পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমাউল উম্মাহ শরীফ ও পবিত্র ছহীহ ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত, দিন, সময় ও মুহূর্তের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া ২০তম পর্ব

সংখ্যা: ২৫৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

[সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন উনার জন্যে এবং অসংখ্য দুরূদ ও সালাম মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি। মহান আল্লাহ পাক উনার অশেষ রহ্মতে “গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ”-উনার ফতওয়া বিভাগের তরফ থেকে বহুল প্রচারিত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, বাতিলের আতঙ্ক ও আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনার আক্বীদায় বিশ্বাসী এবং হানাফী মাযহাব উনার অনুসরণে প্রকাশিত একমাত্র দলীলভিত্তিক যামানার তাজদীদী মুখপত্র “মাসিক আল বাইয়্যিনাত” পত্রিকায় যথাক্রমে- ১. টুপির ফতওয়া (২য় সংখ্যা) ২. অঙ্গুলী চুম্বনের বিধান (৩য় সংখ্যা) ৩. নিয়ত করে মাজার শরীফ যিয়ারত করা (৪র্থ সংখ্যা) ৪. ছবি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় হারাম হওয়ার ফতওয়া (৫ম-৭ম সংখ্যা) ৫. জুমুয়ার নামায ফরযে আইন ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (৮ম-১০ম সংখ্যা) ৬. মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী সম্পর্কে ফতওয়া (১১তম সংখ্যা) ৭. কদমবুছী ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১২তম সংখ্যা) ৮. তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী ও বিদ্য়াতে সাইয়্যিয়াহ্ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩তম সংখ্যা) ৯. ফরয নামাযের পর মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪-২০তম সংখ্যা) ১০. ইন্জেকশন নেয়া রোযা ভঙ্গের কারণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২১-২২তম সংখ্যা) ১১. তারাবীহ্-এর নামাযে বা অন্যান্য সময় কুরআন শরীফ খতম করে উজরত বা পারিশ্রমিক গ্রহণ করা জায়িয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৩-২৪তম সংখ্যা) ১২. তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৫-২৯তম সংখ্যা) ১৩. দাড়ী ও গোঁফের শরয়ী আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩০-৩৪তম সংখ্যা) ১৪. প্রচলিত তাবলীগ জামায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৫-৪৬তম সংখ্যা) ১৫. আযান ও ছানী আযান মসজিদের ভিতরে দেয়ার আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৪৭-৫০তম সংখ্যা) ১৬. দোয়াল্লীন-যোয়াল্লীন-এর শরয়ী ফায়সালা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে  ফতওয়া (৫১-৫২তম সংখ্যা) ১৭. খাছ সুন্নতী টুপি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে  ফতওয়া (৫৩-৫৯তম সংখ্যা) ১৮. নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও উনার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে  ফতওয়া (৬০-৮২তম সংখ্যা) ১৯. ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারকের আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ফতওয়া (৮৩-৯৬তম সংখ্যা) ২০. শরীয়তের দৃষ্টিতে আখিরী যোহ্র বা ইহ্তিয়াতুয্ যোহ্রের আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৯৭-১০০তম সংখ্যা)  ২১. জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১০১-১১১তম সংখ্যা) এবং  ২২. হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১১২-১৩১তম সংখ্যা) ২৩. খাছ সুন্নতী ক্বমীছ বা কোর্তা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪০তম সংখ্যা) ২৪. হানাফী মাযহাব মতে ফজর নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করা নাজায়িয ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩২-১৫২তম সংখ্যা) ২৫. ইসলামের দৃষ্টিতে বিশ্বকাপ ফুটবল বা খেলাধুলা’র শরয়ী আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (১৫৫তম সংখ্যা) ২৬. হানাফী মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক তথা রুমাল, পাগড়ী, কোর্তা, লুঙ্গি, চাদর ইত্যাদি পরিধান বা ব্যবহার করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৫৩-১৬০তম সংখ্যা) ২৭.  ইসলামের  নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬১-১৭৫তম সংখ্যা) ২৮. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬৮-২৩৭), ২৯. জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯২-১৯৩তম সংখ্যা) ৩০. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯৫-২১৩তম সংখ্যা), ৩১. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে “কুলাঙ্গার, পাপিষ্ঠ ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহি সম্পর্কে শরীয়তের সঠিক ফায়ছালা ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” (২০৩তম সংখ্যা), ৩২. হানাফী মাযহাব মতে নামাযে সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর ইমাম ও মুক্তাদী উভয়ে ‘আমীন’ অনুচ্চ আওয়াজে বা চুপে চুপে পাঠ করাই শরীয়তের নির্দেশ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২১২তম সংখ্যা), ৩৩. পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২২০তম সংখ্যা থেকে যা এখনো চলছে) পেশ করার পাশাপাশি-

৩৪তম ফতওয়া হিসেবে

“পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার দরবার শরীফ-এ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।

পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার কারণ

সুন্নতের পথিকৃত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, দ্বীন ইসলাম উনার নির্ভীক সৈনিক, সারা জাহান থেকে কুফরী, শিরক ও বিদ্য়াতের মূলোৎপাটনকারী, বাতিলের আতঙ্ক এবং আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদায় বিশ্বাসী একমাত্র দলীলভিত্তিক তাজদীদী মুখপত্র- “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” পত্রিকায় এ যাবৎ যত লেখা বা ফতওয়াই প্রকাশ বা পত্রস্থ হয়েছে এবং ইনশাআল্লাহ হবে তার প্রতিটিরই উদ্দেশ্য বা মাকছূদ এক ও অভিন্ন। অর্থাৎ “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” উনার মধ্যে এমনসব লেখাই পত্রস্থ হয়, যা মানুষের আক্বীদা ও আমলসমূহ পরিশুদ্ধ ও হিফাযতকরণে বিশেষ সহায়ক।

বর্তমানে ইহুদীদের এজেন্ট হিসেবে মুসলমানদের ঈমান আমলের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে যারা, তারা হলো “উলামায়ে সূ”। ইহুদীদের এজেন্ট উলামায়ে ‘সূ’রা হারাম টিভি চ্যানেলে, পত্র-পত্রিকা, কিতাবাদি ও বক্তব্য বা বিবৃতির মাধ্যমে মুসলমান উনাদের বিশেষ বিশেষ ফযীলতযুক্ত আমলের রাত ও দিনসমূহ পালন করাকে বিদয়াত, নাজায়িয ও শিরক বলে ফতওয়া দিয়ে মুসলমান উনাদেরকে অশেষ খায়ের, বরকত, নিয়ামত, নাজাত অর্থাৎ রেযামন্দি বা সন্তুষ্টি মুবারক থেকে মাহরূম করছে। যেমন তারা বলে থাকে যে, পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা বিদয়াত, শিরক। নাউযুবিল্লাহ! পবিত্র শবে বরাত পালন করা বিদয়াত, নাজায়িয। নাউযুবিল্লাহ! পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ পালন করা বিদয়াত। নাউযুবিল্লাহ! অনুরূপ আরো অনেক বিষয়কেই তারা বিনা দলীলে মনগড়াভাবে নাজায়িয ও বিদয়াত বলে থাকে। নাউযুবিল্লাহ!

অপরদিকে বেদ্বীনী-বদদ্বীনী অর্থাৎ কাফির মুশরিক, ইহুদী, নাছারাদের যত পর্ব বা দিবস রয়েছে সেগুলোকে শুধু জায়িযই নয় বরং নিয়ামত বলে আখ্যা দিয়ে থাকে। নাউযুবিল্লাহ! যেমন বাইতুল মুকাররমের সাবেক খতীব ওবায়দুল হক্ব প্রকৃতপক্ষে উবাই বলেছিল, “পহেলা বৈশাখ আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত।” নাঊযুবিল্লাহ!

অথচ তাদের উপরোক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, চরম বিভ্রান্তিকর ও কুফরীমূলক। তাদের এসব বক্তব্যের কারণে তারা নিজেরা যেরূপ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তদ্রুপ তাদের উক্ত কুফরীমূলক বক্তব্য ও বদ্ আমলের কারণে সাধারণ মুসলমানগণ ই’তিক্বাদী বা আক্বীদাগত ও আ’মালী বা আমলগত উভয় দিক থেকেই বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

কারণ, তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে যারা এ আক্বীদা পোষণ করবে যে, “পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা বিদয়াত শিরক এবং পহেলা বৈশাখ মহান আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত।” নাউযুল্লিাহ! তারা ঈমানহারা হয়ে কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী হবে। কারণ সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে হালাল বা জায়িয বিষয়কে হারাম বা নাজায়িয বলা এবং হারাম বা নাজায়িযকে হালাল বা জায়িয বলা কুফরী। কেননা কিতাবে স্পষ্টই উল্লেখ আছে যে-

استحلال الـمعصية كفر.

অর্থাৎ “গুনাহের কাজ বা হারামকে হালাল মনে করা কুফরী।” (শরহে আক্বাইদে নাসাফী শরীফ)

অতএব, বলার আর অপেক্ষাই রাখেনা যে, উলামায়ে “সূ”দের উক্ত বক্তব্য সাধারণ মুসলমান উনাদের আক্বীদা বা ঈমানের জন্য বিশেষভাবে হুমকিস্বরূপ।

অনুরূপ উলামায়ে “সূ”দের এ কুফরীমূলক বক্তব্য মুসলমানদের আমলের ক্ষেত্রেও বিশেষ ক্ষতির কারণ। কেননা যারা তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে “পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা থেকে বিরত থাকবে এবং হারাম পহেলা বৈশাখ পালন করবে” তারা অশেষ খায়ের, বরকত ও নিয়ামত থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের কর্তৃক নিষিদ্ধকৃত কাজে তথা হারাম কাজে মশগুল হওয়ার কারণে কঠিন গুনাহগার অর্থাৎ জাহান্নামী হবে। নাউযুবিল্লাহ!

কাজেই, যারা এ ধরনের কুফরী আক্বীদায় বিশ্বাসী ও কুফরী বক্তব্য প্রদানকারী তারা ও হক্ব সমঝদার মুসলমানগণ তারা তাদের ঈমান ও আমলকে যেন হিফাযত করতে পারে অর্থাৎ সকল বিষয়ে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদা অনুযায়ী আক্বীদা পোষণ করতে পারে এবং পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা ও ক্বিয়াস মোতাবেক আমল করে মহান আল্লাহ পাক উনার রিযামন্দি হাছিল করতে পারে সে জন্যেই “পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়াটি”  প্রকাশ করা হলো।

পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত, দিবস ও সময়ের গুরুত্ব, ফযীলত ও আহকাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-

পবিত্র মুহররমুল হারাম মাস উনার ফাযায়িল এবং অত্র মাস উনার মধ্যস্থিত রাত, দিন, সময় ও বিশেষ বিশেষ মুহুর্ত সংশ্লিষ্ট ঘটনা প্রবাহ, আমল ও আহকাম সম্পর্কিত আলোচনা

আস-সানাতুল্ ক্বমারিয়্যাহ তথা হিজরী বছর উনার মাসের সংখ্যা ১২টি। তন্মধ্যে ৪টি মাস উনাকে মহান আল্লাহ তায়ালা হারাম তথা পবিত্র বা যুদ্ধ-বিগ্রহ নিষিদ্ধ মাস হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। পবিত্র মুহররমুল হারাম মাস উক্ত মাস উনাদেরই একটি বিশেষ সম্মানিত মাস। যেমনটি মহান আল্লাহ তায়ালা রব্বুল আলামীন তিনি উনার পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ তথা পবিত্র কুরআন মাজীদ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-

ان عدة الشهور عند الله اثنا عشر شهرا فى كتب الله يوم خلق السموت والارض منها اربعة حرم ذلك الدين القيم فلا تظلموا فيهن انفسكم.

অর্থ :  “নিশ্চয়ই খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার বিধান ও গণনায় আসমান-যমীনের সৃষ্টির শুরু থেকে মাসের সংখ্যা বারটি। তন্মধ্যে চারটি হচ্ছে হারাম বা পবিত্র মাস। এটা সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান। সুতরাং তোমরা এ মাসগুলোতে নিজেদের প্রতি জুলুম বা অবিচার করনা।” (পবিত্র সূরা তওবা শরীফ  : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৬)

এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

ثلاثة متواليات ذو القعدة وذو الـحجة والـمحرم ورجب مضر الذى بين جمادى وشعبان.

অর্থ : “হারাম মাসসমূহ উনাদের মধ্যে তিনটি হলো ধারাবাহিক অর্থাৎ পরস্পর মিলিত। তা হলো- পবিত্র যিলক্বদ শরীফ, পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ ও পবিত্র মুহররম শরীফ। আর চতুর্থটি হলো মুদ্বার গোত্রের পবিত্র রজব শরীফ মাস; যা জুমাদাল উখরা শরীফ ও শা’বান শরীফ মাসের মাঝখানে অবস্থিত।” (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, আবূ দাঊদ শরীফ, মুসনাদে আহমাদ, শুয়াবুল ঈমান)

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

اكرموا الـمحرم من اكرم الـمحرم اكرمه الله بالـجنة ونجاه من النار

অর্থ : “তোমরা পবিত্র মুহররম শরীফ মাসকে সম্মান কর। যে ব্যক্তি পবিত্র মুহররম শরীফ মাসক উনাকে সম্মান করবে, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে জান্নাত দিয়ে এবং জাহান্নাম থেকে পানাহ দিয়ে সম্মানিত করবেন।” সুবহানাল্লাহ!

(৬)

সুমহান বরকতময় ১০ই মুহররমুল হারাম

শরীফ অর্থাৎ মহাপবিত্র আশূরা শরীফ

স্মরণযোগ্য যে, পবিত্র মুহররমুল হারাম শরীফ মাসের উল্লেখযোগ্য ও শ্রেষ্ঠতম দিন হচ্ছে সুমহান বরকতময় ১০ই মুহররমুল হারাম শরীফ অর্থাৎ মহাপবিত্র ‘আশূরা শরীফ উনার দিনটি। এ দিনটি বিশ্বব্যাপী এক আলোচিত দিন। সৃষ্টির সূচনা হয় এ দিনে এবং সৃষ্টির সমাপ্তিও ঘটবে এ দিনে। বিশেষ বিশেষ সৃষ্টি এ দিনেই করা হয় এবং বিশেষ বিশেষ ঘটনাও এ দিনেই সংঘটিত হয়।

বর্ণিত রয়েছে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে শুরু করে সাইয়্যিদুনা আবুল বাশার হযরত আদম ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার পর্যন্ত প্রায় সকল হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের কোন না কোন উল্লেখযোগ্য ঘটনা এ দিনে সংঘটিত হয়েছে। সঙ্গতকারণে এ দিনটি আমাদের সবার জন্যে এক মহান আনুষ্ঠানিকতার দিন, যা রহমত, বরকত, সাকীনা, মাগফিরাত, নিয়ামত মুবারক হাছিল করার দিন। ফলে এ দিনে বেশ কিছু আমল করার ব্যাপারে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উৎসাহিত করা হয়েছে। যেমন-

১। পবিত্র আশূরা শরীফ উপলক্ষে দু’দিন রোযা রাখা: পবিত্র আশূরা শরীফ উপলক্ষে দু’দিন রোযা রাখা সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

عن حضرت ابى هريرة رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم افضل الصيام بعد رمضان شهر الله الـمحرم.

অর্থ : হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার ফরয রোযার পর উত্তম রোযা হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার মাস পবিত্র মুহররম শরীফ উনার রোযা।” (মুসলিম শরীফ)

عن حضرت ابى قتادة رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم صيام يوم عاشوراء احتسب على الله ان يكفر السنة التى قبله.

অর্থ : হযরত আবূ কাতাদাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “পবিত্র আশূরা শরীফ উনার রোযা পালনে আমি মহান আল্লাহ পাক উনার দরবারে আশা করি যে, তিনি (উম্মতের) বিগত বছরের গুনাহখতা ক্ষমা করে দিবেন।” (মুসলিম শরীফ)

عَنْ حضرت اِبْنِ عَبَّاسٍ رضى الله عنه قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: صُومُوا يَوْمَ عَاشُورَاءَ وَخَالِفُوا فِيهِ الْيَهُودَ صُومُوا قَبْلَه يَوْمًا اَوْ بَعْدَه يَوْمًا.

 অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন: তোমরা পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিনে রোযা রাখ এবং এ ব্যাপারে ইয়াহূদীদের বিপরীত কর। তোমরা পবিত্র আশূরা শরীফ উনার আগের দিন অথবা পরের দিন রোযা রাখো। (মুসনাদ আহমাদ বিন হাম্বাল, আস্ সুনানুল কুবরা লিল্ বাইহাক্বী, শুয়াবুল ঈমান লিল্ বাইহাক্বী, ছহীহ ইবনে খুযাইমাহ, মুসনাদুশ্ শাফিয়ী, তাহযীবুল আছার লিত্ ত্ববারী)

এ পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, পবিত্র আশূরা শরীফ উনার উদ্দেশ্যে দুটি রোযা রাখা সুন্নত। পবিত্র মুর্হরমুল হারাম শরীফ উনার ৯ ও ১০ তারিখে অথবা ১০ ও ১১ তারিখে। তবে উত্তম হলো ৯ ও ১০ তারিখে রোযা রাখা। শুধু ১০ই মুহররমুল হারাম শরীফ পবিত্র আশূরা শরীফ উনার উদ্দেশ্যে ১টি রোযা রাখা মাকরূহ তাহরীমী। কারণ ইয়াহূদীরা শুধু সেদিনটিতে রোযা রেখে থাকে।

وَرُوِىَ عَنِ حضرت ابْنِ عَبَّاسٍ رضى الله عنه أَنَّه قَالَ: صُوْمُوا التَّاسِعَ وَالعَاشِرَ وَخَالِفُوا اليَهُوْدَ. وَبِهذَا الحَدِيثِ يَقُولُ الشَّافِعِىُّ رحمة الله عليه وَاَحْمَدُ رحمة الله عليه وَاِسْحَاقُ رحمة الله عليه.

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই তিনি বলেন: তোমরা মুহররমুল হারাম শরীফ মাসের ৯ ও ১০ তা’রীখে রোযা রাখ। আর ইয়াহূদীদের বিপরীত আমল করো। অত্র পবিত্র হাদীছ শরীফখানা হযরত ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল রহমতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা বলেছেন। (আল-জামিউ ওয়াস্ সুনান লিত্ তিরমিযী আবওয়াবুছ ছওম আন রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পরিচ্ছেদ ৫০: বাবু মা জায়া আশূরা আইয়্যূ ইয়াওমিন হুওয়া ২য় খ- ১২০ পৃষ্ঠা হাদীছ নং: ৭৫৫ লেখক: হযরত মুহাম্মাদ বিন ঈসা বিন সাওরাহ বিন মূসা বিন দ্বহ্হাক আবূ ঈসা তিরমিযী সুলামী শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি জন্ম: ২০৯ হিজরী ওয়াফাত: ২৭৯ হিজরী প্রকাশক: দারুল গুরাবিল ইসলামী বইরূত ৬ষ্ঠ খ-ে সমাপ্ত, মুসতাখরাজুত্ তূসী আলা জামিইত্ তিরমিযী, মুসনাদ আব্দুর রয্যাক্ব, আস-সুনানুল কুবরা লিল্ বাইহাক্বী, শুয়াবুল ঈমান লিল্ বাইহাক্বী, তাহযীবুল আছার লিত্ ত্ববারী)

২। রোযাদারদেরকে ইফতার করানো:

রোযাদারদেরকে ইফতার করানো সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

عن حضرت ابن عباس رضى الله عنهما قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: من فطر مؤمنا ليلة عاشوراء فكانما افطر عنده جميع امة محمد صلى الله عليه وسلم واشبع بطونهم.

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন: পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিনগত সন্ধায় যিনি কোন মু’মিন রোযাদারকে ইফতার করাবেন, তিনি যেন নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সমস্ত উম্মতকে ইফতার করালেন এবং উনাদেরকে পেটভরে তৃপ্তির সাথে খাওয়ালেন।” সুবহানাল্লাহ! (গুন্ইয়াতুত্ ত্বালিবীন তৃতীয় পর্ব: মাজালিসু মাওয়ায়িযিল কুরআন ওয়াল্ আলফাযিন্ নাবাবিয়্যাহ- মাজলিসুন ফী ফাদ্বায়িলি ইয়াওমি আশূরা ২য় খ- ৮৭ ও ৮৮ পৃষ্ঠা লেখক: হযরত শায়েখ আব্দুল ক্বাদির জীলানী হাম্বালী রহমতুল্লাহি আলাইহি)

অপর বর্ণনায় রয়েছে-

من فطر فيه صائما فكانـما افطر عنده جميع امة (سيدنا حبيبنا شفيعنا مولانا) محمد صلى الله عليه وسلم

অর্থ : “পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন যে ব্যক্তি কোন রোযাদারকে ইফতার করাবে, তিনি যেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সমস্ত উম্মতকে ইফতার করালো।” সুবহানাল্লাহ!

৩। পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন পরিবারবর্গকে ভালো খাওয়ানো: পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন পরিবারবর্গকে ভালো খাওয়ানো সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

عن حضرت عبد الله بن مسعود رضى الله تعالى عنه ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال من وسع على عياله فى النفقة يوم عاشوراء وسع الله عليه سائر سنته

অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নিশ্চয়ই নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন তার পরিবারবর্গকে ভালো খাওয়াবে-পড়াবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি সারা বছর ওই ব্যক্তিকে সচ্ছলতা দান করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (তবারানী শরীফ, শুয়াবুল ঈমান, মা ছাবাতা বিস্সুন্নাহ, মুমিন কে মাহে ওয়া সাল ইত্যাদি)

عن حضرت عبد الله رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: من وسع على اهله فى يوم عاشوراء وسع الله عليه سائر سنته.

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন: যে ব্যক্তি পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন তার পরিবারবর্গকে ভালো খাওয়াবে-পড়াবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি সারা বছর ওই ব্যক্তিকে সচ্ছলতা দান করবেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (গুন্ইয়াতুত্ ত্বালিবীন তৃতীয় পর্ব: মাজালিসু মাওয়ায়িযিল কুরআন ওয়াল্ আলফাযিন্ নাবাবিয়্যাহ- মাজলিসুন ফী ফাদ্বায়িলি ইয়াওমি আশূরা ২য় খ- ৮৯ পৃষ্ঠা লেখক: হযরত শায়েখ আব্দুল ক্বাদির জীলানী হাম্বালী রহমতুল্লাহি আলাইহি, আদ-দুররুল মানছূর ৬ষ্ঠ খ- ৩৪৫ পৃষ্ঠা, সুনানুত্ ত্ববারানী ১০ খ- ৯৪ পৃষ্ঠা, আল-ইলালুল্ মুতানাহিয়্যাহ ২য় খ- ৬২ পৃষ্ঠা)

عن حضرت ابى هريرة رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: افترض على بنى اسرائيل صوم يوم فى السنة وهو يوم عاشوراء العاشر من المحرم فصوموه ووسعوا فيه على عيالكم، ومن وسع على عياله من ماله فى يوم عاشوراء وسع الله عليه سائر سنته.

অর্থ: হযরত আবূ হুরায়রাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন: বাণী ইসরাঈলদের উপরে বছরে একদিন রোযা ফরয করা হয়েছিল। আর তা হচ্ছে পবিত্র মুহররমুল হারাম শরীফ মাসের দশ তা’রীখ পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন। তাই (হে আমার উম্মত!) তোমরা এ দিনে রোযা রাখ এবং এ দিনে তোমাদের পরিবার-পরিজনদেরকে ভাল খাবার খাওয়াও ও পড়াও। কেননা, যে ব্যক্তি আশূরা শরীফ উনার দিন তার পরিবারবর্গকে তাঁর নিজ উপার্জিত হালাল মাল থেকে ভালো খাওয়াবে-পড়াবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি সারা বছর ওই ব্যক্তিকে সচ্ছলতা দান করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (গুন্ইয়াতুত্ ত্বালিবীন তৃতীয় পর্ব: মাজালিসু মাওয়ায়িযিল কুরআন ওয়াল্ আলফাযিন্ নাবাবিয়্যাহ- মাজলিসুন ফী ফাদ্বায়িলি ইয়াওমি আশূরা ২য় খ- ৮৯ পৃষ্ঠা লেখক: হযরত শায়েখ আব্দুল ক্বাদির জীলানী হাম্বালী রহমতুল্লাহি আলাইহি)

عن حضرت سفيان بن عيينة رحمة الله عليه عن جعفر الاحمر الكوفى رحمة الله عليه عن ابراهيم بن المنتشر رحمة الله عليه وكان من افضل من رؤى بالكوفة على ما قيل فى زمانه انه بلغه: ان من وسع على عياله فى يوم عاشوراء وسع الله تعالى عليه سائر سنته. قال سفيان رحمه الله: فَجَرَّبْنَا ذلك منذ خمسين سنة فلم نر الا سعة

অর্থ: তাবিয়ী হযরত সুফ্ইয়ান বিন উয়াইনাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত জা’ফর আহমার কূফী রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে তিনি হযরত ইবরাহীম বিন মুন্তাশির রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি (হযরত ইবরাহীম বিন মুন্তাশির রহমতুল্লাহি আলাইহি) কূফাবাসীদের মধ্যে সম্মানিত ব্যক্তিত্ব ছিলেন। উনার সম্পর্কে উনার যামানায় প্রচলিত ছিল যে, উনার কাছে এ সংবাদ পৌঁছেছে যে: নিশ্চয়ই যে ব্যক্তি পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন তার পরিবারবর্গকে ভালো খাওয়াবে-পড়াবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি সারা বছর ওই ব্যক্তিকে সচ্ছলতা দান করবেন।” সুবহানাল্লাহ! বর্ণনাকারী হযরত সুফ্ইয়ান বিন উয়াইনাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন: আমরা ৫০ (পঞ্চাশ) বছর এ বিষয়টি নিয়ে যাচাই-বাঁচাই করে দেখেছি, এতে স্বচ্ছলতা ছাড়া আর কিছুই পাইনি। সুবহানাল্লাহ! (গুন্ইয়াতুত্ ত্বালিবীন তৃতীয় পর্ব: মাজালিসু মাওয়ায়িযিল কুরআন ওয়াল্ আলফাযিন্ নাবাবিয়্যাহ- মাজলিসুন ফী ফাদ্বায়িলি ইয়াওমি আশূরা ২য় খ- ৮৯ পৃষ্ঠা লেখক: হযরত শায়েখ আব্দুল ক্বাদির জীলানী হাম্বালী রহমতুল্লাহি আলাইহি)

এ প্রসঙ্গে কিতাবে একটি ওয়াক্বিয়া বর্ণিত রয়েছে। এক ব্যক্তি ছিল গরিব ও আলিম। একবার অসুস্থতার কারণে তিনি তিনদিন যাবৎ কোন কাজ করতে পারলেন না। চতুর্থ দিন ছিল পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন। তিনি পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিনে ভালো খাওয়ার ফযীলত সম্পর্কে জানতেন। তখন ছিল কাজীদের (বিচারক) যুগ। এলাকার কাজী ছাহেব ধনী ব্যক্তি ছিল।

গরিব আলিম ব্যক্তি তিনি কাজী ছাহেবের কাছে পবিত্র আশূরা শরীফ উনার ফযীলতের কথা বলে এবং নিজের অসুস্থতা ও পরিবারের অভুক্ত থাকার কথা উল্লেখ করে ১০ সের আটা, ১০ সের গোশত ও ২ দিরহাম হাদিয়া অথবা কর্জ হিসেবে চাইলেন। কাজী ছাহেব উনাকে যুহরের সময় আসতে বললো। যুহরের সময় কাজী ছাহেব বললো, আছরের সময় আসতে। এরপরে আছরের সময় ইশা এবং ইশার সময় সরাসরি না করে দিল। তখন গরিব আলিম ব্যক্তি বললেন:  হে কাজী ছাহেব! আপনি আমাকে কিছু দিতে পারবেন না সেটা আগেই বলতে পারতেন, আমি অন্য কোথাও ব্যবস্থা করতাম। কিন্তু তা না করে আমাকে সারাদিন ঘুরিয়ে এই শেষ মুহূর্তে নিষেধ করলেন? কাজী ছাহেব সেই গরিব আলিম ব্যক্তির কথায় কর্তপাত না করে দরজা বন্ধ করে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করলো।

মনের দুঃখে গরিব আলিম ব্যক্তি তখন কাঁদতে কাঁদতে বাড়ির দিকে রওয়ানা হলেন। পথে ছিল এক খ্রিস্টানের বাড়ি। একজন বয়স্ক ব্যক্তিকে কাঁদতে দেখে উক্ত খ্রিস্টান কান্নার কারণ জিজ্ঞেস করলো। কিন্তু বিধর্মী বিধায় খ্রিস্টানকে প্রথমে তিনি কিছু বলতে চাইলেন না। অতঃপর খ্রিস্টানের অধীর আগ্রহের কারণে তিনি আশূরা শরীফ উনার ফযীলত ও উনার বর্তমান অবস্থার কথা ব্যক্ত করলেন। খ্রিস্টান ব্যক্তি তখন উৎসাহী হয়ে আলিম ব্যক্তিকে পবিত্র আশূরা শরীফ উনার সম্মানার্থে ১০ সের আটা, ১০ সের গোশত, ২ দিরহাম এবং অতিরিক্ত আরও ২০ দিরহাম দিল এবং বললো যে, আপনাকে আমি পবিত্র আশূরা শরীফ উনার সম্মানার্থে প্রতিমাসে এ পরিমাণ হাদিয়া দিব। গরিব আলিম তখন তা নিয়ে বাড়িতে গেলেন এবং খাবার তৈরি করে ছেলে-মেয়েসহ আহার করলেন। অতঃপর দোয়া করলেন, “আয় মহান আল্লাহ পাক! যে ব্যক্তি আমাকে সন্তুষ্ট করলো, আমার ছেলে-মেয়েদের মুখে হাসি ফোটালো, মহান আল্লাহ পাক! আপনি তার দিল খুশি করে দিন, তাকে সন্তুষ্ট করে দিন।”

ওই রাতে কাজী ছাহেব স্বপ্ন দেখলো, স্বপ্নে কাজী ছাহেবকে বলা হচ্ছে, হে কাজী ছাহেব! তুমি মাথা উত্তোলন করো। মাথা তুলে কাজী ছাহেব দেখতে পেলো যে, তার সামনে দুটি বেহেশ্তী বালাখানা। একটি স্বর্ণের তৈরী আরেকটি রৌপ্যের তৈরী। কাজী ছাহেব বললো, ‘আয় মহান আল্লাহ পাক! এটা কি?’ গায়িবী আওয়াজ হলো, ‘এ বালাখানা দুটি হচ্ছে বেহেশতী বালাখানা। এ বালাখানা দুটি তোমার ছিল। কিন্তু এখন আর তোমার নেই। কারণ তোমার কাছে যে গরিব আলিম লোকটি আশূরা শরীফ উপলক্ষে সাহায্যের জন্য এসেছিলেন উনাকে তুমি সাহায্য করোনি। এজন্য এ বালাখানা দুটি এখন অমুক খ্রিস্টান লোকের হয়েছে।’ কারণ সে খ্রিস্টান লোকটা আশূরা শরীফ উনার সম্মানার্থে গরিব আলিমকে সাহায্য করেছে। অতঃপর কাজী ছাহেবের ঘুম ভেঙে গেলো। ঘুম থেকে উঠে ওযূ ও নামায আদায় করে সেই খ্রিস্টানের বাড়িতে গেলো। খ্রিস্টান কাজী ছাহেবকে দেখে বিস্ময়াভূত হলো। কারণ কাজী ছাহেব খ্রিস্টানের পড়শি বা প্রতিবেশী হওয়া সত্ত্বেও জন্মের পর থেকে এ পর্যন্ত কোন সময় তার বাড়িতে আসতে দেখেনি।

অতঃপর খ্রিস্টান ব্যক্তি কাজী ছাহেবকে বললো, ‘আপনি এত সকালে কি জন্য এলেন?’ কাজী ছাহেব বললো, ‘হে খ্রিস্টান ব্যক্তি! তুমি গত রাতে যে নেক কাজ করেছ সেটা আমার কাছে এক লাখ দিরহামের বিনিময় বিক্রি করে দাও।’ খ্রিস্টান ব্যক্তি বললো, ‘হে কাজী সাহেব! আপনি কি বলতে চাচ্ছেন আমি বুঝতে পারছি না। আপনি স্পষ্ট করে বলুন।’ তখন কাজী ছাহেব তার স্বপ্নের কথা জানালো এবং বললো, ‘তুমি নিশ্চয়ই সেই গরিব আলিম লোকটিকে সাহায্য করেছ।’ তখন খ্রিস্টান ব্যক্তি তা স্বীকার করলো। কাজী ছাহেব বললো যে, ‘তুমি তো খ্রিস্টান, তুমি তো এই বালাখানা পাবেনা। কারণ মুসলমান ব্যতিত সমস্ত বিধর্মীদের জন্য পবিত্র জান্নাত হারাম। অতএব, তুমি তোমার এই নেক কাজ এক লাখ দিরহামের বিনিময়ে আমার নিকট বিক্রি করে দাও এবং তুমি উনার কাছে প্রত্যেক মাসে যে ওয়াদা করেছ আমি উনাকে তা দিয়ে দিব।’ খ্রিস্টান ব্যক্তি বললো, ‘হে কাজী ছাহেব! আমি যদি মুসলমান হয়ে যাই তাহলে কি সেই বালাখানা পাবো?’ তখন কাজী ছাহেব বললো:  ‘হ্যাঁ, তুমি যদি মুসলমান হও তবে বালাখানা পাবে।’ তখন খ্রিস্টান ব্যক্তি বললো, ‘হে কাজী ছাহেব! আপনি সাক্ষী থাকুন, আমি পবিত্র কালিমা শরীফ পড়ে মুসলমান হয়ে গেলাম।’ অতঃপর সত্যি সেই খ্রিস্টান ব্যক্তি মুসলমান হয়ে গেল। সুবহানাল্লাহ!

৪। গরীবদের পানাহার করানো ও ইয়াতীমের মাথায় হাত বুলানো:

গরিবদের পানাহার করানো ও ইয়াতীমের মাথায় হাত বুলানো সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

من مسح فيه على رأس يتيم واطعم جائعا وسقى شربة من ماء اطعم الله من موائد الجنة وسقاه الله تعالى من الرحيق السلسبيل

অর্থ:  “পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন কোন মুসলমান যদি কোন ইয়াতীমের মাথায় হাত স্পর্শ করে, কোন ক্ষুধার্তকে খাদ্য খাওয়ায় এবং কোন পিপাসার্তকে পানি পান করায় তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে জান্নাত উনার দস্তরখানায় খাদ্য খাওয়াবেন এবং ‘সালসাবীল’ ঝর্ণা থেকে পানীয় (শরবত) পান করাবেন।” সুবহানাল্লাহ!

ইয়াতীমের মাথায় হাত বুলানো সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

عن حضرت ابن عباس رضى الله عنهما قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: من مسح بيده راس يتيم يوم عاشوراء رفع الله تعالى له بكل شعرة على رأسه درجة فى الجنة.

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন: কোন ব্যক্তি যদি পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন তার নিজ হাত দ্বারা কোন ইয়াতীমের মাথায় স্পর্শ করে, তাহলে মহান আল্লাহ তায়ালা ঐ ব্যক্তিকে ইয়াতীমের মাথার চুলের সংখ্যা পরিমাণ পবিত্র জান্নাত উনার মধ্যে মর্যাদা দিবেন। সুবহানাল্লাহ! (গুন্ইয়াতুত্ ত্বালিবীন তৃতীয় পর্ব: মাজালিসু মাওয়ায়িযিল কুরআন ওয়াল্ আলফাযিন্ নাবাবিয়্যাহ- মাজলিসুন ফী ফাদ্বায়িলি ইয়াওমি আশূরা ২য় খ- ৮৭ পৃষ্ঠা লেখক: হযরত শায়েখ আব্দুল ক্বাদির জীলানী হাম্বালী রহমতুল্লাহি আলাইহি)

عن حضرت ابن عباس رضى الله عنهما قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: من مسح راس يتيم فى يوم عاشوراء رفعت له بكل شعرة على رأسه درجة فى الجنة.

অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন: কোন ব্যক্তি যদি পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন কোন ইয়াতীমের মাথায় স্পর্শ করে, তাহলে ঐ ব্যক্তিকে ইয়াতীমের মাথার চুলের সংখ্যা পরিমাণ পবিত্র জান্নাত উনার মধ্যে মর্যাদা দেয়া হবে। সুবহানাল্লাহ! (গুন্ইয়াতুত্ ত্বালিবীন তৃতীয় পর্ব: মাজালিসু মাওয়ায়িযিল কুরআন ওয়াল্ আলফাযিন্ নাবাবিয়্যাহ- মাজলিসুন ফী ফাদ্বায়িলি ইয়াওমি আশূরা ২য় খ- ৮৮ পৃষ্ঠা লেখক: হযরত শায়েখ আব্দুল ক্বাদির জীলানী হাম্বালী রহমতুল্লাহি আলাইহি)

৫। অসুস্থ লোককে দেখতে যাওয়া ও তার সেবা করা: অসুস্থ লোককে দেখতে যাওয়া ও তার সেবা করা সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

فقال عمر بن الخطاب عليه السلام: يارسول الله صلى الله عليه وسلم لقد فضلنا الله تعالى بيوم عاشوراء، قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: ومن عاد مريضا يوم عاشوراء فكانما عاد ولد ادم.

অর্থ: হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি একদা আরয করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! অবশ্যই মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি আমাদেরকে পবিত্র আশূরা শরীফ উনার মাধ্যমে অনুগ্রহ দান করেছেন (আসলে তা কি?)। জাওয়াবে নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন: তোমাদের কেউ যদি পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিনে সেবা করার জন্য কোন অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যায়, এতে সে যেন গোটা আদম সন্তান উনাদের সেবা করল। সুবহানাল্লাহ! (গুন্ইয়াতুত্ ত্বালিবীন তৃতীয় পর্ব: মাজালিসু মাওয়ায়িযিল কুরআন ওয়াল্ আলফাযিন্ নাবাবিয়্যাহ- মাজলিসুন ফী ফাদ্বায়িলি ইয়াওমি আশূরা ২য় খ- ৮৮ পৃষ্ঠা লেখক: হযরত শায়েখ আব্দুল ক্বাদির জীলানী হাম্বালী রহমতুল্লাহি আলাইহি)

৬। চোখে (ইছমিদ) সুরমা দেয়া:

চোখে সুরমা দেয়া সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

قال حضرت يحيى بن ابى كثير رحمه الله: من اكتحل يوم عاشوراء بكحل فيه مسك لـم يشتك عينه الى قبيل من ذلك اليوم.

অর্থ: হযরত ইয়াহইয়া বিন আবূ কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন: যে ব্যক্তি পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন মিশ্ক মিশ্রিত সুরমা চোখে দিবে, সেদিন হতে পরবর্তী এক বছর তার চোখে কোন প্রকার রোগ হবেনা। সুবহানাল্লাহ! (গুন্ইয়াতুত্ ত্বালিবীন তৃতীয় পর্ব: মাজালিসু মাওয়ায়িযিল কুরআন ওয়াল্ আলফাযিন্ নাবাবিয়্যাহ- মাজলিসুন ফী ফাদ্বায়িলি ইয়াওমি আশূরা ২য় খ- ৮৯ পৃষ্ঠা লেখক: হযরত শায়েখ আব্দুল ক্বাদির জীলানী হাম্বালী রহমতুল্লাহি আলাইহি, আল-মাক্বাছিদুল হাসানাহ, শুয়াবুল ঈমান লিল বাইহাক্বী, আল-ফিরদাঊস লিদ্ দায়লামী, মা ছাবাতা বিস্সুন্নাহ্)

فقال حضرت عمر بن الخطاب عليه السلام: يارسول الله صلى الله عليه وسلم لقد فضلنا الله تعالى بيوم عاشوراء، قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: ومن اكتحل بالاثمد يوم عاشوراء لم ترمد عينه تلك السنة كلها.

অর্থ: হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি একদা আরয করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! অবশ্যই মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি আমাদেরকে পবিত্র আশূরা শরীফ উনার মাধ্যমে অনুগ্রহ দান করেছেন (আসলে তা কি?)। জাওয়াবে নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন: যে ব্যক্তি পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিনে চোখে সুরমা ব্যবহার করবে, তার চোখে ওই পূর্ণ বছরটিতে কোন রোগ হবে না। সুবহানাল্লাহ! (গুন্ইয়াতুত্ ত্বালিবীন তৃতীয় পর্ব: মাজালিসু মাওয়ায়িযিল কুরআন ওয়াল্ আলফাযিন্ নাবাবিয়্যাহ- মাজলিসুন ফী ফাদ্বায়িলি ইয়াওমি আশূরা ২য় খ- ৮৮ পৃষ্ঠা লেখক: হযরত শায়েখ আব্দুল ক্বাদির জীলানী হাম্বালী রহমতুল্লাহি আলাইহি)

অত্র পবিত্র হাদীছ শরীফ থেকে জানা যাচ্ছে যে, মিশ্ক মিশ্রিত সুরমা হোক বা যে কোন প্রকারের সুরমা হোক পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন চোখে ব্যবহার করলে ওই বছর চোখে কোন রোগ হবে না।

গোসল করা:

পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিনে গোসল করা সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

فقال حضرت عمر بن الخطاب عليه السلام: يارسول الله صلى الله عليه وسلم لقد فضلنا الله تعالى بيوم عاشوراء، قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: من اغتسل يوم عاشوراء لـم يـمرض مرضا الا مرض الـموت.

অর্থ: হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি একদা আরয করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! অবশ্যই মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি আমাদেরকে পবিত্র আশূরা শরীফ উনার মাধ্যমে অনুগ্রহ দান করেছেন (আসলে তা কি?)। জাওয়াবে নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন: যে ব্যক্তি পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন গোসল করবে, মৃত্যু ব্যতীত তার কোন কঠিন রোগ হবেনা সুবহানাল্লাহ! (গুন্ইয়াতুত্ ত্বালিবীন তৃতীয় পর্ব: মাজালিসু মাওয়ায়িযিল কুরআন ওয়াল্ আলফাযিন্ নাবাবিয়্যাহ- মাজলিসুন ফী ফাদ্বায়িলি ইয়াওমি আশূরা ২য় খ- ৮৮ পৃষ্ঠা লেখক: হযরত শায়েখ আব্দুল ক্বাদির জীলানী হাম্বালী রহমতুল্লাহি আলাইহি)

অপর বর্ণনায় রয়েছে-

من اغتسل فيه عفى ولـم يـمرض الا مرض الـموت وامن من الكسل والتعليل

অর্থ: যে ব্যক্তি পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন গোসল করবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে রোগ থেকে মুক্তি দান করবেন। মৃত্যু ব্যতীত তার কোন কঠিন রোগ হবেনা এবং সে অলসতা ও দুঃখ-কষ্ট হতে নিরাপদ থাকবে। সুবহানাল্লাহ!

অতএব, পবিত্র মুহররমুল হারাম শরীফ মাস এবং উনার মধ্যস্থিত পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিনের ফাযায়িল-ফযীলত ও আমল সম্পর্কে জেনে সে মুতাবিক আমল করে মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করা প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর দায়িত্ব-কর্তব্য।

(৭)

সুমহান ও বরকতময় ২৫শে মুহররমুল হারাম শরীফ

ইমামুর রাবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম যাইনুল আবিদীন আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস।

ইয়াদগারে নুবুওওয়াত, পেশওয়ায়ে দ্বীন সাইয়্যিদুল আওলিয়া, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুর রাবি’ মিন আহলে বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ৪৭ হিজরী মোতাবেক, ১ খামীস ৩৫  শামসী সন, ৬৬৭ ঈসায়ী সন, পবিত্র ৫ই শা’বান শরীফ, ইয়াওমুল খামীস বা বৃহস্পতিবার দুনিয়াতে মুবারক তাশরীফ গ্রহণ করেন। তিনি আসমান ও যমীন উভয়ের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ স্থান পবিত্র মদীনা শরীফ শহরে পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন; তাই উনাকে মাদানী বলা হয়। কারবালার হৃদয় বিদারক ঘটনা সংঘটিত হওয়ার দিন তিনি প্রায় ১৪ বছর বয়স মুবারকের অধিকারী ছিলেন। সাইয়্যিদুশ শুহাদা, সাইয়্যিদু আহলিল জান্নাহ হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র শাহাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার পর উনার সুযোগ্য আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুর রাবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত ‘ইমাম’ মাক্বামে স্থলাভিষিক্ত হন। সুবহানাল্লাহ!

একবার হযরত মুহম্মদ হানাফিয়া ইবনে আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি উনার সম্মানিত ইমামত উনার ব্যাপারে মুসলিম উম্মতকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়ার লক্ষ্যে সুলত্বানুল আউলিয়া, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম যাইনুল আবিদীন আলাইহিস সালাম উনার নিকট আরজ করলে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন- ইহা উত্তম হবে যে, আমরা উভয়ে লোকজনসহ পবিত্র কা’বা শরীফ প্রাঙ্গণে হাজরে আসওয়াদ উনার নিকট যাই। উনাকে জিজ্ঞাসা করি- বর্তমান সময়ের ‘ইমাম’ কে? তাতে প্রকৃত সত্য সকলের নিকট প্রকাশিত হবে। অতঃপর উনারা হাজরে আসওয়াদ উনার নিকট গেলেন। হাজরে আসওয়াদ উনাকে (কালো পাথর) জিজ্ঞাসা করলে উনার জবান খুলে গেল। হাজরে আসওয়াদ (কালো পাথর) স্পষ্টভাবে বলে দিলেন, “সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হুসাইন ইবনে আলী আলাইহিস সালাম উনার পরে সম্মানিত ‘ইমামত’ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম যাইনুল আবিদীন আলাইহিস সালাম উনার নিকট পৌঁছেছে। তিনিই বর্তমান সময়ের ইমাম। সুবহানাল্লাহ! হযরত মুহম্মদ হানাফিয়া ইবনে আলী কাররামাল্লাহু আলাইহিস সালাম তিনিসহ সকলেই সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম যাইনুল আবিদীন আলাইহিস সালাম উনার এই কারামত দেখে অন্তর থেকে উনাকে ইমামুর রবি’ (চতুর্থ ইমাম) হিসেবে গ্রহণ করলেন এবং উনার মুহব্বতে নিজদের উৎসর্গ করলেন। সুবহানাল্লাহ!

তিরিমিযী শরীফ ও মিশকাত শরীফ উনাদের মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, রঈসুল মুফাসসিরীন হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মহান আল্লাহ পাক উনাকে তোমরা মুহব্বত করো। কেননা তিনি তোমাদের প্রতি খাওয়া-পরাসহ সর্বপ্রকার নিয়ামতের মাধ্যমে অনুগ্রহ করে থাকেন। আর আমাকে তোমরা মুহব্বত করো মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত পাওয়ার জন্য। আর আমার হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম এবং আমার হযরত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করো আমার মুহব্বত পাওয়ার জন্য।” সুবহানাল্লাহ!

তাই আমরা দেখতে পাই- হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের থেকে শুরু করে পরবর্তী উম্মত উনারা সকলেই হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ও হযরত আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুহব্বত, সম্মান, খিদমত ও অনুসরণ মুবারকের নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। সুবহানাল্লাহ!

উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা সুস্পষ্টভাবে বুঝা গেলো যে, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার এবং যিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মা’রিফাত-মুহব্বত, সন্তুষ্টি-রেযামন্দি মুবারক পেতে হলে, হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম ও হযরত আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে মুহব্বত করা প্রত্যেক মুসলমান পুরুষ-মহিলা সকলের জন্য ফরয। সাইয়্যিদুনা ইমামুর রাবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন সেই হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম ও হযরত আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের চতুর্থ ইমাম। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ ইমামুর রাবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ!

ইমামুল মুত্তাক্বীন, সুলত্বানুল আউলিয়া, পেশওয়ায়ে দ্বীন, আওলাদে রসূল, হযরত ইমামুর রবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ৯৪ হিজরী ২৫ মুহররমুল হারাম শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ পবিত্র শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন ৪৭ বছর বয়স মুবারকে। মুনাফিক ও কাফিরেরা উনাকে বিষ পান করিয়েছিল। নাউযুবিল্লাহ! উনাকে পবিত্র জান্নাতুল বাক্বী শরীফ কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। অর্থাৎ উনার পবিত্র রওযা শরীফ পবিত্র জান্নাতুল বাক্বী শরীফ কবরস্থানে অবস্থিত।

তাই উনার পবিত্র জীবনী মুবারক জানাও প্রত্যেক মুসলমান পুরুষ-মহিলা, ছেলে-মেয়ে সবার জন্য ফরযে আইন। কেননা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, ‘ইলম হচ্ছে আমল উনার ইমাম।’ অর্থাৎ উনাদের পবিত্র জীবনী মুবারক জানা থাকলেই মূলত উনাদেরকে পরিপূর্ণ মুহব্বত, তা’যীম-তাকরীম ও অনুসরণ করা সম্ভব। কাজেই পৃথিবীব্যাপী সমস্ত মাদরাসা, স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সিলেবাসে উনাদের জীবনী মুবারক অন্তর্ভুক্ত করাও ফরযে আইন। কারণ যে বিষয়টি সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার মধ্যে ফরয সে বিষয় সম্পর্কে ইলম অর্জন করাও ফরয।

মূলকথা হলো- সুমহান ও বরকতময় ২৫শে মুহররমুল হারাম শরীফ- ইমামুর রবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম যাইনুল আবিদীন আলাইহিস সালাম তিনি এদিন পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। এই মহাসম্মানিত দিবস উপলক্ষে সকলের জন্য দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে- উনার পবিত্র সাওয়ানেহে উমরী মুবারক আলোচনা করার লক্ষ্যে মাহফিল করা এবং পবিত্র মীলাদ শরীফ, পবিত্র ক্বিয়াম শরীফ করা। আর সরকারের জন্যও ফরয হচ্ছে- মাহফিলসমূহের সার্বিক আনজাম দেয়ার সাথে সাথে উনার পবিত্র জীবনী মুবারক শিশুশ্রেণী থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ শ্রেণী পর্যন্ত সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত করা এবং উক্ত দিবসে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা।

 

অসমাপ্ত- পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৬

জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৭

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৮

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান বা শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-১