ওয়ালিদুর রসূল, সাইয়্যিদুল বাশার, সাইয়্যিদুল কাওনাইন, নূরে মুয়াজ্জাম, মাহবূবে ইলাহী, মালিকুল জান্নাহ, আবূ রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক

সংখ্যা: ২৪৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

ওয়ালিদুর রসূল, সাইয়্যিদুল বাশার, সাইয়্যিদুল কাওনাইন, নূরে মুয়াজ্জাম, মাহবূবে ইলাহী, মালিকুল জান্নাহ, আবূ রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম  উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক

পরিচিতি মুবারক

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান আলাইহিস সালাম তিনি সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব মুবারক। সুবহানাল্লাহ! উনার উসীলায় সমস্ত জিন-ইনসান এবং তামাম কায়িনাতবাসী সকলেই মর্যাদা-মর্তবা, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক হাছিল করেছে। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী। সুবহানাল্লাহ!

উনার সম্মানিত পিতা হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম তিনি এবং সম্মানিতা মাতা হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ফাত্বিমা বিনতে আমর আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!

 উনার সম্মানিত ভাইগণ উনাদের সংখ্যা কত, এই ব্যাপারে সীরাত বিশারদগণ উনাদের মধ্যে ইখতিলাফ রয়েছে। কেউ বলেছেন ১৩ জন, কেউ বলেছেন ১২ জন, কেউ বলেছেন ১০ জন। আর উনার সম্মানিতা বোন ছিলেন মোট ৬ জন।

সম্মানিত বংশীয় পবিত্রতা মুবারক

মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ’ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেছেন, “(হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনার স্থানান্তরিত হওয়ার বিষয়টিও ছিল সম্মানিত সিজদাকারীগণ উনাদের মাধ্যমে।” (সম্মানিত সূরা শুয়ারা শরীফ : সম্মানিত আয়াত শরীফ ২১৯)

সুতরাং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার পূর্বপুরুষ আলাইহিমুস সালাম উনারা প্রত্যেকেই ছিলেন দ্বীনদার, ন্যায়পরায়ণ, মহান আল্লাহ পাক উনার আখাচ্ছুল খাছ অর্থাৎ বিশেষ ব্যক্তিত্ব মুবারক। অর্থাৎ উনারা অনেকেই ছিলেন হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম। আর যারা হযরত নবী-রসূল ছিলেন না, উনারা ছিলেন সে যামানার মহান আল্লাহ পাক উনার খাছ লক্ষ্যস্থল। উনারা প্রত্যেকেই সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব মুবারক। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার ‘সম্মানিত বরকতময় রগায়িব শরীফ’ সংঘটিত হওয়ার পূর্বে একখানা বরকতময় ঘটনা

সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান সাইয়্যিদাতুনা হযরত ফাত্বিমা বিনতে আমর আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত রেহেম শরীফ-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করার অল্প কিছু দিন পূর্বের ঘটনা। সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একদা শিকার করতে বনে যান। সারা দিন শিকারের পর তিনি খুব পিপাসার্ত ও ক্লান্ত হয়ে পড়েন। তখন মহান আল্লাহ পাক উনার এক বিশেষ কুদরত মুবারক যাহির হয়। সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হঠাৎ করে অত্যন্ত চমৎকার একটি পবিত্র ঝর্ণা মুবারক দেখতে পান। এই পবিত্র ঝর্ণা মুবারক উনার পানি ছিলো বরফের চেয়েও ঠাণ্ডা, মধুর চেয়েও মিষ্টি। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সেই সম্মানিত পানি মুবারক পান করলেন। তখন উনার মনে হলো বেহেশত ছাড়া আর কোনো জায়গায় এমন ঠা-া আর মিষ্টি পানি থাকতে পারে না। সুবহানাল্লাহ!

প্রকৃতপক্ষে ষিয়টি তাই ছিলো। মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার ‘সম্মানিত রগাইব শরীফ’ উনার পূর্বে জান্নাতী সুমিষ্ট পানি মুবারক পান করিয়ে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত রগাইব শরীফ উনার সম্মানিত সুসংবাদ মুবারক হাদিয়া করেছেন এবং উনার সম্মানিত ফযীলত মুবারক উনার বিষয়টি কায়িনাতের মাঝে স্পষ্ট করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার ‘সম্মানিত বরকতময় রগায়িব শরীফ’

মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার অতিপছন্দীয় এক মহাসম্মানিত রজনী মুবারক উনাকে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার ‘সম্মানিত রগায়িব শরীফ মুবারক’ উনার সম্মানিত রজনী মুবারক হিসেবে নির্দিষ্ট করেন। অর্থাৎ সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট অতিপছন্দীয় এক মহাসম্মানিত রজনী মুবারক-এ উনার সম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ!

সেই সম্মানিত রজনী মুবারক-এ মহান আল্লাহ পাক তিনি সারা কায়িনাতে বেমেছাল রহমত, বরকত ও সাকীনা মুবারক বর্ষণ করেছিলেন। মহাসম্মানিত জান্নাত উনাকে অপরূপ সাজে সুসজ্জিত করেছিলেন। হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুবারকবাদ জানানোর জন্য নির্দেশ মুবারক প্রদান করেছিলেন। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ

সম্মানিত হিজরত মুবারক উনার ৭৮ বছর ৮ মাস ১০ দিন পূর্বে ২রা রজবুল হারাম শরীফ ইয়াওমুস সাবত সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত মক্কা শরীফ উনার সম্মানিত কুরাইশ বংশে মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!

উনার সম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশকালে উনার সম্মানিত আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম দেয়ার জন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত জান্নাত থেকে বিশেষ বিশেষ সম্মানিতা ব্যক্তিত্বা মুবারক উনাদেরকে প্রেরণ করেছিলেন। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত হুজরা শরীফ মুবারক উনাকে আলোকিত করে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশকালে উনার সম্মানিত নূর মুবারক উনার আলো মুবারক-এ সর্বত্র আলোকিত হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি সারা পৃথিবী, সারা কায়িনাত এবং সম্মানিত জান্নাত উনাকে অপরূপ সাজে সুসজ্জিত মুবারক করেন। সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা এবং হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা সকলে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক-এ আহলান-সাহলান মুবারক জানান। সুবহানাল্লাহ! স্বয়ং খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক-এ খুশি মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত আক্বীক্বাহ মুবারক দেয়া এবং সম্মানিত  নাম মুবারক রাখা

সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের সপ্তম দিনে উনার সম্মানিত আক্বীক্বা মুবারক করেন, সম্মানিত ইসম বা নাম মুবারক রাখেন এবং আত্মীয়-স্বজন উনাদেরকে দাওয়াত দিয়ে বিশেষ মেহমানদারী মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম তিনি উনার সম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত নাম মুবারক রাখেন ‘আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম’। সুবহানাল্লাহ! এই সম্মানিত নাম মুবারক উনার অর্থ মুবারক হচ্ছে, ‘মহান আল্লাহ পাক উনার খাছ বান্দা তথা মাহবূব ব্যক্তিত্ব মুবারক’। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক

আবূ মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম,  আবূ আহমদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আবূ কুছাম (اَبُوْقُثَم) আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত লক্বব মুবারক

সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া যত সম্মানিত লক্বব মুবারক রয়েছে সমস্ত সম্মানিত লক্বব মুবারক উনাদের মালিক হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম, আবূ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া  সাল্লাম, সাইয়্যিদুল বাশার, মালিকুল জান্নাহ, আফদ্বলুন নাস বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদুল কাওনাইন ইত্যাদি উনার সম্মানিত বিশেষ লক্বব মুবারক উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত লালন-পালন মুবারক

সাইয়্যিদুল কাওনাইন, আবূ রসূলিনা সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি উনার সম্মানিত আব্বাজান আলাহিস সালাম উনার, সম্মানিত আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার এবং সম্মানিত ভাই-বোন আলাইহিমুস সালাম, আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল মুহব্বত, আদর-যতœ মুবারক-এ লালিত-পালিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ছিলেন উনার সম্মানিত পরিবারের সকলের নিকট সর্বাধিক আদরনীয় এবং সর্বাধিক মুহব্বত মুবারক উনার পাত্র। পরিবারের সকলেই উনাকে সর্বাধিক মুহব্বত ও আদর স্নেহ মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ!

উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক

মূলত ‘নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার মাঝে অবস্থান মুবারক করার কারণে সমস্ত সৃষ্টি জগতই উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য বেক্বারার ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! গাছ-পালা, তরু-লতা, পশু-পাখি থেকে শুরু করে কায়িনাতের সকলেই উনাকে বেমেছাল তা’যীম-তাকরীম মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক উনার মুবারক নির্দেশে হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা দায়িমীভাবে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিতেন। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত ইলম মুবারক

মূলত, মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে  ‘ইলমে গইব মুবারকসহ সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত প্রকার ইলম মুবারক হাদিয়া করেছেন। উনার সম্মানিত ইলম মুবারক উনার কোনো কুল-কিনারা নেই। সুবহানাল্লাহ!

মূলত, উনার সম্মানার্থেই  সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী ইলম মুবারকসহ সমস্ত নিয়ামত মুবারক লাভ করেছে। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার মাঝে নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম

সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি আবুল বাশার হযরত আদম ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে সৃষ্টি করে উনার সম্মানিত কপাল মুবারক উনার মাঝে সেই সম্মানিত নূর মুবারক তথা নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে রাখলেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর সেই সম্মানিত  নূর মুবারক হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার থেকে হযরত শীছ আলাইহিস সালাম উনার মাঝে স্থানান্তরিত হলেন। সুবহানাল্লাহ! আর এই সম্মানিত স্থানান্তর মুবারক পূত-পবিত্র ও সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাদের থেকে সর্বোত্তম ও সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব মুবারক উনার মাঝে এবং সর্বোত্তম ও সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাদের থেকে পূত-পবিত্র ও সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাদের মাঝে চলতে থাকলেন। সুবহানাল্লাহ! এইভাবে মহান আল্লাহ পাক তিনি এই সম্মানিত নূর মুবারক আমার সম্মানিত পিতা সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার মাঝে পৌঁছিয়ে দেন। সুবহানাল্লাহ! (মুছান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক্ব: হাদীছ শরীফ: ১৮, আল জুযউল মাফক্বূদ মিনাল জুযয়িল আউওয়াল মিনাল মুছান্নিছ লিহাফিযিল কাবীর আবী বকর আব্দির রাজ্জাক্ব ৬৩ পৃ.)

যাবীহুল্লাহ শান মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানতি হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন,

اَنَا ابْنُ الذَّبِيْحَيْنِ

অর্থ: “আমি দুই যাবীহুল্লাহ আলাইহিমাস সালাম উনাদের সন্তান।” সুবহানাল্লাহ! (শারফুল মুস্ত¡উট, শরহুশ শিউট শরীফ, তারীখুল খমীস)

আর দুই যাবীহুল্লাহ আলাইহিমাস সালাম উনারা হচ্ছেন) সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি  এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইসমাইল আলাইহিস সালাম তিনি।” সুবহানাল্লাহ! (মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়্যাহ)

সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দশ জন পুত্র সন্তান আলাইহিমুস সালাম উনারা উপযুক্ত হলেন এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদের মাধ্যমে সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চোখ মুবারক উনাকে শিতল করলেন। তখন উনার দশ জন আওলাদ আলাইহিমু সালাম উনাদের মাঝে লটারী মুবারক করলেন। লটারী মুবারক-এ সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার মুবারক উঠলো। তিনি উনার সম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে কুরবানী মুবারক করার জন্য  পূর্ণ প্রস্তুতি মুবারক গ্রহণ করেন এবং উনাকে নিয়ে সম্মানিত ক্বা’বা শরীফ উনার সামনে উপস্থিত হন। অতঃপর যখন তিনি উনাকে শুয়ায়ে ছুরি মুবারক দিয়ে কুরবানী মুবারক করবেন, তখন তা দেখে কুরাইশরা তাদের মজলিশ থেকে দৌড়ে এসে বললো, আপনি কি করছেন? তিনি বললেন, আমি উনাকে যবেহ করবো। কুরাইশ এবং উনার অন্যান্য পুত্রগণ বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! কোনো নিশ্চিত বিকল্প ধারা না হওয়া পর্যন্ত আপনি উনাকে যবেহ করতে পারবেন না। যদি করেন তাহলে পুত্র কুরবানী দেয়ার ধারা চালু হয়ে যাবে। এমতাবস্থায় মানুষের নিরাপত্তা কিভাবে রক্ষা হবে?

অতঃপর সকলের সম্মতিক্রমে লটারী শুরু হলো। সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট দোয়া করতে লাগলেন। প্রথমে দশটি উট ও সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার লটারী টানা হলো। নাম আসলো সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার। এবার আরো দশটি উট বাড়িয়ে লটারী দেয়া হলো। এভাবে দশটি করে উট বাড়িয়ে লটারী টানা হলো। কিন্তু প্রতিবারই সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার নাম মুবারক উঠতে লাগলো। অবশেষে একশত উট আর সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার মধ্যে লটারী দেয়া হলে উটের নাম উঠলো। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দাঁড়িয়ে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট দোয়া করছিলেন। কুরাইশরা উনাকে জানালেন যে, সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনার উপর সন্তুষ্ট হয়েছেন। সুবহানাল্লহ!

সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, না এতে আমি সন্তুষ্ট না। আরো তিনবার লটারী না করা পর্যন্ত আমি নিশ্চিত হতে পারছি না। সুবহানাল্লাহ! তারপর উনার কথা মুবারক অনুযাযী আরো তিনবার লটারী করা হলো। প্রতিবারই উটের নাম আসলো। তখন জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিশ্চিত হলেন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার শুকরিয়া মুবারক আদায় করলেন। সুবহানাল্লাহ!

তারপর সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একশ উট মুবারক যবেহ করে বিশেষ ও সাধারণ সকল লোককে; এমন কি অন্যান্য মাখলূকাতকেও আহার করালেন। এভাবে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত যাবীহুল্লাহ শান মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। সুবহানাল্লাহ! (মাদারিজুন নুবুওওয়াহ, মাওয়াহিবুল লাদুন নিয়্যাহ, শারহুয যারক্বানী আলাল মাওয়াহিব, আর রওদুল উনফ, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ইত্যাদি)

সম্মানিত সৌন্দর্য মুবারক

সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বেমেছাল সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারী ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, “সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন মানুষের মাঝে সর্বাধিক সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারী।” সুবহানাল্লাহ! (ইমতা’ ৪/৪১)

কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে, “সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত কপাল মুবারক উনার মাঝখানে সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার সম্মানিত নূর মুবারক তথা নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দেখা যেতো।” সুবহানাল্লাহ! (ইমতা’ ৪/৩৪)

‘আল বারাহীনুল ক্বিত্ব‘ইয়্যাহ ফী মাওলিদি খইরিল বারিয়্যাহ’ উনার মধ্যে ‘মাদারেজুন নুবুওওয়াত কিতাব’ উনার বরাতে উল্লেখ রয়েছে, “সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক, সর্বোত্তম গুণাবলী মুবারক এবং জামালিয়াত তথা বেমেছাল সৌন্দর্য মুবারক উনার সুখ্যাতি সর্বত্র প্রসিদ্ধ ছিলো। উপরন্ত সম্মানিত কুরবানী মুবারক দেয়ার ঘটনা সারা দেশে প্রচার হয়ে উনাকে আরো বহুগুণে সুবিখ্যাত করে তুলেছিলো। তাই কুরাইশ মহিলারা উনার সম্মানিত পরিপূর্ণ সৌন্দর্য মুবারক-এ আশিকা হয়ে বিবাহ বসার উদ্দেশ্যে উনার গন্তব্য পথের মাথায় দাঁড়িয়ে থাকতো এবং নিজেদের দিকে উনাকে আহ্বান জানাতো। কিন্তু মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাকে সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক  ও সম্মানিত ইছমত মুবারক উনাদের পর্দার আড়ালে সম্মানিত হিফাযত মুবারক-এ রেখে সম্মানিত ও পবিত্র থেকে পবিত্রতম অবস্থায় রেখেছিলেন।” সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার নিকট আরব মহিলাদের বিবাহের প্রস্তাব

আরবের অসংখ্য সম্ভ্রান্তশীলা মহিলা সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত কপাল মুবারক-এ নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অবলোকন করে আশিকাহ হয়ে উনার নিকট শাদী মুবারক বসার জন্য বেকারার-পেরেশান হয়ে গিয়েছিলো এবং উনার নিকট সরাসরি এই ব্যাপারে প্রস্তাবও দিয়েছিলো। সীরাতগ্রন্থেগুলোতে এই বিষয়ে অনেক ঘটনা মুবারক উল্লেখ রয়েছে।

সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক

সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি একরাতে স্বপ্ন মুবারক দেখলেন যে, একদল বানর তলোয়ার নিয়ে উনাকে আক্রমণ করছে। কিন্তু এক সম্মানিত কুদরতী শক্তি মুবারক উনাকে শূন্যে উঠিয়ে নিলেন এবং আসমান থেকে একখণ্ড আগুন এসে তাদেরকে পুড়িয়ে দিলো। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক উনার ব্যাখ্যা

সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি উনার সম্মানিত আব্বাজান সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে উপরোক্ত সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক খুলে বললেন। সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এই স্বপ্ন মুবারক শুনে বললেন, হে আমার সম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম, মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে সমস্ত প্রকার বিপদ-আপদ থেকে হিফাযত মুবারক করবেন। সুবহানাল্লাহ! আর আপনার সম্মানিত কপাল মুবারক যেই সম্মানিত নূর মুবারক অবস্থান মুবারক করছেন এবং যেই সম্মানিত নূর মুবারক উনার কারণে আপনার বেমেছাল শান-মান মুবারক উনার বিষয়টি বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। সেই সম্মানিত নূর মুবারক উনার কারণে বহু লোক আপনার ব্যাপারে হিংসা করছে, আপনার শত্রুতা পোষণ করছে, আপনার বিরোধিতা করছে। না‘ঊযুবিল্লাহ! তারা আপনাকে শহীদ করার চেষ্টা করবে। না‘ঊযুবিল্লাহ! কিন্তু তারা আপনার কোনো ক্ষতিই করতে পারবে না; বরং তারা নিজেরাই পরিপূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন  হয়ে যাবে, তাদের অস্তিত্ব চিরতরে বিলীন হয়ে যাবে। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সাথে আহলে কিতাবদের দুশমনী

‘আল বারাহীনুল ক্বিত্ব‘ইয়্যাহ ফী মাওলিদি খইরিল বারিয়্যাহ’ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে, “আহলে কিতাব তথা ইহুদী-খ্রিস্টানরা বিভিন্ন আলামত (এবং তাদের আসমানী কিতাব উনাদের লিখিত প্রমাণ দ্বারা) জানতো যে, আখিরী নবী, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এখন সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার ঔরস মুবারক-এ তাশরীফ মুবারক এনেছেন। তাই তারা উনার প্রতি ভীষণ শত্রুতা শুরু করে দিলো। উনাকে শহীদ করার জন্য ওঁতপেতে থাকলো। না‘ঊযুবিল্লাহ! শুধু তাই নয়, উনাকে শহীদ করার জন্য সর্বদা তাদের পক্ষ থেকে সম্মানিত মক্কা শরীফ উনার আশে-পাশে গুপ্তচর আসা-যাওয়া করতে থাকলো। এই গুপ্তচরেরা বিভিন্ন অলৌকিক ও আশ্চর্য ঘটনা দেখে ভীত-সন্ত্রস্ত, লাঞ্ছিত ও লজ্জিত অবস্থায় ফিরে যেতো। সুবহানাল্লাহ!

একদা সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি শিকার করার উদ্দেশ্য মুবারক নিয়ে বের হলেন। এটা জেনে শাম দেশের দিক হতে শত্রুদের একটি বিরাট দল উনাকে শহীদ করার জন্য তরবারী নিয়ে এগিয়ে আসলো। এদিকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত আব্বাজান সাইয়্যিদুনা ওহাব ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনিও ঘটনাক্রমে সেই নির্জন ময়দানে উপস্থিত ছিলেন। (হঠাৎ করে) তিনি অত্যন্ত শক্তিশালী একদল আশ্বারোহী সৈন্য দেখতে পেলেন। ইহজগতের কোনো মানুষের সাদৃশ্য উনারা ছিলেন না (উনারা ছিলেন মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য নিয়োজিত সম্মানিত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম)। সুবহানাল্লাহ! উনারা অদৃশ্য থেকে এসে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার শত্রুদেরকে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করে দিলেন।” সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত শাদী মুবারক

‘নুযহাতুল মাজালিস’ কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, যখন সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বড় হলেন, (শাম দেশের ইহুদী পাদ্রীরা) তারা উনাকে শহীদ করার জন্য ইচ্ছা পোষণ করলো। তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার জন্য হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে প্রেরণ করলেন। হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদেরকে হত্যা করলেন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিনা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত আব্বাজান আলাইহিস সালাম সাইয়্যিদুনা হযরত ওহাব আলাইহিস সালাম তিনি পাহাড়ের উপর থেকে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার এই সম্মানিত কারামাত মুবারক দেখলেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর তিনি বাড়িতে যেয়ে উনার সম্মানিতা ‘যাওযাতুম মুকাররামাহ’ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মাজান হযরত র্বারাহ বিনতে আব্দুল উয্যা আলাইহাস সালাম উনাকে এই সম্মানিত কারামাত সম্পর্কে অবহিত করলেন। আর তিনি বললেন, আপনি কি সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সাথে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত শাদী মুবারক দিবেন? জবাবে তিনি বললেন, হ্যাঁ। অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত ওহাব আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আব্বাজান আলাইহিস সালাম উনার এই সম্মানিত কারামাত মুবারক দেখে তিনি এবং উনার সম্মানিত আহলিয়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত বাররাহ আলাইহাস সালাম উনারা দু’জনে সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার নিকট গেলেন। উনার সম্মানিত নাম মুবারক ছিলো, শায়বাতুল হামদ। অতঃপর উনারা উভয়ে সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সাথে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত শাদী মুবারক উনার ব্যাপারে প্রস্তাব মুবারক দিলেন। অতঃপর তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সাথে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত শাদী মুবারক সুম্পন্ন করলেন।” সুবহানাল্লাহ! (নুযহাতুল মাজালিস ২/৭৫)

আযীমুশ শান শাদী মুবারক অনুষ্ঠান

মূলত সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত শাদী মুবারক পরিপূর্ণরূপে সম্মানিত সুন্নতী কায়দায় হয়েছিলো। সুবহানাল্লাহ! সময়টি ছিলো নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের প্রায় ৮ মাস ১২ দিন পূর্বে ১লা রজবুল হারাম শরীফ লাইলাতুল জুমুয়াহ শরীফ বা’দ মাগরিব ।

সম্মানিত মোহরানা মুবারক

এই সম্মানিত শাদী মুবারক উনার সম্মানিত মোহরানা মুবারক ছিলো নগদ এক উকিয়া স্বর্ণ ও এক উকিয়া রৌপ্য। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত ওলীমা মুবারক

 সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত শাদী মুবারক উনার ওলীমায় একশতটি উট, একশত গরু, একশত বকরী জবাই করে প্রচুর পরিমাণে খাবার প্রস্তুত করেন এবং সম্মানিত মক্কা শরীফ ও তৎসংলগ্ন এলাকার সবাইকে দাওয়াত করে মেহমানদারী মুবারক করেন। এই সম্মানিত মেহমানদারী মুবারক চারদিন পর্যন্ত চলে। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত রগায়িব শরীফ

সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার ফুল সজ্জিত সম্মানিত হুজরা শরীফ-এ পাঠানো হলো। অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বিশেষ ছোহবত মুবারক তথা সাক্ষাৎ মুবারক-এ গেলেন এবং সম্মানিত নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার থেকে উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন। সুবাহনাল্লাহ! সেই রাতটি ছিলো সম্মানিত রজবুল হারাম শরীফ উনার ১লা তারিখ এবং সম্মানিত জুমুয়া শরীফ উনার সম্মানিত রাত মুবারক।

তিজারাত তথা ব্যবসার উদ্দেশ্যে সফর

মহাসম্মানিত আযীমুশান শান শাদী মুবারক উনার পর সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে দুই মাস সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। অত:পর তিনি কুরাইশদের সাথে ব্যবসার উদ্দেশ্যে শাম দেশে সফর মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! (ইবনে সা’দ, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ)

সম্মানিত মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ

ব্যবসা শেষে উনারা সম্মানিত মক্কা শরীফ উনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন। অতঃপর উনারা যখন সম্মানিত মদীনা শরীফ উনার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, সেই দিন সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত মারিদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তাই তিনি বললেন-

اَتَخَلَّفُ عِنْدَ اَخْوَالِىْ بَنِىْ عَدِىّ بْنِ النَّجَّارِ.

অর্থ: “আমি সম্মানিত বনী আদী ইবনে নাজ্জার গোত্রের আমার সম্মানিত মামা উনাদের নিকট থেকে যাবো।”

অতঃপর তিনি সেখানে সম্মানিত মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করা অবস্থায় এক মাস অবস্থান মুবারক করেন। (ইবনে সা’দ, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১/৩৩১)

সম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ

সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি এক মাস মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করার পর সম্মানিত মদীনা শরীফেই ২রা মুহররমুল হারাম শরীফ ইয়াওমুল জুমুয়াহ সম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার মধ্যে অবস্থানকাল মুবারক ছয় মাস পূর্ণ হয়েছে।

সময়টি ছিলো সম্মানিত হিজরত মুবারক উনার প্রায় ৫৩ বছর ২ মাস পূর্বে। অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার ২ মাস ১০ দিন পূর্বে।

দুনিয়ার যমীনে অবস্থান মুবারক

মুজাদ্দিদে আ’যম সম্মানিত রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়া সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সর্বাধিক বিশুদ্ধ অভিমত হচ্ছে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি ২৫ বছর ৬ মাস দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত রওযা শরীফ সম্মানিত আবওয়া শরীফ

সম্মানিত আওলাদ: সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত দ্বীন: সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত দ্বীন অর্থাৎ দ্বীনে হানীফ। সুবহানাল্লাহ!

মহান আল্লাহ পাক তিনি মুজাদ্দিদে আ’যম সম্মানিত রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার মুবারক উসীলায় মালিকুল জান্নাহ, আবূ রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার  সম্মানিত জীবনী মুবারক জানার, বুঝার উলব্ধি করার এবং উনার প্রতি বিশুদ্ধ হুসনে যন পোষণ করার তাওফীক্ব দান করুন এবং উনার সম্মানার্থে ইহক্বাল-পরকালে হাক্বীক্বী কামিয়াবী নছীব করুন। আমীন।


-মুহম্মদ আল আমীন

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম