চাঁদ দেখতে আধুনিক যন্ত্র কিনবে সরকার একটি লোক দেখানো বাগাড়ম্বরপূর্ণ সিদ্ধান্ত

সংখ্যা: ২৭৪তম সংখ্যা | বিভাগ:

এবার ঈদুল ফিতরের আগে অর্থাৎ শাওওয়াল মাসের চাঁদ দেখা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হওয়ায় নাকি এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিগত বহু বছর ধরে ইফার চাঁদ দেখা কমিটি যে চাঁদের সিদ্ধান্ত দিয়ে আসছে তার অধিকাংশই সঠিক ছিল। বিচ্ছিন্ন যে কয়টি রিপোর্টে অসঙ্গতি ছিল তা পর্যবেক্ষক বা ওয়াচারের দুর্বলতার কারণে। তাহলে হঠাৎ করেই এখন কেন সমস্যা দেখা দিচ্ছে? এর কারণ কি আসলেই উন্নত প্রযুক্তির অভাব নাকি অন্য কিছু? তলিয়ে দেখা যাক।

একটি বিষয় স্পষ্ট করে বলতে হয় সম্মানিত শরীয়তে চাঁদ দেখার জন্য খালি চোখই যথেষ্ট। উন্নত প্রযুক্তির বিষয়টি আপেক্ষিক। আপনি এখন যে টেলিস্কোপ দিয়ে দেখবেন আগে এত উন্নত মানের ছিল না আবার এখন যা পাওয়া যাচ্ছে তারচেয়েও আধুনিক যন্ত্র ও প্রযুক্তি সামনে আসবে। তাহলে কোন যন্ত্র দিয়ে কতটা ম্যাগনিফাই করে দেখলে তা গ্রহনযোগ্য হবে সে বিষয়গুলোতে বিতর্ক এসে যাবে। যেমন গবেষণার জন্য মুন সাইটিং এস্ট্রোনমারগন সিসিডি ইমেজিং সিস্টেম পদ্ধতি ব্যবহার করে অমাবস্যার চাঁদকে ফোটন পদ্ধতিতে ধারণ করে কিন্তু এই দেখা কখনোই আরবী মাস শুরুর জন্য গ্রহনযোগ্য নয়। কেননা খালি চোখে চাঁদ দেখে আরবী মাস শুরু করা শর্ত এবং ইফাও এই নীতির উপর অবিচল থেকেই কাজ করে যাচ্ছেন।

সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আধুনিক থিওডোলাইড টেলিস্কোপ ব্যবহার করবে অথচ বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের এই যন্ত্র আছে অনেক আগে থেকেই এবং ইফার চাঁদ দেখা কমিটিতে আবহাওয়া অধিদপ্তরের প্রতিনিধি উপস্থিত থেকে তারা নিবিড়ভাবে সাহায্য করে থাকেন। তাহলে টেলিস্কোপের অভাবেই যদি চাঁদের তারিখের সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হয় সে ক্ষেত্রে তো আবহাওয়া অফিসই রয়েছে।

পবিত্র শা’বান মাসে শবে বরাতের তারিখ ঘোষণার ক্ষেত্রে এবং শাওওয়াল মাসে ঈদুল ফিতরের তারিখ ঘোষনার ক্ষেত্রে যে সমস্যা হয়েছে তার মুল কারণ একই জায়গাতেই সীমাবদ্ধ। ১) চাঁদ খোঁজার ব্যাপারে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষকগণের ধারণা নেই কত সময় পর্যন্ত চাঁদ আকাশে থাকে এবং কোন এলাকার জন্য তা কত সময়ব্যাপী খুঁজতে হয় ২) আর যারা চাঁদ দেখেছেন (যেমন মাজলিসু রুইয়াতিল হিলালের সদস্যগণ অভিজ্ঞ হওয়াতে শা’বান ও শাওওয়াল মাস উভয় সময়ই চাঁদ দেখেছেন) তাদের চাঁদ দেখার রিপোর্টকে “বিচ্ছিন্নভাবে ভাবে পাওয়া” “ডিসির অফিস বা ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধির মাধ্যমে প্রাপ্ত নয়” ইত্যাদি বলে আমলে নিতে গড়িমসি করা। কেবল শাওওয়াল মাসের চাঁদ দেখারই উদাহরণ দিচ্ছি। যখন জানা গেলো দেশের অধিকাংশ এলাকাই মেঘাচ্ছন্ন এবং কোথাও কোথাও বৃষ্টিপাতও হচ্ছে কেবল উত্তরবঙ্গ ছাড়া।

তখন মাজলিসু রুইয়াতিল হিলালের উত্তরবঙ্গের প্রতিনিধিদের সতর্ক করে দেয়া হয় ভালভাবে চাঁদ খোঁজার জন্য। আর এক্ষেত্রে উত্তরবঙ্গে চাঁদ যেহেতু ঢাকার সময়ের চেয়ে আরও একটু দেরীতে চাঁদ অস্ত যাওয়ার কথা ছিল তাই সেখানে কত সময় ধরে চাঁদ দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে তা বলে দেয়া হয়। সেদিন অর্থাৎ ৪ঠা জুন চাঁদ আকাশে ছিল সূর্য অস্ত যাবার পর প্রায় ৫৮ মিনিট। এখন যাদের ধারণা মাগরিবের পর কেবল চাঁদ দেখা যায় তারা ৩০ মিনিট অপেক্ষা করলেই মনে করেন অনেকসময় ধরে অপেক্ষা করেছি এবং চাঁদ না দেখেই চাঁদ দেখার স্থান ত্যাগ করেন। এ কারনে অনেক অনভিজ্ঞ প্রতিনিধিগণ চাঁদ দেখতে পান না। ইফার কোন পর্যবেক্ষক এমনকি নীতি নির্ধারকদেরও এই বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণা নেই, ট্রেনিং নেই। যেমন বারবার একটি বিষয় বলা হচ্ছে “চাঁদ দেখার বিষয়টি যেহেতু শরীয়তের বিষয় তাই ৪০-৪৫ জন আলিমের পরামর্শক্রমে সিদ্ধান্ত হয়েছে”। চাঁদ দেখার সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য ৪০-৪৫ জন্য আলিমের কখনোই প্রয়োজন নেই আর তাদের প্রয়োজনের বিষয়টি বারবার উল্লেখের মধ্য দিয়ে ফুটে ওঠে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট লোকজনের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা।

সাধারনভাবে চাঁদ দেখার জন্য দুজন মুসলমান পুরুষের সাক্ষ্যই যথেষ্ট। আর সিদ্ধান্ত দেয়ার জন্য কমিটিই রয়েছে। নতুবা পূর্বে যেখানে পত্রিকায় ইফার ফোন নাম্বার দিয়ে জনগণকে চাঁদ দেখার সংবাদ পরিবেশন করার সুযোগ করে দেয়া হত এখন সেক্ষেত্রে নানারূপ শর্ত প্রয়োগ করা হচ্ছে। যেমন ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধির মাধ্যমে আসতে হবে বা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে আসতে হবে ইত্যাদি। উল্লেখ্য এখনও সউদী আরবের চাঁদ দেখা বিষয়ক মন্ত্রাণালয় থেকে চাঁদের খবর পরিবেশন করার জন্য সউদী প্রেস এজেন্সীর মাধ্যমে জনগণের উদ্দেশ্যে প্রেস রিলিজ দেয়া হয়। তাহলে মাজলিসু রুইয়াতিল হিলাল একটি আন্তর্জাতিক চাঁদ দেখা কমিটি যেখানে বিভিন্ন দেশের মুন সাইটিং এস্ট্রোনমার ও প্রতিনিধি রয়েছে, যাদের পর্যবেক্ষকগণের বিশেষ প্রশিক্ষণও আছে এবং তারা ধর্মপরায়ণ মুসলমান তাদের রিপোর্ট সময়মত আমলে নিলেই এই বিড়ম্বনা থেকে বাঁচা যেত।

শাওওয়াল মাসের চাঁদের রিপোর্ট কুড়িগ্রাম জেলার প্রশাসককে জানানো হয় চাঁদ দেখার পরপরই এবং চাঁদ প্রথম দৃশ্যমান হয় ৭টা ১৮ মিনিটে এবং ইফাতে ইমেইল করে পাঠানো হয় রাত ৮টার আগেই। তারপরেও কেন রাত ১১ টায় জাতিকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সিদ্ধান্ত দিতে হয় এটি সত্যি অবাক হবার মত একটি বিষয়।

-আবুল বাশার মুহম্মদ রুহুল হাসান

চাঁদ গবেষক ও সভাপতি: মাজলিসু রুইয়াতিল হিলাল

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ সম্পর্কিত ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার মন্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিস্ময় প্রকাশ গোয়েন্দা শীর্ষ কর্মকর্তারাও অবহিত নয় খোদ যুগান্তর সম্পাদকের দুঃখ প্রকাশ

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’কে নিয়ে – মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে দৈনিক জনকণ্ঠের মিথ্যাচার ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ নিষিদ্ধ হচ্ছে- এ কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু অস্বীকারই করলেন না, বললেন: ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা।’ প্রসঙ্গতঃ সোহেল তাজ বিবৃত কালো তালিকা অসম্পূর্ণ ও আংশিক ভুল। এর সংশোধন আশু দরকার

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সমীপে- সোহেল তাজ বিবৃত ১২টি জঙ্গি সংগঠন তালিকা যথার্থ নয় এর মধ্যে যেমন অনেক জঙ্গি সংগঠনের নাম আসেনি তেমনি জঙ্গিবাদ বিরোধী সংগঠনের (উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত) নামও জামাত-জোট ভূতের কারণে এসেছে। সঙ্গতঃ কারণেই বে-হেড সোহেল তাজের বেফাঁস মন্তব্য থেকে বেরিয়ে এসে বর্তমানের যোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে প্রকৃত জঙ্গি সংখ্যা যেমন নির্ধারণ করতে হবে, প্রকৃত জঙ্গিদের যেমন চিহ্নিত করতে হবে পাশাপাশি জঙ্গিবাদী, মৌলবাদী ও ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একান্ত নিবেদিত ‘আল বাইয়্যিনাত’কে মূল্যায়ন করতে হবে।