নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অবশ্যই মহান আল্লাহ পাক উনার দায়েমী দীদার মুবারক লাভ করেছেন অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনাকে সরাসরি মহাপবিত্র নুরুল মুনাওওয়ার বা বাহ্যিক চক্ষু মুবারক দ্বারাই দেখেছেন

সংখ্যা: ২৯৩তম সংখ্যা | বিভাগ:

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

وَلَقَدْ رَاٰهُ نَـزْلَةً أُخْرٰى

অর্থ: অবশ্যই মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খ¦লিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন উনাকে পুনরায় সরাসরি দেখেছেন। (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা নজম শরীফ, সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ: ৯)

উপরোক্ত মহাপবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে نَـزْلَةً أُخْرٰى  শব্দ মুবারক উনার অর্থ হচ্ছেন “পুণরায় অর্থাৎ সৃষ্টির শুরু থেকেই দীদারে ইলাহী মুবারকে মশগুল আছেন। বিশেষ শান মুবারক প্রকাশার্থে পুণরায় মহাপবিত্র মি’রাজ শরীফে আখাছছুল খাছ দীদার বা সাক্ষাত মুবারক লাভ করেছেন।

উপরোক্ত মহাপবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ فِيْ قَـوْلِ اللهِ ‏(‏وَلَقَدْ رَاٰهُ نَـزْلَةً أُخْرٰى عِنْدَ سِدْرَةِ الْمُنْـتَـهٰى فَأَوْحٰى إِلٰى عَبْدِهٖ مَاۤ أَوْحٰى فكَانَ قَابَ قَـوْسَيْنِ أَوْ أَدْنٰـى)‏‏.‏ قَالَ حَضْرَتْ اِبْنُ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَدْ رَاٰهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ

অর্থ: হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত “মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন উনার কালাম” অবশ্যই মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খ¦লিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন উনাকে পুনরায় সরাসরি দেখেছেন সিদরাতুল মুনতাহা বা সর্বোচ্চ মনযিলে। তখন উনার সম্মানিত হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যা পবিত্র ওহী মুবারক করার তা পবিত্র ওহী মুবারক করলেন” তখন উনাদের মধ্যে ধনুকের দুই মাথা একত্রিত হওয়া পরিমাণ বা তারও কম ব্যবধান ছিল। (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা নজম শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৯- ১১)

সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফসমূহ প্রসঙ্গে হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, নিশ্চয়ই সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনাকে প্রত্যক্ষ করেছেন অর্থাৎ সরাসরি দেখেছেন। সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ কিতাবুত তাফসীর, হাদীছ শরীফ নং ৩২৮০)

মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো উল্লেখ করা হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَوَّلُ عَيْنٍ تَـنْظُرُ اِلٰى اللهِ عَزَّ وَجَلَّ عَيْنِـىْ

অর্থ: হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুনাওওয়ার শরীফ বা চক্ষু মুবারকই সর্বপ্রথম মহান আল্লাহ পাক উনাকে হাক্বীক্বীভাবে দেখেছেন। (দারিমী শরীফ, জামিউল আহাদীছ, আল জামিউল কাবীর লিস সুয়ুতী, কানযুল উম্মাল ৩২০৫০)

অর্থাৎ সৃষ্টির সূচনা থেকে মহান আল্লাহ পাক উনাকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দেখে আসছেন, এখনও দেখতেছেন ও দেখতে থাকবেন অর্থাৎ আখাছ্ছুল খাছ দায়েমী দীদার মুবারকেই মশগুল রয়েছেন।

মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো উল্লেখ করা হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ أَبِي ذَرٍّ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ، قَالَ سَأَلْتُ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هَلْ رَأَيْتَ رَبَّكَ؟ فَـقَالَ : قَدْ رَأَيْتُ نُورًا أَنَّـى أَرَاهُ

অর্থ: হযরত আবু যর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জিজ্ঞাসা করেছি (হে মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি মহান আল্লাহ পাক উনাকে দেখেছেন কি? উত্তরে তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি মহান আল্লাহ পাক উনাকে নূর মুবারক উনার ন্যায় উজ্জল আকারে দেখেছি। (মুসলিম শরীফ, তিরমীযী শরীফ, মুসনাদে আহমদ শরীফ, ত্ববারানী শরীফ, ইবনু খুযাইমা, ইবনু হিব্বান, কানযুল উম্মাল/৬১৮৬১)

মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো উল্লেখ করা হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : رَأَيْتُ رَبِّيْ تَـبَارَكَ وَتَـعَالٰى

অর্থ: হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা উনার থেকে বর্ণিত, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি মহান আল্লাহ পাক উনাকে দেখেছি। (মুসনাদে আহমদ শরীফ ১/২৯০: হাদীছ শরীফ ২৬৩৪)

মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো উল্লেখ করা হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ قَـتَادَةَ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ أَنَّ أنَسًا رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ: رَأٰى سَيِّدُنَا مُـحَمَّدٌ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَبَّهٗ

অর্থ: হযরত ক্বাতাদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রব তায়ালা উনাকে দেখেছেন। (আস সুন্নাহ লি ইবনে আবি আছিম ১/১৮৯: হাদীছ শরীফ ৪৩৫)

মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো উল্লেখ করা হয়েছে-

سَأَلَ مَرْوَانُ حَضْرَتْ أَبَا هُرَيْـرَةَ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ: هَلْ رَأٰى سَيِّدُنَا مُـحَمَّدٌ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَبَّهٗ عَزَّ وَجَلَّ؟ فَـقَالَ: “نَـعَمْ قَدْ رَاٰهُ

অর্থ: হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার কাছে মারওয়ান জানতে চাইলো, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কি উনার সুমহান রব তায়ালা উনাকে দেখেছেন? তিনি জবাব দিলেন, হ্যঁা নিশ্চয়ই তিনি সুমহান রব তায়ালা উনাকে দেখেছেন। সুবহানাল্লাহ! (আস সুন্নাহ লি আব্দিল্লাহ ইবনে আহমদ ১/১৭৬)

উপরোক্ত মহাপবিত্র সূরা নজম শরীফ উনার ৯নং মহাপবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে-

عَنِ الْمُبَارَكِ بْنِ فُضَالَةَ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ كَانَ الْـحَسَنُ الْبَصْرِىُّ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ يَـحْلِفُ ثَلَاثَةً لَقَدْ رَأٰي سَيِّدُنَا مُـحَمَّدٌ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَبَّهٗ

অর্থ: হযরত মুবারক ইবনে ফুদ্বালা রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, নিশ্চয়ই হযরত ইমাম হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি তিনবার কসম করে বলেছেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অবশ্যই মহান আল্লাহ পাক উনাকে দেখেছেন।” (তাফসীরে আব্দুর রাজ্জাক ৩/২৫২ হাদীছ শরীফ ৩০৩৩; তাফসীরে কুরতুবী ৭/৫৬, উমদাতুল ক্বারী ২২/৪৮৬, আশ শিফা ১/১৯৭)

মহাপবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে-

قَالَ حَضْرَتِ الزُّهْرِيُّ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ بِأَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَاٰي رَبَّهٗ لَيْـلَةَ الْمِعْرَاجِ

অর্থ: “হযরত ইমাম শিহাব যুহরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, নিশ্চয়ই সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মি’রাজ শরীফ উনার রাতে উনার মহান রব তায়ালা মহান আল্লাহ পাক উনাকে দেখেছেন।” (ফতহুল বারী ৮/৪৭৪)

উপরোক্ত মহাপবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে-

قَالَ حَضْرَتْ حَفْصُ بْنُ عَبْدِ اللهِ: سَمِعْتُ إِبْـرَاهِيْمَ بْنَ طَهْمَانَ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ يَـقُوْلُ وَاللهِ الَّذِيْ لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ، لَقَدْ رَاٰى سَيِّدُنَا مُحَمَّدٌ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَبَّهٗ

অর্থ: হযরত হাফস বিন আব্দুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমি হযরত ইব্রাহীম ইবনে তহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে বলতে শুনেছি তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার কসম, যিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই, নিশ্চয়ই সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনাকে দেখেছেন। (সিয়ারু আলামিন নুবালা ১৩/৪২৮, তারীখুল ইসলাম লি ইমাম যাহাবী ১০/৬২)

উপরোক্ত মহাপবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتِ الْإِمَامِ أَحْمَدَ بْنِ حَنْـبَلٍ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ أَنَّهٗ كَانَ يَـقُوْلُ : إِذَا سُئِلَ عَنِ الرُّؤْيَةِ رَاٰهُ رَاٰهُ حَتّٰـى يَـنْـقَطِعَ نَـفَسُهٗ

অর্থ: হযরত ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি সম্পর্কে বর্ণিত আছে, উনাকে যদি কেউ কখনো জিজ্ঞাসা করতো যে, মহান আল্লাহ পাক উনাকে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দেখেছেন কি? তখন তিনি বলতেন তিনি উনাকে দেখেছেন! তিনি উনাকে দেখেছেন! এভাবে বলতে থাকতেন এমনকি বলতে বলতে উনার শ্বাস বন্ধ হয়ে যেতো। (তাফসীরে রুহুল মা’য়ানী ১৪/৫৪)

উপরোক্ত মহাপবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে কিতাবে আরো উল্লেখ করা হয়েছে-

حَضْرَتِ الْإِمَامُ اِبْنُ خُزَيْـمَةَ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ نَضَرَ فِيْ كِتَابِهِ التَّـوْحِيْدِ الْقَوْلَ بِأَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَاٰى رَبَّهٗ لَيْـلَةَ الْمِعْرَاجِ

অর্থ: হযরত ইবনে খুজাইমা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার কিতাব “কিতাবুত তাওহীদ” উনার মধ্যে বর্ণনা করেন, নিশ্চয়ই সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র মিরাজ শরীফ উনার রাতে মহান আল্লাহ পাক উনাকে দেখেছেন। সুবহানাল্লাহ! (কিতাবুত তাওহীদ ২/৪৭৭)

উপরোক্ত মহাপবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে-

وَذَكَرَ اِبْنُ إِسْحَاقَ أَنَّ حَضْرَتْ اِبْنَ عُمَرُ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ أَرْسَلَ إِلٰى حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ يَسْأَلُهٗ : هَلْ رَأٰى سَيِّدُنَا مُـحَمَّدٌ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَبَّهٗ ؟ فَـقَالَ : نَـعَمْ ، وَالْأَشْهُرُ عَنْهُ أَنَّهٗ رَأٰى رَبَّهٗ بِعَيْنِهٖ ، رُوِىَ ذٰلِكَ عَنْهُ مِنْ طُرُقٍ

অর্থ: হযরত ইবনে ইসহাক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন নিশ্চয়ই হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা তিনি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা উনার নিকটে এক ব্যক্তিকে প্রেরণ করে জানতে চাইলেন যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনাকে দেখেছেন কি না? উত্তরে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা তিনি বলেন- হঁ্যা অবশ্যই তিনি মহান আল্লাহ পাক উনাকে দেখেছেন। তবে উনার থেকে বিশুদ্ধ ও মশহুর বর্ণনা হচ্ছে- নিশ্চয়ই সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনাকে সরাসরি মহাপবিত্র নূরুল মুনাওওয়ার বা বাহ্যিক চক্ষু মুবারক দ্বারাই দেখেছেন। আর ইহা বিভিন্ন সনদে বর্ণিত হয়েছে। (ইমতাউল আসমা’ বিমা লিন্নাবিয়্যি মিনাল আহওয়াল ওয়াল আমওয়াল)

উপরোক্ত মহাপবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে (ইমতাউল আসমা’ বিমা লিন্নাবিয়্যি মিনাল আহওয়াল ওয়াল আমওয়াল) কিতাবে আরো উল্লেখ করা হয়েছে-

وَحَكٰى أَبُو الْفَتْحِ الرَّازِيُّ، وَأَبُو اللَّيْثِ السَّمَرْقَـنْدِىُّ الْـحِكَايَةَ عَنْ حَضْرَتْ كَعْبٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ، وَرَوٰى عَبْدُ اللهِ بْنُ الْـحَارِثِ قَالَ : اِجْتَمَعَ حَضْرَتْ اِبْنُ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ وَحَضْرَتْ كَعْبٌ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ، فَـقَالَ حَضْرَتْ اِبْنُ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ، أَمَا نَـحْنُ بَـنُـوْ هَاشِمٍ فَـنَـقُوْلُ : إِنَّ سَيِّدُنَا مُـحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ رَأٰى رَبَّهٗ مَرَّتَـيْنِ، فَكَبَّـرَ حَضْرَتْ كَعْبٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ حَتّٰى جَاوَبَـتْهُ الْـجِبَالُ

অর্থ: হযরত আবুল ফাতাহ রাযী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এবং হযরত আবু লাইস সমরকন্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা হযরত কা’ব রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে একটি ঘটনা বর্ণনা করেন- হযরত আব্দুল্লাহ বিন হারিছ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন- হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং হযরত কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনারা একত্রিত হলেন, অতঃপর হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আমরা বনু হাশিম সম্প্রদায়, আমরা সকলেই বলি যে নিশ্চয়ই সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনাকে সরাসরি বাহ্যিক চক্ষু মুবারক দ্বারাই একাধিকবার অর্থাৎ বহুবার অর্থাৎ সদাসর্বদা দেখেছেন, দেখছেন এবং দেখতেই থাকবেন। এতদশ্রবণে হযরত কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি উচ্চস্বরে তাকবীর ধ্বনী দিলেন, এমনকি আশপাশের পাহাড় সমূহ থেকেও উচ্চস্বরে তাকবীরের আওয়াজ প্রতিধ্বনিত হয়ে আসতে লাগল।

উপরোক্ত মহাপবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে উক্ত কিতাবে আরো উল্লেখ করা হয়েছে-

وَقَالَ أَبُو الْـحَسَنِ عَلِىُّ بْنُ إِسْمَاعِيْلَ الْأَشْعَرِيُّ وَجـَمَاعَةٌ مِّنْ أَصْحَابِهٖ ، أَنَّهٗ رَأَى اللهَ تَـعَالٰى بِبَصَرِهٖ وَعَيْنَىْ رَأْسِهٖ  وَقَالَ : كُلُّ اٰيَةٍ أُوْتِيْـهَا نَبِيٌّ مِّنَ الْأَنْبِيَاءِ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ  فَـقَدْ أُوْتِىَ مِثْـلُهَا نَبِيُّـنَا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَخَصٌّ مِّنْ بَـيْـنَـهُمْ بِتَـفْضِيْلِ الرُّؤْيَةِ

অর্থ: হযরত আবুল হাসান আলী ইবনে ইসমাঈল আশয়ারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি এবং উনার সঙ্গী সাথীদের অধিকাংশরাই বলেন, নিশ্চয়ই সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনাকে সরাসরি বাহ্যিক চক্ষু মুবারক দ্বারাই দেখেছেন। তিনি আরো বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত হযরত নবী রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে অসংখ্য নিদর্শন মুবারক দান করেছেন। আর আমাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নবী, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে উক্ত সমস্ত বৈশিষ্ট্য মুবারক তো দিয়েছেনই সাথে সাথে আখাছ্ছুল খাছ দীদার মুবারক দান করেও উনার বিশেষ শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। (ইমতাউল আসমা’ বিমা লিন্নাবিয়্যি মিনাল আহওয়াল ওয়াল আমওয়াল)

উপরোক্ত দলীল আদিল্লাহসহ আরো অসংখ্য দলীলে ক্বি¡তয়ী দ্বারা অকাট্যভাবেই প্রমাণিত যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অবশ্যই খ¦লিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন উনার দীদার মুবারক লাভ করেছেন তথা মহান আল্লাহ পাক উনাকে সরাসরি বাহ্যিক চক্ষু মুবারক দ্বারাই দেখেছেন।

মহান আল্লাহ পাক তিনি সকলকে সকল বিষয়ে ছহীহ সমঝ দান করুন। আমীন।

-মুফতী মুহম্মদ ফজলুল হক।

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম