আসামে ফের মুসলমানদের উপর নির্যাতন। ট্রেনে মুসলমানদের শহীদ। কথিত বৃহৎ ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র ভারতে অব্যাহত মুসলমান নিপীড়ন, হত্যা, গুম, বঞ্চনা এটাই প্রমাণ করে- কোন কথিত ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রেই মুসলমানরা শান্তিতে থাকতে পারে না, সেখানে ইসলাম অনুশীলন হতে পারে না।

সংখ্যা: ২১৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

সব প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ ও সালাম।

গত ১৬ আগস্ট গভীর রাতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে বিশেষ ট্রেনে যাওয়ার সময়ে ফের মুসলমানের উপরে হামলা হয়েছে।

ট্রেনে হামলাকারীরা প্রত্যেকের পরিচয় পত্র দেখতে চায় তারপরে বগির সব দরজা বন্ধ করে মুসলমান যাত্রীদের মারধর শুরু করে। মোবাইল ফোন, টাকা পয়সা সব কেড়ে নেয়া হয়। যারা মারছিল, তারা সংখ্যায় প্রায় ৪০-৪৫ জন। লোহার রড দিয়ে মারা হয়, চাকুর কোপও দেয়া হয়। মৃতদেহগুলো গ্রামে পৌঁছেছে, সেগুলোর মুখে-মাথাতেও একই রকমের কাটা দাগ রয়েছে।

এছাড়া প্রায় দুই-আড়াই ঘন্টা ধরে অত্যাচার চালানোর পরে এক এক করে ওই যাত্রীদের চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দেয়া হয়। এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে পুলিশ আসেনি।

সর্বসাম্প্রতিক আসামে চলা দাঙ্গা এখন বিশ্ববাসীর কাছে জ্বলন্ত বিষয়। ১৯৪৭ সালে উপমহাদেশ ভাগ হওয়ার পর থেকে আসাম ও ভারতে এ ধরনের জাতিগত দাঙ্গায় অগণিত মানুষ মারা গেছে। বাস্তুহারা হয়েছে তার চেয়েও বেশি মানুষ। তবু থামেনি দাঙ্গা বরং সময়ের সাথে তা বাড়ছে।

গত দু’মাস ধরে আসামে শুরু হয়েছে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। দাঙ্গা দমনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। কিন্তু দাঙ্গা থামছে না। বধ্যভূমি আসামের বোড়োল্যান্ডে এখনো নির্বিচারে চলছে গণহত্যা। সেখানকার হাজার হাজার গরিব মুসলমানকে গণহারে হত্যা করা হয়েছে। এক দশকের মধ্যে এটি আসামের সবচেয়ে বড় সহিংস সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। আসাম সংখ্যালঘু ছাত্র সংগঠন এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, আগুন লাগিয়ে ছাই করে দেয়া হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। হতভাগ্য গরিব মুসলমানেরা এখন মৃত্যুর মিছিলে। তবুও নির্বিকার আসাম ও কেন্দ্রীয় সরকার। আসাম রাজ্যের কমপক্ষে চারটি জেলায় এ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা চলছে। এরই মধ্যে সরকারি হিসাবে শতাধিক লোক নিহত হয়েছে। বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে ২ লক্ষাধিক মানুষ। কেউ কেউ আশ্রয় নিচ্ছে শরণার্থী শিবিরে। দাঙ্গা দমনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে দাঙ্গাকারীদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তার পরও দাঙ্গা থামতে চাইছে না। গত ২৬ জুলাই আসামের বিভিন্ন দলের এমপিরা নয়াদিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে দেখা করে বলেছে, রাজ্য সরকারের উপর তাদের আস্থা নেই। তারা কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ চায়। উল্লেখ্য, আসামে অল বোড়োল্যান্ড মাইনোরিটি স্টুডেন্টস ইউনিয়ন এবং অল আসাম মাইনোরিটি স্টুডেন্টস ইউনিয়ন নামে দু’ট মুসলিম প্রধান ছাত্র সংগঠনের নেতা গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর দেড় সপ্তাহ আগে এই সাম্প্রদায়িক সহিংসতা শুরু হয়।

আসামে দাঙ্গার প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি ও এর ব্যাপকতা সম্পর্কে পুরোপুরি জানা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ, ভারতীয় গণমাধ্যম ও টিভি চ্যানেলগুলোতে কংগ্রেসের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ প্রদর্শনে দাঙ্গার প্রকৃত খবরাখবর প্রচার করছে না। ঋরৎংঃঢ়ড়ংঃ-এর খবর মতে, ২০০২ সালের গুজরাট রায়টের সময় ভারতীয় টিভি চ্যানেলগুলো সেখানকার বিজেপি সরকারের পক্ষ নিয়ে দাঙ্গার প্রকৃত খবর প্রচার করেনি। এখন আসামে ভারতীয় চ্যানেল একইভাবে পক্ষ নিয়েছে আসামের ক্ষমতাসীন কংগ্রেস সরকারের। নিশ্চিতভাবে যুক্তরাষ্ট্রের ফক্স নিউজ ও নিউইয়র্ক টাইমসের মতো ভারতীয় গণমাধ্যমও অনেকটা পক্ষপাত দোষে দুষ্ট।

আসামে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পেছনে একটি বড় কারণ হচ্ছে, ভারতীয় সব মহলই একটি কথা বারবার জোর দিয়ে বলেÑ আসামে বাংলাদেশ থেকে প্রচুর বাঙালি অব্যাহতভাবে অবৈধ প্রত্যাবাসন করছে। এরা আসাম কিংবা ভারতের নাগরিক নয়। এ যুক্তিতে এরা সবাই আসামের বাঙালি মুসলমানদের বিতাড়নের পক্ষে। এই বিতাড়নের ক্ষেত্রে এরা দুটি উপায় অবলম্বন করে। প্রথম সেখানকার মুসলমানদের এরা ‘বিদেশী’ বা ‘ফরেনার’ আখ্যা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে। অপর উপায় হচ্ছে, এরা সুযোগের অপেক্ষায় থাকে নানা অজুহাতে দাঙ্গা সৃষ্টি করে মুসলমানদের গণহারে শহীদ ও বিতাড়ন করে। বর্তমানে আসামে চলমান দাঙ্গা এ থেকে ভিন্ন কিছু নয়।

প্রশ্ন হচ্ছে, ভারতীয় আইনে ফরেনার কারা? ১৯৪৬ সালের ফরেনার্স অ্যাক্টে ‘ফরেনার’ শব্দটি সুনির্দিষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত নয়। এ আইনে শুধু বলা আছে, যিনি নাগরিক নন তিনি ‘ফরেনার’। কে সে দেশের নাগরিক তার বর্ণনা আছে এ আইনের ৩, ৪, ৫, ৬ এবং ৬(ক) ধারায়। তাই এটুকু স্পষ্ট, যারা এ ধারার আওতায় পড়বে না, তারাই ফরেনার।

কিন্তু এটি একটি স্বাভাবিক ক্ষোভের কারণ, আসামে তিন লাখের মতো নাগরিককে ভোটার তালিকায় দেখানো হয়েছে D-Voters হিসেবে। এরা ডিসপুটেড ভোটার নাগরিক। এর মাধ্যমে তাদের সব ধরনের নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে, যা পুরোপুরিভাবে অবৈধ ও অসাংবিধানিক। একজন লোক হয় হবে ‘নাগরিক’, নয়তো হবেন ‘বিদেশী’। এর মাঝখানে অন্য কিছু হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সবচেয়ে দুঃখজনক হলো এই ডি-ভোটারদের ৮০ শতাংশই ধর্মীয় সংখ্যালঘু। সোজা কথায় মুসলমান। কিন্তু আদমশুমারি রিপোর্ট প্রমাণ করে না যে, আসামে মুসলমান ভোটারদের সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে।

তার পরও আসামের বোড়োরা/হিন্দুদের অপপ্রচার থেমে নেই। ওরা বলেই চলছে, আসামে অবৈধ ও প্রত্যাবাসীও মুসলমানদের সংখ্যা অস্বাভাবিক বাড়ছে। আবারো বলবÑ আসলে এই প্রচার একটি মাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে, আসাম থেকে সংখ্যালঘু মুসলমানদের তাড়ানো।

আরেকটি বিষয়, বাংলাদেশ একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। এর অর্থনৈতিক অবস্থা আসামের তুলনায় তত খারাপ নয়, যতটা আসামের গণমাধ্যমে উদ্দেশ্যতাড়িত হয়ে প্রচার করা হয়। বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থারও কথা, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা চরম দুর্দশাগ্রস্ত নয়। তাই বাংলাদেশের মুসলমানেরা গণহারে আসামে গিয়ে অবৈধ প্রত্যাবাসন করছে, সেখানকার জনসংখ্যা কাঠামো ভেঙে দিচ্ছেÑ এ ধরনের অভিযোগের পেছনে কোনো যুক্তি থাকতে পারে না।

আজ আসাম থেকে হাজার বছর ধরে বসবাসকারী মুসলমানদের বাংলাদেশে পাঠানোর উদ্দেশে আসামে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধানো হচ্ছে। মিয়ানমার থেকে হাজার বছর ধরে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানোর জন্য সেখানে বাধানো হচ্ছে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। উভয় ক্ষেত্রে আশ্রয় নেয়া হচ্ছে ইতিহাস বিকৃতির। ইতিহাস বিকৃতি করে উভয় দেশ মুসলমানদের নাগরিক অধিকার দিচ্ছে না। এসবের বিরুদ্ধে বাংলাদেশকে দ্বিপক্ষীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জোরদার কূটনৈতিক তৎপরতার জোরদার করা উচিৎ। এমনিতেই রোহিঙ্গা শরণার্থীরা আমাদের জন্য বোঝা হয়ে আসে, এর ওপর আসামি মুসলমানেরাও যদি কোনো এক সময়ে নতুন বোঝা হয়ে দাঁড়ায়, তখন বলার কিছু থাকবে না। তাই আমাদের সাবধান হতে হবে, প্রতিবাদী হতে এখনই, এই সময়েই, আর বিন্দুমাত্র দেরি না করে।

বলাবাহুল্য, আসাম, হায়দারাবাদ, অযোদ্ধা, কাশ্মীরসহ গোটা ভারতে মুসলমানদের উপর এরূপ অব্যাহত হত্যা, গুম, বঞ্চনা, নির্যাতন, নিপীড়নের পরও ভারত ধর্মনিরপেক্ষতার দাবিদার।

এদিকে বোরকা পরা নিষিদ্ধ করলেও ইংল্যান্ড, ফ্যান্স, নেদারল্যান্ড, ইতালি ধর্মনিরপেক্ষতার দাবিদার। এমনকি রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম থাকার পরও ৭২-এর সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতার সুবাদে বাংলাদেশেও ঘোষণা করা হলো, পর্দার জন্য বাধ্য করা যাবে না।

প্রতিভাত হয় যে, ধর্মনিরপেক্ষতা যেখানেই ঘোষিত হয়েছে সেখানেই মুসলমানরা বঞ্চিত, নির্যাতিত হয়েছে।

কাজেই, এদেশের ৯৭ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমান এদেশের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা সংযোজন কোনক্রমেই বরদাশত করতে পারছে না। কিন্তু এই প্রতিক্রিয়া এখনও সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলে পৌঁছেছে না। তারা জনগণের এ অনুভূতি অনুভব করতে পারছেন না, সঠিক পথে পরিচালিত হতে পারছেন না।

মূলতঃ সব সমস্যা সমাধানে চাই সদিচ্ছা ও সক্রিয়তা তথা  সততা। কিন্তু তার জন্য প্রয়োজন নেক কুওওয়ত। যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবতেই তা প্রাপ্তি সম্ভব। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে সে মহান ও অমূল্য নিয়ামত নছীব করুন। (আমীন)

-মুহম্মদ মাহবুবুর রহমান

খতমে নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির “ইসলামী শরীয়তের হুকুম মুতাবিক যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হয় যেমন-  কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩ দিন এরপর তওবা না করলে তাদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।”

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৩

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১২

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২১

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩১