের জন্য একাধিক গুপ্ত সংস্থা গঠন করে রেখেছে। এদের একটি প্রতিষ্ঠান KAHAL(কাহাল) নামে পরিচিত। দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী ইহুদীদের জন্য এ সংস্থাই নির্দেশ জারি এবং নানা ধরণের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। একে বিভিন্ন রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে একটি পৃথক রাষ্ট্র বলা চলে। ইহুদী জাতির অন্তর্ভুক্ত পুঁজিপতি, শ্রমিক, সর্বহারা, সমাজতন্ত্রী ইত্যাদি সকল ধরণের লোকই এ সংস্থার সদস্য। এরা সকলেই অ-ইহুদীদের পর্যুদস্ত করার লক্ষ্যে জারিকৃত ‘কাহাল’-এর নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করে। এমনকি কোন পুঁজিপতি ইহুদী, অ-ইহুদীদের হাতে নাজেহাল হলে কম্যুনিষ্ট ইহুদী, পুঁজিপতি-ইহুদীর সাহায্যার্থে এগিয়ে আসে। ১৯০৬ সালে নিউইয়র্কে ‘কাহাল’ গঠিত হয়। ধর্মযাজক, রাজনৈতিক নেতা, শিল্পপতি, ব্যবসায়ী ইত্যাদি মহল থেকে ২২২ জন প্রতিনিধি এতে যোগদান করে। ১৯২১ সালে ‘কাহাল’-এর অধীনে এক হাজারেরও বেশী সংখ্যক উপ সংস্থা গঠন করা হয়। ১৯১৮ সালে অনুষ্ঠিত ‘কাহাল’-এর সম্মেলনে ইহুদীদের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিগণ যোগদান করে। বিনইয়ামীন শালী ফারীজার নামক জনৈক রুশীয় ইহুদী মস্কো থেকে এ সম্মেলনে যোগদান করে! লোকটি দীর্ঘকাল যাবৎ লেনিনের মন্ত্রী ছিল। এ ছাড়া রাশিয়া থেকে কয়েকজন কম্যূনিষ্ট শ্রমিক নেতাও ঐ সম্মেলনে যোগদান করে। দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠানটি হচ্ছে ‘জিউইশ এজেন্সী’ (Jewish Agency) । এটিও ১৯০৬ সালে গঠিত হয়েছে। উভয় প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য ও কার্যসূচী প্রায় একই। ইহুদীরা ভিন্ন ভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিভক্ত রয়েছে, অ-ইহুদীদের তথা মুসলমানদের মনে এরূপ ভ্রান্ত ধারণা সৃষ্টির উদ্দেশ্যেই সম্ভবতঃ দুটি পৃথক প্রতিষ্ঠান গঠন করা হয়েছে। জিউইশ এজেন্সী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ১২টি অঞ্চলে বিভক্ত করে প্রতিটি অঞ্চলের জন্য একজন প্রভাবশালী ইহুদী কর্মকর্তা নিয়োগ করে রেখেছে। এ সংস্থায় আমেরিকার উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মচারী, বড় বড় ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, বিচারপতি, পুলিশ অফিসার, অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ, ব্যাংক ডাইরেক্টর এবং শ্রমিক ও রাজনৈতিক নেতা শামিল রয়েছেন। এ দুটি সংস্থা বর্তমানে নিম্ন বর্ণিত তৎপরতায় লিপ্ত রয়েছেঃ (১) যে সব দেশে ইহুদী বাসিন্দা রয়েছে, সেসব দেশে মজবুত প্রতিষ্ঠান গঠন করে ইহুদীদের সংঘবদ্ধ করা। (২) অ-ইহুদী ও ইহুদী বিরোধী তথা মুসলমানদের সর্বতোভাবে ক্ষতি সাধন করা। (৩) অ-ইহুদীদের তথা মুসলমানদের উপর ইহুদীদের পরিপূর্ণ আধিপত্য কায়িম করা। মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকায় বিপুল সংখ্যক ইহুদী বাস করে। সংবাদপত্র, সংবাদ সরবরাহ প্রতিষ্ঠান, শিল্প-ব্যবসায়, ব্যাংক ইত্যাদি সর্বস্তরে ইহুদীদের প্রভাব অত্যন্ত প্রবল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রীম কোর্ট, হোয়াইট হাউজ, গুরুত্বপূর্ণ সরকারি অফিস ইত্যাদি সকল স্থানেই ইহুদীদের প্রভাব রয়েছে। রথ্সচাইল্ড খান্দান বিপুল ধন-সম্পদের প্রভাবে ইউরোপ ও আমেরিকায় অনেক অঘটন ঘটিয়েছে। (উল্লেখ্য, রথ্সচাইল্ড খান্দানই বর্তমানে সবচেয়ে প্রভাবশালী চক্র, যারা শুধু ইহুদীবাদই নয়, বিশ্ব ব্যাংক, আন্তর্জাতিক অর্থ সংস্থা (অুএ) ও জাতিসংঘও নিয়ন্ত্রণ করে। এরাই সমগ্র বিশ্বের রাজনীতিকে প্রভাবিত করার জন্য নানা রূপ গুপ্ত ও প্রকাশ্য সংগঠন তৈরী করেছে। রথসচাইল্ডরা বর্তমানে যেসব সংগঠন দিয়ে বিশ্বকে প্রভাবিত করছে, সেগুলোর মধ্যে ট্রাইলেটারাল কমিশন (Trilateral Commission), বিল্ডার বার্গার গ্রুপ (Builder berger Group), অর্ডার অব সেন্ট জন (Order of st. john) ইত্যাদির নাম উল্লেখযোগ্য। পূর্বতন রাজনৈতিক মতবাদগুলো ছাড়াও বর্তমানে তারা ট্রটস্কীবাদ (New Trotskytes Fourth International), সোস্যালিষ্ট ইন্টারন্যাশনাল (Socialist international), বাহাই মতবাদ, কাদিয়ানী মতবাদ, হরেকৃষ্ণ হরেরাম, ইসকন, আনন্দমার্গ, ইসমাইলিয়া, জেমস্ জোন্স ইত্যকার মতবাদ ও সংস্থাগুলোকে পরিচালিত করছে। বিশ্ব ইহুদীবাদীদের সবচেয়ে বড় সাফল্য হলো ইঙ্গ-মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ও বৈদেশিক দফতরকে তাদের প্রভাব বলয়ে নিয়ে আসা। এতে করে তাদের বিজ্ঞ মুরুব্বীদের রচিত কৌশল অনুযায়ী কাজ করা অনেকটা সহজ হয়ে গেছে।)
আমেরিকার স্বাধীনতা আন্দোলনে এ পরিবার বিস্তর অর্থ ব্যয় করেছে। পুনরায় গৃহযুদ্ধ বাঁধিয়ে দিয়ে ২০ লাখ ডলার উপার্জন করেছে। রথ্সচাইল্ডের পাঁচজন পুত্র ছিলো। (১) আমান্সলাম ফ্রাংকফুর্টে, (২) সলোমন্-ভিয়েনায়, (৩) নান্ মায়ার-লন্ডনে, (৪) চার্লস-নেপলসে এবং (৫) জেম্স-প্যারিসে বাস করতো। ইউরোপে অনুষ্ঠিত সকল যুদ্ধে এরাই ছিল প্রকৃত নেতা। এদের মৃত্যুর পর এ খান্দানের পরবর্তী বংশধরগণ এ নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। (উল্লেখ্য, বর্তমানে স্যার এডমন্ড দ্য রথসচাইল্ড লন্ডন থেকে এদের নেতৃত্ব দিচ্ছে) এদের কৌশল খুবই অদ্ভুত। যুদ্ধের উস্কানী মূলতঃ এরাই দেয়। যুদ্ধ শুরু হলে বিবদমান পক্ষদ্বয়কে এরাই সমর্থন করে এবং ধার-কর্জ দিয়ে সাহায্য করে। (উল্লেখ্য, বর্তমানেও সমগ্র কম্যূনিষ্ট (সমাজতান্ত্রিক) বিশ্ব ব্যাংকারদের ঋণের জালে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িত। কম্যূনিষ্ট বিশ্বের মোড়ল সোভিয়েত রাশিয়ার ঋণের বোঝা ক্রমশঃই বেড়ে চলছে (আনন্দ বাজার)। এইসব ব্যাংকারের অসীম ক্ষমতার পরিচয় পাওয়া যাবে প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ রবার্ট ফেইস (Robert Feess) লিখিত Europe the World Bankeer এবং অন্যান্য বই-এ। লেখক নিজেই মার্কিন প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা ছিলেন। সুতরাং তাকে অবিশ্বাস করার কোন সঙ্গত কারণ নেই)। সন্ধিপত্র স্বাক্ষরিত হবার সময়ও তারা উপস্থিত থাকে এবং নিজেদের প্রভাব বিস্তার করে সন্ধিপত্রে এমন সব দফা সংযোজিত করে যেন এদের দেয় ঋণ সূদসহ আদায় করা সম্ভব হয়।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকা যোগদান করতে চায়নি। কিন্তু ইহুদীরাই আমেরিকাকে যুদ্ধে টেনে নামায়। প্রেসিডেন্ট উইলসনের ব্যক্তিগত বন্ধু ও হোয়াইট হাউজের সবচাইতে বেশী প্রভাবশালী ইহুদী বানার্ড বাররুখই আমেরিকাকে যুদ্ধে যোগদান করতে বাধ্য করে এবং এ যুদ্ধের সময় বাররুখ প্রকৃতপক্ষে সে দেশের ডিক্টেটর ছিল। যুদ্ধ শেষে ভার্সাই নামক স্থানে বৃহৎ শক্তির মধ্যে যে সন্ধিচুক্তি সম্পাদিত হয়, সে বৈঠকেও বাররুখ যোগদান করে। এমনকি চারজন প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে অনুষ্ঠিত গুপ্ত বৈঠকে পর্যন্ত বাররুখ উপস্থিত ছিল।
এবার রাশিয়ার ভিতরের অবস্থা দেখা যাক। করাচী থেকে প্রকাশিত Muslim News lnternationl পত্রিকায় ১৯৬৭ সালের মার্চ সংখ্যায় বিখ্যাত মনীষী ও রাজনীতিবিদ মাওলানা জাফর আহমদ আনছারীর রচিত একটি প্রবন্ধ পাঠে জানা যায় যে, রাশিয়ার সাম্যবাদও ইহুদী ষড়যন্ত্রেরই অপর একটি দিক মাত্র। যে সব তথ্যের ভিত্তিতে তিনি এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন, সেগুলো সংক্ষেপে নিম্নরূপ- (১) কম্যূনিষ্ট আন্দোলনের মূলে যাদের মন মগজ কাজ করেছে তাদের সকলেই ইহুদী। কম্যূনিজমের জন্মদাতা কার্লমার্কস (Karl Marks) মাতাপিতা উভয়ের দিক থেকেই ইহুদী। লেনিন এবং ট্রটস্কিও ইহুদী বংশেরই সন্তান। (উল্লেখ্য, কম্যূনিষ্ট আন্দোলনে ইহুদী প্রভাব সম্পর্কে প্রচুর বিবরণ দেয়া হয়েছে বৃটিশ নৌ-বাহিনীর জনৈক অফিসার কর্তৃক লিখিত ‘পন ইন দি গেম’ (Pawn in the game) নামক বইটিতে। এছাড়া সম্প্রতি ঢাকার ইংরেজী সাপ্তাহিক ‘হলিডে’তে প্রকাশিত এ তথ্য থেকে জানা যায় যে, রুশ বিপ্লবী ট্রটস্কী ছিলেন মূলতঃ একজন ইহুদীবাদী (Zionist Bolsnevic Communist)। লেনিনের মা ও স্ত্রী এবং ষ্ট্যালিনের স্ত্রী ইহুদী ছিল। (২) রুশীয় বিপ্লবের পূর্ব মুহূর্তে ইহুদী সম্প্রদায় নানাবিধ চক্রান্তে লিপ্ত ছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হবার পর লেনিন এবং তার দু’শ কমরেড জার্মানী থেকে একটি রেলগাড়ীতে চড়ে গোপনে রাশিয়ায় প্রবেশ করেন। এ দু’শ কমরেডের মধ্য থেকে ১৬৫ জনের নামের তালিকা পাওয়া গেছে। উক্ত তালিকা থেকে জানা যায় যে, ১৬৫ জনের মধ্যে ১২৬ জনই ছিল ইহুদী সম্প্রদায়ভুক্ত। লেনিনের রাশিয়া প্রবেশের অব্যবহিত পরে আমেরিকার ৩০০ ইহুদীকে নিয়ে ট্রটস্কিও সেখানে উপনীত হন। তারপর তারা সকলে মিলে রাশিয়ায় বিপ্লব ঘটানোর পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বিপ্লব বাস্তবায়নের কাজ সম্পাদন করেন। (৩) বলশেভিক দল রাশিয়ার শাসন ক্ষমতা দখল করার পর শাসনযন্ত্র ইহুদীদের হাতে চলে যায়। বিপ্লবোত্তর রাশিয়ার শাসনযন্ত্রের ৫৫৬টি গুরুত্বপূর্ণ পদের ৪৫৭টিই ইহুদীদের করায়ত্ত ছিল। (৪) ইহুদী লেখকরা রুশীয় বিপ্লবের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছে। আলেকজান্ডার বিটলম্যান (Alexander Bittleman) তার The Jewish People……..world” নামক পুস্তকে রাশিয়ায় কম্যূনিষ্ট শাসন ব্যবস্থাকে নিম্নের ভাষায় অভিনন্দন জানানঃ
If not for the Red Army, there would be no jews in Europe today, not palestine, not in Africa and in the United State of America, the length of our existence would be counted in days…………The Soviet Unions State saved the jewish people, therefore, let the American jewish masses never forget our historic debt to the saviour of the jewish people of the Soviet Union.
অর্থাৎ- লাল ফৌজের সাহায্য ছাড়া বর্তমান ইউরোপ, ফিলিস্তিন এবং আফ্রিকায় ইহুদীদের অস্তিত্বই বিলুপ্ত হয়ে যেত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও আমাদের জাতীয় আয়ু সীমিত হয়ে আসতো …. তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইহুদী অধিবাসীগণ যেন কখনও রুশীয় ইহুদীদের মহানূভবতা ভুলে না যায়। (উল্লেখ্য যে, এই রেড আর্মি গঠন ও পরিচালনা করেন স্বয়ং ইহুদীবাদী কম্যূনিষ্ট ট্রটস্কি) ‘আল ইয়াহুদুল আ’লমী’ পুস্তকে ইহুদীদের বিশ্বব্যাপী চক্রান্তকারী অপর একটি প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানটির নাম হচ্ছে ‘জামেয়া ইয়াহুদা’। দুনিয়ার সকল দেশেই এর শাখা রয়েছে। এ ছাড়া আরো দুটি শক্তিশালী হাতিয়ার এদের কুক্ষিগত রয়েছে। এর একটি হলো সম্পদ এবং অপরটি সাংবাদিকতা। ‘জামেয়া ইয়াহুদা’ ১৯১৪ সালে প্যারিসে স্থাপিত হয়। পরে এর সদর দফতর লন্ডনে চলে যায়। বর্তমানে এর কেন্দ্রস্থল হচ্ছে নিউইয়র্ক এবং সেখান থেকেই বিশ্বব্যাপী ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করা হয়। জাতিসংঘ ঃ জাতিসংঘের কার্যকলাপ বিশ্লেষণ করলে একথা সুস্পষ্ট হয়ে উঠে যে, এ বিশ্ব সংস্থাটি প্রকারান্তরে ইহুদীদের হাতের পুতুল মাত্র। বিশ্ব শান্তির নামে স্থাপিত এ প্রতিষ্ঠানটি এ যাবৎ ইহুদী স্বার্থেরই হিফাযত করে আসছে। নিউইয়র্কের বিখ্যাত ইহুদী আইন ব্যবসায়ী হেনরী ক্লায়েন(Henry klien) তার পুস্তক Zions rule the world, New york 1948. এর এক স্থানে লিখেছেন- “The United Nations is Zionism. It is the super government mentioned many times in the Protocols of the Learned Elders of Zion promulgated between 1897-1905”. অর্থাৎ জাতিসংঘ ইহুদীবাদেরই নামান্তর মাত্র। ১৮৯৭ সাল থেকে ১৯০৫ সালের মধ্যে জারিকৃত বিজ্ঞ ইহুদী মুরুব্বীদের প্রটোকল পুস্তকে বহুবার যে সুপার গর্ভনমেন্টের বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে, এটা তাই। এটা বাস্তব সত্যেরই অকুক্ত স্বীকৃতি। ফিলিস্তিনে ইহুদীদের উড়ে এসে জুড়ে বসার সুযোগ দান, ১৯৪৮ সালে অন্যায়ভাবে জাতিসংঘ কর্তৃক ফিলিস্তিন বিভক্তির প্রস্তাব গ্রহণ এবং ১৯৪৮ সালে অনুষ্ঠিত আরব-ইসরাইল যুদ্ধের পর ফিলিস্তিন থেকে বিতাড়িত মুসলিম মুহাজিরদের পুনর্বাসনের প্রতি জাতিসংঘের ঔদাসীন্য ইত্যাদি থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, জাতিসংঘ ইহুদীদেরই পক্ষে কাজ করছে। লাহোর থেকে প্রকাশিত উর্দূ সাপ্তাহিক এশিয়ার ইহুদীদের প্রভাব সম্পর্কে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশিত হয়। উক্ত তথ্য থেকে জানা যায় যে, জাতিসংঘের শতাধিক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে ইহুদী অফিসার সমাসীন রয়েছে। জাতিসংঘ সেক্রেটারিয়েটের ২২টি বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা ইহুদী। নিম্নবর্ণিত জাতিসংঘ শাখা কমিটিগুলোতে সর্বোচ্চ পদগুলো ইহুদীদের দখলে রয়েছে। (১) জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা (united Nations Educational, Scientific and Cultural Organisation) (২) আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (ILO) (৩) আন্তর্জাতিক খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO) (৪) বিশ্ব ব্যাংক (World bank) (৫) আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক কর্পোরেশন (IFC)।
এছাড়াও জাতিসংঘ সেক্রেটারিয়েটে নিম্নতম দায়িত্বে অসংখ্য ইহুদী রয়েছে এবং তারা একটি পরিকল্পনা মাফিক কাজ করে যাচ্ছে বলে ঐ একই খবরে প্রকাশ। সুতরাং জাতিসংঘও যে ইহুদীদেরই ইঙ্গিতে উঠা-বসা করবে, তাতে আর সন্দেহ কি! চক্রান্ত বিশারদ ইহুদী সম্প্রদায় একটি ব্যাপক ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা মাফিক দুনিয়ার সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করে চলছে এবং প্রটোকল বর্ণিত বিশ্বব্যাপী ইহুদী রাষ্ট্র কায়েমের জন্য ক্ষেত্র প্রস্তুত করছে। বিভিন্ন সমিতির ছদ্মাবরণে ইহুদীঃ ইহুদী সম্প্রদায় নিজেদের পরিচয় গোপন রেখে অ-ইহুদী দেশসমূহে বিভিন্ন নামে আধ্যাত্মিক শিক্ষাবিস্তার বা জনকল্যাণমূলক কাজের বাহানায় ক্লাব ও সমিতি গঠন করে এবং অতি সঙ্গোপনে ষড়যন্ত্রমূলক তৎপরতা চালিয়ে যায়। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ফ্রি-ম্যাসন আন্দোলন বিশেষভাবে উল্লেখ্যযোগ্য। প্রটোকল বইতেও ফ্রি ম্যাসন আন্দোলনকে ইহুদীদের হাতিয়ার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আমরা নিম্নে এ আন্দোলনের কিছুটা পরিচয় দিচ্ছি- লায়ন ও রোটারী ক্লাবঃ লায়ন ও রোটারী ক্লাব মূলতঃ ফ্রি-ম্যাসনেরই প্রকাশ্য সার্ভিস ইউনিট। এই দু’টি ক্লাবের অপ্রতিহত কার্যকলাপের প্রমাণ পাওয়া যাবে বাংলাদেশের মন্ত্রীদের পরিচিতিতে। খবরের কাগজে প্রকাশিত এই পরিচিতিতেই দেখা যায় যে, বাংলাদেশের মন্ত্রীদের অনেকেই হয় লায়ন ক্লাব না হয় রোটারী ক্লাবের সদস্য। ক্লাব দু’টি বাংলাদেশ, পাকিস্তানসহ ছোটবড় বিভিন্ন মুসলিম দেশে কাজ করছে। এসব ক্লাবের নাম-ই বিদেশী ভাবধারার বাহক। তাছাড়া এ ক্লাবগুলোর আদর্শ, উদ্দেশ্য, কার্যসূচী ও সংগঠন পদ্ধতি অত্যন্ত গোপন। সাধারণতঃ সমাজের উচ্চস্তরের লোকেরাই এসব ক্লাবে যোগদান করে। উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদেরও এ দুটি ক্লাবের সদস্যপদ গ্রহণ করতে দেখা যায়। পাকিস্তান সরকার সামরিক অফিসারদের এসব ক্লাবে যোগদান করতে নিষেধ করার ফলে বেশ পরিষ্ক ারভাবেই বুঝা যায় যে, দেশ রক্ষার দৃষ্টিতে এসব ক্লাবের তৎপরতা সন্দেহজনক। ’৬৮ সালের ২রা জুন তারিখে লাহোরের সাপ্তাহিক ‘এশিয়া’ পত্রিকায় Jewish Conspiracy and the Muslim World” বইয়ের লেখক জনাব মিসবাহুল ইসলাম ফারুকী একটি প্রবন্ধ লিখে সরকারের নিকট ফ্রি-মাসন আন্দোলনের সঙ্গে লায়ন এবং রোটারী ক্লাব দুটিকেও নিষিদ্ধ ঘোষণা করার দাবি জানান। তাঁর এ দাবি এত যুক্তিযুক্ত ও তথ্যসমৃদ্ধ ছিল যে, কর্তৃপক্ষ মহল তা খন্ডন করতে পারেননি।
-সাইয়্যিদ মুহম্মদ আলমগীর, ঢাকা।
মানব ক্লোনিং- পরিণতি ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা