ছাহিবু কালামিল্লাহি, ছাহিবু ক্বাবা ক্বওসাইনি আও আদনা, ছাহিবুশ শাফায়াতিল কুবরা, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ‘মীলাদ শরীফ’ পাঠের ফযীলত

সংখ্যা: ১৯৪তম সংখ্যা | বিভাগ:

ان الله وملئكته يصلون على النبى يايها الذين امنوا صلوا عليه وسلموا تسليما

অর্থ: “নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক ও উনার ফেরেশ্তারা হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর ছলাত-সালাম পাঠ করেন। হে ঈমানদারগণ, তোমরাও উনার প্রতি ছলাত-সালাম পাঠ করার মত পাঠ কর।” (সূরা আহ্যাব-৫৬)

বস্তুতঃ বান্দার প্রতি যিনি আল্লাহ পাক উনার সরাসরি নিদের্শ হচ্ছে তারাও যেন যিনি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ছলাত-সালাম পাঠ করে।”

যিনি মহান আল্লাহ পাক উনার ছানা-ছিফত করা যেরূপ অশেষ রহমত ও বরকতের কারণ, তদ্রুপ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উনার পবিত্র জীবন বৃত্তান্ত নিয়ে আলোচনা করা, ছানা-ছিফত বর্ণনা করাও অসংখ্য ফযীলতের কারণ।

বলা হয়ে থাকে  যে, “আল্লাহ রাব্বুল আলামীন উনার কালামুল্লাহ শরীফ-এর প্রত্যেকটি আয়াতে উনার পেয়ারা হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উনার ছানা-ছিফত বা প্রশংসা করেছেন।” সুবহানাল্লাহ!

মূলতঃ মীলাদ শরীফ পাঠই হচ্ছে যিনি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছানা-ছিফত ও বিলাদত শরীফ-এর আলোচনা করা ও উনার প্রতি ছলাত-সালাম পাঠ করা।

হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “যে ব্যক্তি আমার উপর একবার ছলাত পাঠ করবে, আল্লাহ পাক তার উপর দশটি রহমত নাযিল করবেন, দশটি গুনাহ মাফ করবেন এবং দশটি মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন।” আরো বলা হয়েছে যে, “ঐ ব্যক্তিই কিয়ামতের দিন আমার সবচেয়ে নিকটে থাকবে যে আমার প্রতি অধিকমাত্রায় ছলাত পাঠ করবে।” (তিরমিযী শরীফ)

হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছানা-ছিফত বর্ণনা করতে গিয়ে আল্লাহ পাক বলেন-

ورفعنا لك ذكرك

অর্থ: “(হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমি আপনার আলোচনা বা প্রশংসাকে সমুন্নত করেছি।” (সূরা আলাম নাশ্রাহ-৪)

হাদীছ শরীফে বর্ণিত আছে যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে আমার আলোচনা করবে, তার জন্য আল্লাহ পাক-এর রহমতের দরজা খুলে দেয়া হবে এবং তার জন্য আমার সুপারিশ ওয়াজিব হবে। সুবহানাল্লাহ!

হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণও সকলে একত্রিত হয়ে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জীবনবৃত্তান্ত নিয়ে আলোচনা তথা মীলাদ শরীফ পাঠ করেছেন, উনার ছানা-ছিফত বা প্রশংসা বর্ণনা করেছেন।

যেমন এ প্রসঙ্গে হযরত আবু দারদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত রয়েছে যে, তিনি একদিন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উনার সাথে হযরত আবু আমের আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার ঘরে গেলেন। তিনি সেখানে দেখতে পেলেন যে, হযরত আবু আমের আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার নিজ সন্তানাদি ও আত্মীয়-স্বজনদের একত্রিত করে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষ্যে আলোচনা করছেন। এটা দেখে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অত্যন্ত খুশি হলেন এবং বললেন, “হে আমের! নিশ্চয় আল্লাহ পাক আপনার জন্য উনার রহমতের দ্বার উন্মুক্ত করেছেন। সকল ফেরেশ্তা আপনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছেন। আর আপনার ন্যায় এরূপ আমল যারা করবে তাঁরাও আপনার ন্যায় নাযাত পাবে।” সুবহানাল্লাহ!

হাদীছ শরীফে আরো বর্ণিত রয়েছে যে, “একদিন হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সেখানকার সকল লোকদেরকে উনার নিজ ঘরে একত্রিত করে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত সম্পর্কে আলোচনা করেন, যা শুনে উপস্থিত সকলেই আনন্দচিত্তে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর ছলাত-সালাম পাঠ করলেন। এমন সময় হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেখানে উপস্থিত হলেন এবং উনাদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেন, আপনাদের জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব হয়ে গেল।” (সুবুলুল হুদা ফী মাওলূদি মুস্তফা)

উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বুঝা যাচ্ছে যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ নিয়ে আলোচনা করা, উনার ছানা-ছিফত বা প্রশংসা করা তথা মীলাদ শরীফ পাঠ করা আল্লাহ পাক ও উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের নাযাত ও শাফায়াত এবং চিরসন্তুষ্টি লাভের অন্যতম কারণ।

তাই হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে জনৈক বুযুর্গ কবি কত সুন্দরই না বলেছেন, “ইয়া রসূলাল্লাহ! আমরা আপনার প্রশংসা কি করবো? আপনি তো ঐরূপ, যেরূপ আপনার প্রশংসা স্বয়ং আল্লাহ পাক করেছেন।”

আল্লাহ পাক আমাদের সকলকে উনার পেয়ারা হাবীবকে চিনে উনার হাক্বীক্বী প্রশংসা করার তৌফিক ইনায়েত করুন। আমীন।

– মুহম্মদ হারিছুর রহমান খান

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম