নূরুম মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আহলিয়া আফদ্বালুন নাস বা’দা রসূলিল্লাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, লাসতুন্না কাআহাদিম মিনাননিসা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের তা’রীফ ও তা’যীম

সংখ্যা: ২৪০তম সংখ্যা | বিভাগ:

নূরুম মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আহলিয়া আফদ্বালুন নাস বা’দা রসূলিল্লাহ, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, লাসতুন্না কাআহাদিম মিনাননিসা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের তা’রীফ ও তা’যীম


সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আযওয়াজ বা আহলিয়া আলাইহিন্নাস সালাম উনারাই হচ্ছেন উম্মুল মু’মিনীন অর্থাৎ মু’মিনগণ উনাদের মা। উম্মুন শব্দটি একবচন, বহুবচন উম্মাহাতুন। অর্থ মা। আর মু’মিন শব্দটির বহুবচন হচ্ছে মু’মিনীন। একত্রে উম্মুল মু’মিনীন অথবা উম্মাহাতুল মু’মিনীন শব্দ মুবারক দ্বয়ের অর্থ হলো মু’মিনগণ উনাদের মা। পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে اُمَّهَاتُ الْمُؤْمِنِيْنَ শব্দ মুবারক উল্লেখ রয়েছে। আর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ শব্দ মুবারক।

হযরত উম্মুল মু’মিনীন বা উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা কতজন ছিলেন সে সম্পর্কে বিভিন্ন মত রয়েছে। এক বর্ণনা মতে, উনাদের সর্বাধিক সংখ্যা বর্ণিত রয়েছে উনিশজন পর্যন্ত। আর সর্বনিম্ন সংখ্যা বর্ণিত রয়েছে এগারজন। তবে মশহূর বা প্রসিদ্ধ বর্ণনা মতে, উনাদের সংখ্যা তেরজন। এখানে মশহূর বর্ণনা অনুযায়ী উনাদের সংখ্যা উল্লেখ করা হলো-

১.          উম্মুল মু’মিনীন হযরত খাদীজাতুল কুবরা আলাইহাস সালাম।

২.         উম্মুল মু’মিনীন হযরত সাওদা আলাইহাস সালাম।

৩.         উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম।

৪.         উম্মুল মু’মিনীন হযরত হাফছা আলাইহাস সালাম।

৫.         উম্মুল মু’মিনীন হযরত যাইনাব বিনতে খুজায়মা আলাইহাস সালাম।

৬.         উম্মুল মু’মিনীন হযরত উম্মু সালামা আলাইহাস সালাম।

৭.         উম্মুল মু’মিনীন হযরত জুওয়াইরিয়া আলাইহাস সালাম।

৮.         উম্মুল মু’মিনীন হযরত যাইনাব বিনতে জাহাশ আলাইহাস সালাম।

৯.         উম্মুল মু’মিনীন হযরত রাইহানা আলাইহাস সালাম।

১০.        উম্মুল মু’মিনীন হযরত উম্মু হাবীবা আলাইহাস সালাম।

১১.        উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছফিয়্যা আলাইহাস সালাম।

১২.        উম্মুল মু’মিনীন হযরত মারিয়া কিবতিয়্যাহ আলাইহাস সালাম।

১৩.        উম্মুল মু’মিনীন হযরত মাইমূনা আলাইহাস সালাম। (পবিত্র নক্শবন্দিয়ায়ে মুজাদ্দিদিয়া তরীক্বা পৃষ্ঠা ৮ ও ৯) বর্ণিত রয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিছাল শরীফ গ্রহণকালে নয়জন হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হায়াত মুবারক-এ ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!

হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মর্যাদা-মর্তবা, বুযূর্গী-সম্মান সম্পর্কে অসংখ্য পবিত্র আয়াত শরীফ ও অসংখ্য পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণিত রয়েছে। মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার শ্রেষ্ঠতম রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যেরূপ মনোনীত করেছেন তদ্রুপ উনার সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ- আযওয়াজ এবং আবনা-বানাত আলাইহিমুস সালাম ও আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকেও মনোনীত করেছেন। সুবহানাল্লাহ!

পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সমস্ত সৃষ্টির জন্য রসূল হিসেবে প্রেরিত হয়েছেন। অর্থাৎ সকল হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম, সকল হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম, সকল ইনসান ও জিন সকলেই উনার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত। এক কথায় কায়িনাতের সকল সৃষ্টির জন্য তিনি যেমন মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে প্রেরিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তদ্রুপ উনার সম্মানিতা আযওয়াজ আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হলেন কায়িনাতের সকলের মা। সুবহানাল্লাহ! যেমন এ প্রসঙ্গেঁ পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

اَلنَّبِيُّ اَوْلٰى بِالْمُؤْمِنِيْنَ مِنْ اَنْفُسِهِمْ ۖ وَاَزْوَاجُه اُمَّهَاتُهُمْ ۗ

অর্থ : “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মু’মিনগণ উনাদের নিকট উনাদের প্রাণের চেয়েও অধিক প্রিয় এবং উনার আযওয়াজ আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হচ্ছেন মু’মিনগণ উনাদের মা। সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৬)

উল্লেখ্য, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরেই হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মাক্বাম বা মর্যাদা। সুবহানাল্লাহ!

বর্ণিত রয়েছে, প্রত্যেক মানুষ তথা জিন-ইনসানের হাক্বীক্বী মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত ও প্রকাশিত হবে জান্নাতে। সেই জান্নাতে হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা অবস্থান করবেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে। সুবহানাল্লাহ!

কাজেই, বলার অপেক্ষা রাখে না যে, হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মর্যাদা-মর্তবার সমতুল্য সৃষ্টির কেউই নেই বা কেউই হতে পারে না। যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

يَا نِسَاءَ النَّبِيّ لَسْتُنَّ كَاَحَدٍ مّنَ النّسَاءِ ۚ

অর্থ : “হে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়া আলাইহিন্নাস সালাম! অর্থাৎ হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম! আপনারা অন্য কোন মহিলাদের মত নন।” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩২)

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিতা আম্মা অর্থাৎ উম্মু রূহিল্লাহ হযরত মারইয়াম আলাইহাস সালাম উনার মনোনীত ও পবিত্র হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করার পাশাপাশি উনার ফযীলত মুবারক সম্পর্কে আরো যে বিষয়টি উল্লেখ করেছেন তা হচ্ছে-

لَيْسَ الذَّكَرُ‌ كَالْاُنثٰى ۖ

অর্থাৎ “হযরত উম্মু রূহিল্লাহ আলাইহাস সালাম তিনি এমন এক মহিলা; উনার সমতুল্য কোন পুরুষও নেই।” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৬)

কিন্তু হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের শান মুবারক এ বলা হয়েছে-

لستن كاحد من النساء

অর্থাৎ “আপনারা অন্য কোন মহিলাদের মত নন।”

প্রতীয়মান হলো, হযরত উম্মু রূহিল্লাহ আলাইহাস সালাম তিনিসহ কোন মহিলাই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মত না। সুবহানাল্লাহ!

হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের আরও যে বৈশিষ্ট্য ও মর্যাদা মুবারক তা হচ্ছে, উনারা হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। উনাদের পবিত্রতার বিষয়টি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ঘোষিত হয়েছে। ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

اِنَّـمَا يُرِ‌يْدُ اللهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرّ‌جْسَ اَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهّرَ‌كُمْ تَطْهِيْرً‌ا ◌

অর্থ : “হে হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম! নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাদের থেকে অপবিত্রতা দূরীভূত করে আপনাদেরকে পরিপূর্ণরূপে পবিত্র করতে চান। সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩)

এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার অর্থ এই নয় যে, হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে কোন প্রকার অপবিত্রতা ছিল, যা থেকে উনাদেরকে পবিত্র করা হয়েছে; বরং অর্থ হচ্ছে যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে পুত-পবিত্র করেই সৃষ্টি করেছেন। হক্বীক্বত মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে স্বীয় ভাষায় হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের পবিত্রতার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছেন। যেমন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নবী হিসেবে সৃষ্টি হওয়ার পরও উনাকে দুনিয়াবী চল্লিশ বছর বয়স মুবারকে আনুষ্ঠানিকভাবে নবী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সুবহানাল্লাহ!

স্মরণীয় যে, হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রথম সারির অন্তর্ভুক্ত হলেন আযওয়াজু রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা। আর দ্বিতীয় সারির অন্তর্ভুক্ত হলেন আবনাউ ওয়া বানাতু রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা। উনাদের প্রত্যেককেই মুহব্বত করা উম্মতের জন্য ফরয-ওয়াজিব। সুবহানাল্লাহ!

যেমন এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

قُل لَّا اَسْاَلُكُمْ عَلَيْهِ اَجْرً‌ا اِلَّا الْمَوَدَّةَ فِي الْقُرْ‌بٰى ۗ

অর্থ : “হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি উম্মতদেরকে বলুন, আমি তোমাদের নিকট কোন বিনিময় চাই না (প্রকৃতপক্ষে উম্মতের পক্ষে বিনিময় দেয়াও সম্ভব নয়; বিনিময় দেয়ার চিন্তা করাটাও হবে কুফরীর শামিল তবে উম্মতকে যেহেতু নাজাত ও সন্তষ্টি লাভ করতে হবে সে কারণে) তোমাদের দায়িত্ব কর্তব্য হচ্ছে, আমার ঘনিষ্টজন অর্থাৎ হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা।” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা শূরা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৩)

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

احبوا اهل بيتى لـحبى

অর্থ : “আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে তোমরা মুহব্বত করো আমার পবিত্র মুহব্বত মুবারক পাওয়ার জন্য।” (তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ)

উল্লেখ্য, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র মুহব্বত মুবারক ও সন্তুষ্টি মুবারক ব্যতীত মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র মুহব্বত মুবারক ও সন্তুষ্টি মুবারক পাওয়া কখনোই সম্ভব হবে না। কাজেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র মুহব্বত মুবারক ও সন্তুষ্টি মুবারক পেতে হলে উনার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করতে হবে এবং উনাদেরকে সন্তুষ্ট করতে হবে। উনাদের পবিত্র মুহব্বত মুবারক ও সন্তুষ্টি মুবারক যারা অর্জন করতে পারবে কেবল তারাই নাজাত ও কামিয়াবী লাভ করবে। আর উনাদের পবিত্র মুহব্বত মুবারক ও সন্তুষ্টি মুবারক যারা হাছিল করতে পারবে না, তারা হালাক বা ধ্বংস হয়ে যাবে। যেমন এ প্রসঙ্গে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

عن حضرت ابى ذر رضى الله تعالى عنه انه قال وهو اخذ بباب الكعبة سمعت النبى صلى الله عليه وسلم يقول الا ان مثل اهل بيتى فيكم مثل سفينة نوح عليه السلام من ركبها نـجا ومن تـخلف عنها هلك.

অর্থ : হযরত আবূ যর গিফারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি কা’বা শরীফ উনার দরজা মুবারক ধরে বলেছেন, আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি, “সাবধান! নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা হলেন হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার কিশতীর ন্যায়। যে তাতে আরোহন করেছে সে রক্ষা পেয়েছে আর যে তা হতে পশ্চাতে থেকেছে, সে ধ্বংস হয়েছে।” (মুসনাদে আহমদ শরীফ, মিশকাত শরীফ)

অর্থাৎ হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে যারা মুহব্বত করবে তারা নাজাত পাবে। সুবহানাল্লাহ! আর উনাদেরকে যারা মুহব্বত করবে না তারা ধ্বংস হয়ে যাবে। নাউযুবিল্লাহ!

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

عَنْ حضرت أَبِي لَيْلَى رضى الله تعالى عنه ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لا يؤمن عبد حتى اكون احب اليه من نفسه ويكون عترتى احب اليه من عترته ويكون اهلى احب اليه من اهله ويكون ذاتى احب اليه من ذاته.

অর্থ: “হযরত আবু লায়লা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, কোনো বান্দা ততক্ষণ পর্যন্ত মু’মিন হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত সে তার নিজের জীবন অপেক্ষা আমাকে বেশি মুহব্বত না করবে এবং আমার সম্মানিত আওলাদ তথা বংশধরগণ উনাদেরকে তার বংশধর থেকে বেশি মুহব্বত না করবে এবং আমার সম্মানিত পরিবার-পরিজন উনাদেরকে তার পরিবার-পরিজন থেকে বেশি মুহব্বত না করবে এবং আমার সম্মানিত জাত মুবারক উনাকে তার জাত থেকে বেশি মুহব্বত না করবে।” (মু’জামুল আওসাত লিত তবারানী)

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত রয়েছে-

عن حضرت عويـمر بن ساعدة رضى الله تعالى عنه انه صلى الله عليه و سلم قال ان الله اختارنى واختار لى اصحابا فجعل لى منهم وزراء وانصارا واصهارا فمن سبهم فعليه لعنة الله والـملئكة والناس اجـمعين ولايقبل الله منهم صرفا وعدلا.

অর্থ : “হযরত উয়াইমির ইবনে সায়িদাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত রয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে এবং আমার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনাদেরকে মনোনীত করেছেন এবং উনাদের মধ্য থেকে আমার কার্য সম্পাদনকারী, খিদমতকারী এবং বৈবাহিক সূত্রে আত্মীয়বর্গ নিযুক্ত করেছেন। অতএব, যে ব্যক্তি উনাদেরকে গালি দিবে বা দোষারোপ করবে, তার প্রতি মহান আল্লাহ পাক উনার লা’নত এবং সমস্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের ও সমস্ত মানুষ সকলেরই লা’নত। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি তার কোন ফরয ও নফল ইবাদত কবুল করবেন না।” (তবারানী শরীফ, হাকিম শরীফ)

এ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বর্ণনায় হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা বিশেষভাবে শামিল রয়েছেন। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার প্রিয়তম রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মনোনীত করেছেন এবং সেই সাথে উনার জীবনসঙ্গিনী হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকেও বিশেষভাবে মনোনীত করেছেন উনার মুবারক খিদমতে আঞ্জাম দেয়ার লক্ষ্যে।

কাজেই, উনাদের শান-মান, মর্যাদা-মর্তবা মুবারক উপলব্ধি করা সমস্ত জিন-ইনসানের জন্য ফরয-ওয়াজিব। উনাদের প্রতি মুহব্বত ও সু-ধারণা পোষণ করাই হচ্ছে ঈমান। আর উনাদের প্রতি বিদ্বেষভাব পোষণ করা, উনাদের সমালোচনা করা সুস্পষ্ট কুফরী, কাফির ও চিরজাহান্নামী হওয়ার কারণ।


আল্লামা আহমদ আবু সাফওয়ান।

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম