ই’তিকাফের আহকাম ও মাছয়ালা

সংখ্যা: ২২৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

মুহম্মদ বায়েজীদ আলম
কদম তলা, রাজারবাগ, ঢাকা

সুওয়াল: ই’তিকাফ করার ফযীলত কতটুকু?
জাওয়াব: পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে, যে ব্যক্তি পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার শেষ দশ দিন (সুন্নতে মুয়াক্কাদায়ে ক্বিফায়া) ই’তিকাফ করবে, মহান আল্লাহ পাক তাকে দু’টি পবিত্র হজ্জ ও দু’টি পবিত্র ওমরাহ করার সমতুল্য ছওয়াব দান করবেন।
আরো উল্লেখ করা হয়েছে যে, মহান আল্লাহ পাক তার পিছনের গুণাহখতা ক্ষমা করে দিবেন।
আরো বর্ণিত রয়েছে, যে ব্যক্তি একদিন ই’তিকাফ করবে, মহান আল্লাহ পাক তাকে জাহান্নাম থেকে তিন খন্দক দূরে রাখবেন। প্রতি খন্দকের দূরত্ব পাঁচশত বছরের রাস্তা।

আহমাদুর রহমান
উত্তরা, ঢাকা

সুওয়াল: অনেকে বলে থাকে, পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার শেষে তিনদিন বা একদিন ই’তিকাফ করলেই সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ কিফায়া ই’তিকাফ হয়ে যায়, এটা কতটুকু সত্য?
জাওয়াব: পবিত্র রমাদ্বান মাসের শেষ দশদিন অর্থাৎ ২০ তারিখ বাদ আছর ও ২১ তারিখ মাগরিবের পূর্ব হতে ঈদের বা শাওওয়াল মাসের চাঁদ দেখা পর্যন্ত ই’তিকাফ করলে সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ কিফায়া ই’তিকাফ আদায় হবে। অন্যথায় একদিন, তিনদিন, পাঁচদিন এবং সাতদিন ই’তিকাফ করলে সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ কিফায়া ই’তিকাফ আদায় হবেনা। অর্থাৎ ৩০শে রমাদ্বানের দশদিন কিংবা ২৯শে রমাদ্বানের নয়দিনের এক মিনিট কম হলেও সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ কিফায়া ই’তিকাফ আদায় হবেনা।

মুহম্মদ আতিকুর রহমান
সদর, চাঁদপুর

সুওয়াল: ই’তিকাফের আহকাম সম্বন্ধে জানালে কৃতজ্ঞ হবো?
জাওয়াব: ই’তিকাফের আভিধানিক অর্থ হলো গুণাহ হতে বেঁচে থাকা, অবস্থান করা, নিজেকে কোন স্থানে আবদ্ধ রাখা, কোণায় অবস্থান করা।
আর শরীয়তের পরিভাষায় রমাদ্বান মাসের শেষ দশ দিন দুনিয়াবী যাবতীয় কার্যকলাপ ও পরিবার-পরিজন হতে ভিন্ন হয়ে, আলাদাভাবে পুরুষের জন্য জামে মসজিদে ও মহিলাদের জন্য ঘরে ইবাদত কার্যে মশগুল থাকাকে ই’তিকাফ বলে।
ই’তিকাফ তিন প্রকার- (১) ওয়াজিব, (২) সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ, (৩) নফল। যিনি ই’তিকাফ করেন, তাকে বলে মু’তাকিফ। রমযানের শেষ দশ দিন ই’তিকাফ করা সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ কিফায়া। প্রতি মসজিদে এলাকার তরফ হতে একজন মুতাকিফ হলেই সকলের পক্ষ হতে আদায় হয়ে যাবে, আর যদি কেউই ই’তিকাফ না করে, তাহলে সকলেরই সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ তরক করার গুণাহ হবে।
ই’তিকাফের শর্ত তিনটি- (১) পুরুষের জন্য মসজিদে, মহিলাদের জন্য ঘরের মধ্যে। (২) ই’তিকাফের জন্য নিয়ত করা, হদছে আকবর হতে পাক হওয়া। (৩) রোযা রাখা। তবে সাধারণভাবে ই’তিকাফের জন্য বালিগ হওয়া শর্ত নয়। ই’তিকাফ অবস্থায় জাগতিক ফায়দাদায়ক কাজ করা অবস্থাভেদে হারাম ও মাকরূহ্ তাহরীমী।
মু’তাকিফ ব্যক্তি মসজিদে এসে কোন বেহুদা কথা বা কাজ করবে না বা চুপ করে বসে থাকবে না। বরং ঘুম ব্যতীত বাকি সময় ইবাদত কার্যে মশগুল থাকতে হবে। যেমন- নফল নামায, কুরআন শরীফ তিলাওয়াত, যিকির, ইলম অর্জন ইত্যাদি। ই’তিকাফকারী বাইরে বের হওয়ার দু’টি জরুরত হতে পারে- (১) শরয়ী, (২) তবয়ী।
শরয়ী জরুরত হলো- যে মসজিদে ই’তিকাফ করছে, সেখানে জুমুয়া হয় না, অন্য কোন মসজিদে যেখানে জুমুয়া হয়, সেখানে জুমুয়ার নামায পড়তে যাওয়া এবং নামায পড়ে চলে আসা। মু’তাকিফ যদি অহেতুক এক সেকেন্ডের জন্য মসজিদের বাইরে অবস্থান করে, তাহলে ই’তিকাফ ভঙ্গ হয়ে যাবে।
তবয়ী জরুরত হলো- পায়খানা-প্রস্রাব ইত্যাদির জন্য বের হওয়া এবং কাজ সেরে চলে আসা।

সুওয়াল – জাওয়াব বিভাগ

সুওয়াল – জাওয়াব বিভাগ

সুওয়াল – জাওয়াব বিভাগ

সুওয়াল – জাওয়াব বিভাগ

সুওয়াল – জাওয়াব বিভাগ