খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক স্বয়ং নিজেই সর্বপ্রথম ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে ঈদ উদযাপন করেন

সংখ্যা: ২১২তম সংখ্যা | বিভাগ:

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বত, ছানা-ছিফত, প্রশংসা তথা মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে ঈদ সর্বপ্রথম পালন করেছেন মহান আল্লাহ রব্বুল আলামীন তিনি স্বয়ং নিজে। এ সম্পর্কে হাদীছে কুদসী শরীফ-এ উল্লেখ করা হয়েছে-

كنت كنزا مخفيا فاحببت ان اعرف فخلقت الخلق لاعرف.

অর্থ: æমহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, আমি গুপ্ত ছিলাম। আমার মুহব্বত হলো যে, আমি জাহির হই। তখন আমি আমার (রুবূবিয়াত) জাহির করার জন্যই সৃষ্টি করলাম মাখলূকাত (আমার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে)।” (আল মাকাসিদুল হাসানা/ ৮৩৮, কাশফূল খিফা/২০১৩, আসনাল মুত্বালিব/১১১০, তমীযুত তীব/১০৪৫, আসরারুল মারফুআ/৩৩৫, তানযিয়াতুশ শরীয়াহ ১/১৪৮, আদ্দুরারুল মুন্তাছিরা/৩৩০, আত তাযকিরা ফি আহাদীসিল মুশতাহিরা/১৩৬, সিররুল আসরার, কানযুল উম্মাল)

মহান আল্লাহ পাক তিনি হাদীছে কুদসী শরীফ-এ আরো ইরশাদ করেন-

لولاك لـما اظهرت الربوبية.

অর্থ: æহে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি না হলে বা আপনাকে সৃষ্টি না করলে আমি আমার রুবূবিয়াতই প্রকাশ করতাম না।” (কানযুল উম্মাল)

عن حضرت ابن عباس رضى الله تعالى عنهما انه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اتانى جبريل عليه السلام فقال يا رسول الله صلى الله عليه وسلم لولاك ماخلقت الجنة ولولاك ماخلقت النار.

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, হযরত জিবরীল আমীন আলাইহিস সালাম তিনি আমার নিকট আগমন করে বলেন, ইয়া রসূলাল্লাহু ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে এই বলে পাঠিয়েছেন যে, আপনি যদি না হতেন তবে আমি জান্নাত ও জাহান্নাম কিছুই সৃষ্টি করতাম না।” (দায়লামী, কানযুল উম্মাল-৩২০২২)

অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত মাখলূকাত সৃষ্টি করেছেন তথা মহান আল্লাহ পাক উনার রুবূবিয়াতই প্রকাশ করেছেন মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে ঈদ পালন করার উদ্দেশ্যে।

মহান আল্লাহ পাক তিনি আলমে আরওয়াহতেও সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করেছেন ও উনাদের থেকে ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করার ওয়াদা নিয়েছেন। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ করেন-

واذ اخذ الله ميثاق النبين لـما اتيتكم من كتاب وحكمة ثم جائكم رسول مصدق لـما معكم لتؤمنن به ولتنصرنه قال ااقررتم واخذتم على ذلكم اصرى قالوا اقررنا قال فاشهدوا وانا معكم من الشاهدين. فمن تولى بعد ذلك فاولئك هم الفاسقون.

অর্থ: æ(হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি স্মরণ করুন সেই সময়ের কথা) যখন মহান আল্লাহ পাক তিনি আলমে আরওয়াহতে সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের কাছ থেকে ওয়াদা নিয়েছিলেন যে, আপনাদেরকে আমি কিতাব ও হিকমত দান করবো। অতঃপর আপনাদেরকে সত্য প্রতিপাদনের জন্য (নুবুওওয়াত ও রিসালতের হাক্বীক্বী ফায়িজ দেয়ার জন্য) আখিরী নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে প্রেরণ করবো। আপনারা উনাকে নবী ও রসূল হিসেবে মেনে নিবেন এবং সর্ববিষয়ে উনার খিদমত করবেন (উনার মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে ঈদ পালন করবেন)। আপনারা কি এই ওয়াদার কথা মেনে নিলেন? উত্তরে উনারা সকলে বললেন, হ্যাঁ আমরা এই ওয়াদা স্বীকার করে নিলাম (অর্থাৎ আমরা যমীনে গিয়ে আখিরী নবী, হাবীবুল্লাহ  হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে ঈদ পালন করবো)। তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন: আপনারা সাক্ষী থাকুন, আমিও আপনাদের সাথে সাক্ষী হয়ে গেলাম। তবে জেনে রাখুন, যারা এই ওয়াদাকৃত বিষয় থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে (যারা মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে ঈদ পালন করবে না বা এর বিরোধিতা করবে) তারা চরম পর্যায়ের ফাসিক (ও কাফির) হয়ে যাবে।” (সূরা আলে ইমরান : আয়াত শরীফ ৮১-৮২)

এ আয়াত শরীফ-এ স্বয়ং আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তিনি নিজেই হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করেছেন। আবার হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে যমীনে এসে ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং যারা যমীনে এসে ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করবে না বরং এর বিরোধিতা করবে তারাই চরম পর্যায়ের ফাসিক ও কাফির হবে সে সম্পর্কে ঘোষণাও দিয়েছেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ ফরমান-

انا ارسلناك شاهدا ومبشرا ونذيرا. لتؤمنوا بالله ورسوله وتعزروه وتوقروه وتسبحوه بكرة واصيلا.

অর্থ: æহে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! নিশ্চয়ই আমি আপনাকে সৃষ্টি করেছি সাক্ষ্যদাতা, সুসংবাদদাতা ও ভয় প্রদর্শনকারীরূপে। অতএব, তোমরা (উম্মতরা) মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের প্রতি ঈমান আনো এবং তোমরা হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত করো, সম্মান করো ও সকাল-সন্ধ্যা অর্থাৎ সদা-সর্বদা উনার ছানা-ছিফত বর্ণনা করো।” (সূরা ফাতহ : আয়াত শরীফ ৮-৯)

মহান আল্লাহ পাক তিনি অন্যত্র ইরশাদ করেন-

يايها الناس قد جاءتكم موعظة من ربكم وشفاء لـما فى الصدور وهدى ورحمة للمؤمنين. قل بفضل الله وبرحمته فبذالك فليفرحوا هو خير مما يجمعون .

অর্থ: æহে মানবজাতি! অবশ্যই তোমাদের মধ্যে মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে এসেছেন মহান নছীহতকারী, তোমাদের অন্তরের সকল ব্যাধিসমূহ দূরকারী এবং ঈমানদারদের জন্য মহান হিদায়েতকারী ও মহান রহমতস্বরূপ (হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলে দিন, তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার দয়া, ইহসান ও রহমত (হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উনাকে পেয়ে উনার জন্য ঈদ উদযাপন তথা খুশি প্রকাশ করো। তোমরা যতো কিছুই করোনা কেনো তিনিই হচ্ছেন সমগ্র কায়িনাতের জন্য সবচেয়ে বড় ও সর্বোত্তম নিয়ামত।” (সূরা ইউনুস : আয়াত শরীফ ৫৭- ৫৮)

এ আয়াত শরীফ দ্বারা মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত মাখলূকাতের জন্য ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করাকে ফরয করে দিয়েছেন।

উল্লেখ্য যে, এ সম্পর্কে তিনটি শব্দ রয়েছে। যথা: ميلاد অর্থ: জন্মের সময়, مولد অর্থ: জন্মের স্থান, مولود অর্থ: সদ্য প্রসূত সন্তান। আর ইছতিলাহী বা ব্যবহারিক অর্থ হলো- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, র‏হমতুল্লিল আলামীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে ছানা-ছিফত করা ও উনার প্রতি ছলাত-সালাম পাঠ করা; যা মহান আল্লাহ পাক ও উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের নির্দেশের অন্তর্ভুক্ত। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন,

ان الله وملئكته يصلون على النبى يايها الذين امنوا صلوا عليه وسلموا تسليما.

অর্থ: æনিশ্চয় মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ছলাত পাঠ করেন। হে ঈমানদারগণ! তোমরাও উনার প্রতি ছলাত পাঠ করো এবং সালাম দেয়ার মতো সালাম দাও অর্থাৎ যথাযথ আদব সহকারে তথা ক্বিয়াম বা দাঁড়িয়ে সালাম পেশ করো।” (সূরা আহযাব : আয়াত শরীফ ৫৬)

-মাওলানা মুফতী মুহম্মদ আবু ইরফান

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম