পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমাউল উম্মাহ শরীফ ও পবিত্র ছহীহ ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত, দিন, সময় ও মুহূর্তের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩২তম পর্ব)

সংখ্যা: ২৭০তম সংখ্যা | বিভাগ:

৩৪তম ফতওয়া হিসেবে

“পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার দরবার শরীফ-এ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।

পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার কারণ

সুন্নতের পথিকৃত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, দ্বীন ইসলাম উনার নির্ভীক সৈনিক, সারা জাহান থেকে কুফরী, শিরক ও বিদ্য়াতের মূলোৎপাটনকারী, বাতিলের আতঙ্ক এবং আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদায় বিশ্বাসী একমাত্র দলীলভিত্তিক তাজদীদী মুখপত্র- “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” পত্রিকায় এ যাবৎ যত লেখা বা ফতওয়াই প্রকাশ বা পত্রস্থ হয়েছে এবং ইনশাআল্লাহ হবে তার প্রতিটিরই উদ্দেশ্য বা মাকছূদ এক ও অভিন্ন। অর্থাৎ “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” উনার মধ্যে এমনসব লেখাই পত্রস্থ হয়, যা মানুষের আক্বীদা ও আমলসমূহ পরিশুদ্ধ ও হিফাযতকরণে বিশেষ সহায়ক।

বর্তমানে ইহুদীদের এজেন্ট হিসেবে মুসলমানদের ঈমান আমলের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে যারা, তারা হলো “উলামায়ে সূ”। ইহুদীদের এজেন্ট উলামায়ে ‘সূ’রা হারাম টিভি চ্যানেলে, পত্র-পত্রিকা, কিতাবাদি ও বক্তব্য বা বিবৃতির মাধ্যমে মুসলমান উনাদের বিশেষ বিশেষ ফযীলতযুক্ত আমলের রাত ও দিনসমূহ পালন করাকে বিদয়াত, নাজায়িয ও শিরক বলে ফতওয়া দিয়ে মুসলমান উনাদেরকে অশেষ খায়ের, বরকত, নিয়ামত, নাজাত অর্থাৎ রেযামন্দি বা সন্তুষ্টি মুবারক থেকে মাহরূম করছে। যেমন তারা বলে থাকে যে, পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা বিদয়াত, শিরক। নাউযুবিল্লাহ! পবিত্র শবে বরাত পালন করা বিদয়াত, নাজায়িয। নাউযুবিল্লাহ! পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ পালন করা বিদয়াত। নাউযুবিল্লাহ! অনুরূপ আরো অনেক বিষয়কেই তারা বিনা দলীলে মনগড়াভাবে নাজায়িয ও বিদয়াত বলে থাকে। নাউযুবিল্লাহ!

অপরদিকে বেদ্বীনী-বদদ্বীনী অর্থাৎ কাফির মুশরিক, ইহুদী, নাছারাদের যত পর্ব বা দিবস রয়েছে সেগুলোকে শুধু জায়িযই নয় বরং নিয়ামত বলে আখ্যা দিয়ে থাকে। নাউযুবিল্লাহ! যেমন বাইতুল মুকাররমের সাবেক খতীব ওবায়দুল হক্ব প্রকৃতপক্ষে উবাই বলেছিল, “পহেলা বৈশাখ আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত।” নাঊযুবিল্লাহ!

অথচ তাদের উপরোক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, চরম বিভ্রান্তিকর ও কুফরীমূলক। তাদের এসব বক্তব্যের কারণে তারা নিজেরা যেরূপ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তদ্রুপ তাদের উক্ত কুফরীমূলক বক্তব্য ও বদ্ আমলের কারণে সাধারণ মুসলমানগণ ই’তিক্বাদী বা আক্বীদাগত ও আ’মালী বা আমলগত উভয় দিক থেকেই বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

কারণ, তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে যারা এ আক্বীদা পোষণ করবে যে, “পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা বিদয়াত শিরক এবং পহেলা বৈশাখ মহান আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত।” নাউযুল্লিাহ! তারা ঈমানহারা হয়ে কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী হবে। কারণ সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে হালাল বা জায়িয বিষয়কে হারাম বা নাজায়িয বলা এবং হারাম বা নাজায়িযকে হালাল বা জায়িয বলা কুফরী। কেননা কিতাবে স্পষ্টই উল্লেখ আছে যে-

اِسْتِحْلَالُ الْـمَعْصِيَةِ كُفْرٌ.

অর্থাৎ “গুনাহের কাজ বা হারামকে হালাল মনে করা কুফরী।” (শরহে আক্বাইদে নাসাফী শরীফ)

অতএব, বলার আর অপেক্ষাই রাখেনা যে, উলামায়ে “সূ”দের উক্ত বক্তব্য সাধারণ মুসলমান উনাদের আক্বীদা বা ঈমানের জন্য বিশেষভাবে হুমকিস্বরূপ।

অনুরূপ উলামায়ে “সূ”দের এ কুফরীমূলক বক্তব্য মুসলমানদের আমলের ক্ষেত্রেও বিশেষ ক্ষতির কারণ। কেননা যারা তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে “পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা থেকে বিরত থাকবে এবং হারাম পহেলা বৈশাখ পালন করবে” তারা অশেষ খায়ের, বরকত ও নিয়ামত থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের কর্তৃক নিষিদ্ধকৃত কাজে তথা হারাম কাজে মশগুল হওয়ার কারণে কঠিন গুনাহগার অর্থাৎ জাহান্নামী হবে। নাউযুবিল্লাহ!

কাজেই, যারা এ ধরনের কুফরী আক্বীদায় বিশ্বাসী ও কুফরী বক্তব্য প্রদানকারী তারা ও হক্ব সমঝদার মুসলমানগণ তারা তাদের ঈমান ও আমলকে যেন হিফাযত করতে পারে অর্থাৎ সকল বিষয়ে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদা অনুযায়ী আক্বীদা পোষণ করতে পারে এবং পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা ও ক্বিয়াস মোতাবেক আমল করে মহান আল্লাহ পাক উনার রিযামন্দি হাছিল করতে পারে সে জন্যেই “পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়াটি”  প্রকাশ করা হলো।

পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমাউল উম্মাহ শরীফ ও পবিত্র ছহীহ ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত, দিন ও সময়ের গুরুত্ব, ফযীলত ও আহকাম এবং তার সংশ্লিষ্ট

বিষয় সম্পর্কে ফাতাওয়া-

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম (রবীউল আউওয়াল শরীফ) মাস উনার ফাযায়িল-ফযীলত ও গুরুত্ব

হিজরী বছর উনার মাসের সংখ্যা ১২টি। তন্মধ্যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম (রবীউল আউওয়াল শরীফ) মাস হচ্ছেন সমস্ত মাস উনাদের সাইয়্যিদ এবং মহান। সুবহানাল্লাহ! এজন্য এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাস উনাকে বলা হয়, সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম, সাইয়্যিদুল আসইয়াদ, সাইয়্যিদুশ শুহূর, শাহরুল আ’যম মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবী‘উল আউওয়াল শরীফ। সুবহানাল্লাহ! কেননা, এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাস হচ্ছেন স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সংশ্লিষ্ট এবং সম্পৃক্ত। তিনি এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাসে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন, এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাসে সর্বপ্রথম সম্মানিত ওহী মুবারক নাযিল হয়েছেন, এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাসে তিনি সম্মানিত হিজরত মুবারক করেছেন এবং এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাসেই তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাস উনার বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক বুঝার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, তূর পাহাড়ে মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক উনার সত্তর হাজার ভাগের এক ভাগ নূর মুবারক বর্ষিত হওয়ার কারণে জলীলুল ক্বদর নবী এবং রসূল হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে সেখানে যেতে হয়েছিলো, উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলে। কিন্তু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফখর মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র না’লাইন শরীফ) উনাদের স্পর্শকৃত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শরাফত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ধূলি-বালি মুবারক) পাওয়ার জন্য বেকারর ছিলেন স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত মূল আরশে আযীম মুবারক। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ উনাদের স্পর্শকৃত সম্মানিত ও পবিত্র ধূলি-বালি মুবারক উনাদের পবিত্রতা, মর্যাদা মূল আরশে আযীম মুবারক থেকেও লক্ষ কোটি গুণ বেশি। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফখর মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র না’লাইন শরীফ) উনাদের স্পর্শকৃত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শরাফত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ধূলি-বালি মুবারক) পেয়ে সম্মানিত মূল আরশে আযীম মুবারক আরো পবিত্রতা হাছিল করেছেন, মর্যাদাবন হয়েছেন এবং অন্য সকলের উপর ফখর করেছেন। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফখর মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র না’লাইন শরীফ) উনাদের স্পর্শকৃত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শরাফত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ধূলি-বালি মুবারক) উনাদের মর্যাদা-মর্তবা, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক যদি এতো বেমেছাল হয়ে থাকে, তাহলে সাইয়্যিদু সায়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম, সাইয়্যিদুল আসইয়াদ, সাইয়্যিদুশ শুহূর, শাহরুল আ’যম মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবী‘উল আউওয়াল শরীফ মাস উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! যা কস্মিনকালেও ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। সুবহানাল্লাহ!

পূর্ব প্রকাশিতের পর

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ) মাস উনার কতিপয় বরকতময় ঐতিহাসিক বিশেষ সম্মানিত

রাত ও দিন মুবারক- (২৬)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৭ই সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ)

যা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস মুবারক। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক হচ্ছেন- সাইয়্যিদুনা হযরত জা’ফর আলাইহিস সালাম। জা’ফর শব্দ মুবারক উনার শাব্দিক অর্থ- নদী, খাল, সাগর ইত্যাদি। মূল অর্থ হলো- জামি‘উন নি‘য়ামত তথা সমস্ত নি‘য়ামত মুবারক উনার অধিকারী এবং জামি‘উন নিসবত অর্থাৎ সমস্ত নিসবত মুবারক উনার অধিকারী। সুবহানাল্লাহ! যেহেতু সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম হিসেবে মূল নি‘য়ামত ও নিসবত মুবারক উনার অধিকারী। আর উম্মতদের জন্য যে নি‘য়ামত মুবারক ও নিসবত মুবারক দেয়া হয়েছে, সেটাও তিনি সংগ্রহ করে, একত্র করে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অধীনে রেখেছেন। সুবহানাল্লাহ! তাছাড়াও তিনি যাহিরী, বাতিনী সমস্ত নি‘য়ামত ও নিসবত মুবারক উনার অধিকারী ছিলেন, তাই তিনি হচ্ছেন জামি‘উন নি‘য়ামত বা সমস্ত নি‘য়ামত মুবারক উনাদের অধিকারী এবং জামি‘উন নিসবত অর্থাৎ সমস্ত নিসবত মুবারক উনাদের অধিকারী। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত লক্বব মুবারক:  ‘ছাদিক্ব’ হচ্ছে, উনার একখানা সম্মানিত বিশেষ লক্বব মুবারক। তিনি হচ্ছেন সমস্ত ছাদিক্বীন উনাদের ইমাম। এছাড়াও ফাদ্বিল, ত্বাহির ইত্যাদি উনার সম্মানিত বিশেষ লক্বব মুবারক উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ! মূলত, তিনি সমস্ত উত্তম ছিফত মুবারক উনাদেরই অধিকারী ছিলেন। তাই সেই দিক থেকে তিনি হচ্ছেন, জামি‘উল আলক্বাব বা সমস্ত সম্মানিত লক্বব মুবারক উনার অধিকারী। সুবহানাল্লাহ! তিনি হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ৬ষ্ঠ ইমাম। সুবহানাল্লাহ! এজন্য উনাকে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলা হয়। সুবহানাল্লাহ! তিনি এই সম্মানিত লক্বব মুবারকেই সকলের মাঝে সম্মানিত পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেছেন। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক: সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ আব্দিল্লাহ আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ : সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ৯৬ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৭ই সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (রবীউল আউওয়াল শরীফ) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইছনানিল আযীম শরীফ) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি ১৪৮ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৪ই রজবুল হারাম শরীফ লাইলাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইছনাইনিল আযীম শরীফ) বা’দ ইশা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত মুবারক পরিচিত: তিনি হচ্ছেন মহাসম্মানিত পিতা উনার দিক থেকে- সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম জা’ফর ছাদিক্ব আলাইহিস সালাম ইবনে মুহম্মদ বাকির আলাইহিস সালাম ইবনে যাইনুল আবেদীন আলী আওসাত্ব আলাইহিস সালাম ইবনে সাইয়্যিদুশ শুহাদা হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম ইবনে হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসবনামাহ মুবারক হিসেবে তিনি হচ্ছেন- যিনি সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত বংশধর তথা আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!

তিনি সম্মানিত মাতা উনার দিক থেকে আফযালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে¡ আকবর আলাইহিস সালাম উনার সাথে সম্পর্কযুক্ত। সুবহানাল্লাহ!

উনার মহাসম্মানিত মাতা হচ্ছেন- উম্মে ফারওয়াহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ফাত্বিমাহ্ আলাইহাস সালাম। উনার মহাসম্মানিতা মাতা উনার সম্মানিত ও পবিত্র নসবনামাহ মুবারক হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মে ফারওয়াহ্ ফাত্বিমাহ্ বিনতে হযরত ক্বাসিম ইবনে হযরত মুহম্মদ ইবনে সাইয়্যদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে¡ আকবর আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ!

তিনি হচ্ছেন ইমামুস সাদিস তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ১২ ইমাম আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে সাদিস তথা ষষ্ঠ ইমাম আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!

 

মহাসম্মানিত ১২ ইমাম আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম

মুবারক উনাদের তালিকা নিম্নরূপ

 

১. আসাদুল্লাহিল গালিব, ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম।

২. আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন, ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম।

৩. সাইয়্যিদুশ শুহাদা, শুহাদায়ে কারবালা, ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম।

৪. ইমামুর রাবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আলী আওসাত্ব জয়নুল আবেদীন আলাইহিস সালাম।

৫. ইমামুল খামিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম মুহম্মদ বাক্বির আলাইহিস সালাম।

৬. ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত জা’ফর ছাদিক্ব আলাইহিস সালাম।

৭. ইমামুস সাবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম মূসা কাযিম আলাইহিস সালাম।

৮. ইমামুছ ছামিন মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আলী রেযা আলাইহিস সালাম।

৯. ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম মুহম্মদ ত্বক্বী আলাইহিস সালাম,

১০. ইমামুল ‘আশির মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আলী নক্বী আলাইহিস সালাম,

১১. ইমামুল হাদি আ’শার মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আসাকারী আলাইহিস সালাম,

এবং ১২. ইমামুছ ছানি ‘আশার মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম মুহম্মদ মাহদী আলাইহিস সালাম। যিনি শেষ যামানায় আসবেন। সুবহানাল্লাহ!

হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের যেমন আলাদা মাক্বাম তেমনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ১২ ইমাম আলাইহিমুস সালাম উনাদের মাক্বাম মুবারকও আলাদা। সুবহানাল্লাহ!

সেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ১২ ইমাম আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন, ইমামুস ছাদিস তথা ষষ্ঠ ইমাম আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! তাহলে তিনি কতটুকু বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনার অধিকারী সেটা বলার অপেক্ষাই রাখে না। সুবহানাল্লাহ!

জামি‘উন নি‘য়ামত ওয়ান নিসবত: সম্মানিত ক্বাদেরীয়া তরীক্বা উনার সিলসিলা মুবারক অনুযায়ী সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক সাত নম্বরে। আর নকশবন্দিয়া মুজাদ্দিদীয়া তরীক্বা উনার সিলসিলা অনুযায়ী উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক পঞ্চম নম্বরে। তিনি তো মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম হিসেবে মূল নি‘য়ামতপ্রাপ্ত হয়েছিলেনই, তথাপি উম্মতদের জন্য যেই সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক দেয়া হয়েছে সেটাও তিনি সংগ্রহ করে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অধীনে রেখেছেন। সুবহানাল্লাহ!

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “একজন উম্মত হিসেবে যতটুকু নি‘য়ামত মুবারক ধারণ করা সম্ভব সবটুকুই আমি সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে¡ আকবর আলাইহিস সালাম উনার বক্ষ মুবারক-এ ঢেলে দিয়েছি।” সুবহানাল্লাহ!

আর সেই সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারকই ইমামুস সাদিস আলাইহিস সালাম তিনি উনার সম্মানিত নানা হযরত ক্বাসিম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাধ্যম দিয়ে হযরত সালমান ফার্সী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু হয়ে সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে¡ আকবর আলাইহিস সালাম উনার থেকে সংগ্রহ করে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অধীনে রেখেছেন। সুবহানাল্লাহ!

সেই দিক থেকে তিনি হচ্ছেন জামিউন নি‘য়ামত ও নিসবত তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম হিসেবে সম্মানিত মূল নি‘য়ামত ও নিসবত মুবারক এবং উম্মত হিসেবে যে বিশেষ নিয়ামত ও নিসবত রয়েছে, সেই দুই নিয়ামত ও নিসবত উনাদের একত্রকারী। সুবহানাল্লাহ!

মূলত, তিনি যাহিরী-বাতিনী সমস্ত নি‘য়ামত ও নিসবত উনার অধিকারী ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি হচ্ছেন, সেই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মিছদাক। যেই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে বলা হয়েছে-

اِنَّـــاۤ اَعْطَيْنٰكَ الْكَوْثَرَ

অর্থ: “আমার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আপনাকে সম্মানিত কাউছার মুবারক তথা সমস্ত প্রকার সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছি।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা কাওছার শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১)

আ’লামুন নাস: সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ছিলেন আ’লামুন নাস তথা সমস্ত মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ইলম উনার অধিকারী। সুবহানাল্লাহ! একবার উনার যামানায় এক ব্যক্তি দাবি করলো যে, সে সমস্ত কিছু জানে, সে সমস্ত জ্ঞানের অধিকারী। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, তাকে আমার কাছে নিয়ে আসো। তাকে উনার কাছে নিয়ে আসা হলো। তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি নাকি সমস্ত কিছু জানো, বলে দাবি করো? সে বললো, হ্যাঁ। নাঊযুবিল্লাহ! তখন তিনি যমীন থেকে একটা দুর্বাঘাস তুলে তাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, যদি তা-ই হয়ে থাকে, তাহলে তুমি বলো তো দেখি, পৃথিবীতে এই দুর্বাঘাসের সংখ্যা জোড় না বেজোড়? সে বললো, আমি জানি না। তখন ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, আমার তো জানা রয়েছে, পৃথিবীতে যতো দুর্বাঘাস রয়েছে, তার সংখ্যা জোড়। সুবহানাল্লাহ! কেননা, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

وَخَلَقْنٰكُمْ اَزْوَاجًا

 অর্থ: “আর আমি তোমাদেরকে জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছি।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা নাবা’ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৮)

তিনি অন্যত্র ইরশাদ করেন-

وَمِنْ كُلِّ شَىْءٍ خَلَقْنَا زَوْجَيْنِ

অর্থ: “আর আমি সমস্ত কিছুই জোড় সংখ্যক সৃষ্টি করেছি।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা যারিয়াত শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৪৯)

তখন উক্ত ব্যক্তি লা-জাওয়াব হয়ে গেলো। সুবহানাল্লাহ!

মুরীদ এবং খলীফা: সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যামানার প্রায় সমস্ত লোকই উনার মুরীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলো। হানাফী মাযহাবের ইমাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ‘যম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এবং সুলত্বানুল আরেফীন হযরত বায়েজিদ বোস্তামী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অর্থাৎ উনারা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত খলীফা ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! এছাড়া হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হযরত ইমাম দাঊদ তায়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অর্থাৎ উনারা উনার মুরীদ ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! অন্যদিকে রসায়ন বিজ্ঞানের জনক হযরত জাবির ইবনে হাইয়্যান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিও উনার মুরীদ ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!

এখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কিরূপ বেমেছাল সম্মানিত ইলম মুবারক ও মর্যাদা-মর্তবা মুবারক উনাদের অধিকারী ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! যেটা সমস্ত মাখলুকাতের চিন্তা, কল্পনা ও ইলমের উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! এক কথায় তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী। সুবহানাল্লাহ!

মূলত, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত মুহব্বত মুবারক করা হচ্ছে সম্মানিত ঈমান এবং উনার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা হচ্ছে কাট্টা কুফরী। তাই উনাকে সম্মানিত মুহব্বত মুবারক করা এবং উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক সম্পর্কে জানা প্রত্যেক মুসলমান পুরুষ-মহিলা সকলের জন্য ফরয। সুবহানাল্লাহ!

আর উনাকে হাক্বীক্বীভাবে মুহব্বত করতে হলে, উনার হাক্বীক্বী শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান সম্পর্কে জানতে হলে, যিনি সর্বকালের, সর্বযুগের, সর্বশ্রেষ্ঠ মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাহ্ মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক-এ) জমায়েত হওয়া এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরাহ্ মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক-এ) বাইয়াত গ্রহণ করা, উনার সম্মানিত ইতায়াত তথা অনুসরণ-অনুকরণ মুবারক করা সমস্ত মুসলমান উনাদের জন্য ফরয। সুবহানাল্লাহ!

মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে কবুল করুন। আমীন!

অসমাপ্ত-পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন।

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৬

জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৭

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৮

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান বা শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-১