তাফসীরুল কুরআন : হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

সংখ্যা: ২০৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

মুসনাদে আব্দুর রজ্জাক, দালায়িলুন নুবুওওয়াত, আফদ্বালুল ‘কূরা, মুতালিউল মাসাররাত, তারীখুল খামীছ, মাওয়াহিব, শরহে যুরকানী, মাদারিজুন নুবুওওয়াহ, নূরে মুহম্মদী, ফাতওয়ায়ে হাদীছিয়্যাহ, নশরুত তীব ইত্যাদি কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, “হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান হয়ে যাক, আপনি আমাকে জানিয়ে দিন যে, আল্লাহ পাক তিনি সর্বপ্রথম কোন জিনিস সৃষ্টি করেছেন? তিনি বললেন, হে জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা তিনি সবকিছুর পূর্বে আপনার নবী উনার নূর মুবারক সৃষ্টি করেছেন। অর্থাৎ আল্লাহ পাক উনার প্রথম সৃষ্টিই হচ্ছে “নূরে হাবীবী” ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। অতঃপর সেই নূর মুবারক আল্লাহ পাক উনার ইচ্ছানুযায়ী কুদরতীভাবে ঘুুরছিল। আর সে সময় লাওহো, ক্বলম, বেহেশ্ত, দোযখ, ফেরেশ্তা, আসমান, যমীন, চন্দ্র, সূর্য, মানুষ ও জিন কিছুই ছিলনা। অতঃপর যখন মহান আল্লাহ পাক তিনি “মাখলূক্বাত” সৃষ্টি করার ইচ্ছা পোষণ করলেন। তখন সেই নূর মুবারক অর্থাৎ নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে একটা অংশ নিয়ে চার ভাগ করলেন। প্রথম ভাগ দ্বারা ‘ক্বলম’ দ্বিতীয় ভাগ দ্বারা ‘লাওহে মাহফূয’ তৃতীয় ভাগ দ্বারা ‘আরশে মু‘আল্লাহ’ সৃষ্টি করলেন। চতুর্থ ভাগকে আবার চারভাগ করেন প্রথম ভাগ দ্বারা ‘আরশ বহনকারী ফেরেশতা’ দ্বিতীয় ভাগ দ্বারা ‘কুরসী’ আর তৃতীয় ভাগ দ্বারা অন্যান্য ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সৃষ্টি করেন। অতঃপর এ চতুর্থ ভাগকে আবার চার ভাগ করেন। প্রথম ভাগ দ্বারা ‘আসমান’ দ্বিতীয় ভাগ দ্বারা ‘যমীন’ আর তৃতীয় ভাগ দ্বারা ‘বেহেশ্ত ও দোযখ’ সৃষ্টি করেন। নূরের অবশিষ্ট এ চতুর্থ ভাগকে আবার চার ভাগ করেন, প্রথম ভাগ দ্বারা মু’মিন বান্দাদের চোখের ‘জ্যোতি’, দ্বিতীয় ভাগ দ্বারা তাদের ক্বলবের জ্যোতি আর এটাই মূলতঃ মহান আল্লাহ তা‘আলা উনার মা’রিফাত, আর তৃতীয় ভাগ দ্বারা মু’মিনদের উনসের নূর অর্থাৎ তাওহীদ বা একত্ববাদের নূর তথা কালিমার নূর সৃষ্টি করেন। (এমনিভাবে উক্ত ‘নূরে হাবীবী’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকেই পর্যায়ক্রমে তামাম মাখলূক্বাত সৃষ্টি করেন)”

প্রখ্যাত ও মশহূর তাফসীরকারক আল্লামা হযরত ইসমাঈল হাক্কী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার মশহূর ও বিখ্যাত তাফসীরগ্রন্থ রূহুল বয়ান-এ একখানা হাদীছ শরীফ উল্লেখ করেন, হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একদিন কথা প্রসঙ্গে হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম উনার বয়স মুবারক সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন, জবাবে হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আমি শুধু এতটুকু জানি যে, চতুর্থ আকাশে একটি নূরানী তারকা ৭০ হাজার বৎসর পর একবার উদয় হতো, আবার অস্ত যেয়ে ৭০ হাজার বৎসর থাকতো। আমি সে তারকাটি ৭২ হাজার বার উদয় হতে দেখেছি। তখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আমিই সেই নূরানী তারকা। অর্থাৎ ওই তারকাটিই হলো, “নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম”

তাফসীরে রূহুল বয়ান, নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইত্যাদি কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, আল্লাহ পাক তিনি হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে সৃষ্টি করার পর উনার মধ্যে নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রবেশ করালেন। অতঃপর আল্লাহ পাক উনার তাকদীর অনুযায়ী হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওওয়া আলাইহাস সালাম যখন আরাফাতের ময়দানে একত্রিত হলেন তখন আল্লাহ পাক তিনি হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার নিকট বেহেশতের নহর পাঠিয়ে দিলেন। হযরত আদম আলাইহিস সালাম উক্ত নহরে গোসল করে হযরত হাওওয়া আলাইহাস সালাম উনাকে আলিঙ্গন করলেন। ওই সময় এই পবিত্র নূর মুবারক কুদরতীভাবে হযরত হাওওয়া আলাইহাস সালাম উনার নিকট চলে গেল। এরপর হতে এক পুরুষ হতে অন্য পুরুষ এবং এক মহিলার রেহেম শরীফ হতে অন্য মহিলার রেহেম শরীফ-এ স্থানান্তরিত হয়ে অতি পবিত্রতার সাথে হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম এবং অতঃপর উনার থেকে হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম পর্যন্ত পৌঁছে গেল। অতঃপর এই নূর মুবারক নূরে মুজাসসাম হিসেবে যমীনে তাশরীফ নেন। আর এ কারণেই হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নূরে মুজাসসাম বলা হয়। সুবহানাল্লাহ!

অতএব, উপরে বর্ণিত হাদীছ শরীফ-এর বর্ণনায় নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যে সৃষ্টির রহস্য, বেমেছাল ফযীলত, মর্যাদা-মর্তবা, শান-শুয়ূনাত, খুছূছিয়ত, বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ রয়েছে তা কি কোন জিন-ইনসান বা কায়িনাতের কোন সৃষ্টির মধ্যে রয়েছে, তাহলে তিনি অন্য কারো মতো হন কি করে? কাজেই উনাকে অন্য কারো মতো মনে করাটা সুস্পষ্ট কুফরী এবং কাফির ও জাহান্নামী হওয়ার কারণ।

 

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী

তাফসীরুল কুরআন: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মতো বাশার বলা কাট্টা কুফরী