পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে- উলামায়ে ‘সূ’দের হাক্বীক্বত সম্পর্কে (১৫)

সংখ্যা: ২৫১তম সংখ্যা | বিভাগ:

পূর্ব প্রকাশিতের পর

ইবলীসতো ওয়াদা করেছে, তাকে যখন মহান আল্লাহ পাক তিনি বের করে দিলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন-

فَاخْرُجْ مِنْهَا فَإِنَّكَ رَجِيْمٌ  وَاِنَّ عَلَيْكَ لَعْنَتِىْ اِلَى يَوْمِ الدِّينِ

ইবলীস তুমি এখান থেকে বের হয়ে যাও। নিশ্চয়ই তুমি বিতাড়িত, লা’নতপ্রাপ্ত।

وَإِنَّ عَلَيْكَ لَعْنَتِي إِلى يَوْمِ الدِّينِ

নিশ্চয়ই তোমার প্রতি অনন্তকালব্যাপী লা’নত বর্ষিত হবে। তখন ইবলীস বলেছিলো-

قَالَ فَبِعِزَّتِكَ لَأُغْوِيَنَّهُمْ أَجْمَعِينَ

ইবলীস বলেছিলো, হে মহান আল্লাহ পাক! আপনার ক্বসম! আপনার ইজ্জত মুবারক উনার ক্বসম! হে মহান আল্লাহ পাক! অবশ্যই ইবলীস সমস্ত মানুষদেরকে গোমরাহ করে ফেলবে। নাউযুবিল্লাহ!

إِلَّا عِبَادَكَ مِنْهُمُ الْمُخْلَصِينَ

হে মহান আল্লাহ পাক! তবে যারা আপনার খাছ বান্দা তাদেরকে ব্যতীত সবাইকে ইবলীস গোমরাহ করে ফেলবে। নাউযুবিল্লাহ!

এবং সে আরো বললো, কি বললো?

قَالَ رَبِّ بِمَا أَغْوَيْتَنِي لَأُزَيِّنَنَّ لَهُمْ فِى الْأَرْضِ وَلَأُغْوِيَنَّهُمْ أَجْمَعِينَ إِلَّا عِبَادَكَ مِنْهُمُ الْمُخْلَصِينَ

ইবলীস বললো, হে বারী ইলাহী! যেহেতু আদম সন্তানের জন্য, হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে তা’যীম তাকরীম না করার কারণে ইবলীস লাঞ্ছিত হয়ে গেলো জাহান্নামী হয়ে গেলো। ইবলীস বললো, ইবলীস ক্বসম করলো, হে মহান আল্লাহ পাক!

بِمَا أَغْوَيْتَنِى

যেহেতু হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার জন্য সে গোমরাহ হয়ে গেলো তার দৃষ্টিতে। এখন সে বলতেছে কি

لَأُزَيِّنَنَّ لَهُمْ فِى الْأَرْضِ

মহান আল্লাহ পাক! ইবলীস অবশ্যই আদম সন্তানের সামনে, দুনিয়াটাকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করে তুলে ধরবে। যে দুনিয়া এতো সুন্দর। তোমার এটা প্রয়োজন রয়েছে, ওটা প্রয়োজন রয়েছে। ধন-দৌলত, টাকা-পয়সা, গাড়ি বাড়ি প্রয়োজন রয়েছে। গইরুল্লাহ প্রয়োজন রয়েছে। বর্তমান যামানায় থাকতে হলে ছবি তুলতে হয়, বেপর্দা হতে হয়। ইসলামের নামে তন্ত্র-মন্ত্র করতে হবে। হরতাল, লংমার্চ করতে হবে। নাঊযুবিল্লাহ! এগুলোকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করে তুলে ধরে ইবলীস বলতেছে মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! সে আদম সন্তানের সামনে দুনিয়াটাকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করে পেশ করবে।

وَلَأُغْوِيَنَّهُمْ أَجْمَعِين َ

এবং কি হবে? অধিকাংশ আদম সন্তানকে সে গোমরাহ করে ফেলবে। নাঊযুবিল্লাহ!

إِلَّا عِبَادَكَ مِنْهُمُ الْمُخْلَصِينَ

তবে ঐ সমস্ত বান্দা ব্যতীত যারা ইখলাছকারী, মহান আল্লাহ পাক উনার খাছ বান্দা উনাদেরকে সে বিভ্রান্ত করতে পারবে না। এছাড়া অন্যান্যদেরকে সে বিভ্রান্ত করে ফেলবে।

এখানে অনেক ফিকির রয়েছে। ইবলীস যে বললো, যারা ইখলাছকারী তাদেরকে ব্যতীত। ইবলীস কিন্তু স্বীকার করলো, হে বারে ইলাহী! মহান আল্লাহ পাক উনার সে ক্বসম করলো, আপনার ইজ্জতের, আপনার সম্মানের ক্বসম, হে মহান আল্লাহ পাক! সমস্ত আদম সন্তানদেরকে ইবলীস গোমরাহ করে ফেলবে, তবে তদেরকে ব্যতীত যারা একমাত্র মুখলিছ, ইখলাছকারী বান্দা উনাদেরকে সে বিভ্রান্ত করতে পারবে না। সুবহানাল্লাহ!

এখন ইখলাছটা কোথায় পাওয়া যাবে, এই ইখলাছটাই যেটা মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

اخلص دينك يكفيك العمل القليل

দ্বীনের মধ্যে খুলূছিয়াত পয়দা করো, অল্প আমলেই যথেষ্ট।

ইখলাছ পাওয়া যাবে যারা মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী উনাদের দরবারে গেলে। বাইয়াত গ্রহণ করে, সবক নিয়ে ক্বলবী যিকির-ফিকির করলে ইখলাছ পয়দা হয়। এটিই ইবলীস স্বীকার করলো, যারা ইখলাছকারী উনাদেরকে সে গোমরাহ করতে পারবে না। এছাড়া অর্থাৎ যারা মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী উনাদের হাতে বাইয়াত গ্রহণ না করবে, ছোহবত ইখতিয়ার না করবে, ক্বলবী যিকির-ফিকির না করবে, তাদের সবাইকে ইবলীস গোমরাহ করে ফেলবে। সেটাই মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-

وَإِن تُطِعْ أَكْثَرَ مَن فِي الْأَرْضِ يُضِلُّوكَ عَن سَبِيلِ اللّـهِ

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা যদি দুনিয়ার অধিকাংশ লোককে অনুসরণ করো, তারা তোমাদেরকে গোমরাহ করে ফেলবে। কারণ যারা মুখলিছ, ইখলাছকারী উনারা ব্যতীত সকলকেই ইবলীস ওয়াস্ওয়াসা দিবে  বিভ্রান্ত করবে। কাউকে ষোল আনা বিভ্রান্ত করবে, কাউকে বারো আনা, কাউকে আটানা, কাউকে চার আনা। কিন্তু যারা মুখলিছ, ইখলাছকারী উনাদেরকে ইবলীস কখনই গোমরাহ করতে পারবে না। সে নিজেও স্বীকার করেছে-

إِلَّا عِبَادَكَ مِنْهُمُ الْمُخْلَصِينَ

মহান আল্লাহ পাক! আপনার যারা ইখলাছকারী বান্দা, মুখলিছ বান্দা উনাদেরকে পারা যাবে না, এছাড়া যত রয়েছে এদেরকে ইবলীস ক্বসম করেছে, ইবলীস মহান আল্লাহ পাক উনার ইজ্জতের ক্বসম করেছে, সে গোমরাহ করে ফেলবেই। এবং সে তাকীদ করেছে।

لَأُغْوِيَنَّهُمْ أَجْمَعِين

সে ক্বসম করেছে, অবশ্য অবশ্যই সে সবাইকে গোমরাহ করবে। ঠিক এই বালয়াম বিন বাউরা একে ইবলীস গোমরাহ করেছে। ঠিক উলামায়ে সূদেরকে ইবলীস এভাবেই পর্যায়ক্রমে গোমরাহ করে যাচ্ছে। এটা খুব ফিকির করতে হবে। এজন্য বলা হয়েছে

انما يخشى الله من عباده العلماء‎

মহান আল্লাহ পাক তিনি  যে ইরশাদ মুবারক করলেন, আলিম উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার বান্দাদের মধ্যে যারা আলিম উনারা মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করেন। অর্থাৎ যার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক উনার ভীতি রয়েছে তিনি আলিম। এখন পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, ইজমা, ক্বিয়াস তিনি কম জানেন বা বেশি জানেন এটা পরের কথা। কিন্তু মহান আল্লাহ পাক উনার ভীতি যার অন্তরে রয়েছে, যিনি ইখলাছ অর্জন করেছেন, তিনি হচ্ছেন আলিম। মহান আল্লাহ পাক উনার দরবারে, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দরবারে ঐ ব্যক্তি আলিম হিসেবে গন্য হবেন। সুবহানাল্লাহ! যদিও উনার পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, ইজমা, ক্বিয়াস কম জানা থাকে, তারপরও সে ব্যক্তি আলিম হিসেবে গণ্য হবেন। কারণ, উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক উনার ভীতি রয়েছে। মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি ভীতি থাকাটা, আলিম হওয়ার শর্ত করা হয়েছে। আর ইখলাছ হচ্ছে নাজাতের মাধ্যম। ইবলীস স্বীকার করেছে, মুখলিছ বান্দাদেরকে সে বিভ্রান্ত করতে পারবে না। কেননা মুখলিছ বান্দা যারা, ইখলাছকারী যারা, উনারা মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করেন। সেটাই পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

الناس كلهم هلكى إلا الـمؤمنون و الـمؤمنون كلهم هلكى إلا العالـمون والعالـمون كلهم هلكى إلا العاملون والعاملون كلهم هلكى إلا المخلصون وَالْمُخْلِصُونَ عَلَى خَطَرٍ عَظِيمٍ

মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

الناس كلهم هلكى إلا الـمؤمنون

সমস্ত মানুষ ধ্বংস হবে মু’মিনরা ব্যতীত

والـمؤمنون كلهم هلكى إلا العالمون

এবং সমস্ত মু’মিনরা ধ্বংস আলিমরা ব্যতীত

والعالمون كلهم هلكى إلا العاملون

আলিমরা ধ্বংস হয়ে যাবে, ইলম অর্জন যারা করেছে তারাও ধ্বংস হয়ে যাবে আমলকারী ব্যতীত

والعاملون كلهم هلكى إلا الـمخلصون

আমলকারীরাও ধ্বংস হবে ইখলাছকারীরা ছাড়া।

وَالْمُخْلِصُونَ عَلَى خَطَرٍ عَظِيمٍ

মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া  সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যারা মুখলিছ উনারা সবসময়ই চিন্তার মধ্যে থাকেন যাতে ঈমানের সহিত উনারা যেতে পারেন অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার ভীতির বিষয়টা উনাদের অন্তরে বদ্ধমূল। আল্লাহভীতির মধ্যে সবসময় উনারা ইস্তিক্বামাত থাকেন মুখলিছ হওয়ার কারণে। এই মুখলিছ শ্রেণীর বান্দাদেরকে ইবলীস বিভ্রান্ত করতে পারবে না। (অসমাপ্ত)

খলীফাতুল্লাহ্, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্্ইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, হুজ্জাতুল ইসলাম, সাইয়্যিদুল আওলিয়া, সুলত্বানুল ওয়ায়িজীন, গউছে আ’যম, ছাহিবু সুলত্বানিন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-উনার ওয়াজ শরীফ কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ-এর আলোকে ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা ফরয-৪৭

খলীফাতুল্লাহ্, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্্ইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, হুজ্জাতুল ইসলাম, সাইয়্যিদুল আওলিয়া, সুলত্বানুল ওয়ায়িজীন, গউছে আ’যম, ছাহিবু সুলত্বানিন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-উনার ওয়াজ শরীফ কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ-এর আলোকে ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা ফরয-৪৮

খলীফাতুল্লাহ্, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্্ইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, হুজ্জাতুল ইসলাম, সাইয়্যিদুল আওলিয়া, সুলত্বানুল ওয়ায়িজীন, গউছে আ’যম, ছাহিবু সুলত্বানিন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-উনার ওয়াজ শরীফ কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ-এর আলোকে সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনার ফাযায়িল-ফযীলত, বুযুর্গী-সম্মান, খুছূছিয়ত-বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে

খলীফাতুল্লাহ্, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্্ইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, হুজ্জাতুল ইসলাম, সাইয়্যিদুল আওলিয়া, সুলত্বানুল ওয়ায়িজীন, গউছে আ’যম, ছাহিবু সুলত্বানিন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী উনার ওয়াজ শরীফ কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ-এর আলোকে সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনার ফাযায়িল-ফযীলত, বুযুর্গী-সম্মান, খুছূছিয়ত-বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে (১০)

খলীফাতুল্লাহ্, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্্ইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, হুজ্জাতুল ইসলাম, সাইয়্যিদুল আওলিয়া, সুলত্বানুল ওয়ায়িজীন, গউছে আ’যম, ছাহিবু সুলত্বানিন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, আওলাদে রসূল,  সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী উনার ওয়াজ শরীফ