টিপাইমুখী বাঁধই শেষ নয়। ভারত ছাড়াও আমেরিকার সন্তুষ্টি পেতে মরিয়া সংশ্লিষ্ট মহল। দেশের স্বার্থ আরো বিকিয়ে দিতে উদগ্রীব তারা। ‘টিফা’র বদলে হচ্ছে ‘টিআইসিএফ’ চুক্তি! সাংবিধানিকভাবে সমস্ত ক্ষমতার অধিকারী জনগণ আর কতকাল ঘুমিয়ে থাকবে? (১)

সংখ্যা: ২১২তম সংখ্যা | বিভাগ:

বহুল আলোচিত ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্টের (টিফা) বদলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কো-অপারেশন ফোরাম (টিআইসিএফ) চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ঢাকার কুশীলবরা।

উল্লেখ্য, ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কো-অপারেশন ফোরাম বা টিআইসিএফ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টম্যান্ট ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্টের (টিফা) বিকল্প একটি চুক্তি। যুক্তরাষ্ট্র কথিত উন্নয়নশীল ও অনুন্নত রাষ্ট্রের সঙ্গে এ ধরনের দ্বিপক্ষীয় চুক্তির উদ্যোগ নেয় ২০০০ সালের গোড়ার দিকে।

অন্যদিকে ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট বা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত কাঠামো চুক্তি সংক্ষেপে ‘টিফা’ ছিল যুক্তরাষ্ট্রের একটি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক চুক্তি। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র টিফা চুক্তির যে খসড়া পাঠিয়েছিল তার ১৫, ১৬ ও ১৭নং প্রস্তাবনায় মেধাস্বত্ব অধিকার, আন্তর্জাতিক শ্রমমান এবং পরিবেশ এ ৩টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই ৩টি ইস্যুর ব্যাপারেই বাংলাদেশের আপত্তির কারণে তখন চুক্তিটি করা সম্ভব হয়নি।

মেধাস্বত্ব প্রস্তাবনার কারণে বাংলাদেশ অন্য কোনো দেশের ওষুধসহ বিভিন্ন পণ্য সংশ্লিষ্ট দেশ বা কোম্পানির অনুমতি ছাড়া অনুকরণ বা প্রস্তুত করতে পারবে না।

বর্তমানে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে এ সুযোগ পাচ্ছে। ফলে জীবন রক্ষায় সহায়ক অতিজরুরী ওষুধসহ তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য বিভিন্ন আনুষঙ্গিক অনুমোদন ছাড়াই এর পেটেন্ট ব্যবহার করতে পারছে। ডব্লিউটিও’র বিধান অনুযায়ী স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে ২০১৬ সাল পর্যন্ত এ সুযোগ ভোগ করবে বাংলাদেশ।

এদিকে আন্তর্জাতিক শ্রমমানের বাধাটি হচ্ছে কোনো কারণে যদি যুক্তরাষ্ট্র মনে করে যে বাংলাদেশের শ্রমমান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নয়, তবে তারা শুল্কমুক্ত পণ্য সুবিধা বন্ধ করে দিতে পারবে। এর ফলে দেশের রপ্তানি শিল্প হুমকিতে পড়বে।

বিগত বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে টিফা চুক্তিতে সই করার জন্য প্রস্তাব দেয়া হয়। ২০০২ সালে প্রণীত টিফার প্রথম খসড়াটিতে ১৩টি ধারা ও ৯টি প্রস্তাবনা ছিল। পরে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ২০০৫ সালে সংশোধিত আকারে ২য় দফায় টিফার প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। ২০০৫ সালে সংশোধিত টিফায় ৭টি ধারা ও ১৯টি প্রস্তাবনা অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আর এ সময় সংশোধিত টিফায় ঘুষ ও দুর্নীতির বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। দুর্নীতির ইস্যুটি নিয়েও পরে আপত্তি তুলে বাংলাদেশ।

বর্তমান মহাজোট সরকার নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় বসার মাসখানেকের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র টিফা সইয়ের ব্যাপারে সরকারকে চাপ দেয়। ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে টিফা চুক্তিতে সই করার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রীসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে। ওই সময় পত্র-পত্রিকায় টিফা চুক্তির সমস্যাগুলো নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলে মহাজোট সরকার টিফায় সইয়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কিছুদিন সময় চেয়ে নেয়।

২০০৯ সালের ১৬ নভেম্বর রাজধানীতে মেট্রোপলিটন চেম্বার্স অফ কমার্সের এক বৈঠকে তখনকার মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মারিয়ার্টি সাফ জানিয়ে দেয় যে, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্ক সুবিধা পেতে চাইলে বাংলাদেশকে টিফা চুক্তি করতে হবে।

ওই সময় ব্যবসায়ীরা জানতে চান যে, টিফা চুক্তি হলে বাংলাদেশ ডব্লিউটিও’র আওতায় ২০১৬ সাল পর্যন্ত যে মেধাস্বত্ব (আইপিআর) সুবিধা পাচ্ছে সেটি বহাল থাকবে কি-না। জবাবে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলে যে, একটি বিষয় পরিষ্কার যে, টিফা চুক্তি কোনো দেশের জন্যই বাধ্যতামূলক কোনো চুক্তি নয়; তাই টিফা হলেও বাংলাদেশে ডাব্লিউটিওসহ অন্য যে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর বাণিজ্যিক সুবিধা প্রচলিত রয়েছে তার কোনো ব্যত্যয় ঘটবে না। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এ ধরনের আশ্বাসের পরও চুক্তির ব্যাপারে পুরোপুরি আশ্বস্ত হতে পারেনি বাংলাদেশ সরকার। পরে ২০১০ সালে টিফার বদলে ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কো-অপারেশন ফোরাম (টিআইসিএফ) নামে নতুন এ চুক্তি তুলে ধরে দেশটি।

চুক্তির বিষয়গুলো পর্যালোচনা করার জন্য গত ২৮ থেকে ৩০ জুন যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন বাণিজ্য সচিব ও পররাষ্ট্র সচিব। ঐ সফরের সময় প্রতিনিধি দল দুর্নীতি, মেধাস্বত্ব ও পরিবেশ এই তিন ইস্যু চুক্তি থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে যুক্তি তুলে ধরেন।

প্রসঙ্গত, টিআইসিএফ অর্থাৎ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কো-অপারেশন ফোরাম নামের এই চুক্তি চূড়ান্ত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধিদের ঢাকায় আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে গত ২৩ অক্টোবর টিআইসিএফ প্রসঙ্গে জানিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি আমাদের আশ্বস্ত করার জন্য বলেছেন: দেশের স্বার্থ অক্ষুণ রেখেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কো-অপারেশন ফোরাম (টিআইসিএফ) চুক্তি হচ্ছে”, যদিও জনগণকে আশ্বস্ত করার জন্য আসল প্রয়োজনীয় কাজটি অর্থাৎ চুক্তির খসড়া প্রকাশ করা ও অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন ধারা উপধারা নিয়ে গণ আলোচনা ও মতামত গ্রহণ করার কাজটি করতে তিনি বা তার সরকার ভুলে গেছেন! অবশ্য সরাসরি না বললেও চুক্তিটি যে প্রায় ১০ বছর ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক বাংলাদেশের উপর চাপিয়ে দিতে চাওয়া টিফা (TIFA-Trade and Investment Framework Agreement) চুক্তিরই ছদ্ম নাম সেটা তার এই কথা থেকেই স্পষ্ট: তাড়াহুড়ো করে এ চুক্তি করা হচ্ছে না। দীর্ঘ প্রায় দশ বছর ধরে এর প্রক্রিয়া ও এ সংক্রান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এর একটি খসড়া তৈরি করা হয়েছে।”

অর্থমন্ত্রী সাহেব দীর্ঘ প্রায় দশ বছর ধরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার কথা বলেছেন যে চুক্তিটির কথা সেই টিফা চুক্তির খসড়াও কিন্তু জনগণের সামনে উন্মুক্ত করা হয়নি কখনই। টিফা নিয়ে তর্ক-বিতর্ক যেটুকু হয়েছে তা সম্ভব হয়েছে টিফা চুক্তির একটা স্ট্যান্ডার্ড ফরমেট যুক্তরাষ্ট্র অনুসরণ করে বলে যেটা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ওয়েবসাইট থেকে সহজেই দেখা যায়। এবং একই সাথে বাংলাদেশের সাথে প্রস্তাবিত টিফা চুক্তির ২০০৫ সালের ভার্সনের একটা কপি bilaterals.org ওয়েবসাইটে ফাস হয়ে যাওয়ায়।

টিআইসিএফ যে আসলে টিফা-ই সে বিষয়ে পত্র পত্রিকাতেও খবর বেরিয়েছে। গত ২৬-০৭-২০১১ ঈ: তারিখে প্রথম আলো লিখেছে : æপ্রায় ১০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ রূপরেখা চুক্তিটি (টিফা), শেষ পর্যন্ত তা করা হয়নি। এর বদলে টিআইসিএফ করা হচ্ছে টিফার আদলেই। টিফা নামটি যুক্তরাষ্ট্র দিয়ে থাকলেও নতুন নামের প্রস্তাবটি দিয়েছে বাংলাদেশই। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।”

টিআইসিএফ বা টিফা যাই বলি না কেন, চুক্তির ফাঁস হওয়া ২০০৫ সালের খসড়া ধরেই আমরা এখানে আলোচনা করতে বাধ্য যেহেতু সর্বশেষ খসড়াটি প্রকাশিত নয়। অবশ্য সাম্প্রতিক খসড়ার নাম কিংবা ভেতরের শব্দ-বাক্য চয়ন ইত্যাদি যা-ই হোক, তাতে টিফা/টিআইসিএফ সংক্রান্ত আমাদের আলোচনায় তাতে সমস্যা হওয়ার কোনো কারণ নেই কারণ যুক্তরাষ্ট্র টিফা’র একটা সাধারণ ফরমেট বজায় রাখে যে ফরমেটের মূল ধারাগুলো এ পর্যন্ত যে ৩২টি দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র টিফা স্বাক্ষর করেছে সেগুলোর ক্ষেত্রে মোটামুটি একই রকমের। (ইনশাআল্লাহ চলবে)

-মুহম্মদ মাহবুবুর রহমান

খতমে নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির “ইসলামী শরীয়তের হুকুম মুতাবিক যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হয় যেমন-  কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩ দিন এরপর তওবা না করলে তাদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।”

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৩

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১২

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২১

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩১