আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত ও মাহফিল সংবাদ

সংখ্যা: ২৮৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

আল বাইয়্যিনাত শরীফ প্রতিবেদন: ছাহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘(হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি বলুন, মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ফযল মুবারক ও মহাসম্মানিত রহমত মুবারক অর্থাৎ আমাকে পাওয়ার কারণে তোমাদের উচিত ঈদ বা খুশি প্রকাশ করা।’ সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য হাক্বীক্বীভাবে খুশি প্রকাশ করতে হবে।

এখন এ হাক্বীক্বীভাবে খুশি প্রকাশ করার ক্ষেত্রে দু’টি বিষয় বাধা স্বরূপ। প্রথমত, গাফলতি। দ্বিতীয়ত, বখীলি। গাফিলদের সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘তারা পশুর ন্যায়। বরং তার চেয়েও অধম। তারাই হচ্ছে গাফিল।’ অর্থাৎ, গাফিলরা পশুর চেয়েও অধম। আর বখীলদের সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, বখীল  ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার শত্রু।

একটা পশুই যেখানে ইবাদত-বন্দেগী করতে পারেনা, সেখানে পশুর চেয়েও অধম কিভাবে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করবে? একইভাবে বখীল ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার শত্রু। শত্রুর পক্ষে তো কখনোই হাক্বীক্বীভাবে পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা সম্ভব নয়। তাই, পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ হাক্বীক্বীভাবে পালন করার জন্য নিজেকে প্রস্তত করতে হবে।

এ জন্যই পশুর চেয়েও অধমকে হাক্বীক্বী বাশার বা মানুষ হতে হলে সর্বপ্রকার গাফলতি দূর করতে হবে। পাশাপাশি মহান আল্লাহ পাক উনার শত্রু  থেকে বন্ধুতে পরিণত হতে হলে বখীলি তরক করে হাক্বীক্বী সাখাওয়াতী গ্রহণ করতে হবে।

এখন, গাফলতি ও বখীলি দূর করার একমাত্র উপায় হচ্ছে ক্বলবী যিকির। যে বিষয়টি ইলমে তাছাউফের ভাষায় বলা হয়, কামিল শায়েখ উনার কাছে বাইয়াত হয়ে উনার পবিত্র ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করে উনার নির্দেশনা অনুযায়ী যিকির-ফিকির করে এবং আদেশ-নিষেধ পালনের মাধ্যমে ফয়েজে ইত্তিহাদী হাছিল করে প্রত্যেককে আল্লাহওয়ালা ও আল্লাহওয়ালী হতে হবে। যা প্রত্যেকের জন্যই ফরয।

আমাদের সিলসিলায় যারা বাইয়াত হয়েছে বা দাখিল হয়েছে, তাদের প্রত্যেকের জন্য কয়েকটি বিষয় বাধ্যতামূলক। প্রথমত, প্রতিদিন ইশার নামাযের পর ১০০ বার ত্বরীক্বা অনুযায়ী পবিত্র দরূদ শরীফ পাঠ করতে হবে। ইশা বা’দ পবিত্র দুরুদ শরীফ পাঠের মাধ্যমে অন্তরে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বত মুবারক পয়দা হবে। উনার মুহব্বত-মা’রিফত, তায়াল্লুক্ব ও যিয়ারত মুবারক নসীব হবে। দ্বিতীয়ত, প্রতিদিন পবিত্র ফজর নামাযের পর ১০০ বার ত্বরীক্বা অনুযায়ী পবিত্র দরূদ শরীফ পাঠ করতে হবে। ফজর বা’দ পবিত্র দুরুদ শরীফ পাঠের মাধ্যমে অন্তরে হযরত শায়েখ আলাইহিস সালাম উনার মুহব্বত মুবারক পয়দা হবে। উনার মুহব্বত-মা’রিফত, তায়াল্লুক্ব ও যিয়ারত মুবারক নসীব হবে। তৃতীয়ত, শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে খেয়ালের দ্বারা দায়েমীভাবে পবিত্র পাছ আনফাছ যিকির করতে হবে। শ্বাস ফেলবার সময় “লা ইলাহা” এবং শ্বাস ভিতরে টানবার সময় “ইল্লাল্লাহ্” খেয়াল করতে হবে। পবিত্র পাস-আনফাস যিকির দ্বারা অন্তরে মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত মুবারক পয়দা হয়ে, দুনিয়ার মুহব্বত দূর হবে, বিপদ-আপদ ও বালা-মুছিবত দূর হবে, রিযিকে বরকত হবে, মৃত্যৃর সময় ঈমান নসীব হবে। চতুর্থত, ত্বরীক্বা অনুযায়ী ওযীফা শরীফের কিতাব হযরত শায়েখ আলাইহিস সালাম উনার কাছ থেকে দাগিয়ে নিয়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ১ ঘন্টা ক্বলবী যিকির করতে হবে।

আবশ্যকীয় এ চারটি বিষয় সালিক যখন যথাযথভাবে পালন করবে, তখনই সালিক ফয়েজে ইত্তেহাদী লাভ করতে পারবে। তখন অন্তরের গালিজ দূর হবে, মুহলিকাত দূর হবে, বখিলী দূর হবে, গাফলতি দূর, পশুর চেয়েও নিবোধ ভাব দূর হবে। সাথে সাথে মুনজিয়াত পয়দা হবে, সাখাওয়াতী পয়দা হবে, দায়িত্ব সচেতনতা তৈরী হবে, সালিক হাক্বীক্বী বাশার হিসেবে গড়ে উঠবে, সর্বপোরি তায়াল্লুক্ব-নিসবত প্রতিষ্ঠিত হবে। তখনই হাক্বীক্বীভাবে পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা অতিব সহজ ও সম্ভব হবে। তখনই পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ অর্থাৎ পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ এবং সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ অর্থাৎ পবিত্র ১২ই শরীফ সর্বাধিক খুশি প্রকাশের মাধ্যমে মুহব্বত ও ঈমানের বহিপ্রকাশ ঘটবে। তখন সারা বছরের আয়োজন ও প্রস্তুতি সার্বিকভাবে পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ উনার সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ পবিত্র ১২ই শরীফ উনার জন্য উজাড় করে ব্যয় করা সম্ভব হবে।

মাহফিল সংবাদ

আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার এবং ক্বায়িম মাক্বামে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার মুবারক পৃষ্ঠপোষকতায় রাজারবাগ দরবার শরীফে মহাসমারোহে ও ব্যাপক শান শওকতে কুল-কায়িনাতের সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উপলক্ষে পুরুষদের জন্য প্রতিদিন বা’দ মাগরিব এবং মহিলাদের জন্য প্রতিদিন বাদ যুহর আযীমুশশান মাহফিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতিদিন সুবহে সাদিকের সময় সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আওক্বাত শরীফ পালিত হচ্ছেন। একইভাবে প্রতি সপ্তাহে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আ’যীম শরীফে সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ ও সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিস সাআত শরীফ এবং প্রতি মাসে সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ পবিত্র ১২ই শরীফে কোটি কোটি কন্ঠে পবিত্র মীলাদ শরীফ মাহফিল ও শহর প্রদক্ষিণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।  সর্বোপরি প্রতি মাহফিলেই নছীহত মুবারক ও সারাবিশ্বের মুসলিম উম্মাহের জন্য বিশেষ দুয়া-মুনাজাত শরীফ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সাথে সাথে আযীমুশশান তাবারুকও বিতরণ করা হয়। সুবহানাল্লাহ।

উল্লেখ্য যে, আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচারকেন্দ্র কর্তৃক দেশব্যাপী ব্যাপকভাবে পবিত্র সুন্নতী সামগ্রী প্রচার-প্রসার ও প্রদর্শনীর ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন এলাকায় ‘পবিত্র সুন্নত মুবারক উনার ক্যাম্পেইন’ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

বলাবাহুল্য যে, অনন্তকালব্যাপী জারীকৃত পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ বিশেষ শান মুবারক হিসেবে সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূর শরীফ পবিত্র রবীউল আউয়াল শরীফ এবং সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ পবিত্র ১২ই শরীফ উপলক্ষে বিশেষভাবে বিশেষ ইন্তিজামে নকশায়ে হায়দার, সাইয়্যিদুনা হযরত শাফিউল উমাম আলাইহিস সালাম উনার এবং নকশায়ে যুন নূরাইন, সাইয়্যিদুনা হযরত হাদিউল উমাম আলাইহিস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের পবিত্র নছীহত মুবারকের মাধ্যমে পবিত্র ৪ঠা মুহররম শরীফ হতে ৯০ দিনব্যাপী বিশেষ মাহফিল শুরু হয়েছে। যার প্রথম ৪০ দিন প্রতিযোগিতা মাহফিল। দ্বিতীয় ২ দিন সামা শরীফ মাহফিল। তৃতীয় ৪৫ দিন ওয়াজ শরীফ মাহফিল এবং চতুর্থ ৩ দিন সামা শরীফ মাহফিল। এ উপলক্ষে বহুমুখী কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। যাবতীয় কার্যক্রমে আর্থিক-শারীরিক তথা সার্বিকভাবে শরীক থাকার জন্য সিলসিলাভুক্ত সবাইকে বিশেষভাবে নির্দেশনা মুবারক প্রদান করা হয়েছে।

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম