খইরু খলক্বিল্লাহি, খাযিনু কামালিল্লাহি, খইরুল আলামীনা, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শরীয়ত প্রণেতা

সংখ্যা: ১৯৪তম সংখ্যা | বিভাগ:

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শরীয়তের ধারক ও বাহক। তিনি যদি কোন জিনিসকে হারাম বলতেন, তবে তা চিরকালের জন্য হারাম হয়ে যেতো এবং কোন জিনিসকে হালাল বলতেন, তা চিরকালের জন্য হালাল হয়ে যেতো। নিম্নে তার কয়েকটি উদাহরণ বর্ণিত হলো-

(১) একবার নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করলেন, “হে মানুষো! তোমরা হজ্জ করবে, হজ্জ করা তোমাদের উপর ফরয। জনৈক ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে জিজ্ঞেস করলেন, হে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! প্রত্যেক বৎসরই কি হজ্জ করা ফরয? তার উত্তরে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “যদি আমি হ্যাঁ বলি, তবে প্রত্যেকের উপর প্রতি বৎসর হজ্জ করা ফরয হয়ে যাবে।” (মিশকাত, মিরকাত, লুময়াত, শরহুত ত্বীবী, তা’লীকুছ ছবীহ)

(২) হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে বলেছিলেন, “হে আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আপনি হযরত ফাতিমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা, উনার বিছাল শরীফ-এর পর উনাকে গোসল দিবেন।” অথচ কোন স্বামীই তার মৃত স্ত্রীকে গোসল দিতে পারেনা। কারণ মৃত্যুর সাথে সাথেই বিবাহ সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়। (শামী)

(৩) হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জামাত সহকারে কয়েকদিন তারাবীহ্ নামায পড়ার পর তা ছেড়ে দেন। ছাড়ার কারণ প্রসঙ্গে বলেন, “যদি আমি এ নামায এভাবে সবসময় পড়ি, তবে তোমাদের উপর ফরয হবার আশংকা রয়েছে এবং তোমাদের জন্য তা আদায় করা কষ্টকর হয়ে যাবে।” (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত শরীফ)

(৪) একবার নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করলেন, “পবিত্র মক্কা নগরীতে কেউই কাঁটাযুক্ত গাছ তুলতে পারবে না। কোন জন্তু শিকার করতে পারবে না।” হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু করলেন, “হে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! দয়া করে ইজখার নামক ঘাস কাটবার অনুমতি দান করুন। কেননা তা ঘরের চালে ব্যবহৃত হয় এবং কামারগণ কয়লার পরিবর্তে সেগুলো জালিয়ে থাকে। তদুত্তরে তিনি বললেন, “হ্যাঁ, ইজখার কাঁটার অনুমতি দেয়া হলো। (বুখারী, মুসলিম শরীফ, শরহে নববী, ফতহুল মুলহীম)

(৫) হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উনার চাচা আবু তালিব, যিনি ৪২ বৎসর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উনার খিদমত করেছেন। তাঁর ইন্তিকালের সময় হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “হে আমার চাচাজান আপনি কালিমা শরীফ পাঠ করুন।” উত্তরে আবু তালিব বললেন, “হে আমার ভাতিজা! এখন যদি আমি কালিমা শরীফ পড়ি, তাহলে মানুষ বলবে- ইন্তিকালের সময় সে তাঁর ভাতিজার দীন গ্রহণ করেছে।” তখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “আপনি শুধু লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলুন, মুহম্মদুর রসুলুল্লাহ বলার দরকার নেই। এতেই আপনার জন্য আমি সুপারিশ করবো।” সুবহানাল্লাহ্! অথচ ক্বিয়ামত পর্যন্ত কেউ যদি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলে সে জান্নাতে যেতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত ‘মুহম্মদুর রসুলুল্লাহ’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম না বলবে। (সমূহ সীরাতের কিতাব)

(৬) একবার একজন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এসে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি ইচ্ছাকৃত একটি ফরয রোযা ভেঙ্গেছি, এখন আমি কি করবো? জবাবে নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “তুমি একাধারে দু’মাস কাফ্ফারা স্বরূপ রোযা রাখ।” ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, আমি অসুস্থ এবং রোযা রাখতে অক্ষম। অতঃপর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “তা না পারলে তুমি ষাটজন মিসকীনকে পেটপুরে দু’বেলা খাওয়াও।” তখন উক্ত ছহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, “ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি খুব গরীব এবং আমি মিসকীনদের খাওয়াতেও অক্ষম।” অতঃপর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “যদি তাও না পার, তাহলে একজন গোলাম আযাদ করে দাও।” তখন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, ‘ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার কোন গোলাম নেই।’ অতঃপর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “তুমি কিছুক্ষণ বস।” এমন সময় এক ঝুড়ি বা এক টুকরি খেজুর হাদিয়া আসলো। তখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উক্ত ছাহাবীকে বললেন, “তুমি টুকরিটি নিয়ে যাও এবং মদীনা শরীফ-এর দরিদ্রের মধ্যে বিলিয়ে দাও।” উক্ত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তখন আরয করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার চেয়ে গরীব মনে হয় মদীনা শরীফে আর কেউ নেই। তখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “তোমার কাফ্ফারা তুমিই খেয়ে ফেলো।” সুবহানাল্লাহ্! (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত, ফতহুল বারী, ওমদাতুল ক্বারী)

উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা এটাই প্রতীয়মান হয় যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শারে’ বা শরীয়ত প্রণেতা, যা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উনার অনন্য মর্যাদা-মর্তবা।

আল্লামা মুহম্মদ মুফিজুর রহমান

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম