আশ্শাহিদু, শিআরুল্লাহি, শাফীউল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উনার পবিত্র বিলাদতভূমি  প্রথম যমীন অর্থাৎ ‘কা’বা শরীফ’ থেকে প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করে সকল ‘টাইম জোন’ নির্ধারণ করা উচিত, গ্রীনিচ থেকে নয়

সংখ্যা: ১৯৪তম সংখ্যা | বিভাগ:

ان اول بيت وضع للناس للذى ببكة مبركا وهدى للعلمين.

অর্থ: নিশ্চয়ই সর্বপ্রথম যে ঘর মানব জাতির জন্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা তো ঐ ঘর যা মক্কা শরীফে অবস্থিত। উহা বরকতময় এবং বিশ্ববাসীর জন্য পথপ্রদর্শক। (সূরা আলে ইমরান-৯৬)

হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “কা’বা শরীফ-এর নিচের অংশটুকু পৃথিবীর প্রথম যমীন।”

মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “তোমরা কাফির, মুনাফিকদের অনুসরণ করোনা অর্থাৎ ইহুদী, মুশরিক ও নাছারাদেরকে অনুসরণ-অনুকরণ করো না।” আর হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের অনুসরণ করবে সে ব্যক্তি তাদেরই দলভুক্ত বলে গণ্য হবে।” কাজেই মুসলমানদের জন্য সময় নির্ধারণের ক্ষেত্রেও কাফির, মুশরিক, ইহুদী-নাছারাদের অনুসরণ করা কস্মিনকালেও শরীয়তসম্মত হবে না। সুতরাং গ্রীনিচের পরিবর্তে প্রথম যমীন কা’বা শরীফ যা ইহুদী-নাছারাসহ সকলেরই রসূল হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম-এরও ক্বিবলা তা থেকে পৃথিবীর সকল মানুষের জন্য সমস্ত স্থানের সময় নির্ধারণ করা উচিত।

আমাদের মুসলমানদের প্রতিদিনের নামাযের সময়সূচি তৈরি হয় প্রতিটি দেশের স্থানীয় সময় অনুযায়ী। আর প্রতিটি দেশের স্থানীয় সময় নির্ধারিত হয়েছে গ্রীনিচের সময়কে আদর্শ সময় ধরে। নাঊযুবিল্লাহ! অথচ গ্রীনিচের পরিবর্তে পবিত্র কা’বা শরীফ থেকেই পৃথিবীর সকল স্থানের সময়-অঞ্চল নির্ধারিত হওয়া উচিত ছিল। যেখানে মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কা’বা শরীফ সম্পর্কে ইরশাদ করেন, “যা নিয়ামত দ্বারা পূর্ণ এবং মানব ও জিন জাতির জন্য পথ প্রদর্শক।” সেখানে পবিত্র কা’বা শরীফ অবশ্যই সময়েরও পথ প্রদর্শক। অথচ আজ মুসলমানদের প্রতিদিনের সময় নিরূপণ হয় ব্রিটিশদের গ্রীনিচের সময় ধরে। নাঊযুবিল্লাহ!

গ্রীনিচ রয়াল অবজারভেটরি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৬৭৫ সালে। গ্রীনিচ মেরিডিয়ানকে মূল মধ্যরেখা (প্রাইম মেরিডিয়ান)  হিসেবে বিবেচনা করা হয় ১৮৮৪ সালে। কোন বিখ্যাত এবং ঐতিহাসিক স্থান বলে গ্রীনিচ থেকে প্রাইম মেরিডিয়ান কল্পনা করা হয়নি বরং এর পেছনে ছিল রাজনৈতিক কারণ। এক সময় ব্রিটিশরা পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে আধিপত্য বিস্তার করতে পেরেছিল বলে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় গ্রীনিচ থেকে সময় নির্ধারণের বিষয়টি পৃথিবীর উপর চাপিয়ে দিয়েছে। অথচ গ্রীনিচের পূর্বেও ব্রাসেলস, কোপেনহেগেন, আলেকজান্দ্রিয়া, জেরুজালেম, মাদ্রিদ, প্যারিস এ সকল এলাকাও প্রাইম মেরিডিয়ান হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।

পৃথিবীর কোন স্থানের উপর দিয়ে যদি প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করতে হয়, পৃথিবীর কোন স্থানের সময়কে প্রমাণ সময় ধরে যদি পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের সময় নির্ধারণ করতে হয়, তবে সেই স্থান হওয়া উচিত পবিত্র কা’বা শরীফ।

বর্তমানে বিভিন্ন পর্যায় থেকে গ্রীনিচ মিন টাইম-এর পরিবর্তে মক্কা শরীফ মিন টাইম নির্ধারিত হবার বিষয়ে আলোচনা তুললেও তারা সুনির্দিষ্ট কারণটি ব্যাখ্যা করতে পারেনি। কেউ কেউ কা’বা শরীফ-এর ভৌগোলিক অবস্থান, চৌম্বকীয় অবস্থান ইত্যাদি বললেও প্রকৃত উত্তর থেকে দূরে সরে আছেন। সঠিক উত্তর গ্রহণ করতে হবে কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ থেকে। মহান আল্লাহ পাক সূরা আলে ইমরান-এর ৯৬ নম্বর আয়াত শরীফ-এ ইরশাদ করেন, “প্রকৃতপক্ষে মানব জাতির জন্য প্রথম যে ঘর তৈরি করা হয়েছিল তা হচ্ছে ঐ বাক্কা বা কা’বা শরীফ। যা নিয়ামত দ্বারা পূর্ণ এবং মানবজাতির জন্য পথ প্রদর্শক।” সুতরাং কা’বা শরীফ পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীনতম স্থান। প্রশ্ন হতে পারে ইহুদী, খ্রিস্টানরা কেন মুসলমানদের বিষয়টি মেনে নিবে। প্রকৃতপক্ষে ইহুদী খ্রিস্টানরাও কা’বা শরীফ-এর অবস্থান, মান-মর্যাদা, ঐতিহাসিক গুরুত্ব সম্পর্কে ওয়াকিবহাল।

হযরত নূহ আলাইহিস সালাম-এর মহা প্লাবনের পর হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম এই পবিত্র কা’বা শরীফ-এর পুনঃনির্মাণ করেন। হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম-এর দুই সন্তান হযরত ইসমাইল আলাইহিস সালাম এবং হযরত ইসহাক আলাইহিস সালামকেও আল্লাহ পাক নবী হিসেবে কবুল করেন। হযরত ইসমাইল আলাইহিস সালাম-এর বংশধরদের মধ্য থেকে তাশরীফ নেন নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হযরত ইসহাক আলাইহিস সালাম-এর বংশধরদের মধ্য থেকে তাশরীফ নেন হযরত মুসা আলাইহিস সালাম এবং পরে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম। সুতরাং ইহুদী এবং খ্রিস্টানসহ সকল আহলে কিতাবের কাছেই কা’বা শরীফ-এর অপরিসীম গুরুত্ব রয়েছে।

সকল বর্ণের, সকল গোত্রের, সকল জাতির আদি পিতা হচ্ছেন হযরত আদম আলাইহিস সালাম। যিনি প্রথম মানুষ এবং নবী। উনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোন কিছুর ইতিহাসের চেয়ে পুরনো কোন ইতিহাস নেই বা থাকতে পারে না। যদি কোন কারণে কোন স্থানকে ঐতিহাসিক গুরুত্বের কারণে নির্বাচন করা হয়, তবে প্রথম গুরুত্ব পাবে বাইতুল্লাহ শরীফ বা কা’বা শরীফ; যার চেয়ে ঐতিহাসিক কোন স্থান এই যমীনে নেই।

মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন- “হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মধ্যে রয়েছে সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শ।” তাহলে জীবনের সকল বিষয়েই আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকেই অনুসরণ করতে হবে।

কুরআন মজীদ প্রথম নাযিল হয় মক্কা শরীফ-এ। মক্কা শরীফ-এ প্রথম ইসলামের প্রচার শুরু হয় এবং প্রথম ইসলাম কবুলকারী ছাহাবা আজমাইনগণও মক্কা শরীফ-এর অধিবাসী। পরবর্তিতে পর্যায়ক্রমে ইসলাম পূর্বে-পশ্চিমে উত্তর-দক্ষিণে ছড়িয়ে পড়ে। সুতরাং কা’বা শরীফকে কেন্দ্র ধরে, তার উপর দিয়ে প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করে, তার সাপেক্ষে পৃথিবীর সকল ‘সময় অঞ্চল’ (ঞরসব তড়হব) ভাগ করলে এর মধ্যেই থাকবে রহমত, রবকত ও কল্যাণ। এছাড়াও কা’বা শরীফকে যেহেতু আসমান ও যমীনের কেন্দ্র বলা হয়েছে, সুতরাং মুসলমানদের উচিত কা’বা শরীফ-এর সময় সাপেক্ষে পৃথিবীর সকল দেশের বা সকল অঞ্চলের সময় নির্ধারণ করে কা’বা শরীফ-এর প্রতি পরিপূর্ণ আদব প্রকাশ করা।

হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত হয়েছে- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “কা’বা শরীফ ছিল পানির উপর একটি ছোট পাহাড় এবং তার নিচ দিয়ে পৃথিবী সৃষ্টি হয়।” অর্থাৎ কা’বা শরীফ-এর নিচের অংশটুকু ছিল পৃথিবীর প্রথম যমীন যা বিশাল সাগরের মাঝে সৃষ্টি হয়। পরবর্তিতে সেই পবিত্র স্থানের চতুর্পার্শ্বে তা বিস্তার লাভ করতে থাকে এবং প্রথমে একটি বিশাল মহাদেশের সৃষ্টি হয়। সে কারণে মক্কা শরীফকে বলা হয় উম্মুল কুরা। বিজ্ঞানও স্বীকার করেছে বর্তমানে যে সাতটি মহাদেশ আছে সেগুলো মূলতঃ একটি মহাদেশ আকারে ছিল; যাকে বলা হয় গড়ঃযবৎ ঈড়হঃরহবহঃ বা চধহমধবধ. পরবর্তিতে এগুলো একে অপরের কাছ থেকে দূরে সরতে শুরু করে এবং সরতে সরতে বর্তমান অবস্থায় পৌঁছেছে।

হাদীছ শরীফ এবং বিজ্ঞানের মাধ্যমেও এটি স্পষ্ট যে, এই পৃথিবীর বিস্তৃতিও ঘটেছে কা’বা শরীফ থেকে। সুতরাং যেখানে আল্লাহ পাক এই কা’বা শরীফকে প্রথম সৃষ্টি করে মানব জাতির পথ প্রদর্শনের জন্য নির্ধারণ করলেন, যেখানে এই কা’বা শরীফকে ধারণকারী মক্কা শরীফ থেকে ইসলাম পৃথিবীব্যাপী বিস্তার লাভ করেছে, যেখানে এই কা’বা শরীফ থেকেই পৃথিবীর যমীন বিস্তার লাভ করেছে; তাহলে পৃথিবীর সকল ‘সময় অঞ্চল’ (ঞরসব তড়হব) কেন এই কা’বা শরীফ থেকেই চতুর্পার্শ্বে নির্ধারিত হবে না? বরং এটাই সত্য যে, কা’বা শরীফ-এর উপর দিয়ে প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করে পৃথিবীর সকল ‘সময় অঞ্চল’ (ঞরসব তড়হব) নির্ধারণ করলে তা কুরআন শরীফ এবং হাদীছ শরীফ-এর স্পষ্ট অনুসরণ করা হবে। তখন এর মধ্যে থাকবে রহমত, বরকত ও সাকিনা।

পবিত্র কা’বা শরীফ-এর উপর দিয়ে প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করলে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখার অবস্থান হয় সুবিধাজনক স্থানে। গ্রীনিচের উপরে প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করা অযৌক্তিক এবং প্রচলিত আন্তর্জাতিক তারিখ রেখাও আঁকাবাঁকা।

গ্রীনিচের উপর দিয়ে প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করায় আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা নিয়েও সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। প্রচলিত আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা হচ্ছে ১৮০ ডিগ্রি পূর্ব এবং ১৮০ ডিগ্রি পশ্চিম দ্রাঘিমা রেখার সংযোগস্থলে। এই তারিখ রেখার পশ্চিমে রয়েছে উত্তর গোলার্ধে রাশিয়া এবং দক্ষিণ গোলার্ধে নিউজিল্যান্ড। এই তারিখ রেখা সরাসরি উত্তর গোলার্ধ থেকে দক্ষিণ গোলার্ধে নেমে যেতে পারেনি। যখনই জনবসতিপূর্ণ এলাকার উপরে এসেছে তখনি ঠেলে দেয়া হয়েছে পানির দিকে। ১৮০ ডিগ্রি দ্রাঘিমা রেখা বিচ্যুত সময় রেখার অংশগুলো হলো বেরিং প্রণালী, এলিউশিয়ান দ্বীপপুঞ্জের পশ্চিমাংশ, ফিজির পূর্বাংশ ইত্যাদি। বর্তমান অবস্থানে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা থাকায় যে সমস্যাগুলো সৃষ্টি হয়েছে তার কিছু নমুনা দেয়া যেতে পারে।

ফিজি ১৮০ ডিগ্রি দ্রাঘিমার পশ্চিমে আর টোঙ্গা, সেমওয়া ১৮০ ডিগ্রি পূর্বে। আর কিরিবাতি দ্বীপকে ১৮০ ডিগ্রি দ্রাঘিমা রেখা দ্বি-ভাগ করেছে। কিন্তু ফিজি, টোঙ্গা এবং কিরিবাতি আন্তর্জাতিক তারিখ রেখার পশ্চিমে অবস্থান নিয়েছে আর সেমওয়া অবস্থান নিয়েছে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখার পূর্বে। টোঙ্গা এবং সেমওয়ার সময় একই থাকলেও ১ দিনের পার্থক্য রয়েছে। আবার ফিজি এবং টোঙ্গা কাছাকাছি হলেও ফিজির সময় টোঙ্গার সময়ের চেয়ে ১ ঘণ্টা পিছিয়ে। আবার সেমওয়ার চেয়ে অনেক পূর্বে হাওয়াই দ্বীপের অবস্থান হলেও সময়ের পার্থক্য মাত্র ১ ঘণ্টা। এছাড়া ১৯৯৫ সালের পূর্ব পর্যন্ত কিরিবাতি দ্বীপে তারিখ নিয়ে ছিল গরমিল। একই দ্বীপে দুইটি তারিখ প্রচলিত ছিল। কিরিবাতির পশ্চিমাংশ সবসময় পূর্বাংশ থেকে এক দিন এগিয়ে থাকতো। সপ্তাহের মাত্র ৪ দিন দুই অংশের মধ্যে ব্যবসায়িক কাজ কর্ম সম্পাদন হতো। এ সকল সমস্যার সমাধানের জন্য ১৯৯৫ সালের পহেলা জানুয়ারিতে কিরিবাতির প্রেসিডেন্ট টিবুরোর টিটো আন্তর্জাতিক তারিখ রেখাকে কিরিবাতির পূর্বে সরিয়ে নেবার ঘোষণা দেন। কিন্তু কা’বা শরীফ-এর উপর দিয়ে প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করলে ১৮০ ডিগ্রি দ্রাঘিমা বা আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা যাবে আলাস্কা এবং কানাডার মাঝামাঝি স্থান দিয়ে (বর্তমান ১৪০ ডিগ্রি পশ্চিম দ্রাঘিমা রেখা বরাবর)। আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা উত্তর প্রশান্ত মহাসাগর দিয়ে নিচে নেমে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগর দিয়ে দক্ষিণ গোলার্ধে চলে যাবে। সম্পূর্ণ তারিখ রেখাটি যাবে পানির উপর দিয়ে ফলে স্থলভাগের ডানে ও বামে তারিখ রেখা সরিয়ে দেয়ার কোন প্রয়োজন পড়বে না।

সুতরাং পুনরায় কা’বা শরীফ-এর উপর দিয়ে প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করা সহজেই সম্ভব এবং যুক্তিসঙ্গত। তখন আন্তর্জাতিক তারিখ রেখাসহ সকল বিষয়ের সহজ সমাধান পাওয়া যাবে। আল্লাহ পাকতো পূর্বেই ইরশাদ করেছেন “কা’বা শরীফ মানব জাতির জন্য পথ প্রদর্শক।”

গ্রীনিচের সাথে কয়েকটি বিষয় জড়িত:

১. গ্রীনিচের সময় থেকে যোগ ও বিয়োগ করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের স্থানীয় সময় নির্ণয় করা হয়েছে। যেমন (বাংলাদেশের স্থানীয় সময়) = (গ্রীনিচ সময়) + (৬ ঘণ্টা)।

২. গ্রীনিচকে ০ ডিগ্রি দ্রাঘিমায় স্থির করায় ১৮০ ডিগ্রি পূর্ব এবং ১৮০ ডিগ্রি পশ্চিম দ্রাঘিমা রেখা বর্তমানে যেখানে মিলিত হয়েছে সেখানে রয়েছে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা (ওহঃবৎহধঃরড়হধষ ফধঃব ষরহব)

৩.  গ্রীনিচের উপর দিয়ে প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করায় গ্রীনিচের অবস্থান ০ ডিগ্রি দ্রাঘিমায়।

সূর্য যখন কোন স্থানের ঠিক মাথার উপরে আসে তখন মধ্যাহ্ন হয়, একে বলে  ঝঁহ ঞরসব। পরের দিন সূর্য যখন আবার মাথার উপর আসবে তখন আবার মধ্যাহ্ন হবে। কিন্তু  ঘড়ি অনুযায়ী অর্থাৎ ঈষড়ড়শ ঞরসব অনুযায়ী একই সময়ে মধ্যাহ্ন হয় না। এই সূর্য সময় এবং ঘড়ি সময়ের সর্বোচ্চ পার্থক্য হয় ফেব্রুয়ারিতে ১৪ মিনিটের মত তখন ঘড়ির সময়ের চেয়ে সূর্য সময় ১৪ মিনিট পিছিয়ে থাকে। আবার নভেম্বরে সময়ের পার্থক্য হয় সর্বোচ্চ ১৬ মিনিট; তখন সূর্য সময় ঘড়ির সময়ের চেয়ে এগিয়ে থাকে। এ সকল অসুবিধা দূর করার জন্যে এখন অঃড়সরপ ঈষড়পশ  ব্যবহার করা হয়।  এই অঃড়সরপ ঈষড়পশ এর সময় অনুযায়ী তৈরি হয়েছে টঞঈ (ঈড়-ড়ৎফরহধঃবফ টহরাবৎংধষ ঞরসব)। ফলে ১৯৭২ সালের পহেলা জানুয়ারি থেকে এগঞ এর পরিবর্তে টঞঈ ব্যবহৃত হচ্ছে। কিন্তু গ্রীনিচের উপর দিয়ে প্রাইম মেরিডিয়ান কল্পনা করায় তার সাপেক্ষে বিভিন্ন অঞ্চলের স্থানীয় সময় এগঞ এর পরিবর্তে টঞঈ হলেও সময় অঞ্চলগুলোর বিভক্তি পূর্বের মতই রয়ে গেছে। কিন্তু গ্রীনিচের উপর প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করার কোন যৌক্তিক কারণ নেই। ফলে পবিত্র কা’বা শরীফ-এর উপর দিয়ে প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করে নতুন করে বিভিন্ন সময় অঞ্চল স্থির করা উচিত।

গ্রীনিচের পরিবর্তে পবিত্র কা’বা শরীফ-এর উপর দিয়ে প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করাটাই যুক্তিসঙ্গত। বর্তমান স্থানের পূর্বেও গ্রীনিচের আরও দু’টি স্থানের উপর দিয়ে প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করা হয়েছিল। ফ্রান্স বহুদিন যাবৎ গ্রীনিচকে প্রাইম মেরিডিয়ান হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি এবং প্যারিসকে প্রাইম মেরিডিয়ান ধরেই গণনা করতো। পরবর্তিতে গ্রীনিচকে মেনে নিয়ে এগঞ ব্যবহার শুরু করলেও পরবর্তীতে আবার সে চলে যায় ঈঊঞ (ঈবহঃৎধষ ঊঁৎড়ঢ়বধহ ঞরসব) -এ ।

ফ্রান্সের উপর দিয়ে প্রাইম মেরিডিয়ান (০ ডিগ্রি) চলে গেলেও তারা গ্রীনিচ টাইম না ধরে ১৫ ডিগ্রি পূর্বে যে সময় অর্থাৎ ঈবহঃৎধষ ঊঁৎড়ঢ়বধহ ঞরসব কে ধরে গণনা করছে।

পৃথিবীপৃষ্ঠের কোন স্থানে দাঁড়িয়ে কেউ যদি বলে আমি পৃথিবীর কেন্দ্রে আছি তার দাবি একদিক থেকে সত্য। কেননা, সেই স্থানের ডানদিক থেকে যে কয়টি দ্রাঘিমা পেরিয়ে সে তার অবস্থানে আসতে পারবে একইভাবে বামদিক থেকে ঠিক সে কয়টি দ্রাঘিমা পেরিয়ে আবার পূর্বের অবস্থানে ফিরে আসতে পারবে। সুতরাং পৃথিবীর যে কোন স্থানের উত্তর-দক্ষিণ মেরুর সংযোজক রেখাকে মূল মধ্যরেখা হিসেবে কল্পনা করা যায়।

কেউ যদি পৃথিবীর কোন একটি স্থানে মূল মধ্যরেখা কল্পনা করে নেয় এবং সেই কল্পিত রেখার দু’পাশে পা প্রশস্ত করে দিয়ে ভাবে তার একটি পা পূর্ব গোলার্ধে এবং অন্য পা পশ্চিম গোলার্ধে তবে তার এ ধারণাটিও সত্য। যদিও তা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নয়। কেননা, সে স্থানের কোন ধর্মীয়, ঐতিহাসিক গুরুত্ব নেই। সুতরাং পৃথিবীর এমন একটি স্থানের উপর দিয়ে মূল মধ্যরেখা স্থির করা উচিত, যে স্থানটির ঐতিহাসিক এবং ধর্মীয় গুরুত্ব আছে। আর তা হচ্ছে কা’বা শরীফ। কা’বা শরীফ এমন একটি স্থান যে স্থানটি পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীনতম। যে স্থানের পবিত্রতা অপরিসীম। যে স্থানটি পূর্ব-পশ্চিমে সবার কাছে পরিচিত এবং গুরুত্বসহকারে বিবেচিত। সকল আহলে কিতাবের কাছে যে স্থানের অপরিসীম গুরুত্ব রয়েছে। যে স্থানটি ছাড়া আর কোন স্থানের এতটা ঐতিহাসিক গুরুত্ব নেই। কা’বা শরীফকে কেন্দ্র ধরে যখন পৃথিবীর সকল সময় অঞ্চল নির্ধারণ করা হবে তখন যে কোন স্থানের স্থানীয় সময় হবে, (KMT) + (কা’বা শরীফ কেন্দ্রিক রচিত টাইম জোন) অথবা (KMT) (কা’বা শরীফ কেন্দ্রিক রচিত টাইম জোন)।

সুতরাং পুনরায় কা’বা শরীফ-এর উপর দিয়ে প্রাইম মেরিডিয়ান স্থির করা সহজেই সম্ভব এবং যুক্তিসঙ্গত। তখন আন্তর্জাতিক তারিখ রেখাসহ সকল বিষয়ের সহজ সমাধান পাওয়া যাবে। আল্লাহ পাকতো পূর্বেই ইরশাদ করেছেন “কা’বা শরীফ মানব জাতির জন্য পথ প্রদর্শক।” সুতরাং পৃথিবীর প্রায় পৌনে ৩০০ কোটি মুসলমানের এ বিষয়ে সজাগ ও সোচ্চার হওয়া উচিত।

আল্লামা আবুল বাশার মুহম্মদ রুহুল হাসান

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম