আল্লামা মুফতী মুহম্মদ কাওছার আহমদ
মহান আল্লাহ পাক উনার প্রিয় রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি শত্রুতা ভাবাপন্ন চির লা’নতগ্র¯’, অভিশপ্ত জাতী, ইহুদী-নাছারা, মজুসি, মুশরিক। তারা উনার পবিত্র আদর্শ তথা মত-পথ থেকে মু’মিন, মুসলমানগণকে বি”িছন্ন করার জন্য নিত্যনতুন ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করছে। এখন তাদের হিংসুটে দৃষ্টি মু’মিন-মুসলমানগণের শিশু সন্তানদের প্রতি গভীরভাবে নিবদ্ধ। তারা পবিত্র কুরআন শরীফ, সুন্নাহ শরীফ সম্পর্কে অজ্ঞ কতিপয় ডাক্তারদের দ্বারা শিশু সন্তানদেরকে পবিত্র সুন্নত থেকে মাহরূম (বঞ্চিত) করার নানা ধরনের অমুলক, অলিক কথা-বার্তা প্রচার করছে। “শিশু সন্তানকে তা’যীন, তাহনীক করা যাবেনা। গোসল দিলে সন্তানের ক্ষতি হয়। মাথার চুল ফেলানো যাবেনা।” ইত্যকার নানান কথা বলে পবিত্র সুন্নতকে বিলীন করার ষড়যন্ত্র করছে। আর কিছু অজ্ঞ মুসলমান তারা তাদের এই ষড়যন্ত্রের জালে আবদ্ধ হচ্ছে। তারা তাদের কথা বিশ্বাস করে নিজের কাঙ্খিত শিশু সন্তানকে সুন্নত থেকে মাহরূম (বঞ্চিত) রেখে ইহুদী-খ্রিস্টানদের আদর্শে আদর্শিত হওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করছে। নাউযুবিল্লাহ!
যামানার মহান ইমাম ও মুজতাহিদ খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি ইহুদী-নাছারা, মজুসী-মুশরিকদের এই ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের মূলে আঘাত হেনেছেন। তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ এবং আধুনিক বিজ্ঞান দ্বারা প্রমাণ দিয়েছেন যে, এগুলো তাদের মনগড়া, কল্পনাপ্রসূত, অজ্ঞতামূলক, উদ্দেশ্য প্রনোদিত এবং গভীর ষড়যন্ত্রমূলক ও স্বা¯ে’র জন্য ক্ষতিকর। কাজেই, তা সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাজ্য।
পক্ষান্তরে তা’যীন-তাহনীক ইত্যাদি বিষয়গুলো পবিত্র সুন্নত মুবারক এবং স্বাস্থসম্মত ও অত্যন্ত উপকারী।
নবজাতক শিশুর তা’যীন-তাহনীক করা সুন্নত:
تاذين (তা’যীন) অর্থ: আযান দেয়া। সন্তান ভুমিষ্ট হলে সেই সন্তানের ডান কানে আযান ও বাম কানে ইক্বামত দিতে হয়। ইহাকে ‘তা’যীন’ বলে। এই আযান হবে নামাযের আযানের ন্যায়। সন্তান ভুমিষ্ট হওয়ার পর নাড়ি কাটতে হয়। তারপর প্রথমে তাকে গোসল দিতে হয় যা সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত। প্রথমতঃ লবণ ও পানি দিয়ে, অতঃপর খালিছ (শুধু) পানি দ্বারা গোসল দিতে হয়। তদাহলে ফোঁড়া, গোটা-গাটি ইত্যাদি রোগ থেকে শিশু মুক্ত থাকতে পারবে (ইনশাআল্লাহ)। ভেজা কাপড় দ্বারা শিশুর নাক, কান, গলা, মাথা ভালভাবে পরিষ্কার করতে হবে। কেননা, অপরি”ছন্নতা থেকে শিশুর নানা রোগের সৃষ্টি হয়। মনে রাখতে হবে পরিস্কার-পরি”ছন্নতার গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
النظافة من الايمان
অর্থ: “পরিষ্কার-পরি”ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ।” মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
ان الله يحب التوابين ويحب الـمتطهرين
অর্থ: “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারী ও পরিষ্কার-পরি”ছন্নতা অবলম্বনকারী ব্যক্তিকে মুহব্বত করেন।” (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২২)
শিশু-সন্তান পবিত্রতার পর কোন কিছু খাওয়ার পূর্বেই ডান কানে আযান এবং বাম কানে ইক্বামত দিতে হয়। এই আযান নবজাতকের কাছ থেকেই দিতে হয়। তবে তা হবে অল্প আওয়াজে। অতিরিক্ত বা বিকট আওয়াজ নবজাতকের ক্ষতির কারণ হতে পারে। কাজেই, তার সহনীয় আওয়াজেই আযান দিতে হবে। দুনিয়াবী কোন আওয়াজ তার কানে পৌঁছার পূর্বেই এই আযান হওয়া বাঞ্ছনীয়। যেন দুনিয়াতে এসেই সে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহত্ম-বড়ত্ম শুনতে পায়। আর মরদুদ শয়তান যেন সে সন্তানের উপর কোন তা’ছীর বা প্রভাব ফেলতে না পারে।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে, “ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম তিনি বর্ণনা মুবারক করেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যার সন্তান হয় সে যেন তার ডান কানে আযান এবং বাম কানে ইক্বামত দেয়।” (শুয়াবুল ঈমান, মুসনাদে আবী ইয়ালা, মুসন্নাফে আব্দুর রাযযাক)