পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমাউল উম্মাহ শরীফ ও পবিত্র ছহীহ ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত, দিন, সময় ও মুহূর্তের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া- (৩৩তম পর্ব)

সংখ্যা: ২৭১তম সংখ্যা | বিভাগ:

৩৪তম ফতওয়া হিসেবে

“পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার দরবার শরীফ-এ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।

পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার কারণ

সুন্নতের পথিকৃত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, দ্বীন ইসলাম উনার নির্ভীক সৈনিক, সারা জাহান থেকে কুফরী, শিরক ও বিদ্য়াতের মূলোৎপাটনকারী, বাতিলের আতঙ্ক এবং আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদায় বিশ্বাসী একমাত্র দলীলভিত্তিক তাজদীদী মুখপত্র- “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” পত্রিকায় এ যাবৎ যত লেখা বা ফতওয়াই প্রকাশ বা পত্রস্থ হয়েছে এবং ইনশাআল্লাহ হবে তার প্রতিটিরই উদ্দেশ্য বা মাকছূদ এক ও অভিন্ন। অর্থাৎ “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” উনার মধ্যে এমনসব লেখাই পত্রস্থ হয়, যা মানুষের আক্বীদা ও আমলসমূহ পরিশুদ্ধ ও হিফাযতকরণে বিশেষ সহায়ক।

বর্তমানে ইহুদীদের এজেন্ট হিসেবে মুসলমানদের ঈমান আমলের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে যারা, তারা হলো “উলামায়ে সূ”। ইহুদীদের এজেন্ট উলামায়ে ‘সূ’রা হারাম টিভি চ্যানেলে, পত্র-পত্রিকা, কিতাবাদি ও বক্তব্য বা বিবৃতির মাধ্যমে মুসলমান উনাদের বিশেষ বিশেষ ফযীলতযুক্ত আমলের রাত ও দিনসমূহ পালন করাকে বিদয়াত, নাজায়িয ও শিরক বলে ফতওয়া দিয়ে মুসলমান উনাদেরকে অশেষ খায়ের, বরকত, নিয়ামত, নাজাত অর্থাৎ রেযামন্দি বা সন্তুষ্টি মুবারক থেকে মাহরূম করছে। যেমন তারা বলে থাকে যে, পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা বিদয়াত, শিরক। নাউযুবিল্লাহ! পবিত্র শবে বরাত পালন করা বিদয়াত, নাজায়িয। নাউযুবিল্লাহ! পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ পালন করা বিদয়াত। নাউযুবিল্লাহ! অনুরূপ আরো অনেক বিষয়কেই তারা বিনা দলীলে মনগড়াভাবে নাজায়িয ও বিদয়াত বলে থাকে। নাউযুবিল্লাহ!

অপরদিকে বেদ্বীনী-বদদ্বীনী অর্থাৎ কাফির মুশরিক, ইহুদী, নাছারাদের যত পর্ব বা দিবস রয়েছে সেগুলোকে শুধু জায়িযই নয় বরং নিয়ামত বলে আখ্যা দিয়ে থাকে। নাউযুবিল্লাহ! যেমন বাইতুল মুকাররমের সাবেক খতীব ওবায়দুল হক্ব প্রকৃতপক্ষে উবাই বলেছিল, “পহেলা বৈশাখ আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত।” নাঊযুবিল্লাহ!

অথচ তাদের উপরোক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, চরম বিভ্রান্তিকর ও কুফরীমূলক। তাদের এসব বক্তব্যের কারণে তারা নিজেরা যেরূপ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তদ্রুপ তাদের উক্ত কুফরীমূলক বক্তব্য ও বদ্ আমলের কারণে সাধারণ মুসলমানগণ ই’তিক্বাদী বা আক্বীদাগত ও আ’মালী বা আমলগত উভয় দিক থেকেই বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

কারণ, তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে যারা এ আক্বীদা পোষণ করবে যে, “পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা বিদয়াত শিরক এবং পহেলা বৈশাখ মহান আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত।” নাউযুল্লিাহ! তারা ঈমানহারা হয়ে কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী হবে। কারণ সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে হালাল বা জায়িয বিষয়কে হারাম বা নাজায়িয বলা এবং হারাম বা নাজায়িযকে হালাল বা জায়িয বলা কুফরী। কেননা কিতাবে স্পষ্টই উল্লেখ আছে যে-

اِسْتِحْلَالُ الْـمَعْصِيَةِ كُفْرٌ.

অর্থাৎ “গুনাহের কাজ বা হারামকে হালাল মনে করা কুফরী।” (শরহে আক্বাইদে নাসাফী শরীফ)

অতএব, বলার আর অপেক্ষাই রাখেনা যে, উলামায়ে “সূ”দের উক্ত বক্তব্য সাধারণ মুসলমান উনাদের আক্বীদা বা ঈমানের জন্য বিশেষভাবে হুমকিস্বরূপ।

অনুরূপ উলামায়ে “সূ”দের এ কুফরীমূলক বক্তব্য মুসলমানদের আমলের ক্ষেত্রেও বিশেষ ক্ষতির কারণ। কেননা যারা তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে “পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা থেকে বিরত থাকবে এবং হারাম পহেলা বৈশাখ পালন করবে” তারা অশেষ খায়ের, বরকত ও নিয়ামত থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের কর্তৃক নিষিদ্ধকৃত কাজে তথা হারাম কাজে মশগুল হওয়ার কারণে কঠিন গুনাহগার অর্থাৎ জাহান্নামী হবে। নাউযুবিল্লাহ!

কাজেই, যারা এ ধরনের কুফরী আক্বীদায় বিশ্বাসী ও কুফরী বক্তব্য প্রদানকারী তারা ও হক্ব সমঝদার মুসলমানগণ তারা তাদের ঈমান ও আমলকে যেন হিফাযত করতে পারে অর্থাৎ সকল বিষয়ে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদা অনুযায়ী আক্বীদা পোষণ করতে পারে এবং পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা ও ক্বিয়াস মোতাবেক আমল করে মহান আল্লাহ পাক উনার রিযামন্দি হাছিল করতে পারে সে জন্যেই “পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়াটি”  প্রকাশ করা হলো।

পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমাউল উম্মাহ শরীফ ও পবিত্র ছহীহ ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত, দিন ও সময়ের গুরুত্ব, ফযীলত ও আহকাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফাতাওয়া-

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম (রবীউল আউওয়াল শরীফ) মাস উনার ফাযায়িল-ফযীলত ও গুরুত্ব

হিজরী বছর উনার মাসের সংখ্যা ১২টি। তন্মধ্যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম (রবীউল আউওয়াল শরীফ) মাস হচ্ছেন সমস্ত মাস উনাদের সাইয়্যিদ এবং মহান। সুবহানাল্লাহ! এজন্য এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাস উনাকে বলা হয়, সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম, সাইয়্যিদুল আসইয়াদ, সাইয়্যিদুশ শুহূর, শাহরুল আ’যম মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবী‘উল আউওয়াল শরীফ। সুবহানাল্লাহ! কেননা, এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাস হচ্ছেন স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সংশ্লিষ্ট এবং সম্পৃক্ত। তিনি এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাসে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন, এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাসে সর্বপ্রথম সম্মানিত ওহী মুবারক নাযিল হয়েছেন, এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাসে তিনি সম্মানিত হিজরত মুবারক করেছেন এবং এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাসেই তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাস উনার বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক বুঝার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, তূর পাহাড়ে মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক উনার সত্তর হাজার ভাগের এক ভাগ নূর মুবারক বর্ষিত হওয়ার কারণে জলীলুল ক্বদর নবী এবং রসূল হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে সেখানে যেতে হয়েছিলো, উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলে। কিন্তু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফখর মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র না’লাইন শরীফ) উনাদের স্পর্শকৃত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শরাফত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ধূলি-বালি মুবারক) পাওয়ার জন্য বেকারর ছিলেন স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত মূল আরশে আযীম মুবারক। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ উনাদের স্পর্শকৃত সম্মানিত ও পবিত্র ধূলি-বালি মুবারক উনাদের পবিত্রতা, মর্যাদা মূল আরশে আযীম মুবারক থেকেও লক্ষ কোটি গুণ বেশি। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফখর মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র না’লাইন শরীফ) উনাদের স্পর্শকৃত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শরাফত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ধূলি-বালি মুবারক) পেয়ে সম্মানিত মূল আরশে আযীম মুবারক আরো পবিত্রতা হাছিল করেছেন, মর্যাদাবন হয়েছেন এবং অন্য সকলের উপর ফখর করেছেন। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফখর মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র না’লাইন শরীফ) উনাদের স্পর্শকৃত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শরাফত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ধূলি-বালি মুবারক) উনাদের মর্যাদা-মর্তবা, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক যদি এতো বেমেছাল হয়ে থাকে, তাহলে সাইয়্যিদু সায়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম, সাইয়্যিদুল আসইয়াদ, সাইয়্যিদুশ শুহূর, শাহরুল আ’যম মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবী‘উল আউওয়াল শরীফ মাস উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! যা কস্মিনকালেও ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। সুবহানাল্লাহ!

পূর্ব প্রকাশিতের পর

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ) মাস উনার কতিপয় বরকতময় ঐতিহাসিক বিশেষ সম্মানিত রাত ও দিন মুবারক- (২৭ ও ২৮) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৭ই সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ)

সাইয়্যিদুনা হযরত শাফিউল উমাম আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস মুবারক। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদুনা হযরত শাফিউল উমাম আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান আলাইহিস সালাম তিনি ১৪৩৪ হিজরী শরীফ উনার ১৭ই সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ ইয়াওমুল আরবিয়া’ শরীফ সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে ঢাকাস্থ পূর্ব গোড়ানের নিজ বাসভবনে সম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ছিলেন আখাছ্ছুল খাছ আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ عَـلِـىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَرْبَعَةٌ اَنَا لَـهُمْ شَفِيْعٌ يَّوْمَ الْقِيَامَةِ الْـمُكْرِمُ لـِذُرِّيَّـتِـىْ وَالْقَاضِىْ لَـهُمْ حَوَائِجَهُمْ وَالسَّاعِىْ لَـهُمْ فِـىْ اُمُوْرِهِمْ عِنْدَ اضْطِرَارِهِمْ اِلَيْهِ وَالْمُحِبُّ لَـهُمْ بِقَلْبِهٖ وَلِسَانِهٖ.

অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি ক্বিয়ামতের দিন চার শ্রেণীর লোকদের সুপারিশ করবোÑ এক. যাঁরা আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে, হযরত আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে সম্মান মুবারক করবেন।

দুই. যাঁরা আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে, হযরত আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে মালী তথা আর্থিকভাবে সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিবেন।

তিন. যাঁরা আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে, হযরত আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে জান দিয়ে তথা শারীরিকভাবে সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিবেন। এবং চার. যাঁরা আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে, হযরত আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে অন্তরে সম্মানিত মুহব্বত মুবারক করবেন এবং জবানে উনাদের সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক বর্ণনা করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (জামিউল আহাদীছ ৪/২২৯, জামউল জাওয়ামি’, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ৭/১১, দায়লামী শরীফ)

তাই সকলের জন্য ফরয হচ্ছে সাইয়্যিদুনা হযরত শাফিউল উমাম আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান আলাইহিস সালাম উনাকে হাক্বীক্বীভাবে মুহব্বত মুবারক করা, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করা, তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৭শে সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ)

যা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকিন আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস মুবারক। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৩ জন হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেয়ার মুবারক ধারাবাহিকক্রম অনুযায়ী মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন ‘আল খ¦মিসাহ তথা পঞ্চম’। এজন্য উনাকে ‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল খ¦মিসাহ্ আলাইহাস সালাম’ বলা হয়। তিনি সকলের মাঝে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম’ হিসেবে সম্মানিত পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি আইয়্যামে জাহিলিয়াতের যুগেই সকলের মাঝে ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! তবে উনার মূল মহাম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইস্ম মুবারক হচ্ছেন ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাইনাব আলাইহাস সালাম’। সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত খুযাইমাহ্ ইবনে হারিছ আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! তিনি মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম উনার দিক থেকে ১৭তম পুরুষ হয়ে ১৮তম পুরুষে যেয়ে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মিলিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ছিলেন বনূ হিলাল বংশীয়। সুবহানাল্লাহ! আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান হচ্ছেন- ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আউফ আলাইহাস সালাম তিনি।’ সুবহানাল্লাহ!

আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন যে, “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের ১৪ বছর পূর্বে ২০শে শাওওয়াল শরীফ ইয়াওমুছ ছুলাছা’ শরীফ বনূ হিলাল গোত্রে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন।” সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিতা বৈপিত্রেয় বোন। অর্থাৎ মায়ের দিক থেকে বোন। সুবহানাল্লাহ!

৩য় হিজরী শরীফ উনার ২৬ শে যিলহজ্জ শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকিন আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৩০ বছর ২ মাস ৬ দিন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ৩ মাস ১ দিন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ!

কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি মহানুভবতা ও উদারতাকে অত্যন্ত পছন্দ করতেন এবং গরীব-মিসকীন, ফক্বির-ফুক্বারা, নিঃস্ব-অসহায়, সর্বহারা-দরীদ্রদের প্রতি সহানুভূতি, দয়া-করুণা ও ইহসান করার মাধ্যমে কিভাবে তাদেরকে এতমিনান করা যায় তা নিয়ে তিনি সবসময় ফিকির মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ! এ কারণে উনাকে ‘হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম’ বলে সম্বোধন মুবারক করা হয়। সুবহানাল্লাহ! জাহিলী যুগ থেকেই উনাকে এই সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক-এ সম্বোধন মুবারক করা হতো। সুবহানাল্লাহ! কেননা তিনি গরীব-মিসকীন, ফক্বীর-ফুক্বারা, নিঃস-অসহায়, সর্বহারা-দরিদ্রদেরকে অত্যধিক দান-খয়রাত, তাদের প্রতি সীমাহীন উদারতা, দানশীলতা, বদান্যতা, দয়া-ইহসান, করুণা এবং ¯েœহ-মমতার জন্য সকালের মাঝে পরিচিত ও প্রসিদ্ধ ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!  সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করার পর গরীব-মিসকীন, ফক্বীর-ফুক্বারা, নিঃস-অসহায়, সর্বহারা-দরিদ্রদের প্রতি উনার দয়া-অনুগ্রহ ও দান মুবারক আরো বৃদ্ধি পায়। সুবহানাল্লাহ! যখনই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন আল খ¦মিসাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার নিকট কোনো দীনার-দিরহাম আসতো, তখনই তিনি তা ফক্বীর-ফুক্বারা, গরীব-মিসকীন, নিঃস্ব-অসহায়, সর্বহারা-দরীদ্রদেরকে দান করে শেষ করে দিতেন, তাদের খাবার-দাবার ও পোষাক-পরিচ্ছদের জন্য খরচ করে শেষ করে দিতেন। সুবহানাল্লাহ!

আরো বর্ণিত রয়েছে, ‘নিশ্চয়ই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি উনার সর্বশক্তি দিয়ে গরীব-মিসকীন, ফক্বীর-ফুক্বারা, নিঃস্ব-অসহায়, সর্বহারা-দরিদ্র এবং বিধবা, অভাবী ও দুর্বলদের পৃষ্ঠপোষকতা ও তত্ত্বাবধান মুবারক করতেন এবং তিনি তাদের অবস্থা পরিদর্শন করতেন, লালন-পালন করতেন এবং তাদের সমস্ত প্রকার চাহিদা ও প্রয়োজন পূরণ করতেন।’ সুবহানাল্লাহ!

আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহহার, মুত্বহহির, আছ ছমাদ মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি ৪র্থ হিজরী শরীফ উনার ২৭শে সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ ইয়াওমুস সাব্ত শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে ৩০ বছর ৫ মাস ৭ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন।” সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার পর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনিই সর্বপ্রথম মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!

এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-

فَمَاتَتْ بِالْمَدِيْنَةِ اَوَّلُ نِسَائِهٖ مَوْتًا وَلَـمْ يَصِبْ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْهَا وَلَدًا.

অর্থ: “অতঃপর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু‘মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্য থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল খ্বামিসাহ্ আলাইহাস সালাম তিনিই সর্বপ্রথম মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহনাল্লাহ! উনার মাধ্যমে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কোনো মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম, আলাইহিন্নাস সালাম উনারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেননি।” (সীরাতে ইবনে ইসহাক্ব ৫/২৪১, দালাইলুন নুবুওওয়াহ্ লিল বাইহাক্বী ৩/১৫৯)

উল্লেখ্য যে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে কম সময় সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ছোহবত মুবারক লাভ করেছেন।

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত দিক-নির্দেশনা মুবারক অনুযায়ী মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত গোসল মুবারক ও সম্মানিত কাফন করা হয়। তারপর স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত জানাযা উনার নামায মুবারক পড়ান। সুবহানাল্লাহ!

এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-

وَتُوُفِّيَتْ فِـىْ حَيَاةِ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَصَلّٰى عَلَيْهَا.

অর্র্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান করা অবস্থায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার সম্মানিত ছলাতুল জানাযা মুবারক পড়ান। সুবহানাল্লাহ! (আত্ তাফসীরুল ওয়াদ্বিহ্ ৩/১১৫, মা’রিফাতুছ ছাহাবা লি আবী নাঈম ২২/৩১৮, আল মুফহিম লিমা আশকালা মিন তালখীছি কিতাবে মুসলিম ২০/৯৫, আত্ তুহ্ফাতুল লত্বীফ ২/৯)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার মধ্যে রাখা:

স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই উনার স্বীয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরহ্ মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক-এ) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনাকে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার মধ্যে রাখেন। সুবহানাল্লাহ!

কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-

اُمُّ الْـمُؤْمِنِيْـنَ الْـخَامِسَةُ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اُمُّ الْمَسَاكِيْـنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ وَاَوَّلُ مَنْ دُفِنَ مِنْ اُمَّهَاتِ الْمُؤْمِنِيْـنَ فِـى الْمَدِيْنَةِ.

অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু‘মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন আল খামিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফই সর্বপ্রথম মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে করা হয়।” সুবহানাল্লাহ! (নিসাউ হাওলির রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১/২৩)

কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে-

فَدَفَنَهَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالْبَقِيْعِ بَعْدَ مَا صَلّٰى عَلَيْهَا.

অর্থ: “অত:পর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত জানাযা মুবারক উনার নামায মুবারক পড়ানোর পর উনাকে সম্মানিত জান্নাতুল বাক্বী শরীফ-এ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার মধ্যে রাখেন।” সুবহানাল্লাহ! (আল ইমতা‘উল আসমা’ ৬/৫২)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خِيَارُكُمْ خَيْـرُكُمْ لِـنِسَائِـىْ مِنْۢ بَعْدِىْ.

অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তি সর্বোত্তম যে ব্যক্তি আমার পর আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আযওয়াজুম মুত্বহহারাত তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের নিকট উত্তম।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে বাযযার ১৪/৩১২, মাজমাউয যাওয়ায়িদ ৯/১৫৫, কাশফুল আসতার ৩/২১০ ইত্যাদি)

কাজেই, কেউ যদি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের হাক্বীক্বী মুহব্বত-মা’রিফত, নিসবত-কুরবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক পেতে চায়, তার জন্য ফরযে আইন হচ্ছে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক সম্পর্কে জানা, উনার সম্মানিত গোলামী মুবারক করা, উনার সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা এবং সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করা সকাল-সন্ধ্যা, দায়িমীভাবে অনন্তকাল যাবৎ। সুবহানাল্লাহ!

মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে সেই তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!

অসমাপ্ত- পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন

জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৬

জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৭

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৮