পবিত্র মীলাদ শরীফ বিষয়ে হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নামে ‘মাসিক আল কাওছারের’ মিথ্যাচারের জবাব

সংখ্যা: ২৯২তম সংখ্যা | বিভাগ:

পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, ইজমা ও কিয়াস শরীফ দ্বারা পবিত্র মীলাদ শরীফের আমল প্রমাণিত। কিন্তু এক শ্রেণীর বিদ্বেষ ভাবাপন্ন মানুষ পবিত্র মীলাদ শরীফ উনার আমলকে অস্বীকার করতে বিভিন্ন অপপ্রচার ও বক্ত্যবের কাটছাঁট করে থাকে। তারই ধারবাহিকতায় ওহাবী চেতনা লালনকারী বাংলাদেশের একটি তথাকথিত মাসিক পত্রিকা ‘মাসিক আল কাউসারে’ মীলাদ শরীফের মত পবিত্র আমলকে অস্বীকার করতে গিয়ে হাজার বছরের মুজাদ্দিদ, হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নামেও মিথ্যাচার করতে কার্পণ্য করে নাই।

মাসিক আল কাউসার পত্রিকার ফেব্রুয়ারী ২০১৯ সংখ্যায় ‘মিলাদ-কিয়াম প্রমাণে ভারতবর্ষের কয়েকজন আলেমের বক্তব্যের ভুল প্রয়োগ ও তার স্বরূপ’ নামক শিরোনামে একটি লেখায় তাদের বক্তব্য হুবহু উল্লেখ করা হলো-

“এ প্রসঙ্গে মুজাদ্দিদে আলফে ছানীর মাকতুবাত থেকেও একটি বক্তব্য পেশ করা হয়। তাঁর নিকট তাঁর এক মুরিদ পত্র প্রেরণ করে। তাতে মিলাদ সম্পর্কেও জিজ্ঞাসা করা হয়, জবাবে মুজাদ্দিদ রাহ. লিখেন-

نفس قرآں خواندن بصوت حسن و درقصائد نعت ومنقبت خواندن چہ مضائقہ است ممنوع تحریف وتغییر حروف قرآن است والتزام رعایت مقامات نغمہ وتردید صوت بآں طریق الحان بالتصفیق مناسب آں کہ درشعر نیزغیر مباح است اگر برنہجے خوانند کہ تحریفے در کلمات قرآنی واقع نشود و در قصائد خواندن شرائط مذکورہ متحقق نگردد و آں راہم بغرض صحیح تجویز نمایند چہ مانع است؟

সুমিষ্ট স্বরে পবিত্র কুরআন শরীফ পড়া এবং নবীজীর প্রশংসায় কবিতা পাঠে দোষের কী আছে? নিষিদ্ধ তো হল কুরআনের বিকৃতি, অক্ষর পরিবর্তন ইত্যাদি। আর সুরের পথ ধরে গানের ন্যায় ছন্দময় সুর তোলা ও সে অনুযায়ী তালি বাজানো, যা কবিতার মধ্যেও নাজায়েয। আর যদি কুরআনের অক্ষর ও শব্দ বিকৃত না হয় এবং নবীজীর প্রসংসায় কবিতা পাঠে উল্লেখিত বিষয় না থাকে। সাথে সাথে নিয়তও সহীহ হয় তাহলে তাতে নিষিদ্ধতার কী আছে?। (মাকতুবাত, দফতর ৩, মাকতুব নং ৭২)

মুজাদ্দিদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার উদ্দেশ্য হল, মিলাদে যদি সুন্দরভাবে কুরআন পাঠ হয় আর তাতে অন্যান্য শরয়ী সমস্যাবলী না থাকে তাহলে তা পাঠে অসুবিধা নেই।

যারা মুজাদ্দিদ রাহ.-এর বক্তব্যটি উদ্ধৃত করে থাকে তারা শুধু এতটুকুই উদ্ধৃত করে থাকে। অর্থাৎ তাঁর পূর্ণ বক্তব্য তুলে ধরে না। মুজাদ্দিদ রাহ. এটুকু বলার পর আরো যা বলেন, সেটিই হল বিবেচ্য বিষয়। তিনি এরপর বলেন,

مخدوما بخاطر فقیر میرسد ایں باب مطلق نکنند، بو الہوسان ممنوع نہ میکردند اگر اندک تجویز کردن بتجربہ بسیار خواہد شد قلیلہ یفضی الی کثیرہ قول مشھور ست۔

অধমের মন বলে, এ পথ যেন না খোলা হয়, তা না হলে পেট-পূজারীদের পথ বন্ধ হবে না, অভিজ্ঞতার আলোকে বলছি, যদি সামান্যও ছাড় দেয়া হয় তাহলে অনেক বেশিতে পৌঁছে যাবে, ‘এর সামান্যও অনেক বেশির দিকে নিয়ে যাবে’। -প্রাগুক্ত

অর্থাৎ সুর তরঙ্গ, কুরআন শরীফ বিকৃতি, ইত্যাদি থেকে মুক্ত হলেও এ ধরনের মিলাদের পথ খোলা যাবে না। কেননা এটুকু যদি খোলা হয় তাহলে  সেটি অনেক ফাসাদের দিকে নিয়ে যাবে।” (মাসিক আল কাউসার ফেব্রুয়ারী, ২০১৯)

অর্থাৎ তাদের দাবী হচ্ছে সুন্নীরা হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলিইহি উনার মকতুবাত শরীফের ৩ খণ্ডের ৭২ নং মকতুবের খণ্ডিত অংশ প্রচার করে মীলাদ শরীফকে হালাল করার চেষ্টা করে। অথচ হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পবিত্র মীলাদ শরীফের সম্পূর্ণ পথটাই বন্ধ করতে বলেছেন। আসলে কি তাই?

মকতুবাত শরীফের ৩য় খন্ডের ৭২ নং মকতুব নিয়ে আপত্তির বিষয়ে অনুসন্ধান করা যাক।

হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, ‘সুমিষ্ট স্বরে পবিত্র কুরআন শরীফ পড়া এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রশংসায় কবিতা পাঠে দোষের কী আছে? নিষিদ্ধ তো হল পবিত্র কুরআন শরীফ বিকৃতি, অক্ষর পরিবর্তন ইত্যাদি। আর সুরের পথ ধরে গানের ন্যায় ছন্দময় সুর তোলা ও সে অনুযায়ী তালি বাজানো, যা কবিতার মধ্যেও নাজায়েয। আর যদি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার অক্ষর ও শব্দ বিকৃত না হয় এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রসংসায় কবিতা পাঠে উল্লেখিত বিষয় না থাকে। সাথে সাথে নিয়তও ছহীহ হয় তাহলে তাতে নিষিদ্ধতার কী আছে? (মাকতুবাত, দফতর ৩, মাকতুব নং ৭২)

ভালো করে লক্ষ্য করুন- নিষিদ্ধের বিষয়গুলো হচ্ছে- পবিত্র কুরআন শরীফে বিকৃতি, অক্ষর পরিবর্তন, গানের সুর, হাতে তালি দেয়া ইত্যাদি। যদি এসব না থাকে তাহলে পবিত্র মীলাদ শরীফে কোন সমস্যা নেই।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই কথার শেষে যে হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি বললেন, “অধমের মন বলে, এ পথ যেন না খোলা হয়, তা না হলে নির্বোধরা বিরত  হবে না, অভিজ্ঞতার আলোকে বলছি, যদি সামান্যও ছাড় দেওয়া হয় তাহলে অনেক বেশিতে পৌঁছে যাবে, ‘এর সামান্যও অনেক বেশির দিকে নিয়ে যাবে’।”

যে পথকে বন্ধ করা হবে সেটা কোন পথ? গানবাজনার বিষয়কে হালাল করার জন্য বিদয়াতিরা যে দলীল দেয় সেই পথ। অর্থাৎ কোনভাবেই্ গান বাজনা বা, হারাম নাজায়িয ও  বেশরা বিদয়াত কাজ অনুপ্রবেশ করা যাবে না। কোনভাবেই এ দুর্বলতা দেখানো যাবে না যে, অমুক বলেছে তাই এই হারাম কাজ এখন হালাল হয়েছে এমন কোন সুযোগই তৈরী করা যাবে না। হারামের বিন্দুমাত্র ছাড় দেয়া যাবে না, তাহলে তারা এর মাত্রা আরো বাড়িয়ে নিয়ে যাবে। অর্থাৎ বিষয়টা হচ্ছে এমন যা হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি  বুঝিয়েছেন তা হলো-

‘সুমিষ্ট স্বরে পবিত্র কুরআন শরীফ পড়া এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রশংসায় কবিতা পাঠে দোষের কী আছে? নিষিদ্ধ তো হল কুরআনের বিকৃতি, অক্ষর পরিবর্তন ইত্যাদি। আর সুরের পথ ধরে গানের ন্যায় ছন্দময় সুর তোলা ও সে অনুযায়ী তালি বাজানো, যা কবিতার মধ্যেও নাজায়েয। আর যদি কুরআনের অক্ষর ও শব্দ বিকৃত না হয় এবং নবীজীর প্রসংসায় কবিতা পাঠে উল্লেখিত বিষয় না থাকে। সাথে সাথে নিয়তও ছহীহ হয় তাহলে তাতে নিষিদ্ধতার কী আছে?

“অধমের মন বলে, এ পথ (হারাম ও বেশরা কাজের পথ) যেন না খোলা হয়, তা না হলে নির্বোধরা বিরত হবে না, অভিজ্ঞতার আলোকে বলছি, যদি সামান্যও ছাড় দেওয়া হয় তাহলে অনেক বেশিতে পৌঁছে যাবে, ‘এর সামান্যও অনেক বেশির দিকে নিয়ে যাবে’।” (মকতুবাত শরীফ ৩ খণ্ড ৭২ নং মকতুব)

লক্ষ্যনীয় বিষয় হচ্ছে, ‘আর যদি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার অক্ষর ও শব্দ বিকৃত না হয় এবং হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রসংসায় কবিতা পাঠে উল্লেখিত বিষয় না থাকে। সাথে সাথে নিয়তও ছহীহ হয় তাহলে তাতে নিষিদ্ধতার কী আছে’?

এটা বলার পর সম্পূর্ণ মীলাদ শরীফের রাস্তাই বন্ধ করে দেয়াটা বাক্যগত গঠন প্রণালী অনুযায়ী অযৌক্তিক। নিষিদ্ধতার কিছু নাই আবার সেটা তিনি বন্ধ করেছেন এটা বেমানান। তখনি চিন্তা ভাবনার বিষয় চলে আসে মূলত তিনি কি বন্ধ করতে চাইছেন? মীলাদ শরীফ, নাকি এতে প্রবেশ করা হিন্দুস্থানের বিদয়াত গানবাজনা, বেশরা কাজ?

এখন প্রশ্ন হচ্ছে যা ব্যাখ্যা করা হলো তা কি আমাদের নিজস্ব যুক্তি, নাকি এ বিষয়ে পূর্ববর্তীগণও কিছু বলেছেন।

হযরত খাজা আবূ সাঈদ মুজাদ্দিদী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সুযোগ্য সন্তান হযরত মাওলানা মাযহার ছাহিব মুজাদ্দিদী দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি “মাক্বামাতু সাঈদিয়াহ” কিতাবে লিখেন-

می فرمودند کہ خواند مولود شریف وقیام نزدیک ذکر ولادت باسعادت مستحب است دریں باب رسالئے خاص دارند ودر آں تحقیق فرمودہ اند کہ منع حضرت مجدد الف ثانی رحمۃ اللہ علیہ از مولد خوانی محمول بر سماع وغناست لاغیر.

অর্থ: “তিনি বলেছেন, পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করা এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমনের উল্লেখের সময় ক্বিয়াম করা বা দাঁড়িয়ে যাওয়া মুস্তাহাব। এ ব্যাপারে উনার একখানা পুস্তিকা রয়েছে। এ পুস্তিকায় তিনি বিষদভাবে ব্যক্ত করেছেন যে, পবিত্র মীলাদ শরীফ থেকে হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিষেধ করা কেবল গান-বাজনার উপরই প্রযোজ্য। অর্থাৎ, যে পবিত্র মীলাদ শরীফ অনুষ্ঠানে গান-বাজনা হয় কেবল সেটা থেকেই তিনি নিষেধ করেছেন।”

হযরত মাওলানা শাহ আহমদ সাঈদ মুজাদ্দিদী নাকশবন্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি (ওফাত ১২৭৭ হিজরী) উনার “আছবাতু মাওলিদি ওয়াল কিয়াম” কিতাবে মুকাদ্দিমায় আব্দুর রহমান নিজমানী উল্লেখ করেন-

اسی فرقہ کے کچھ لوگ حضرت مجددِ الفِ ثانی رضی اللہ عنہ کے مکتوبات کا غلط مطلب نکال کر یہ کہتے ہیں کہ آپ بھی محفلِ میلاد سے منع فرماتے تھے۔ حضرت مصنف، جو حضرتِ مجدد کے نسبی اور روحانی اولاد اور وارث ہیں، آپ نے اس بہتان کو رد کیا ہے، بلکہ مکتوبات شریف سے ثابت کیا ہے کہ حضرتِ مجدد میلاد شریف سے نہیں ، بلکہ بدعات اور بری رسموں سے منع فرماتے تھے۔ اس کے بعد آپ نے ایسے جھوٹے الزامات لگانے والوں کے بارے میں لکھا ہے:

একই স¤প্রদায়ের কিছু লোক হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার চিঠির অপব্যাখ্যা করে এবং বলে যে, তিনি মিলাদ শরীফ মাহফিলকে নিষেধ করতেন। সম্মানিত লেখক তিনি হযরত মুজাদ্দিদ আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলালাইহি উনার বংশধর এবং রূহানী আওলাদ  ও উত্তরাধিকারীও বটেণ। তিনি এ অপবাদ প্রত্যাখ্যান করেছেন। বরং তিনি মকতুবাত শরীফ থেকে প্রমাণ করেছেন যে, হযরত মুজাদ্দিদ আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি পবিত্র মীলাদ শরীফকে নিষেধ করেননি বরং কুপ্রথা ও বিদআতকে নিষেধ করতেন। অতঃপর এই ধরনের মিথ্যা অভিযুক্তদের সম্পর্কে লিখেছেন:

” سادہ لوح عوام کو گمراہ کرنے اور اپنا کھوٹا سکہ رائج کرنے کیلئے اِس فرقۂ باطلہ نے ایک نیا طریقہ نکالا ہے۔ ہمارے بزرگوں اور اماموں کو بدنام کرتے ہیں، کہتے ہیں فلاں بزرگ نے یوں لکھا، فلاں نے یوں لکھا۔ اللہ تعالی اِن کے جھوٹ سے پاک ہے۔“

“এই ভ্রান্ত সম্প্রদায় সহজ সরল মানুষকে বিভ্রান্ত করতে এবং তাদের ভ্রান্ত মতবাদ চালু করার জন্য একটি নতুন পদ্ধতি নিয়ে এসেছে। তারা আমাদের বুযুর্গ ও ইমামদের অপমান করে, তারা বলে অমুক অমুক বুযুর্গ এই  লিখেছেন, অমুক অমুক এটা লিখেছেন। মহান আল্লাহ তায়ালা তাদের মিথ্যাচার থেকে হিফাজত করুন। (আছবাতু মাওলিদি ওয়াল কিয়াম ৭-৮ পৃষ্ঠা)

