সন্তানকে তিনটি বিষয় ভালভাবে শিক্ষা দিতে হবে-৩
যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ ইমামুছ শরীয়ত ওয়াত ত্বরীকত, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
প্রত্যেক পিতা-মাতার দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে, শৈশবকালেই স্বীয় সন্তানকে বিশেষভাবে তিনটি বিষয়ে শিক্ষা দেয়া।” কারণ এই শিক্ষার অভাবে পরবর্তী জীবনে মুসলমানের ঘরে জন্মগ্রহণকারী সন্তান নাস্তিক হয়, মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরুদ্ধচারণ করে। কাফির-মুশরিক, বেদ্বীন-বদ্বীনদের তল্পীবাহী, আজ্ঞাবহ দাসে পরিনত হয়। (নাউযুবিল্লাহ) যার জন্য মাতা-পিতাই সর্বাংশে দায়ী। এই দায়ভার সেই সকল পিতা-মাতার উপর বর্তাবে না, যারা স্বীয় সন্তানকে নিম্নোক্ত তিনটি বিষয় বিশেষভাবে শিক্ষা দিবেন-
১) সন্তানকে জানিয়ে দিতে হবে, নছীহত করতে হবে যে, বৎস! তোমাকে আল্লাহওয়ালা হতে হবে। কখনো দুনিয়াদার হওয়া যাবে না।
২) তোমাকে প্রতিদিন আল্লাহওয়ালা তথা ওলীআল্লাহগণ উনাদের ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করতে হবে। তুমি যেখানেই থাক না কেন প্রতিদিন উনাদের ছোহবত মুবারকে যাবে।
৩) শত্রুদেরকে চিনিয়ে দিতে হবে। কারা কারা শত্রু এবং তাদের শত্রুতার রকম-ধরণ কিরূপ তা ভালোভাবে বুঝিয়ে দিতে হবে। কেননা শত্রুদের পরিচয় জানা না থাকার কারণে তারা পরবর্তী জীবনে শত্রুদের চক্রান্তে পড়ে পর্যদুস্ত হয়। যার কারণে ইচ্ছায় অনিচ্ছায় তাদের তল্পীবাহী হয়ে যায়। কাজেই, সম্মানিত দ্বীন-ইসলাম উনার বিধি-বিধান শিক্ষা দেয়ার সাথে সাথে শত্রুদের পরিচয় জানিয়ে দিতে হবে। মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার পবিত্র কালাম পাকে মু’মিন-মুমিনাদেরকে সেভাবে শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি উনার হুকুম-আহকাম বর্ণনা করার সাথে সাথে শত্রুদের পরিচয়, তাদের শত্রুতার ধরণ, তাদের স্বরূপ ও অন্যান্য চক্রান্তের বর্ণনা দিয়েছেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
لتجدن اشد الناس عدوة للذين امنوا اليهود والذين اشركوا.
অর্থ: “হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি মু’মিন-মু’মিনাদের জন্য সবচেয়ে কঠিন শত্রু হিসেবে পাবেন ইহুদীদেরকে আর যারা মুশরিক তাদেরকে। অর্থাৎ ম’ুমিন মুসলমানগণের সবচেয়ে বড় শত্রু হচ্ছে ইহুদী, নাছারা, মুশরিক হিন্দু, বৌদ্ধ, মুজুসীরা তথা সমস্ত বিধর্মীরা।”
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
يا ايها الذين امنوا لاتتخذوا عدوى وعدوكم اولياء.
অর্থ: “হে ঈমানদারগণ! তোমরা আমার শত্রু এবং তোমাদের শত্রুদেরকে কখনো বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করো না। (পবিত্র সূরা মুমতাহিনা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ০১)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
لا يتخذوا الـمؤمنون الكفرين اولياء من دون الـمؤمنين ومن يفعل ذلك فليس من الله فى شىء.
অর্থ: “মু’মিনগণ যেন মু’মিনগণ ব্যতীত অন্য কোন কাফিরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করে। যারা এ কাজ করবে তাদের সাথে মহান আল্লাহ পাক উনার কোন সম্পর্ক থাকবে না। ” (পবিত্র সূরা ইমরান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৮)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
يا ايها الذين امنوا لاتتخذوا الكافرين اولياء من دون الـمؤمنين.
অর্থ: “হে ঈমানদারগণ! তোমরা মু’মিনগণ ব্যতীত অন্য কোন কাফিরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না।” (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৪৪)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
يا ايها الذين امنوا لاتتخذوا اليهود والنصرى اولياء بعضهم اولياء بعض ومن يتولهم منكم فانه منهم.
অর্থ: “হে ঈমানদারগণ! তোমরা ইহুদী ও নাছারাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করিওনা। তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে যারা তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করবে তারা তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে।” (পবিত্র সূরা মায়িদা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৫১)