নারী অধিকার প্রসঙ্গে

সংখ্যা: ২২৭তম সংখ্যা | বিভাগ:

সমস্ত প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি এবং অফুরন্ত দুরূদ ও সালাম পেশ করছি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি এবং আরো ছলাত ও সালাম পেশ করছি আমাদের প্রাণের আক্বা সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম এবং উনার সম্মানিত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি।

একজন মহিলার নাম নাদিয়া (ছদ্মনাম)! সে মহিলার চার সন্তান। বড় দুই সন্তানের মধ্যে একজন মেয়ে একজন ছেলে। তারপর যমজ দুই মেয়ে। যমজ দুই মেয়েদের বয়স যখন ৫ বছর থেকে ৬ বছর তখনকার ঘটনাই এখানে উল্লেখ করা হলো-

সেই মহিলার স্বামী আয়-রোজগার করে থাকে। তা সত্ত্বেও সে মহিলা স্কার্ফ বানিয়ে মুহম্মদপুরের একটি মার্কেটে বিক্রি করে। এক্ষেত্রে স্বামীও সংসারে আয় আরো বৃদ্ধি পাবে বলে স্ত্রীকে বাধা দেয়নি। ছেলে মেয়েরাও বাধা দেয়নি। যেহেতু মহিলার দ্বীনী শিক্ষা নেই বা বুঝ নেই; তাই বেপর্দা হয়েই সে তার নির্ধারিত স্কার্ফ বিক্রি করতো। এক পর্যায়ে মার্কেটে যাওয়া-আসার ফলে অনেক পুরুষের সাথে উঠা-বসা থাকা সত্ত্বেও জিয়া নামে এক ব্যক্তির সাথে তার ভালো খাতির হয়ে যায়। সে লোক বাসায় আসা-যাওয়া শুরু করে। একদা সে মহিলা সে লোকটাকে ভাই বলে সম্বোধন করতে থাকে। আর মহিলার ছেলে-মেয়েরা ‘মামা মামা’ বলে ডাকে। এদিকে বড় মেয়ে বিয়ে ঠিক হয় পরিবার থেকে। কিন্তু দেখা যায় পাত্র পক্ষ মেয়েকে পছন্দ করা সত্ত্বেও বিয়ে ঠিকঠাক হয়ে যাওয়ার পর যখন খোঁজ-খবর নিয়ে জানত পারল মেয়ের মা বাইরের একটা লোকের সাথে মেলামেশা এবং ঘরের বাইরে ব্যবসার কাজে ওই লোকটাকে নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। …….এসব কথা জানার পর মেয়েটার বিয়ে ভেঙ্গে যায়। যখন মেয়েটার বিয়ে ভেঙ্গে গেল তখনই টনক নড়ল পুরো পরিবারের; হুঁশ ফিরলো তাদের। ছেলে-মেয়েরা তার মাকে নিষেধ করে দিলো সেই লোকের সাথে আর মেলামেশা না করতে। মহিলার স্বামীও নিষেধ করে দিল। সেই লোককে আর ঘরে না আনতে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে পরিস্থিতি হয়ে গেলো ঘোলাটে। সেই মহিলা তার স্বামী এবং সন্তানের কথা মেনে নিতে পারলো না। বরং আরো বললো “জিয়াকে ছাড়া আমি বাঁচবো না। তোমরা আমার জিয়াকে এনে দাও।” জিয়াকে ডাকা হলো এবং মহিলার স্বামী সরাসরি জিজ্ঞাসা করলো- “এই মহিলা তো চার সন্তানের মা; এরপর ও কি তুমি তাকে নিবা।” সেই জিয়া নামের লোকটি পরে জানাবে বলে ২ থেকে ৩ দিন পর জানালো যে সে মহিলাকে ঘরে তুলে নিবে। এবং পরে মহিলা ও স্বামীকে সন্তান রেখে ওই লোককে বিয়ে করলো। সাথে করে ২ যমজ মেয়েকে নিয়ে গেলো। কিন্তু কিছুদিন পর ৫-৬ বছরের ২ যমজ বোন তার মার কাছে না থেকে বড় ভাই বোন এবং বাবার কাছে ফিরে আসল। …… ইতিমধ্যে পেরিয়ে গেছে ৬ বছর।

সেই জিয়া নামক লোকটি সেই মহিলাটিকে পরে ছেড়ে দিয়েছে; মহিলা এখন পথে পথে ঘুরে বেড়ায়। যে বাড়িতে তার পূর্বের স্বামী-সন্তান থাকে; সেই বাড়ির নিচে গেটের কাছে এসে বাড়ির দিকে তাকিয়ে থাকে আবার ফিরে যায়। দুই যমজ মেয়ের বয়স এখন বারো বছর। মাকে দেখা মাত্রই তারা দৌড়ে ঘরে চলে যায়। কাছে যায় না। বড় ছেলে এবং মেয়েটা এখন চাকরি করে। মাকে দেখলে ঘৃণায়, কষ্টে-দুঃখে তারা অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে হাঁটা দেয়। এই ছেলে-মেয়েদের বাবা এই কঠিন পরিস্থিতি দেখে বলেছে- “তোমরা তোমাদের মাকে ফিরিয়ে আনো। মা হিসেবে না হোক; তোমাদের বাসায় তো সব কাজ করতে; তোমাদের দেখা শুনা করতে একটা বুয়া লাগে। তোমরা সেই বুয়া হিসেবে তোমার মাকে রাখো।” কিন্তু সন্তানেরা তাদের মাকে ঘরে আনতে নারাজ। তাদের মা এখন ভবঘুরের মতো ঘুরে বেড়ায়; কোন আশ্রয় তার এখন নেই।……….. বড়ই কঠিন পরিস্থিতি।

এর থেকেই আমাদের ইবরত-নছীহত গ্রহণ করা উচিত ‘বেপর্দার কুফল’ সম্পর্কে। আজ এই মহিলার যদি শরীয়ত উনার জ্ঞান থাকতো। পর্দা করতো; তাহলে এমনভাবে সে শয়তানী কাজে মোহগ্রস্ত হতো না এবং স্বামীর ও যদি দ্বীনি ইলম থাকতো তাহলে স্ত্রী, কন্যা সবাইকে পর্দা করাতো এবং বাইরে বাইরে বেগানা পুরুষের সাথে স্ত্রীকে ঘুরা ফেরা করতে দিতে পারতো না। সুতরাং এদের পুরা পরিবারের শিক্ষার দিক থেকে অভাব হচ্ছে দ্বীনি শিক্ষা (যা পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ ও পবিত্র ইজমা ক্বিয়াস শরীফ উনার ইলম) অর্জন না করা। এবং বর্তমান প্রেক্ষাপটে সমাজের দিকে তাকালে আমরা দেখবো। হাক্বীক্বী পর্দা না করার কারণে, অধীনস্থদের পর্দা না করানোর কারণে ওই মহিলার মতো হাজারো মহিলার সংসার ভেঙ্গে যাচ্ছে, ফিৎনা ফ্যাসাদ হচ্ছে, নারী টিজিং হচ্ছে, সম্ভ্রমহরণ হচ্ছে, তালাক হচ্ছে, এসিড নিক্ষেপ হচ্ছে।

খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মুবারক হচ্ছে মহিলারা হাক্বীক্বী পর্দা করবে। প্রয়োজনে বের হবার সময়ও আপাদমস্তক ঢেকে, পর্দা করে অর্থাৎ বোরকা পরে বের হবে। তা না হলে মুবারক হাদীছ শরীফ মুতাবিক ‘শয়তান উঁকি-ঝুঁকি দিতে থাকবে।’ অর্থাৎ কিভাবে তার দ্বারা পাপ কাজ করানো যায়; সেই চেষ্টাই শয়তান করে থাকে। অথচ মহান আল্লাহ পাক আগেই পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র সূরা ইয়াসীন উনার পবিত্র আয়াত শরীফ ৬২ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন- “সে (শয়তান) তোমাদের বহু সংখ্যক লোককে বিপদগামী করেছে। তোমাদের কি আক্বল হয়নি? অর্থাৎ তোমরা কি নির্বোধ।” সুতরাং কেউ যদি ভুল থেকে, পাপ থেকে তওবা করে ফিরে না আসে; সেই খেল-তামাসার জীবনই উপভোগ করতে থাকে তাহলে তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নাম। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “এই সেই জাহান্নাম তোমাদেরকে যার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল। (পবিত্র সূরা ইয়াসীন শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ-৬৩)

অতএব এই শয়তানের মোহ থেকে বাঁচতে হলে। শরীয়ত উনার বিধি-বিধান মানতে হলে প্রথমেই আমাদের খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম উনাদের আদেশ-নিষেধ মনে প্রাণে বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে এবং যেসব আদেশ নিষেধ রয়েছে তা সম্পর্কে, জানতে হবে। আর এই নিয়ামত উনার পূর্ণ বিষয়গুলো জানার জন্য যেতে হবে উনাদেরই কাছে যাঁদের কথা পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন- “তোমরা যারা জাননা, আহলে যিকির তথা মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী যারা রয়েছেন উনাদের কাছে যাও।”

সুতরাং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মুতাবিক আমাদের হাক্বীক্বী পর্দা বুঝতে হলে, পর্দা করতে হলে, বেপর্দা থেকে বাঁচতে হলে, শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে বাঁচতে হলে, দ্বীন ইসলাম উনার বিধি-বিধান উনাকে পরিপূর্ণভাবে পালন করতে হলে অবশ্যই উক্ত ইলম শিক্ষার জন্য নারী-পুরুষ সবাইকে আসতে হবে উক্ত যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম সাইয়্যিদুনা আহালে রসূল হযরত মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম এবং উনারই সম্মানিতা আহলিয়া সাইয়্যিদাতুন নিসা, আওলাদে রসূল, উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনাদের নেক ছোহবতে। তাহলেই যদি উক্ত বেপর্দার কুফল থেকে হিফাজত থাকা যায়। পবিত্র দ্বীন ইসলাম অর্জন করে হাক্বীক্বী মুসলিম-মুসলিমা হওয়া যায়। আমরা আমাদের হযরত শায়েখ আলাইহিস সালাম উনার কাছে খাছ করে ঈমান-আক্বীদা যেন হিফাজত করতে পারি এবং খাঁটি মুমিন-মু’মিনা হতে পারি সেই  দোয়াই চাচ্ছি। (আমীন)

-আহমদ আজিমা ফারহা

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ সম্পর্কিত ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার মন্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিস্ময় প্রকাশ গোয়েন্দা শীর্ষ কর্মকর্তারাও অবহিত নয় খোদ যুগান্তর সম্পাদকের দুঃখ প্রকাশ

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’কে নিয়ে – মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে দৈনিক জনকণ্ঠের মিথ্যাচার ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ নিষিদ্ধ হচ্ছে- এ কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু অস্বীকারই করলেন না, বললেন: ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা।’ প্রসঙ্গতঃ সোহেল তাজ বিবৃত কালো তালিকা অসম্পূর্ণ ও আংশিক ভুল। এর সংশোধন আশু দরকার

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সমীপে- সোহেল তাজ বিবৃত ১২টি জঙ্গি সংগঠন তালিকা যথার্থ নয় এর মধ্যে যেমন অনেক জঙ্গি সংগঠনের নাম আসেনি তেমনি জঙ্গিবাদ বিরোধী সংগঠনের (উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত) নামও জামাত-জোট ভূতের কারণে এসেছে। সঙ্গতঃ কারণেই বে-হেড সোহেল তাজের বেফাঁস মন্তব্য থেকে বেরিয়ে এসে বর্তমানের যোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে প্রকৃত জঙ্গি সংখ্যা যেমন নির্ধারণ করতে হবে, প্রকৃত জঙ্গিদের যেমন চিহ্নিত করতে হবে পাশাপাশি জঙ্গিবাদী, মৌলবাদী ও ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একান্ত নিবেদিত ‘আল বাইয়্যিনাত’কে মূল্যায়ন করতে হবে।