اے سائل! تونے حضرتِ امامِ ربانی (مجددِ الفِ ثانی رَضِیَ اللہ تعال عنہ) کے متعلق کہا ہے (کہ آپ محفلِ میلاد سے منع فرماتے تھے)۔ تیرا یہ قول قطعاً غلط ہے۔ ہمارے امام اور قبلہ نے گانے کی مجلس میں حاضر ہونے سے منع کیا ہے، اگرچہ اُس مجلس میں قرآن کی تلاوت اور نعتیہ قصائد پڑھے جائیں۔ حضرت امامِ ربّانی نے قرآن و حدیث کے پڑھنے سے منع نہیں فرمایا، جیسا کہ حضرت امامِ ربانی کی مراد سے بے خبر لوگوں نے گمان کرلیا ہے۔ اِس قسم کی بات حضرت امامِ ربانی پر بہت بڑا بہتان ہے۔

হে প্রশ্নকারী! তুমি হযরত ইমাম রব্বানী মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সম্পর্কে বলছো  (তিনি মিলাদ উদযাপন করতে নিষেধ করতেন)। তোমার এ বক্তব্য একেবারেই ভুল। আমাদের ইমাম এবং কিবলা (হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি) গানের মজলিসে উপস্থিত হতে নিষেধ করেছেন, যদিও সেই মজলিসে পবিত্র কুরআন শরীফ তেলাওয়াত ও না’ত শরীফ, কাছীদা শরীফ পাঠ করা হয়। হযরত ইমাম রব্বানী পবিত্র কুরআন শরীফ-হাদীছ শরীফ পাঠ করতে নিষেধ করেননি, যেভাবে হযরত ইমাম রব্বানীর অর্থ সম্পর্কে অজ্ঞ লোকেরা ধরে নিয়েছে। এ ধরনের কথা হযরত ইমাম রব্বানীর উপর বড় অপবাদ।” (আছবাতু মাওলিদি ওয়াল কিয়াম ৪১ পৃষ্ঠা )

হযরত মাওলানা শাহ আহমদ সাঈদ মুজাদ্দিদী নাকশবন্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি (ওফাত ১২৭৭ হিজরী) তিনি উনার কিতাবে আরো লিখেন-

হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পত্রের তৃতীয় খণ্ডে বলেন:

”اچھی آواز سے صرف قرآنِ مجید اور نعت و منقبت کے قصائد پڑھنے میں کیا حرج ہے؟ منع تو یہ ہے کہ قرآنِ مجید کے حروف کو تبدیل و تحریف کیا جائے اور مقاماتِ نغمہ کا التزام کرنا اور الحان کے طریق سے آواز کو پھیرنا اور اس کے مناسب تالیاں بجانا جو کہ شعر میں بھی ناجائز ہیں۔ اگر ایسے طریقہ سے مولود پڑھیں کہ قرآنی کلمات میں تحریف واقع نہ ہو اور قصائد پڑھنے میں شرائطِ مذکورہ متحقق نہ ہوں اور اس کو بھی صحیح غرض سے تجویز کریں تو پھر کون سی رکاوٹ ہے؟“

“সুমিষ্ট স্বরে পবিত্র কুরআন শরীফ পড়া এবং হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রশংসায় কবিতা পাঠে দোষের কী আছে?  নিষিদ্ধ তো হল কুরআনের বিকৃতি, অক্ষর পরিবর্তন ইত্যাদি। আর সুরের পথ ধরে গানের ন্যায় ছন্দময় সুর তোলা ও সে অনুযায়ী তালি বাজানো, যা কবিতার মধ্যেও নাজায়েয। আপনি যদি এমনভাবে মীলাদ শরীফ পাঠ করেন যাতে কুরআনের শব্দ বিকৃত না হয় এবং কাছীদা শরীফ পাঠে উপরোক্ত বিষয়গুলো  না থাকে এবং সাথে সাথে নিয়তও সহীহ হয় তাহলে তাতে নিষিদ্ধতার কী আছে?

پس معلوم ہوا کہ حضرتِ مجدد قُدِّسَ سِرُّہٗ کی جو عبارت میلاد کے منکر بطورِ دلیل پیش کرتے ہیں، اُس عبارت سے حضرتِ مجدد کی مراد یہ ہے کہ ”قصائد اور نعت خوانی میں نغمہ کا التزام کرنا، الحان کے طریق سے آواز کو پھیرنا اور اس کے مناسب تالیاں بجانا منع ہے۔“ جیسا کہ حضرت کی مذکورہ عبارت سے بالکل ظاہر ہے۔ مخالفین نے غلط سمجھا ہے، حضرتِ امام نے مطلقاً محفلِ میلاد کو منع نہیں فرمایا۔ پس حق ثابت ہوگیا۔

সুতরাং জানা যায় যে, হযরত মুজাদ্দিদ কাদ্দাসিররাহু উনার যে ইবারত মীলাদ শরীফ পাঠ অস্বীকারকারীরা যুক্তি হিসেবে পেশ করেণ, হযরত মুজাদ্দিদ রহমতুল্লাহি আলাইহি’র সেই ইবারত দ্বারা, “কবিতা ও না’ত শরীফ পাঠে গানের মিশ্রন করা, লেহানের মাধ্যমে কণ্ঠকে ঘুরিয়ে দেয়া এবং তালি বাজানো নিষেধ। বিরোধীরা হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ইবারতের ভুল ব্যাখ্যা করেছে। হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি মীলাদ শরীফের মাহফিলকে নিষেধ করেননি। এটা সত্য প্রমাণিত হলো।”

سادہ لوح عوام کو گمراہ کرنے اور اپنا کھوٹا سکہ رائج کرنے کیلئے اِس فرقۂ باطلہ نے ایک نیا طریقہ نکالا ہے۔ ہمارے بزرگوں کو بدنام کرتے ہیں، کہتے ہیں فلاں بزرگ نے یوں لکھا، فلاں نے یوں لکھا۔ اللہ تعالیٰ اِن کے جھوٹ سے پاک ہے۔

সহজ সরল মানুষকে বিভ্রান্ত করতে এবং তাদের ভ্রান্ত কথার প্রচলন করতে এই ভ্রান্ত সম্প্রদায় নতুন পদ্ধতি নিয়ে এসেছে। তারা আমাদের বড়দের অপমান করে, তারা বলে অমুক অমুক মুরুব্বীরা অমুক লিখেছেন, অমুক অমুক লিখেছেন। মহান আল্লাহ পাক তাদের এহেন মিথ্যাচার থেকে মুক্ত রাখুন।” (আছবাতু মাওলিদি ওয়াল কিয়াম ৪৫ পৃষ্ঠা)

সর্বপোরি জানা দরকার নকশবন্দীয়া মুজাদ্দেদীয়া তরীক্বায় কি মীলাদ শরীফ নিষেধ মনে করা হয়? এ সিলসিলা বা এই খন্দানের কেউ কি মীলাদ শরীফ পাঠ করেন না? বই পুস্তক লিখেন নাই? বিরোধিতা করার আগে কমছে কম এতটুতু লেখাপড়া ও অনুসন্ধান করা দরকার ছিলো।

আসুন আমরা দেখি নকশবন্দীয়া মুজাদ্দিদীয়া তরীকার বূজূর্গগণ যারা মীলাদ শরীফের উপর কিতাব লিখেছেন উনাদের নাম ও কিতাবের নামগুলো জেনে নিই। অবশ্য উনারা ছাড়াও এই তরীকার অনুসরণকারী আরো অনেক বুযূর্গগণ পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করেছেন ও কিতাব লিখেছেন।

১) হযরত মাহমুদ ইবনে হুসাইন আল আফদালী আল হাজীক্বী নক্বশবন্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি (ওফাত ৯৭০ হিজরী)। তিনি পবিত্র মদীনা শরীফ অবস্থান করতেন। তিনি মীলাদ শরীফের উপর কিতাব লিখেন ‘মাওলিদ আন নাবী’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

২) মুহম্মদ আলী ইবনে আল্লান আল মক্কী নক্বশবন্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি (১০৫৭ হিজরী)। তিনি মীলাদ শরীফ বিষয়ে কিতাব লিখেন- “মাওরিদ আছ ছাফা ফি মাওলিদ আল মুস্তাফা” ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

৩) হযরত ইমাম আব্দুল গনি নাবেলুসী রহমতুল্লাহি আলাইহি (ওফাত ১১৪৩ হিজরী)। তিনি মীলাদ শরীফ বিষয়ে কিতাব লিখেন- “আল মাওলিদ আন  নববী” ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ।

৪) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মুহম্মদ কাশগরী জাহিদী নকশবন্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি (ওফাত ১১৭৪ হিজরী)। তিনি মীলাদ শরীফের উপর কিতাব লিখেন ‘মাওলিদ আন নাবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ।’

৫) হযরত মুস্তফা সালামী ইস্তামবুলী নাকশবন্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি (ওফাত ১২৮৮ হিজরী)। তিনি মীলাদ শরীফের বিষয়ে কিতাব লিখেন- “মাওলিদ আন নবী” ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

৬) হযরত শাহ আহমদ সাঈদ মুজাদ্দিদী রহমতুল্লাহি আলাইহি (ওফাত ১২৭৭ হিজরী) তিনি মীলাদ শরীফের উপর ৩ টি কিতাব লিখেন- আছবাত আল মাওলিদ ওয়াল কিয়াম, আয যিকির আশ শরীফ ফি আছবাত আল মাওলিদিল মুনীফ, সা’দুল বায়ান ফি মাওলীদিল সাইয়্যিদিল ইনসি ওয়াল জ্বিন।

৭) হযরত মাওলানা মুফতী ইরশাদ হুসাইন রামপুরী মুজাদ্দিদী রহমতুল্লাহি আলাইহি (ওফাত ১৩১১ হিজরী)। তিনি মীলাদ শরীফ বিষয়ে অনেকগুলো ফতোয়া লিখেন।

৮) হযরত মুফতী রেজা আলী বেনারশী মুজাদ্দিদী রহমতুল্লাহি আলাইহি (ওফাত ১৩১২ হিজরী) । তিনি লিখেন- মাযাহীর আল হক্ব ফি আছবাত আল মাওলিদ ওয়াল কিয়াম।

৯) হযরত শাহ মুহম্মদ মাসুম মুজাদ্দিদী রহমতুল্লাহি আলাইহি (ওফাত ১৩৪১ হিজরী) । উনার লিখিত কিতাব- আহসানুল কালাম ফি আছবাত আল মাওলিদ ওয়াল কিয়াম।

১০) ইমাম হযরত ইউসুফ বিন ইসমাঈল নাবেহানী নকশবন্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি (ওফাত ১৩৫০ হিজরী)। তিনি মীলাদ শরীফ বিষয়ে কিতাব লিখেন- জাওয়াহির আন নাজম আল বাদী ফি মাওলিদিশ শাফিয়ী ।

১১) সাঈদ দীদার আলী আলওয়ারী নকশবন্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি ( ওফাত ১৩৫৪ হিজরী)। তিনি কিতাব লিখেন- রাসূল আল কালাম মিন কালামী সাইয়্যিদিল আনাম ফি বায়ানিল মাওলিদ ওয়াল কিয়াম।

১২) হযরত জাহিদ আল কাওছারী নকশবন্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি (১৩৭১ হিজরী)। তিনি পবিত্র মীলাদ শরীফ বিষয়ে অনেক আলোচনা উনার কিতাবে করেছেন।

মূলত হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি সম্পর্কে উনার মকতুবাত শরীফকে কেন্দ্র করে এই অপপ্রচার ওহাবীদের দ্বারা প্রচারিত। উনার বক্তব্যকে ভুল বুঝে এই ফিতনায় অনেকে পতিত হয়েছে। মহান আল্লাহ পাক উনার খাছ ওলীগণ হাজার বছরের মুজাদ্দিদ মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহির বিষয়ে মিথ্যা অপপ্রচার সমূলে উৎপাটন করে দিয়েছেন। মহান আল্লাহ পাক ফিতনা বিস্তারকারীদের হিদায়েত দান করুন এবং একজন বিখ্যাত ওলীর বিরুদ্ধে মিথ্যা রটনা থেকে সবাইকে পানাহ দান করুন। আমীন।

-খাজা মুহম্মদ নুরুদ্দীন পলাশ

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম