নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আহলিয়া সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, ছাহিবাতু রসূলিল্লাহ, উম্মুল মু’মিনীন হযরত মারিয়া কিবতিয়া আলাইহাস সালাম ও প্রসঙ্গ কথা

সংখ্যা: ২৪০তম সংখ্যা | বিভাগ:

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আহলিয়া সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, ছাহিবাতু রসূলিল্লাহ, উম্মুল মু’মিনীন হযরত মারিয়া কিবতিয়া আলাইহাস সালাম ও প্রসঙ্গ কথা


সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছোহববত মুবারক উনার মধ্যেই রয়েছে সর্বাধিক মর্যাদা-মর্তবা। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছোহবত মুবারকের মহান সৌভাগ্যশালী হওয়ার কারণেই হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা দুনিয়ায় থাকতেই যিনি খালিক্ব-মালিক মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি-রেযামন্দী মুবারক উনার সুসংবাদ অর্জন করেন। সুবহানাল্লাহ!

যেমন, এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার কালাম পাক উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-

رضى الله عنهم ورضوا عنه

অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক (হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের) উপর সন্তুষ্ট; উনারাও যিনি খালিক্ব-মালিক মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি সন্তুষ্ট।” (পবিত্র সূরা মায়িদা শরীফ-১১৯, পবিত্র সূরা মুজাদালাহ শরীফ-২২, পবিত্র সূরা বাইয়্যিনাহ শরীফ-৮)

হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা একদিকে যেমন ছাহাবীয়াগণ উনাদের অন্তর্ভুক্ত, অন্যদিকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইহকাল ও পরকালীন সম্মানিতা আহলিয়া জীবনসঙ্গিনী হওয়ারও সুমহান সৌভাগ্য অর্জন করেন। যার কারণে অন্যান্য পরহিযগার-মুত্তাক্বী মহিলাগণ উনাদের চেয়ে উনাদেরকে অনেক বেশী নিয়ামত, মর্যাদা, মর্তবা, ফাযায়িল-ফযীলত প্রদান করা হয়েছে। যা স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি ও উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা প্রদান করেছেন। সুবহানাল্লাহ!

উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বয়ং উনার কালাম পাক উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-

يا نساء النبى لستن كاحد من النساء

অর্থ: “হে হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম; আপনারা অন্য নারীদের মতো নন।” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩২)

এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় বিশ্ববিখ্যাত ও সর্বজনমান্য তাফসীরের কিতাব “তাফসীরে মাযহারী” উনার ৭ম খণ্ডের ৩৩৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-

اى ليست كل واحدة منكن او الـمعنى لم توجد جماعة واحدة من جماعات النساء مثلكن فى الفضل قال ابن عباس اى ليس قدركن عندى مثل قدر غيركن من النساء الصالحات انتن اكرم على وثوابكن اعظم لدى. هذه الاية تدل على فضلهن على سائر النساء.

অর্থ: “হে উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম! আপনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উনার সম্মানিতা আহলিয়া বা সহধর্মিণী হওয়ার কারণেই মর্যাদা, মর্তবা, ফযীলতের দিক থেকে কোনো মহিলাই আপনাদের সমকক্ষ নয়। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি (এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায়) বলেন, আপনাদের মর্যাদা, মর্তবা, ফাযায়িল, ফযীলত অন্যান্য সতী-সাধ্বী মহিলাগণের মতো নয়। বরং আপনাদের সম্মান-মর্যাদা, ফাযায়িল-ফযীলত ও প্রতিদান আমার নিকটে অধিক মর্যাদা সম্পন্ন, অনেক ঊর্ধ্বে। এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, সমস্ত মহিলাগণের উপরে আপনাদের অধিক মর্যাদা, মর্তবা, ফাযায়িল, ফযীলত রয়েছে।” সুবহানাল্লাহ! (অনুরূপভাবে তাফসীরে খাযিন ৫ম খণ্ডের ২৫৭ পৃষ্ঠা, তাফসীরে বাগবী ৫ম খণ্ডের ২৫৭ পৃষ্ঠা, তাফসীরে মাদারিকুত তানযীল ৩য় খণ্ডের ৪৬৫ পৃষ্ঠা এবং অন্যান্য সকল নির্ভরযোগ্য তাফসীর গ্রন্থে আলোচনা রয়েছে।)

হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সুমহান পবিত্রতা বর্ণনা করে মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

انما يريد الله ليذهب عنكم الرجس اهل البيت ويطهركم تطهيرا

অর্থ: “হে হযরত আহলে বাইত শরীফ (উম্মুল মু’মিনীন) আলাইহিন্নাস সালাম! মহান আল্লাহ পাক তিনি চান আপনাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং আপনাদেরকে পূর্ণরূপে পূত-পবিত্র করতে অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম অর্থাৎ হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে পুত-পবিত্র করেই সৃষ্টি করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৩)

এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় “তাফসীরে মাযহারী” উনার ৭ম খণ্ডের ৩৩৯ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-

قال عكرمة ومقاتل اراد باهل البيت نساء النبى صلى الله عليه وسلم

অর্থ: “হযরত ইকরামা রহমতুল্লাহি আলাইহি ও মুক্বাতিল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা বলেন, পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ‘আহলে বাইত’ দ্বারা হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আহলিয়া অর্থাৎ হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে বুঝানো হয়েছে।” সুবহানাল্লাহ!

“তাফসীরে ইবনে কাছীর”-উনার ৩য় খণ্ডের ৭৬৯ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-

نص فى دخول ازواج النبى صلى الله عليه وسلم فى اهل البيت ههنا لانهن سبب نزول هذه الاية.

অর্থ: “এ পবিত্র আয়াত শরীফখানা এটাই প্রমাণ করে যে, হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আহলিয়া অর্থাৎ হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালামগণ উনারা হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত।” সুবহানাল্লাহ!

উল্লেখ্য এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সাথে সাথে উনাদের আওলাদ বা সন্তান-সন্ততিগণকেও হযরত আহলে বাইত শরীফ উনাদের অন্তর্ভুক্ত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সুবহানাল্লাহ!

পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র তাফসীর শরীফ ইত্যাদি কিতাবের উপরোক্ত আলোচনা থেকে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে-

(১) আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আহলিয়া হওয়ার কারণেই হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল মর্যাদা মর্তবা অন্যান্য সকল নারীর উপরে। সুবহানাল্লাহ!

(২) হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা যেমন ইহকালে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আহলিয়া; তদ্রƒপ বেহেশতও উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আহলিয়া হিসেবেই থাকবেন। সুবহানাল্লাহ!

(৩) হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হযরত আহলে বাইত শরীফ উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!

(৪) অন্যান্য মানুষের থেকে উনাদের আমলের প্রতিদান দ্বিগুণ-বহুগুণে প্রদান করা হবে।

(৫) পৃথিবী সৃষ্টির পূর্বে-পরে, যে কোনো কালে যারাই অনেক মর্যাদাশালী হয়েছেন; তারাই আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কারণেই মর্যাদাবান হয়েছেন। এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হচ্ছেন হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা। সুবহানাল্লাহ!

হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সম্মানিত ইসিম মুবারক ও সংখ্যা মুবারক


মশহূর বা প্রসিদ্ধ বর্ণনা মতে, হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সংখ্যা মুবারক তেরজন। নিম্নে ধারাবাহিকভাবে উনাদের সম্মানিত ইসিম মুবারক উল্লেখ করা হলো-

১)          উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত খাদীজাতুল কুবরা আলাইহাস সালাম।

২)         উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত সাওদা আলাইহাস সালাম।

৩)         উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম।

৪)         উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত হাফছা আলাইহাস সালাম।

৫)         উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাইনাব বিনতে খুজায়মা আলাইহাস সালাম।

৬)         উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু সালামা আলাইহাস সালাম।

৭)         উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত জুওয়াইরিয়া আলাইহাস সালাম।

৮)         উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাইনাব বিনতে জাহাশ আলাইহাস সালাম।

৯)         উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত রাইহানা আলাইহাস সালাম।

১০)        উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু হাবীবা আলাইহাস সালাম।

১১)        উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছফিয়্যা আলাইহাস সালাম।

১২)        উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত মারিয়া কিবতিয়্যাহ আলাইহাস সালাম।

১৩)        উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত মাইমূনা আলাইহাস সালাম।

উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত মারিয়া কিবতিয়া আলাইহাস সালাম উনার সংক্ষিপ্ত সাওয়ানেহ উমরী মুবারক

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মিসরের শাসনকর্তা মুকাউকিস উনার নিকট সম্মানিত ইসলাম উনার দাওয়াত দিয়ে একখানা পত্র মুবারক লিখেন। তিনি ছিলেন একজন খ্র্স্টিান পন্ডিত, রোম সম্রাটের প্রশাসক রূপে নিয়োজিত। ইসকান্দরিয়া ছিল তার রাজধানী। মুকাউকিস নূরে মুজাসাসম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পত্র মুবারক যথাযথ সম্মানের সাথে গ্রহণ করে নিম্নোক্ত জাওয়াব দেন: আমি আপনার পত্র মুবারক পাঠ করেছি এবং যা কিছু আপনি বলতে চেয়েছেন তা অনুধাবন করেছি। আমার জানা আছে যে, এখনও একজন সম্মানিত নবী উনার আবির্ভাব অবশিষ্ট রয়েছে এবং তিনি আসবেন। কিন্তু আমার ধারণা ছিল যে, তিনি শাম (সিরিয়া) অঞ্চলে তাশরীফ মুবারক আনবেন। আমি আপনার কাসেদ (দূত) উনার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেছি। মুবারক হাদিয়া স্বরূপ আপনার জন্য দুজন মেয়ে প্রেরণ করছি। উনারা দুইজন সহোদরা এবং নিতান্ত সম্ভ্রান্ত পরিবারের। এছাড়া দুল দুল নামক একটি বাহন ও কিছু কাপড় হাদিয়া মুবারক হিসেবে পাঠানো হচ্ছে। এই দুইজন মেয়ের মধ্যে ছিলেন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত মারিয়া কিবতিয়া আলাইহাস সালাম এবং উনার বোন হযরত সীরিন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা। উনারা ছিলেন ঈসায়ী ধর্মালম্বী। সম্মানিত ইসলাম গ্রহণ করার পর হযরত মারিয়া কিবতিয়া আলাইহাস সালাম উনাকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিকাহ মুবারক করেন এবং উনার বোন হযরত সীরিন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনাকে হযরত হাসসান বিন ছাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে হাদিয়া হিসাবে প্রদান করেন। সুবহানাল্লাহ! কোন বর্ণনায় এসেছে, উম্মুল মু’মিনীন হযরত মারিয়া কিবতিয়া আলাইহাস সালাম তিনি মুকাউকিস উনার চাচাতো বোন ছিলেন।

হিজরী ৮ সনে উম্মুল মু’মিনীন হযরত মারিয়া কিবতিয়া আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র রেহেম শরীফে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একজন সম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম তিনি পবিত্র বিলাদত শরীফ গ্রহণ করেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার নাম মুবারক রেখেছিলেন হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম। তিনি খুব ছোট অবস্থায় পবিত্র বিছাল শরীফ গ্রহন করেন। ঐতিহাসিক বালাজুরীর বর্ণনা অনুযায়ী তিনি ১৮ মাস দুনিয়াবী হায়াত মুবারকে ছিলেন। উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম এবং উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত মারিয়া কিবতিয়া আলাইহাস সালাম উনাদের দুইজন ব্যতীত অপর কোন উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের পবিত্র রেহেম শরীফে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কোন আওলাদ আলাইহিস সালাম বিলাদত শরীফ গ্রহণ করেননি। সুবহানাল্লাহ!

আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম ও হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাদের নিজ নিজ খিলাফতকালে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত মারিয়া কিবতিয়া আলাইহাস সালাম উনাকে অতিশয় সম্মান ও মর্যাদা প্রদান করা হয়। উনারা উনার জন্য ভাতা নির্ধারণ করে দেন, যা উনার পবিত্র বিছাল শরীফ উনার পূর্ব পর্যন্ত তিনি পেতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ!

বর্ণিত আছে যে, হযরত মারিয়া কিবতিয়া আলাইহাস সালাম তিনি মিসরের আনসানা অঞ্চলের হাফন নামক গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুপারিশক্রমে আমীরুল মু’মিনীন হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি হাফন বাসিদের খারাজ (ভূমি কর) মাফ করে দিয়েছিলেন। ইহা উম্মুল মু’মিনীন হযরত মারিয়া কিবতিয়া আলাইহাস সালাম উনার সম্মানার্থে করা হয়েছিল। সুবহানাল্লাহ!

হিজরী ১৬ সালে পবিত্র মুহররমুল হারাম শরীফ মাসে হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার খিলাফতকালে পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে তিনি পবিত্র বিছাল শরীফ গ্রহন করেন। হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি উনার পবিত্র জানাযার নামায পড়ান। পবিত্র জান্নাতুল বাক্বী শরীফ উনার পবিত্র রওজা শরীফ অবস্থিত। (উসুদুল গাবা, ইছাবা, সিয়ারুস ছাহাবা, অন্যান্য সীরত গ্রন্থ)

উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা যে বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে তাহলো- উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত মারিয়া কিবতিয়া আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তেরজন সম্মানিতা পবিত্রা আহলিয়া আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে বারোতম সম্মানিতা, পবিত্রা আহলিয়া আলাইহাস সালাম। তিনি ছিলেন সম্ভ্রান্ত পরিবারের স্বাধীনা মহিলা। পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের যেসকল ফাযায়িল-ফযীলত মর্যাদা-মর্তবা ও পবিত্রতা বর্ণনা করা হয়েছে তা পরিপূর্ণরূপে উম্মুল মু’মিনীন হযরত মারিয়া কিবতিয়া আলাইহাস সালাম উনার জন্য প্রযোজ্য। সুবহানাল্লাহ!

অথচ একশ্রেণীর নিকৃষ্ট, নাপাক, পশুর চেয়েও অধম কাফির গোষ্ঠী উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত মারিয়া কিবতিয়া আলাইহাস সালাম উনাকে জড়িয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে ব্লগ, ফেইসবুকে দীর্ঘদিন যাবত জঘন্যতম মিথ্যা ও কুফরী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে যে, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত মারিয়া কিবতিয়া আলাইহাস সালাম তিনি নাকি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত হাফসা আলাইহাস সালাম উনার বাঁদী ছিলেন। নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নাকি বিবাহ ব্যতীতই উনাকে গ্রহন করেছেন। নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! লা’নাতুল্লাহি আলা শাররিকুম।

মূলতঃ কাফিরদের উপরোক্ত প্রচারণা যে ইতিহাসের জঘন্যতম মিথ্যা তা উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত মারিয়া কিবতিয়া আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র সাওয়ানেহ উমরী মুবারক দ্বারাই সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

অতএব, যারা উপরোক্ত আক্বীদায় বিশ্বাসী তারা কস্মিনকালেও মু’মিন মুসলমান থাকতে পারে না। তারা যদি মু’মিন মুসলমান দাবি করে থাকে তবে তারা কাট্টা মুরতাদের অন্তর্ভুক্ত। আর যদি কোন কাফির একথা প্রচার করে থাকে তবে তারা চরম পর্যায়ের কাট্টা কাফির হিসেবে সাব্যস্ত হবে। বস্তুত: কাফির ব্যতীত কেউ এই বিষয়টি চিন্তাও করতে পারেনা। সম্মানিত শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে তাদের একমাত্র শাস্তি হচ্ছে মৃত্যুদণ্ড।

উল্লেখ্য, মুসলমান মাত্রই এ আক্বীদা রাখতে হবে যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত ঘোষনার পূর্বে ও পরে সর্বদাই মহান আল্লাহ পাক উনার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত। তিনি সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সকলের মধ্যে সর্বোত্তম ও সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শ ও চরিত্র মুবারক উনার অধিকারী। খোদ সে সময়কার কাফির গোষ্ঠীও উনার নাম মুবারকে অনেক মিথ্যা প্রোপাগা-া ছড়ালেও উনার চরিত্র মুবারক নিয়ে মিথ্যা কথা বলা মত দুঃসাহস দেখাতে পারেনি। কাজেই, উনার চরিত্র মুবারক নিয়ে সামান্যতম সন্দেহও যার মধ্যে থাকবে সে নিকৃষ্টতম কাফিরের অন্তর্ভুক্ত।


-আল্লামা মুহম্মদ ইবনে ইসহাক

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম