ন্যায়-পরায়ন বাদশাহ ও ন্যায়বিচার সম্পর্কিত কিছু কথা

সংখ্যা: ০১ম সংখ্যা | বিভাগ:

al-baiyinaat-shareef

ন্যায়পরায়ন বাদশাহ ও ন্যায়বিচার সম্পর্কিত কিছু কথা

মুহম্মদ আব্দুল মান্নান খাঁন


মহান আল্লাহ পাক উনার আঠার হাজার মখলুকের মধ্যে মানবজাতি সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ। স্মরণ রাখা দরকার, আল্লাহ তা’য়ালা মানবজাতির মধ্য হতে দু’টি সম্প্রদায়কে পছন্দ করেছেন; তাদের মধ্যে একটি সম্প্রদায় হচ্ছে হযরত আম্বিয়া আলাইহিস সালামগণ, যেন উনারা সাধারণ মানুষকে মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদত বন্দেগী করার নিয়ম পদ্ধতি ও ইলমে মা’রিফাত বা আধ্যাত্মিক শিক্ষাদান করেন। অপরটি হচ্ছে। বাদশাহগণ, যেন উনারা মানুষের প্রতি যত্নবান হন, একে অন্যের প্রতি বাড়াবাড়ি না করেন। সাধারণ মানুষের ধন-সম্পদ বন্টন করার ক্ষেত্রে কম-বেশী করার লাগাম মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদের হাতেই ন্যস্ত করেছেন। তিনি সৃষ্ট জীবের জীবিকা নিজ কৌশলে উনাদের (বাদশাহর) সাথে সংশ্লিষ্ট করে দিয়েছেন এবং স্বীয় শক্তির বলে উনাদের যথেষ্ট মর্যাদা দান করেছেন। যেমন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে। “বাদশাহ হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার ছায়াতুল্য।” এমতাবস্থায় যাকে মহান আল্লাহ পাক তিনি বাদশাহ মর্যাদা দান করেন এবং পার্থিব জগতে স্বীয় ছায়া হিসেবে অভিহিত করেন, উনার পক্ষে অপরিহার্য যে, মহান আল্লাহ তিনি সৃষ্ট জীবকে ভাল বাসেন।

মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন ইরশাদ মুবারক করেছেন, “হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নির্দেশ দান করার অধিকারী ব্যক্তির নির্দেশ অনুসরণ কর।” অন্য পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত হয়েছে। “আপনি যাকে ইচ্ছা তাকে রাজত্ব দান করেন, আবার যার নিকট হতে ইচ্ছা করেন তা কেড়ে নেন। যাকে ইচ্ছা সন্মান দান করেন, আবার যাকে ইচ্ছা অপমানিত করেন। আপনার হাতেই সমস্ত মঙ্গল এবং আপনিই সর্বোপরি শক্তিধর।” সুতরাং পৃথিবীর ভাঙ্গাগড়া বাদশাহদের প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল।

ন্যায়পরায়ন বাদশাহ সেই ব্যক্তি, যে সৃষ্টি জীবের মধ্যে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত করে এবং অন্যায়-অবিচারকে ভয় করে। বাদশাহ যদি ন্যায় পরায়ন হন, তবে পৃথিবী আবাদ থাকবে এবং প্রজারা নির্ভয়ে জীবিকা নির্বাহ করবে। মানুষের শুধু কথাগুলিই অবশিষ্ট থাকে এবং যে যেমন কাজ করে সে তেমনই আলোচিত বা সমালোচিত হয়।

অনুরূপ প্রত্যেকের কথিত কথা তার দিকেই সম্বন্ধযুক্ত হয়। যদি সে ভাল বলে তবে তার ফল ভাল, আর যদি মন্দ বলে তবে তার পরিণাম মন্দই হয়। সুতরাং বাদশাহের এ ব্যাপারে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিসম্পন্ন হওয়া একান্তভাবে অপরিহার্য, যেন তাঁরা সুনাম বজায় রেখে ইহলোক ত্যাগ করতে পারেন এবং বদনাম যেন উনাদের সুনামকে নষ্ট করতে না পারে। বলা হয়, সুনামের অপর নাম দ্বিতীয় জীবন, অতপর জ্ঞানীগণের উচিত তারা যেন পূর্ব ন্যায় পরায়ন বাদশাহ্গণের জীবন আলেখ্য সম্পর্কে পড়াশুনা করেন এবং এ নশ্বর জগত সম্পর্কে গবেষণা করেন। কেননা এ জগতে কোন পূণ্যবান ব্যক্তিও অবশিষ্ট থাকবে না এবং কোন পাপাচারীও নিরাপদ থাকবে না। মহান আল্লাহ পাক তিনি ক্বিয়ামতের দিন ঝগড়া-বিবাদকারীদের সত্যিকার বিচার অবশ্যই ন্যায়পরায়নতার ভিত্তিতে করবেন এবং অত্যাচারীর কবল হতে অত্যাচারীতদেরকে মুক্ত করবেন। অতএব দুনিয়ায় নিজের শত্রু সংখ্যা বৃদ্ধি করা জ্ঞানীজনের কাজ নয়। মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে প্রেরণ করেছেন, উনার বরকতে অবিশ্বাসের রাজ্য বিশ্বাসের রাজ্যে রূপান্তরিত হয়েছে। তিনি উনার শরীয়ত বা জীবন ধারনকে দুনিয়াতে পরিপূর্ণভাবে সমৃদ্ধশালী করেছেন। উনার আগমনকালে নওশিরওয়াঁ বাদশাহ ছিলেন। যিনি আদর্শ রাজনীতি, সাম্য, ন্যায়পরায়নতা ইত্যাদির ক্ষেত্রে ইরানে সকল বাদশাহের উপর ছিলেন। হুযূর আকরাম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্মের পর দুই বৎসর পর্যন্ত তিনি জীবিত ছিলেন। নবী করিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যুগের উপর গর্ব করে বলেছেন। “আমি ন্যায়পরায়ন বাদশাহ নওশিরওয়াঁর যুগে জন্ম গ্রহন করেছি।” তিনি উনার ন্যায়পরায়তার ভিত্তিতে উনাকে ন্যায়পরায়ন বাদশাহ উপাধিতে ভূষিত করেছেন। বাদশাহ নওশিরওয়াঁ ন্যায়নীতি ও সুবিচারের ভিত্তিতে পূর্ণগঠনের কাজ সমাধা করতেন এবং অপব্যায় হতে সর্বদা বেঁচে থাকতেন। উনাদের উত্তরকালেও যেন রাজ্য আবাদ থাকে, এ কথার উপর এ সমস্ত বাদশাহের মনোবল বদ্ধমূল ছিল। কেননা বর্ণিত আছে, রাজ্য যতবেশী আবাদ হবে প্রজার অবস্থাও ততবেশী উন্নত হবে। জ্ঞানীদের ভাষায়। প্রত্যেক দেশে ধর্ম নির্ভরশীল বাদশাহের উপর, বাদশাহ নির্ভরশীল সেনাবাহিনীর উপর, সেনাবাহিনী নির্ভরশীল দেশের ধন-সম্পদের উপর, ধন।সম্পদ নির্ভরশীল ন্যায়বিচারের উপর। সুতরাং যেখানে ন্যায় বিচার নাই সেখানে অত্যাচার, স্বেচ্ছাচার ইত্যাদি প্রকট হয়ে ওঠে। ফলে রাজত্ব ক্ষতির সম্মুখীন হয়, অর্থনৈতিক অবস্থা দুরাবস্থার সম্মুখীন হয় এবং জনগণের শান্তি বিঘ্নিত হয়। কালামে পাকে মহান আল্লাহ পাক তিনি ঘোষণা করেন। “মাপে কম বেশী করোনা।” হযরত কাতাদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি উক্ত আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় বলেছেন। “ইহার ভাবই হচ্ছে ন্যায়নিষ্ঠা।” মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন। “হে বণী আদম! তুমি তোমার নিজের স্বার্থে যেমন ন্যায়নিষ্ঠা পছন্দ কর, ঠিক অপরের স্বার্থে অনুরূপ ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত কর।”

ধর্ম এবং রাজত্বের মধ্যকার সম্পর্ক হচ্ছে একই উদর হতে ভুমিষ্ট যমজ ভাইয়ের মত। সুতরাং বাদশাহ উচিত কুপ্রবৃত্তি, বিদ’আত, নিষিদ্ধ এবং সন্দেহযুক্ত কার্যাবলী তথা শরীয়তের পক্ষে ক্ষতিকারক যাবতীয় বিষয় হতে বেঁচে থাকা এবং যে সমস্ত ব্যক্তি ধর্ম ও মাযহাব সম্পর্কে উদাসীন তাদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহন করা। এমতাবস্থায় যদি অভিযুক্ত ব্যক্তি তওবা করে তবে তা ভাল, অন্যথায় তাকে শাস্তিদান করতঃ রাষ্ট্র হতে বহিষ্কার করে দেয়া উচিত যাতে তার গোমরাহী হতে অন্য লোক পরিত্রান পায় এবং রাষ্ট্র পাপ-পঙ্কিল আবহাওয়া হতে মুক্ত হয়। ফলে ইসলাম ধর্ম যথাযোগ্য মর্যাদাপ্রাপ্ত হয়। বাদশাহ চারিত্রিক দৃঢ়তাই হচ্ছে প্রজা সাধারণের প্রতি কল্যানকামী হওয়ার মূল উৎস। উনার উচিৎ প্রজাদের ছোট বড় প্রত্যেক ব্যাপারেই সুতীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখা এবং অসৎ কাজের প্রশ্রয় না দেয়া। উনার কাজ হচ্ছে পূণ্যবানদের সম্মান করা, সৎ কাজের পুরষ্কার দান করা, অসৎ কাজ হতে বিরত রাখা, নিষিদ্ধ কাজে লিপ্ত ব্যক্তিকে শাস্তি প্রদান করা। যে ব্যক্তি পাপাচারের পূনরাবৃত্তি করে তাকে ক্ষমা প্রদর্শন না করা। যার ফলে সৎ কর্মের প্রতি সাধারণ মানুষের আসক্তি জন্মে এবং অসৎ কর্ম হতে পরিত্রান পায়। বাদশাহ যখন সুষ্ঠ রাজনীতিহীন হয়ে পড়েন এবং অনাচারীদের প্রতি দৃষ্টি এড়িয়ে যান, তখন গোটা রাজত্ব নৈরাজ্যে পরিণত হয়। ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠায় সঙ্কোচভাব পরিহার করা উচিৎ এবং মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশের উপর আমল করা উচিৎ। ইরশাদ হচ্ছে “মহান আল্লাহ পাক তিনি তোমাদেরকে সুবিচার ও ইহ্সানের আদেশ দিতেছেন।” উল্লেখিত উক্তির ব্যতিক্রম হলে, বাদশাহ্কে ক্বিয়ামতের কঠিন দিনে জবাবদীহি করতে হবে। হাদীছ শরীফে বর্ণিত আছে। “প্রত্যেক রাখাল তার পশুপালন সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। প্রত্যেক মানুষ তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।”

বাদশাহ নওশিরওয়াঁ সচ্চরিত্রবান হওয়া ছাড়াও পূর্ববর্তী শাসকদের উপদেশাবলী পাঠ করতেন, উনাদের কাহিনী শ্রবন করতেন এবং উনাদের অনুসৃত নীতি অনুযায়ী চলতেন। একদিন উনার উজির ইউনানকে বললেন, পূর্ববর্তী শাসন কর্তাদের জীবন চরিত্র সম্পর্কে আমাকে কিছু বলুন। জবাবে ইউনান বলেন। আমি কি এক কথায় উনাদের গুণাবলী বর্ণনা করব, না দুই কথায়, না তিন কথায় বর্ণনা করব? বাদশাহ নওশিরওয়াঁ বলেন। তিন কথায় বলুন। ইউনান বলেন। আমি উহাদের ব্যস্ততার কোন কাজে কর্মে মিথ্যা কিছু দেখি নাই এবং উনাদের অজ্ঞ ও কর্মবিমুখ হতে দেখি নাই। বাদশাহ বলেন- দুই কথায় বলুন- উজির বলেন- তাঁরা সব সময় ভালোর দিকে এগিয়ে যেতেন এবং মন্দ হতে আত্মরক্ষা করতেন। বাদশাহ বলেন- এক কথায় বলুন- উজির বলেন- প্রজাদের চাইতে নিজের উপর উনাদের শাসন অধিক কার্যকরী ছিল। আমিরুল মো’মেনীন হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব আলাইহিস সালাম তিনি এমন নীতিবান বিচারক ছিলেন যে, নিজের পুত্রের উপরও শরীয়তের বিধান কার্যকরী করেছেন। ফলে পুত্র ইন্তেকাল করেন। শাসনকর্তাদের ন্যায়নীতি ও সুবিচারের ফলে গৌরবময় সৎ আলোচনা সম্পর্কে অবহিত হতে হলে হযরত উমর ইবনে আব্দুল আজীজ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার জীবন চরিত পাঠ করা দরকার। শুধু তাই নয়, বর্তমান কালের শাসকদের উল্লেখিত পূর্বকালের বাদশাহ্গণের পদাঙ্ক অনুসরণ করে চলা কর্তব্য।

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন। “বাদশাহ একদিন সুবিচার সত্তর বৎসর ইবাদতের চাইতে উত্তম।” তিনি আরও বলেন- “অত্যাচারিতের প্রতি সুবিচার করা বিবেকের যাকাত।” বাদশাহ প্রজাদেরকে সুবিচার প্রদান করবে। কেননা প্রজারা বাদশাহ কাছ হতে নিশ্চয়তা ও নিরাপত্তা লাভ করে শয়ন করতে পারলে বাদশাহও কবরে নির্ভয়ে নিশ্চিন্তে শয়ন করতে পারবেন। কারণ সেদিন সুবিচারের বিনিময়ে সুবিচার আর অবিচারের বিনময় অবিচারই লাভ হবে। একজন বাদশাহ রাজত্বের অধিকারী তখনই হতে পারে, যখন উনার মধ্যে জ্ঞান, সুবিচার, দানশীলতা, দয়াশীলতা, কোমলতা এবং সমীচীন অন্যবিদ গুণাবলী থাকে।

কেননা বাদশাহ জন্য উদারতা, আত্মার পবিত্রতা, সত্যিকার সম্পদ, বুদ্ধি, বিবেক, জ্ঞান ও মিষ্টতাই মূলতঃ উনার রাজত্বের পরিচয় জ্ঞাপন করে। জনৈক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, কোন ধরণের বাদশাহ অধিক পবিত্রতার অধিকারী? তিনি জবাবে বলেন। যাকে নিষ্পাপ নিরাপরাধ ব্যক্তিরা ভয় পায়না, অপরাধীরা ভয় পায়। বলা হয়ে থাকে বাদশাহদের জন্য চারটি জিনিস অবশ্য কর্তব্যের শামিল। নির্লজ্জদের রাজত্ব হতে বিতাড়ন জ্ঞানীদের দ্বারা পরিপূর্ণকরন, জ্ঞান।বিজ্ঞানে পারদর্শীদের মর্যাদা বিধান এবং নিন্দনীয় কাজ হতে দেশকে পাক-সাফ করণ।

অযোগ্য ব্যক্তিদের উপর ওজারত এবং অন্যবিধ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ন্যস্ত করা বাদশাহ জন্য কিছুতেই সমিচীন নয়। অযোগ্য লোকদের উপর গুরুদায়িত্ব অর্পন করলে তারা দেশের সর্বনাশ করবে এবং সকল দিক হতে দেশ ক্ষতির সম্মূখীন হবে। কবি বলেন। ঘরের ধ্বংস যখন ঘনিয়ে আসে তখন দেয়ালের ভিতরসমূহ নড়বড় হয়ে পড়ে। বাদশাহ যখন অযোগ্য ব্যক্তিদের ক্ষমতাসীন করেন তখন জাতির বিপর্যয় ঘনিয়ে আসে। সুতরাং বাদশাহ যদি ব্যক্তিবান ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞার অধিকারী না হন তাহলে মানুষ আনুগত্য ও সংশোধনের পথে অটল থাকবে না। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন- “সুবিচার হ’ল বর্ম, ইহাতে বাদশাহ কল্যান নিহিত, সাধারণ ও বিশেষ লোকদের শক্তি নিহিত, প্রজাদের মঙ্গল ও সুখ-শান্তি নিহিত।” বাদশাহ উচিত গভীর দূরদৃষ্টির সাথে নিজের রাজনৈতিক কার্যকলাপের পর্যালোচনা করা এবং গঠনতন্ত্রের মধ্যে তা প্রচলন করতে সচেষ্ট হওয়া। কেননা বাদশাহ অনেক রাজনৈতিক কার্যকলাপ, সুবিচার এবং সদুদ্দেশ্যপূর্ণ তৎপরতাকে উৎকোচের দ্বারা গোপন করে ফেলা হয়। কাজেই এ সব বিষয়ে কঠোরতা ও দুরদর্শিতাপূর্ণ মনোভাব দ্বারা বাদশাহর তদারক করা উচিত। তিন ব্যক্তি সম্পর্কে বাদশাহ নির্বিকার থাকা উচিত নয়। তাদের ক্ষমা করাও উচিত নয়। তিন ব্যক্তি হল। যারা রাজ্যে বিশৃঙ্খলা ও গোলযোগের সৃষ্টি করতে চায়, বাদশাহ শাসন বিনষ্ট করে এবং বাদশাহ গোপনীয়তা ফাঁস করে।

হযরত সুফিয়ান সাওরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেছেন। “বিজ্ঞজনের সাথে ঘনিষ্ট যোগাযোগ রক্ষাকারী বাদশাহ শ্রেষ্ঠ গুণের অধিকারী। জ্ঞানের দ্বারা মর্যাদার স্থায়ীত্ব লাভ হয়। বিবেক বুদ্ধির দ্বারা প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পায়। যার মধ্যে জ্ঞান ও বিবেকের একত্র সমন্বয় ঘটেছে, তার মধ্যে বারটি গুণের সমাবেশ দেখা যায়। পবিত্রতা, সৌজন্য, তাকওয়া, আমানতদারী, স্বাস্থ্য, লজ্জাশীলতা, করুনা, সচ্চরিত্রতা, বিশ্বস্থতা, সহিষ্ণুতা, গাম্ভীর্য ও সদ্ব্যবহার। এই গুণাবলী উৎকৃষ্ট রাজকীয় গুণাবলীর অন্তর্ভূক্ত।” নিশ্চিত জেনে রাখা দরকার যে, যুগের বিবর্তন অবধারিত, ক্ষমতার কোন স্থিতিশীলতা নেই। মহান আল্লাহ পাক উনার বিধান গায়েব থেকে আসে এবং তার মোকাবিলা পৃথিবীর সৈন্য-সামন্ত দ্বারা সম্ভব নয়, দুনিয়াদারীর প্রচুর মালামাল, ধন-সম্পদ দিয়েও তা প্রতিরোধ করা যায় না। ইয়াকুব লায়েস ইন্তেকালের পূর্বে কয়েক লাইন কবিতা রচনা করে সেগুলি তার কবরে লিখে দিতে অসিয়ত করেন। সে অনুযায়ী উহা তার কবরগাত্রে খোদাই করে দেয়া হয়। কবিতার বাক্য নিম্নরূপ। “পুরানো কবরবাসীদের প্রতি সালাম বর্ষিত হোক, ভয়াবহ মৃত্যু হতে আমাকে হাজার হাজার সৈন্যবিশিষ্ট বাহিনীও রক্ষা করতে পারবে না। হে কবর জিয়ারতকারী! উপদেশ ও শিক্ষা গ্রহন কর, দুনিয়ার প্রেমে মত্ত হয়োনা। খোরাসান ও ইরাকে আমার রাজত্ব ছিল অথচ মনে হয় যেন ইয়াকুব পৃথিবীতে কখনো আগমনই করেন নাই। দুনিয়াকে সালাম।” (সাহায্যকারী কিতাবআত্তিবরুল মসবুক)

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম