চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৫৯

সংখ্যা: ২১৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

-আল্লামা আবুল বাশার মুহম্মদ রুহুল হাসান

বর্তমান সংখ্যার আলোচনা

ইহুদীদের মদদপুষ্ট হয়ে এবং সউদী ওহাবী শাসকগোষ্ঠীর অর্থে সাহায্যপ্রাপ্ত হয়ে সারাবিশ্বে একটি

হিজরী ক্যালেন্ডার অনুসরণের অলীক স্বপ্ন নিয়ে একটি ভুঁইফোড় সংগঠন সারা দেশে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।

 

‘জবধষ ঐরুৎর ঈধষবহফধৎ ওসঢ়ষবসবহঃধঃরড়হ ঈড়ঁহপরষ ইধহমষধফবংয’ নামে এই সংগঠনটি সারা বিশ্বে একটি হিজরী ক্যালেন্ডার অনুসরণের পক্ষে অর্থাৎ সারা বিশ্বে একদিনে ঈদ পালন করার পক্ষে নানা প্রচারণা চালাচ্ছে এবং এ সম্পর্কে ৯০টি খোঁড়া যুক্তি দাঁড় করিয়েছে। আমরা ধারাবাহিকভাবে তাদের বর্ণিত শরীয়তের খিলাফ এই মনগড়া যুক্তির শরীয়তসম্মত এবং সঠিক মতামত প্রকাশ করবো ইনশাআল্লাহ। যেন সাধারণ মুসলমানগণ চাঁদের তারিখ নিয়ে বিভ্রান্তিতে না পড়ে। তারা লিখেছে-

 

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

৫৩ নম্বর মত: কুরআন শরীফ-এর ঘোষণা অনুযায়ী “আমরা হচ্ছি সর্বশ্রেষ্ঠ উম্মত” কিন্তু আমাদের আমলে তা প্রমাণ করে না।

৫৪ নম্বর মত: শিক্ষা এবং বিজ্ঞানে অতীতের চেয়ে বর্তমানের মুসলমানগণের অবদানের পার্থক্য একটি বিশাল পাহাড় অতিক্রম করে যাবে।

৫৫ নম্বর মত: ঈদের নামাযসহ সকল নামায বাংলাদেশীগণ সউদী আরবের তিন ঘণ্টা পূর্বে আদায় করে থাকে। তাহলে এক-দুই দিনের পার্থক্য চলে যাবে এবং আমাদের রোযা এবং নামায সঠিক হবে।

৫৩ নম্বর মতের জাওয়াব: তথাকথিত ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক কুরআন শরীফ-এর আয়াত শরীফ-এর তাৎপর্য অনুধাবন না করার কারণে সে মনগড়া বক্তব্য প্রকাশ করছে। তাফসীরের মতো কঠিন কাজটি করার জন্য মনোনীত মানুষ রয়েছেন, ফুটপাতের লোকদের কাজ তাফসীর করা নয়। অবশ্যই বর্তমানে অনেক মুসলমানের আমলে ত্রুটি রয়েছে, তবে এ যুগে এমন মানুষও রয়েছেন যারা মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কুদরতের মধ্যে অবস্থান করেন। উনাদের শান মান ফাযায়িল ফযীলত এত যে, শুধু উনারা নবী নন আর সকল যোগ্যতার অধিকারী। এছাড়াও বলতে হয়, আমরা শ্রেষ্ঠ উম্মত তো আমলের কারণে নয় বরং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মত হওয়ার কারণে। সুতরাং আমাদের আমলে কিছু প্রকাশ পাক বা না পাক আমরা শ্রেষ্ঠ উম্মত। তবে আমাদের উচিত আক্বীদা ও আমলগত দিক থেকে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করা।

৫৪ নম্বর মতের জাওয়াব: এটি একটি চরম অজ্ঞতা প্রসূত উক্তি। বলা হয় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সময় থেকে যে যুগ যত দূরে সেই যুগ তত অন্ধকার। তাহলে ইসলামের যিনি মালিক, ইলমের যিনি মালিক উনার মুবারক ছোহবতপ্রাপ্ত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ বা উনাদের মুবারক ছোহবতপ্রাপ্ত তাবিয়ীনে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ উনাদের রেখে যাওয়া শিক্ষা, ইসলাম ও জ্ঞান থেকে কি করে পরবর্তী উম্মত ছাড়িয়ে যাবে। একটি বৃহৎ অট্টালিকা তো মাটি ছাড়া দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না। ফলে ইসলামের বিজ্ঞানের সবকিছুর মূল পূর্ববর্তীগণ উনারা। বর্তমানের যা উন্নতি বা বিকাশ উনাদের কারণেই। ফলে বর্তমান বা আগামীতে আরও যত আবিষ্কার হবে, গবেষণা হবে তাতে অতীতের মুসলমানগণের সম্মান আরো বাড়তেই থাকবে। ফলে কখনই ভবিষ্যৎ প্রজন্ম উনাদের ছাড়িয়ে যেতে পারবে না। তবে হ্যাঁ কখনো কখনো মহান আল্লাহ পাক কিছু কিছু শান পরবর্তী উম্মতের মাধ্যমে প্রকাশ করাবেন সেটি ভিন্ন ব্যাপার। তাই বলে তুলনা করা ঠিক হবে না।

৫৫ নম্বর মতের জাওয়াব: এখানে লেখক নামায আদায়ের বিষয়টির সঙ্গে আরবী মাস শুরু করে রোযা ও ঈদ পালনের বিষয়টিকে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করেছে। অথচ নামাযের ওয়াক্ত সূর্যের সাথে সম্পৃক্ত এবং রোযা ও ঈদ পালন চাঁদের সাথে সম্পৃক্ত। যে দেশে নামাযের যখন ওয়াক্ত হবে তখনই নামায আদায় করতে হবে। আবার নামাযের ওয়াক্ত সর্বদাই পূর্ব থেকে পশ্চিম পরিবর্তিত হতে থাকে। কিন্তু চাঁদ পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে যে কোন মাসে প্রথম দেখা যেতে পারে। ফলে সউদী আরবে নামাযের ওয়াক্ত বাংলাদেশের তিন ঘণ্টা পরে শুরু হয় বলে সর্বদাই সউদী আরব এবং বাংলাদেশ একই দিনে ঈদ বা রোযা শুরু করতে পারবে বিষয়টি ঠিক নয়। কেননা, সউদী আরবে কখনো আমাদের পরের দিন চাঁদ দৃশ্যমান হলে তবে তাদের একদিন পিছিয়ে ঈদ বা রোযা শুরু করতে হবে।

বাংলাদেশের জন্য ১৪৩৩ হিজরীর পবিত্র

যিলহজ্জ মাসের চাঁদের রিপোর্ট

আত-তাক্বউইমুশ শামসী বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী, বাংলাদেশের স্থানীয় সময় অনুযায়ী জিরো মুন (অমাবস্যা) সংঘটিত হবে ১৭ খামিছ- ১৩৮০ শামসী সন, ১৫ অক্টোবর- ২০১২, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার শরীফ) সন্ধ্যা ৭টা ১২ মিনিটে। বাংলাদেশে পবিত্র যিলক্বদ মাসের চাঁদ তালাশ করতে হবে ১৮ খামিছ- ১৩৮০ শামসী সন, ১৬ই অক্টোবর- ২০১২, ইওয়ামুছ ছুলাছায়ি (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায়। সেদিন ঢাকায় সূর্যাস্ত ৫টা ৩২ মিনিটে এবং চন্দ্রাস্ত ৬টা ০৭ মিনিটে। অর্থাৎ সূর্যাস্ত এবং চাঁন্দ্রাস্তের সময়ের পার্থক্য ৩৫ মিনিট। সূর্যাস্তের সময় চাঁদ দিগন্তরেখার ৬ ডিগ্রি ১৬ মিনিট উপরে অবস্থান করবে। কৌণিক দূরত্ব হবে ১৩ ডিগ্রি। সূর্য থাকবে ২৬০ ডিগ্রি আজিমাতে এবং চাঁদ খুঁজতে হবে ২৪৯ ডিগ্রী আজিমাতে। সেদিন চাঁদ দেখা যাবার সম্ভাবনা নেই।

খতমে নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির “ইসলামী শরীয়তের হুকুম মুতাবিক যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হয় যেমন-  কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩ দিন এরপর তওবা না করলে তাদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।”

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৩

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১২

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২১

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩১