দিন দিন বেড়েই চলেছে সড়ক দুর্ঘটনা। জান-মালে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বিপন্ন হচ্ছে মানুষ। রীতিনীতি ও আইন-কানুন প্রয়োগের পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সম্মানিত শরীয়ত অনুসরণের বিকল্প নেই।

সংখ্যা: ২৮৬তম সংখ্যা | বিভাগ:

দেশে সড়ক দুর্ঘটনা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। প্রতিদিনই খবরের কাগজে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনাগুলোর খবর স্থান পাচ্ছে। রোড সেফটি ফাউন্ডেশন এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে ৩৮৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ৪১৮ জন এবং আহত ৪৯৭ জন।

বিদায়ী ২০২১ সালে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫৩৭১টি। যাতে নিহত হয়েছে ৬২৮৪ জন এবং আহত হয়েছে ৭৪৬৮ জন। সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের অধিকাংশই হতদরিদ্র, নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ। ক্ষতিগ্রস্তদের ৭২-৭৫ শতাংশই কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত-নিহতরা তাদের পরিবারের প্রধান বা একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। ফলে এসব পরিবার আর্থিকভাবে বিপন্ন হয়ে পড়ছে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এআরআই) মতে, গত দুই দশকে সড়ক দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ৫৬৯৮৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। অর্থাৎ, গত ২০ বছরে প্রতিদিন গড়ে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এআরআই জানিয়েছে, ৯০% দুর্ঘটনার জন্যই চালকরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে দায়ী।

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও এখনো দুর্ঘটনার লাগাম টেনে ধরা সম্ভবপর হয়ে ওঠেনি। দেশে যেভাবে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে, তাতে করে সড়ক-মহাসড়কগুলো দিন দিন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হচ্ছে। সড়ক-মহাসড়কে এখন চলাচল করা মানেই ঝুকির মধ্যে থাকা। দেশের সার্বিক সড়ক দুর্ঘটনার বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে চালকদের অদক্ষতা, বেপরোয়া গতিতে ড় চালানো, ওভারটেকিং করার প্রবল মানসিকতা, ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব, জনগণের সচেতনতার অভাব, ট্রাফিক আইন কিংবা রাস্তায় চলাচলের নিয়ম না মানাকে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হিসাবে চিহ্নিত করা যায়। এক হিসেবে, ৯১ শতাংশ চালক জেব্রা ক্রসিংয়ে অবস্থানরত পথচারীদের অধিকার আমলই দেয় না। পাশাপাশি ৮৪ ভাগ পথচারী নিয়ম ভেঙে রাস্তা পার হয়।

এছাড়া, অনেক সড়ক-মহাসড়ক পরিকল্পনাহীনভাবে নির্মাণ, নির্দিষ্ট লেন ধরে গাড়ি না চালিয়ে সড়কের মাঝখান দিয়ে গাড়ি চালানোর প্রবণতা, রাস্তায় বিপজ্জনক বাঁক বিদ্যমান থাকা, ফিটনেসবিহীন গাড়ি চালানো, মাদক সেবন করে গাড়ি চালানো, ভুলপথে গাড়ি চালানো, রাস্তায় চলাচলকারী যাত্রী বা পথচারীদের ট্রাফিক আইন না মানার প্রবণতা, ফুটপাত ব্যবহার না করে রাস্তার মাঝখান দিয়ে পথচারীদের চলাচল, রাস্তা পারাপারের জন্য ওভারব্রিজ থাকলেও তা ব্যবহার না করা, রাস্তার ওপর বা ফুটপাতে দোকানপাট সাজিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করা, যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করা, দুর্বল ও দুর্নীতিগ্রস্ত ট্রাফিক ব্যবস্থা এবং সর্বোপরি রাস্তায় চলাচলে বিদ্যমান নিয়ম-কানুন প্রতিপালনে যাত্রীদের অনীহা থাকার কারণেই প্রতিনিয়ত বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। মূলত সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সরকার সংশ্লিষ্ট মহলের সক্রিয়তার অভাবের পাশাপাশি জনগণেরও দায়বোধ কিংবা সচেতনতার প্রকট অভাব রয়েছে।

তবে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা দিন দিন বাড়লেও বিশ্বের বহু দেশ বহুমুখী নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করে সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে এনেছে। যার মধ্যে অন্যতম হলো মালয়েশিয়া, জাপান। ১৯৫০ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত জাপানে সড়ক দুর্ঘটনা অত্যাধিক মাত্রায় বেড়ে গিয়েছিলো। তখন তারা শুধু ট্রাফিক সিগনালের সংখ্যা বাড়িয়েই দুর্ঘটনার সংখ্যা ৫০-৮৯% পর্যন্ত কমিয়ে আনে। ১৯৬৭ সালে জাপানে রাস্তা পারাপারের সেতুর সংখ্যা ছিল ১ হাজারেরও কম। ১৯৮০ সালের মধ্যে দেশটির সরকার ৯ হাজারেরও বেশি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করে। যাতে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা কমে আসে।

প্রসঙ্গত, সড়ক দুর্ঘটনার প্রভাবে শুধু মানুষের মৃত্যু হচ্ছে তা কিন্তু নয়, একইসঙ্গে মানুষের শারীরিক, মানসিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ক্ষেত্রেও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এক পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, সড়ক দুর্ঘটনায় বছরে গড়ে বাংলাদেশের জিডিপির শতকরা ২-৩ ভাগ নষ্ট হয়ে যায়। ফলে সড়ক দুর্ঘটনা এখন অন্যতম জাতীয় সমস্যা হিসাবে দেখা দিয়েছে।

সঙ্গতকারণেই এ সমস্যা নিরসনে সার্বিক পদক্ষেপ গ্রহণকে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া উচিত। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সর্বাগ্রে চালকদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। প্রশিক্ষণের জন্য পর্যাপ্তসংখ্যক ট্রেনিং ইনস্টিটিউট স্থাপন করে চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা গেলে সড়ক দুর্ঘটনার লাগাম অনেকাংশে টেনে ধরা সম্ভব হবে। এ ছাড়া ট্রাফিক আইন সম্পর্কে চালকদের সচেতন করতে হবে। পাশাপাশি জনগণকেও ট্রাফিক আইন ও রাস্তায় নিরাপদে চলাচলের লক্ষ্যে প্রণীত আইন-কানুন যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে। মাদক সেবন করে যাতে চালকরা গাড়ি চালাতে না পারে, সেজন্য নিয়মিত বিরতিতে চালকদের ডোপ টেস্ট করতে হবে। গাড়ি চালানো অবস্থায় চালকদের মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধকরণের পাশাপাশি তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে বিবেচনা করতে হবে।

চালকদের গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য রাস্তায় প্রয়োজনীয় গতি পরিমাপক যন্ত্র স্থাপন করতে হবে। দুর্ঘটনা রোধে চালকদের ওভারটেকিং করার মানসিকতাও পরিহার করা জরুরি। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে দেশের সড়ক ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়ন প্রয়োজন। অপ্রয়োজনীয় রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি বন্ধ করতে হবে। শুধু চালকদের দক্ষতা বিচার করে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়টিও নিশ্চিত করা জরুরি। এ ক্ষেত্রে যেন কোনো ধরনের অনিয়ম বা দুর্নীতি না ঘটে, সে বিষয়টি সরকারের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা আবশ্যক।

আর এসব পদক্ষেপ কিংবা নিয়মনীতি মানার প্রবণতা তখনই সম্ভব হবে যখন ব্যক্তিপর্যায়ে মানুষের পরিবর্তন ঘটবে, চালকদের দায়িত্বশীলতার উপলব্ধি ঘটবে। আর দায়িত্বশীলতার উপলব্ধি তখনই ঘটবে যখন চালকদের মধ্যে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার হাক্বীকী অনুভূতির প্রচার ও প্রসার ঘটবে। হক্কুল ইবাদ সম্পর্কে সচেতন হবে। সম্মানিত দ্বীন ইসলামে সড়ক দুর্ঘটনা রোধেও সমূহ নির্দেশনা রয়েছে। দ্রুতগতিতে যানবাহন চালানো ঝুকিপূর্ণ। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, ধীরস্থিরতা মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে, আর তাড়াহুড়ো শয়তানের তরফ থেকে। পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে, ‘তোমরা রাস্তার হক্ব আদায় করো’। এছাড়া সম্মানিত শরীয়ত উনার মধ্যে চলাচলের ক্ষেত্রে, যানবাহনে ওঠার ক্ষেত্রে কিংবা চালানোর ক্ষেত্রে আদব বজায় রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তাই সরকারের উচিত হবে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার আলোকে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা। এতে করে ব্যক্তিপর্যায়েই বাড়বে জনসচেতনতা, চালকরা দায়িত্বশীল হবে এবং পরিবহন খাতের সকল অনিয়ম-অনাচার দূর হবে। জানমালের ক্ষতি থেকে সুরক্ষা পাবে দেশের মানুষ।

-মুহম্মদ মাহবূবুর রহমান, ঢাকা।

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৭

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৬

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩৫

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২৫ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস ওহাবী ফিরক্বাসহ সবগুলো বাতিল ফিরক্বা ইহুদী-নাছারাদের আবিষ্কার! তাদের এক নম্বর দালাল

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ‘সংবিধানের প্রস্তাবনা’, ‘মৌলিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা’ ‘জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতা’ এবং ‘জাতীয় সংস্কৃতি’ শীর্ষক অনুচ্ছেদের সাথে- থার্টি ফার্স্ট নাইট তথা ভ্যালেন্টাইন ডে পালন সরাসরি সাংঘর্ষিক ও সংঘাতপূর্ণ’। পাশাপাশি মোঘল সংস্কৃতির দান পহেলা বৈশাখ পালনও প্রশ্নবিদ্ধ।সংবিধানের বহু গুরুত্বপূর্ণ ও বিশেষ স্পর্শকাতর অনুচ্ছেদের প্রেক্ষিতে ৯৫ ভাগ মুসলমানের এদেশে কোনভাবেই থার্টি ফার্স্ট নাইট ও ভ্যালেন্টাইন ডে পালিত হতে পারে না।পারেনা গরিবের রক্ত চোষক ব্র্যাকের ফজলে আবেদও ‘নাইট’ খেতাব গ্রহণ করতে। পারেনা তার  নামের সাথে ‘স্যার’ যুক্ত হতে। পাশাপাশি মোঘল সংস্কৃতির দান পহেলা বৈশাখ পালনও প্রশ্নবিদ্ধ।