ঈমানদীপ্ত সম্মানিত মহিলা: সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি বেমেছাল মুহব্বত  ও খিদমত

সংখ্যা: ২৯২তম সংখ্যা | বিভাগ:

বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত যাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি এবং উনার আহলিয়া যিনি উনারা একবার চিন্তা করলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব ও মাহবুব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মুবারক মেহমানদারী করবেন। উনাদের আরজু অনেক দিনের।

ঘরে কি খাবার আছে। আধা সের থেকে কিছু বেশী জব, গম, আটা আছে। একটা বাচ্চা খাসি ২-৩ কেজি হবে, এতটুকুই আছে। উনারা চিন্তা করলেন, এটা দিয়েই মেহমানদারী হোক।

উনারা ব্যবস্থা করলেন। মুখতালিফ বর্ণনা, এই মুবারক খাবারগুলি ৩০০ থেকে ১৪০০ লোক খেয়েছিল। সুবহানাল্লাহ। ৩০০ থেকে ১৪০০ লোক এই মুবারক মেহমানদারীতে এসেছিলেন, প্রত্যেকেই তৃপ্তিসহকারে খেয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ।

খাবার পাক হয়ে গেল। দাওয়াত মুবারক দেয়া হবে। এদিকে ঘটনা ঘটে গেল, সেটা হলো, হযরত যাবির রদ্বিয়াল্লাহ তায়ালা আনহু তিনি যখন চলে গেলেন, দাওয়াত দেয়ার জন্য, উনার যিনি মহাসম্মানিতা আহলিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি খাসিটা জবেহ করলেন। উনার ২টি বাচ্চা ছেলে ছিলেন, উনার ২ ছেলের সামনে খাসিটি জবেহ করে পাক করতেছিলেন।

এদিকে ২ ছেলের একজন আরেক জনকে বললেন, আমাদের যিনি মহাসম্মানিতা মাতা তিনি যে খাসিটা জবেহ করলেন, সেটা দেখি কিভাবে। এটা বলে একজন আরেকজনকে শুয়ায়ে ঐ ছুড়িটা দিয়ে গলার মধ্যে চালিয়ে দিলেন। ছুড়ি যখন গলাতে চালানো হয়, তখন তো মানুষ দিখন্ডিত হয়ে যায়। তিনি কিন্তু সেটাই হয়ে গেলেন। এটা দেখে যিনি বড় ভাই তিনি চিন্তিত হয়ে পিছন দিকে সরতে ছিলেন, মুখতালিফ বর্ণনা তিনিও ছাদ থেকে পড়ে শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ।

যখন ঘটনাটা ঘটে গেল উনার মহাসম্মানিত মাতা তিনি সংবাদ পেলেন, দৌড়ে আসলেন, যে ভাই মাটিতে পড়ে গেলেন, উনি শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করলেন, উনাকে নিয়ে আসলেন, আর যে ভাইকে জবেহ করা হয়েছে, রক্ততে একাকার হয়ে গেছে, তিনি চিন্তিত হলেন, যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যদি জানেন তাহলে দাওয়াতে নাও আসতে পারেন। যেন কেউ জানতে না পারেন, তাই তাড়াতাড়ি তিনি দুই সন্তানকে তুলে বাড়ির একটি কামড়ার মধ্যে বিছানায় শুয়ায়ে চাদর দিয়ে ঢেকে রাখলেন। রক্তগুলি এমন ভাবে পরিস্কার করলেন, যেন কেউ আসলে কখনও বুঝতে না পারে, যে এখানে কাউকে জবেহ করা হয়েছিল, রক্ত প্রবাহিত হয়েছিল ইত্যাদি ইত্যাদি।

পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে তিনি সব ঠিকঠাক করে পাক-শাক করলেন। দাওয়াত দেয়া হলো। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তো তাশরীফ মুবারক আনলেন। মুখতালিফ বর্ণনা, ৩০০ থেকে ১৪০০ লোক নিয়ে আসলেন। বললেন, পাত্র যেটা আছে তার ঢাকনা খোলার প্রয়োজন নাই। আমি যখন বলবো, তখন খুলতে হবে। উনারা নিশ্চিন্ত থাকলেন। আধা কেজি পৌনে এক কেজি গম জব আর একটা ছাগলেন বাচ্চা, ২-৩ কেজি। এটাতে কয়জন খাবেন। ঢেকে রাখলেন, মুখতালিফ বর্ণনা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ফু মুবারক দিলেন অথবা নুরুল বারাকাত থুথু মুবারক নিক্ষেপ করলেন, খাবার মুবারক ঢেকে রাখতে বললেন, আসতে আসতে ১০ জন ২০ জন করে দিতে থাকুন। এটা বলে বললেন, আপনাদের যে সন্তান আছেন তাদেরকে ডাকুন। তাদেরকে সহ আমাকে খেতে হবে।

হযরত যাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনারতো বিষয়টি জানা ছিলনা। তিনি বাড়ির ভিতরে আসলেন, এসে উনার আহলিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনাকে বললেন, আমাদের সন্তান দুজন কোথায়। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পাঠিয়েছেন, সন্তান ২জনকে নেয়ার জন্য। সন্তান সহ তিনি খাদ্য মুবারক গ্রহণ করবেন। যখন এই কথা বলা হলো, তখন উনার আহলিয়া তিনি চুপ হয়ে গেলেন। কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললেন, একটা ঘটনা ঘটে গেছে, কি ঘটনা। তিনি খুব হেকমতের সহিত বললেন, কেউ যদি কিছু আমানত রাখেন নিয়ে যান, তাহলে কোন সমস্যা আছে কি। হযরত যাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, না কোন সমস্যা নাই। যিনি আমানতদার আমানত দিয়েছেন, তিনি নিয়ে যাবেন। অসুবিধার কি আছে। কিছু কথাবার্তা বলে হযরত যাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি শুনে তিনি যেন চিন্তিত না হন, কি ঘটনা ঘটেছে সেটা তিনি বললেন। হযরত যাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি শুনলেন, শুনে তিনি চুপ থাকলেন। চুপ থেকে বললেন, আমি দেখি কি অবস্থা। মুখতালিফ বর্ণনা তিনি সেই কামরাতে গেলেন। চাদর উঠালেন, দেখলেন উনারা ২জনই যিন্দা। সুবহানাল্লাহ।

উনাদেরকে ডেকে খাবারে নিয়ে গেলেন। উনারা আশ্চর্য হলেন, উনারা যিন্দা হলেন কি করে। ২ জনই তো শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেছিলেন।

যখন গেলেন, মেহমানদারী শেষ হয়ে গেল। সবাই খাবার খাওয়া-দাওয়া করে চলে গেলেন। তখন হযরত যাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, ইয়া রসুলাল্লাহ ইয়া হাবিবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। একটা ঘটনা ঘটেছিল। কি ঘটনা ? ঘটনাটি বললেন। নূরে মুজাসসাম হাবিবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, তিনি সেটা জানেন। সুবহানাল্লাহ।

তিনি বললেন, আমি সেটা জানি। আপনার বাড়িতে মুবারক মেহমানদারী। আপনি দাওয়াত দিয়েছেন, খেতে এসেছি। অথচ আপনার ছেলেরা ইন্তিকাল করবেন, শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করবেন, আর এ অবস্থায় আমরা আপনার খাদ্য গ্রহন করবো। কি করে সম্ভব। কখনই এটা হতে পারে না। এজন্য আমি দুয়া করেছি, মহান আল্লাহ পাক যেন যিন্দা করে পৌছে দেন।

মহান আল্লাহ পাক যিন্দা করে পৌছে দিলেন। সুবহানাল্লাহ।

এই পবিত্র ঘটনায় অনেক ইবরত নসীহত। বিশেষ করে হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার মহাসম্মানিতা আহলিয়া। তিনি উনার দুইজন ছেলে শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করার পরেও, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যে সম্মানিত দাওয়াত মুবারক দিয়েছিলেন, সেটা যেন কোন মতে বাতিল হয়ে না যায়, সেই ব্যবস্থা করেছেন। তিনি কোন অবস্থায়ও সন্তানকে প্রাধান্য দেননি, সন্তানের মুহব্বতকে প্রাধান্য দেননি। সর্বাবস্থায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বত মুবারক উনার সম্মান তা’যীম-তাকরীম ইজ্জত মুবারককে প্রাধান্য দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ।

মহান আল্লাম পাক আমাদেরকে এই সুমহান পবিত্র ঘটনা থেকে ইবরত নছীহত হাছিল করার তাওফীক দান করুন।

-তাসনীম আহমদ খান

পিতা-মাতার দায়িত্ব সন্তানের সুন্দর শরীয়ত সম্মত নাম রাখা

ঈমানদীপ্ত সম্মানিত মহিলা: হযরত উম্মে সুলাইম রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহা উনার দাওয়াতে আহালের দ্বীন ইসলাম গ্রহণ

ঈমানদীপ্ত সম্মানিত মহিলা: সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি বেমেছাল মুহব্বত  ও খিদমত

ক্বদরে বাবা নাদানী, গারতু বাবা নাশাবী, ক্বদরে মাদর নাদানী, গারতু মাদর নাশাবী

দুনিয়ার মুহব্বত সকল গুনাহের মূল