চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৫৮

সংখ্যা: ২১৭তম সংখ্যা | বিভাগ:

-আল্লামা আবুল বাশার মুহম্মদ রুহুল

ইহুদীদের মদদপুষ্ট হয়ে এবং সউদী ওহাবী শাসকগোষ্ঠীর অর্থে সাহায্যপ্রাপ্ত হয়ে সারাবিশ্বে একটি হিজরী ক্যালেন্ডার অনুসরণের অলীক স্বপ্ন নিয়ে একটি ভুঁইফোড় সংগঠন সারা দেশে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।

‘Real Hizri Calendar Implementation Council Bangladesh’ নামে এই সংগঠনটি সারা বিশ্বে একটি হিজরী ক্যালেন্ডার অনুসরণের পক্ষে অর্থাৎ সারা বিশ্বে একদিনে ঈদ পালন করার পক্ষে নানা প্রচারণা চালাচ্ছে এবং এ সম্পর্কে ৯০টি খোঁড়া যুক্তি দাঁড় করিয়েছে। আমরা ধারাবাহিকভাবে তাদের বর্ণিত শরীয়তের খিলাফ এই মনগড়া যুক্তির শরীয়তসম্মত এবং সঠিক মতামত প্রকাশ করবো ইনশাআল্লাহ। যেন সাধারণ মুসলমানগণ চাঁদের তারিখ নিয়ে বিভ্রান্তিতে না পড়ে। তারা লিখেছে-

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

৫১ নম্বর মত: হিজরী ক্যালেন্ডারের (মাসের) নামসমূহ সকলের নিকটই গ্রহণযোগ্য, যেহেতু তা সৌর ক্যালেন্ডারের (গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার) মত দেব-দেবীর নামে রাখা হয়নি।

৫২ নম্বর মত: বর্তমান পৃথিবীতে হিজরী ক্যালেন্ডারের প্রয়োগ খুব সহজ।

৫১ নম্বর মতের জাওয়াব: এ বিষয়টি অবশ্যই সঠিক যে হিজরী ক্যালেন্ডারের মাসের নামসমূহ সবার কাছেই গ্রহণীয়। এর কারণ হচ্ছে, যিনি কায়িনাতের মূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বয়ং আরবী মাসের ক্ষেত্রে বর্তমান যে নাম প্রচলিত রয়েছে তা ব্যবহার করেছেন এবং করতে বলেছেন। সুতরাং ক্বিয়ামত পর্যন্তই আরবী মাসের ক্ষেত্রে এ নামই বলবৎ থাকবে। তবে সৌর ক্যালেন্ডার বা গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের মাসের নামসমূহ শুধু দেব দেবীর নামে হওয়ার কারণেই বর্জনীয় তা নয়। দেব-দেবীর নামের বিষয়টি অনেক কারণের মধ্যে একটি। বিভিন্ন কারণেই গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের ব্যবহার মুসলমানগণের পরিহার করা উচিত এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- ১. গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের ভিত্তি হচ্ছে কুসংস্কারাচ্ছন্ন রোমানদের মনগড়া রচিত ক্যালেন্ডার ২. কাফিরদের রচিত ৩. মাসের এবং সপ্তাহের নামসমূহ দেব-দেবীর নামে ৪. এই ক্যালেন্ডার অনুসরণে শুধু কাফিরদের স্মরণ হয়, ৫. ত্রুটিপূর্ণ ৬. কোন ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই ইত্যাদি। এক্ষেত্রে মুসলমানগণের উচিত মুসলমানদের রচিত সৌর ক্যালেন্ডার ব্যবহার করা। আর পৃথিবীতে মুসলমানগণের রচিত প্রথম সৌর ক্যালেন্ডার হচ্ছে- “আত তাকউইমুশ শামসি।”

বর্তমান পৃথিবীতে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের পাশাপাশি বিশ্বের প্রায় সব দেশেই মুসলমানগণের কাছে হিজরী ক্যালেন্ডারের প্রচলন রয়েছে। কিন্তু গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার রচিত সূর্যের আবর্তনের সাপেক্ষে আর হিজরী ক্যালেন্ডার রচিত চাঁদের আবর্তনের সাপেক্ষে। মাস শুরু এবং শেষ, বিশেষ দিন নির্বাচনে চাঁদের ক্যালেন্ডারের যেমন প্রয়োজনীয়তা রয়েছে তেমনি ওয়াক্ত নির্ণয়ে প্রয়োজন রয়েছে সূর্য ক্যালেন্ডারের। কিন্তু ইতিহাসে মুসলমানগণের রচিত কোনো সূর্য ক্যালেন্ডারের তথ্য পাওয়া যায় না। ফলে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার ব্যবহারে মুসলমানগণ অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। কাজেই, অনেক কারণেই মুসলমানগণের জন্য গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার ব্যবহার করা উচিত নয়।

মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ করেন, “তোমরা কাফির-মুশরিক তথা ইহুদী-নাছারা ও মুশরিকদেরকে অনুসরণ-অনুকরণ করনা।” এছাড়াও হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের অনুসরণ করবে সে ব্যক্তি তাদেরই দলভুক্ত বলে গণ্য হবে।”

আর সে কারণেই যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার নেক দোয়ায় উনার খাছ আওলাদ, আওলাদে রসূল, কুতুবুল আলম, খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, খলীফাতুল উমাম হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন উনার এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সঙ্গে গভীর নিছবতের কারণে এই মুবারক তাক্বউইম (দিন গণনা পদ্ধতি) রচনা করেন।

আরবীতে ‘তাক্বউইম’ অর্থ ক্যালেন্ডার আর ‘শামস’ অর্থ হচ্ছে ‘সূর্য’ আর দুইয়ে মিলে হয়েছে, “আত তাক্বউইমুশ শামসি”।

৫২ নম্বর মতের জাওয়াব: বর্তমান পৃথিবীতে হিজরী ক্যালেন্ডারের অনুসরণ করা সহজ আবার কঠিন। সহজ তখনই যখন বিশ্বের মুসলমানগণ এই ক্যালেন্ডারের গুরুত্ব, তাৎপর্য অনুধাবন করতে পারবেন। এছাড়া হিজরী ক্যালেন্ডার বা আরবী মাস শুরু করা নিয়ে কোন মনগড়া পথের অনুসরণ না করে কুরআন শরীফ এবং হাদীছ শরীফ-এর নির্দেশ অনুযায়ী চাঁদ দেখে আরবী মাস শুরু করতে হবে। কিন্তু চাঁদ দেখে আরবী মাস শুরু করা নিয়ে শরীয়তের নির্দেশ উপেক্ষা করে মনগড়া নিয়মে চললে যা আজকের সউদী আরব এবং তার অনুসারী দেশগুলো করে যাচ্ছে তবে অবশ্যই হিজরী ক্যালেন্ডারের অনুসরণ করা কঠিন।

বাংলাদেশের জন্য ১৪৩৩ হিজরীর পবিত্র

শাওওয়াল মাসের চাঁদের রিপোর্ট

বাংলাদেশের স্থানীয় সময় অনুযায়ী জিরো মুন (অমাবস্যা) সংঘটিত হবে, ইয়াওমুল জুমুয়াতি ১৯ ছালিছ, ১৩৮০, শামসি, ১৭ আগস্ট ২০১২, শুক্রবার, রাত ১০টা ১৬ মিনিটে।

বাংলাদেশে পবিত্র শাওওয়াল মাসের চাঁদ তালাশ করতে হবে, ইয়াওমুছ ছাবতি, ২০ ছালিছ, ১৩৮০ শামসি। ১৮ আগস্ট, ২০১২, শনিবার সন্ধ্যায়।

সেদিন ঢাকায় সূর্যাস্ত ৬টা ৩০ মিনিটে এবং চন্দ্রাস্ত ৬টা ৪৪ মিনিটে। অর্থাৎ সূর্যাস্ত এবং চন্দ্রাস্তের সময়ের পার্থক্য ১৪ মিনিট। সূর্যাস্তের সময় চাঁদ দিগন্তরেখার প্রায় ২ ডিগ্রি ১৬ মিনিট উপরে অবস্থান করবে। কৌণিক দূরত্ব হবে ১১ ডিগ্রি ৩৫ মিনিট। সূর্য থাকবে ২৮৪ ডিগ্রি আজিমাতে। আর চাঁদ খুঁজতে হবে ২৭৩ ডিগ্রি আজিমাতে। সেদিন চাঁদ দেখা যাবে না।

খতমে নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির “ইসলামী শরীয়তের হুকুম মুতাবিক যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হয় যেমন-  কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩ দিন এরপর তওবা না করলে তাদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।”

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৩

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১২

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২১

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩১