খেজুর পাতার চাটাইয়ের মধ্যে শোয়া সুন্নত
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খেজুর পাতার চাটাই মুবারকে শয়ন করেছেন। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ نَامَ عَلٰى حَصِيْرٍ فَقَامَ وَقَدْ أَثَّرَ فِىْ جَسَدهِ الشَّرِيْف فَقَالَ حَضْرَتْ اِبْنُ مَسْعُوْدٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَوْ اَمَرْتَنَا اَنْ نَّبْسُطَ لَكَ وَنَعْمَلَ . فَقَالَ مَا لِـيْ وَمَا لِلدُّنْيَا ومَا اَنَا وَالدُّنْيَا إِلَّا كَرَاكِبٍ اِسْتَظَلَّ تَحْتَ شَجَرَةٍ ثُمَّ رَاحَ وَتَرَكَهَا
অর্থ: ফক্বীহুল উম্মত হযরত আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, একদা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খেজুর পাতার তৈরী একটি (খালী) চাটাই মুবারকে বিশ্রাম নিয়েছিলেন। অতঃপর যখন তা হতে উঠলেন তখন দেখা গেল উনার নূরুল মুজাসসাম তথা জিসিম মুবারকে চাটাই মুবারকের দাগ পড়েছে। ইহা দেখে ফক্বীহুল উম্মত হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! যদি আপনি আমাদেরকে ইযাজত মুবারক দিতেন তাহলে আমরা আপনার জন্য একখানা মানসম্মত বা উত্তম বিছানা মুবারক বিছিয়ে দিতাম। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, দুনিয়ার সাথে আমার কি সম্পর্ক? মূলতঃ আমার এবং দুনিয়া মাঝে সম্পর্ক হলো, একজন আরোহীর ন্যায়। যিনি একটি গাছের ছায়ায় কিছু সময়ের জন্য বিশ্রাম নেন অতঃপর ঐ বৃক্ষটিকে রেখে আবার চলে যান। (আহমদ শরীফ, তিরমিযী শরীফ, ইবনে মাযাহ, মিশকাত শরীফ)
নিকাহ বা বিবাহ করা খাছ সুন্নত
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যা করেছেন তাকেই খাছ সুন্নত মুবারক বলা হয়। নিকাহ বা বিবাহ হচ্ছে এমন একটি খাছ সুন্নত মুবারক। বিবাব না করে জীবন-যাপন করা উত্তম নয়। উপরন্তু বিবাহের মধ্যে রয়েছে অফুরন্ত কল্যাণ ও বরকত। নিকাহের দ্বারা এমন অনেক খাছ সুন্নত মুবারক পালন করা সহজ ও সম্ভব হয় যা অবিবাহিত লোকেরা জীবনে কখনো পালন করতে পারেন না। যার ফলে তারা সে সকল সুন্নত মুবারক পালন করা থেকে মাহরূম বা বঞ্চিত থাকেন।
আর সকলেই অবগত যে, সুন্নত মুবারক পালনের মধ্যেই রয়েছে রহমত, বরকত, সাকীনা। তাতে রয়েছে উন্নতির চাবিকাঠি। কেননা প্রতিটি সুন্নত মুবারকের মর্যাদা ফযীলত হচ্ছে একশ জন শহীদ উনাদের সম মর্যাদা। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَنْ تَـمَسَّكَ بِسُنَّتِـىْ عِنْدَ فَسَادِ اُمَّتِـىْ فَلَه اَجْرُ مِائَةِ شَهِيْدٍ
অর্থ: যে ব্যক্তি ফিতনা-ফাসাদের যুগে আমার একটি সুন্নতকে দৃঢ়তার সাথে পালন করবে সে একশত শহীদ উনাদের মর্যাদা পাবে। সুবহানাল্লাহ!
তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
مَنْ اَحْيٰ سُنَّتِـىْ فَقَدْ اَحْيٰنِـىْ وَمَنْ اَحْيٰنِـىْ كَانَ مَعِىَ فِـى الْـجَنَّةِ
অর্থ: যে ব্যক্তি আমার বিলুপ্ত সুন্নতকে জিন্দা করলো সে যেন আমাকেই জিন্দা করলো। আর যে আমাকে জিন্দা করবে সে ব্যক্তি আমার সাথে সম্মানিত জান্নাতে অবস্থান করবে। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই, যিনি যতবেশি সুন্নত পালন করবেন তিনি ততবেশী তায়াল্লুক মুবারক প্রাপ্ত, নৈকট্য মুবারক প্রাপ্ত হবেন। তিনি ততবেশী নিছবত প্রাপ্ত হবেন।