ধর্মনিরপেক্ষতার দাবিদার ভারতে মুসলমানদের প্রতি নিরপেক্ষতার পরিবর্তে চলছে চরম নিপীড়ন। ভারতের মৌলবাদী, উগ্রবাদী, সাপ্রদায়িক সংখ্যালঘুরা ধর্মনিরপেক্ষতার নামে তাদের রামরাজত্ব চালাতে চায়। কিন্তু ভারতে মুসলমানরা কতটুকু দলিত-মথিত সে খবর কী তারা রাখে? অথচ মিডিয়াও এসব খবরের সংখ্যা কম নয়।

সংখ্যা: ২৭৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

ভারতে মুসলিম নির্যাতন নতুন কিছু নয়। ভারতের মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় অর্ধেক মুসলিম হলেও ভারতের হিন্দুত্ববাদী শাষণ এবং শোষণনীতির কারণে ভারতের মুসলিমদের উপর প্রতিনিয়ত চলছে হত্যা, নির্যাতন, বৈষম্য। কিছুদিন পর পর ভারতের বিভিন্ন জায়গায় পরিচালিত হচ্ছে ভারতের উগ্রবাদী সংগঠনগুলোর দ্বারা মুসলিম নিধন কার্যক্রম। খোদ ভারতের মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রীও এই মুসলিম নির্যাতনের কার্যক্রমের সাথে জড়িত। প্রতিনিয়ত ভারতে মুসলিম পর্যদুস্থ করার হীন ষড়যন্ত্র তৈরী এবং সেগুলোর বাস্তবায়ন করার চেষ্টা চালাচ্ছে ভারতের হিন্দুত্ববাদী সরকারসহ তার সহযোগী অপমহল। এখানে সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনা তুলে ধরা হলো- তাবরীজ আনসারী হত্যাকান্ড! ভারতের ঝাড়খণ্ডে চোরের মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তাবরীজ আনসারী নামক এক নিরীহ মুসলিম যুবককে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে উগ্র হিন্দুত্ববাদী মৌলবাদীরা। এসময় তাকে উগ্র হিন্দুত্ববাদী স্লোগান ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে বাধ্য করা হয় বলে জানা গেছে। গত ১৮ জুন সরাইকেলা-খরসোঁয়া জেলার ধক্তিদি গ্রামের বেশ কয়েকজন ব্যক্তি প্রায় ১৮ ঘণ্টা ধরে পেটায় তাকে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পেটাতে পেটাতে যুবককে তার নাম জিজ্ঞেস করা হয়। পুরো নাম বলতে বলা হয়। উত্তর আসে, ‘তবরেজ আনসারি’। এরপরই নির্যাতনের মাত্রা বাড়ে। সেসময় তাকে ‘জয় শ্রীরাম’ বলার নির্দেশ দেয়া হয়। অনেক পরে পুলিশ এসে তবরেজকে উদ্ধার করে চুরির দায়ে কোর্টে তোলে। কোর্ট পাঠায় জেল হেফাজতে। পরে গতকাল তবরেজের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সেখানে তিনি মারা যান।” সমাজকর্মীদের অভিযোগ, হাজতে মৃত্যুর পরেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাকে। ২০১৬ থেকে এই নিয়ে শত শত মুসলমানকে পিটিয়ে মারা হল ঝাড়খণ্ডে। হিন্দুত্ববাদী স্লোগান না দেয়ায় ১৬ বছরের মুসলিম বালককে অমানুষিক নির্যাতন এবারে ঘটল উত্তরপ্রদেশের কানপুর শহরে। ১৬ বছরের এক মুসলিম বালককে রাস্তায় ফেলে মারধর করল সাম্প্রদায়িক, হিন্দু মৌলবাদীরা। নামাজ সেরে বাড়ি ফিরছিল মহম্মদ তাজ নামে ওই মুসলিম বালক। মাথায় মুসলমানদের টুপি দেখে তাজকে হেনস্থা করা শুরু করে উগ্র সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী গোষ্ঠী। তারপর শুরু হয় জয় শ্রী রাম বলার জন্য জোর জবরদস্তি। এক সংবাদমাধ্যমে তাজ জানিয়েছে, ‘আমি জয় শ্রী রাম বলতে চাইনি তাই আমাকে ওরা রাস্তায় ফেলে মারধর করেছে। যাওয়ার সময়ে বলে গিয়েছে, এলাকায় মুসলমানদের এই সাদা টুপি পরা চলবে না। হিন্দুত্ববাদী স্লোগান না দেয়ায় পিটিয়ে হাত-পা ভাঙ্গা হলো ৭০ বছরের মুসলিম বৃদ্ধকে গত ২৮ জুন গুজরাটে ‘জয় শ্রী রাম’ না বলায় একজন ৭০ বছরের বৃদ্ধকেও ছাড়লো না কিছু দুষ্কৃতীরা। পিটিয়ে হাত পা ভেঙ্গে দিয়েছে তারা। জানা যায়, গুজরাটে বৃদ্ধ রাস্তা ধরে হেঁটে যাচ্ছিলেন। পথে কয়েকজন যুবক তার পথ আগলে তাকে ‘জয় শ্রী রাম’ বলতে বাধ্য করছিলো। না বলায় তাকে বেদড়ক পিটাতে থাকে। জানা গেছে, শুধু এই উগ্রবাদী স্লোগান না দেয়াই নয় পাশাপাশি গরু জবাই, গরু পরিবহন এবং মুসলিম না রাখার কারণেও প্রায় প্রতিদিনই ভারতের কোনো না কোনো রাজ্যে মুসলিম হত্যার ঘটনা ঘটছে। অনেক জায়গায় এসব হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত থাকছে। এই হিসাব বলছে, ২০১০ থেকে ২০১৪-র আগে পর্যন্ত দেশে গোরক্ষার নামে হামলার ঘটনা ২০০টি। আক্রান্ত শত শত জন। আর ২০১৪ থেকে ২০১৮-র জুলাই পর্যন্ত হামলার সংখ্যা শত শত। আক্রান্ত হয়েছেন হাজার হাজার। শহীদ হয়েছে অন্তত কয়েক শত। প্রসঙ্গত, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ছাড়াও ১৭ প্রদেশ এবং ৭ অঞ্চলে বিজেপি’র নিয়ন্ত্রণে থাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে উগ্র হিন্দুত্ববাদী আরএসএসের কর্মী সমর্থকরা। এতগুলো রাজ্যে প্রাদেশিক সরকার বিজেপি’র নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ায় হিন্দুত্ববাদীদের উত্থান ঘটেছে। কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারের মন্ত্রী এবং কয়েকটি প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর সংখ্যালঘু ও মুসলিমবিদ্বেষী লাগামহীন ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথাবার্তা বিপন্ন করে তুলেছে দেশটিতে বংশ পরম্পরায় বসবাসরত মুসলিমদের। ‘ভারত মাতা কী জয় যারা বিশ্বাস করবে না তাদের ভারতে থাকার অধিকার নেই’ এই কথা যারা বিশ্বাস এবং মুখে স্বীকার করেনা তথা মুসলিমদের নানাভাবে পীড়নের মধ্যে রাখা হয়েছে। সংঘ পরিবার, আরএসএস, শিবসেনা, বিশ্বহিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি), বিজেপি’র সহযোগী সংগঠনের তরফ থেকে প্রতিনিয়ত মুসলমান বিদ্বেষ ছড়ানো, হত্যার হুমকি, মুসলমানদের কটাক্ষ অব্যাহত রয়েছে। অথচ মুসলমানরাই এই ভারত শাসন করেছে শত শত বছর। মুসলিম শাসকদের সময় যে ভারতে হিন্দু-মুসলিমসহ সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ সমান অধিকার ভোগ করেছে; সেই দেশে চলছে উগ্র হিন্দুত্ববাদ এবং মুসলিম নিধন কার্যক্রম প্রতিষ্ঠার মহাপরিকল্পনা। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের যারা মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে এসব রাজ্যে দায়িত্ব পালন করছে তাদের অধিকাংশই বংশ পরম্পরায় আরএসএসের সঙ্গে যুক্ত। ৩৬ প্রদেশ-অঞ্চলের (২৯ প্রদেশ ৭ অঞ্চল) মধ্যে ২৪টিতে বিজেপি’র নিয়ন্ত্রণ প্রমাণ দেয় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ জনসংখ্যা অধ্যুষিত ধর্মরিপেক্ষ ভারতে উগ্র হিন্দুত্ব জাতীয়তাবাদের উত্থান কোন পর্যায়ে গেছে? ভারতের সবচেয়ে বড় রাজ্য উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বিতর্কিত হিন্দুত্ববাদী নেতা যোগী আদিত্যনাথ শপথ নেয়ার পর গোটা রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে অস্থিরতা। কংগ্রেসের ভরাডুবিতে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকে হিন্দুত্বের বীজ ছড়া সর্বত্রই কার্যকর করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ভারতের সংঘ পরিবার। ‘দ্য হিন্দু’ পত্রিকার খবর মতে, গরুর গোশত খাওয়ায় মুসলিম হত্যা, মসজিদ পোড়ানো, নিরঞ্জন জ্যোতির মুসলিম খেদাও আন্দোলন, মুজাফ্ফরবাদে মুসলিম হত্যা, সুষমা স্বরাজের গীতাকে জাতীয় গ্রন্থ করার দাবি, আগ্রায় গণধর্মান্তরকরণ, আসামে মুসলিম খেদাও যেন থামছেই না। বেপরোয়া হয়ে পড়েছে দিল্লীর নীতি-নির্ধারকরা। মূলত, ভারতে মুসলিমদের প্রতি এই দমন নিপীড়ন ইদানীং অত্যাধিক মাত্রায় বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো, ভারত দিন দিন মুসলিমদের জনসংখ্যা বেড়েই চলেছে। আর এতে এক পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হবে ভারত। কিন্তু ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদী সরকারসহ তাদের দোসররা মুসলিমদের এই অগ্রযাত্রা থামানোর জন্য হত্যা, নির্যাতন ও নিপীড়নের মাধ্যমে মুসলিমদের জনসংখ্যা কমানো এবং মুসলিমদের ভারত থেকে নিশ্চিহ্ন করার ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করছে। বলতে হয়, আজকে বাংলাদেশে তথাকথিত হিন্দু নির্যাতনের ধোঁয়া তুলে নামধারী মানবাধিকারকর্মী ও সাম্প্রদায়িক হিন্দুত্ববাদীরা নর্তন-কুর্দন করছে। কিন্তু তাদের অন্তরে লালিত নিজ মাতৃভূমি ভারতে যে গণহারে মুসলিম নিধন হচ্ছে সেটার প্রতি তাদের কোনো লক্ষ্য নেই। জাতিসংঘ বাংলাদেশে হিন্দুদের নানা বিচ্ছিন্ন ঘটনায় উদ্বেগ জানালেও ভারতের মুসলিম নির্যাতন নিয়ে কোনো প্রকার টু শব্দটিও করে না। অপরদিকে ভারতের মুসলিমদের জন্য মুসলিমবিশ্বের মুসলিম দেশগুলোরও কোনো সক্রিয়তা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। উল্লেখ্য, পবিত্র হাদীছ শরীফ অনুসারে ‘সারাবিশ্বের মুসলিমরা একটি দেহের ন্যায়। আর দেহের কোথায় আঘাত লাগলে যেমন সারা দেহে অনুভূত হয় তেমনি পৃথিবীর কোথাও কোনো মুসলিম সঙ্কটে পড়লে তাতে মুসলিম বিশ্বে আলোড়িত হওয়ার কথা’। সেক্ষেত্রে ভারতের মুসলিমদের জন্য মুসলিম বিশ্বের উচিত- প্রবল প্রতিবাদসহ প্রতিহত করণের জন্য এগিয়ে আসা। ওআইসি’সহ অন্যান্য ইসলামী জোটগুলো সক্রিয় হওয়া। বাংলাদেশসহ অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোর উচিত- একত্রে আন্তর্জাতিক আদালতে ভারতের বিরুদ্ধে মামলা করা। পাশপাশি ভারত সরকারকে সেদেশের মুসলিম নির্যাতন বন্ধের জন্য গোটা মুসলিম বিশ্বের সমন্বিতভাবে চাপ প্রয়োগ করা। -আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালী উল্লাহ, ঢাকা।

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৭

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৬

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩৫

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২৫ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস ওহাবী ফিরক্বাসহ সবগুলো বাতিল ফিরক্বা ইহুদী-নাছারাদের আবিষ্কার! তাদের এক নম্বর দালাল

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ‘সংবিধানের প্রস্তাবনা’, ‘মৌলিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা’ ‘জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতা’ এবং ‘জাতীয় সংস্কৃতি’ শীর্ষক অনুচ্ছেদের সাথে- থার্টি ফার্স্ট নাইট তথা ভ্যালেন্টাইন ডে পালন সরাসরি সাংঘর্ষিক ও সংঘাতপূর্ণ’। পাশাপাশি মোঘল সংস্কৃতির দান পহেলা বৈশাখ পালনও প্রশ্নবিদ্ধ।সংবিধানের বহু গুরুত্বপূর্ণ ও বিশেষ স্পর্শকাতর অনুচ্ছেদের প্রেক্ষিতে ৯৫ ভাগ মুসলমানের এদেশে কোনভাবেই থার্টি ফার্স্ট নাইট ও ভ্যালেন্টাইন ডে পালিত হতে পারে না।পারেনা গরিবের রক্ত চোষক ব্র্যাকের ফজলে আবেদও ‘নাইট’ খেতাব গ্রহণ করতে। পারেনা তার  নামের সাথে ‘স্যার’ যুক্ত হতে। পাশাপাশি মোঘল সংস্কৃতির দান পহেলা বৈশাখ পালনও প্রশ্নবিদ্ধ।