প্রতিবছর প্রায় ৪৫ লাখ মানুষ খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণে মরণঘাতী রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ভেজাল খাবারে দেশব্যাপী চলছে নীরব গণহত্যা। ভেজাল দমনে ইসলামী মূল্যবোধের প্রতিফলন ঘটাতে হবে।

সংখ্যা: ২৫৭তম সংখ্যা | বিভাগ:

জমির ফসল তোলা থেকে শুরু করে খাদ্য প্রক্রিয়াজাত করণের জন্য প্রস্তুত ফ্যাক্টরীগুলোতেও মেশানো হচ্ছে ভেজাল। ভেজালেরও ধরন রয়েছে ভিন্ন। যে খাদ্যে যে ধরনের ভেজাল মেশালে সহজে চোখে ধরা পড়ার কোনো সুযোগ নেই সেদিকেই নজর রাখছে চক্রান্তকারীরা। শুঁটকি আড়তে প্রকাশ্যেই কীটনাশক মেশানো হচ্ছে। ভেজাল খাদ্য থেকে জাতিকে রক্ষার জন্য সরকারি উদ্যোগ নেই বললেই চলে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ভোক্তা সাধারণ।

সরকারি কর্মকর্তাদের জ্ঞাতসারেই বেকারি পণ্যে দুনিয়ার ভেজাল। ফলে মাছে ফরমালিন। অপরিপক্ক টমেটো হরমোন দিয়ে পাকানো হচ্ছে। পচনরোধে বিষাক্ত ফরমালিন, তাজা দেখাতে মাছে রেড অক্সাইড, ফলমূল ও শাক-সব্জিতে কার্বাইড মিশানো হয়ে থাকে। এসব রাসায়নিক পদার্থ মানব দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। মানুষের লিভার, কিডনি নষ্ট করে ফেলে। মানুষ তার স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। অসুস্থ হয়ে নিতে হয় হাসপাতালে। যে দেশে নুন আনতে পান্তা ফুরায়, সেখানে রোগ বালাই যেন গোদের উপর বিষ ফোঁড়ার মতো। বিকল্পহীন এ সব ভেজাল খাদ্য গ্রহণ করে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে নানা রকম ক্রনিক রোগে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, দেশবাসী আর কত ভেজাল খাবে? কথায় বলে, মাছে-ভাতে বাঙালি। সেই মাছ-ভাত এখন আর নিরাপদ নেই। মাছে ও দুধে ফরমালিন, চালে আর্সেনিক, ফলমূলে কার্বাইডসহ নানা বিষাক্ত কেমিক্যাল, সবজিতে রাসায়নিক কীটনাশক, জিলাপি-চানাচুরে মবিল, বিস্কুট, আইসক্রিম, জুস, সেমাই, আচার, নুডুলস এবং মিষ্টিতে টেক্সটাইল ও লেদার রং, মুড়িতে ইউরিয়া-হাইড্রোজ, ক্যাডমিয়াম, লেড, ইকোলাই।

ভেজাল খাবার খেয়ে জাতি ক্রমাগত মৃত্যুর দিকে চলে যাচ্ছে, নতুন প্রজন্ম মেধাহীন পঙ্গু জীবনের মতো এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে আগাচ্ছে। কোথায় নেই ভেজাল? সবকিছুতেই ভেজাল। নোংরা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে ভেজাল ও নকল পণ্য। সেই পণ্য চলে আসছে বাজারে। আসল পণ্যের হুবহু নকল সিল-মনোগ্রাম, এমনকি অনেক ক্ষেত্রে বিএসটিআইয়ের অনুমোদন না নিয়ে নকল অনুমোদনপত্র ছাপা হয়ে যাচ্ছে প্যাকেটের গায়ে। নকলের দাপটে এখন আসল পণ্য চেনাই দায় হয়ে পড়েছে। বাজার সয়লাব হয়ে গেছে এসব নকল পণ্যে।

ফরমালিন মেশানো খাবার ধরা পড়লে জেল-জরিমানাও করা হচ্ছে, তারপরও থেমে নেই তারা। জীবন রক্ষাকারী খাবার স্যালাইন নকল তৈরি হচ্ছে। অস্বাস্থ্যকর-নোংরা পরিবেশে কোনো ধরনের ল্যাবরেটরি ও রসায়নবিদ ছাড়াই স্যালাইনের মতো অতি জরুরী একটি ওষুধ তৈরি করে বাজারজাত করা হচ্ছে। কাউন ও কাঠের গুঁড়া মিশিয়ে মসলা তৈরি করা হয়। ঘাসের গুঁড়ার সঙ্গে রং মিশিয়ে নামি-দামী ব্র্যান্ডের মসলা তৈরি করে একটি চক্র। ছোলা ও মুড়ি সাদা করতে মেশানো হয় হাইড্রোজ। কৃত্রিম রং মিশিয়ে নকল ঘি বানানো হচ্ছে। এমনকি শিশুদের বিকল্প খাদ্যেও মেলামিন (ভেজাল) মেশানো হচ্ছে। আম, আনারস ও টমেটোতে কেমিক্যাল মিশিয়ে হলুদ করা হচ্ছে। এমনিভাবে দেশের প্রতিটি খাবারেই ভেজাল মেশানো হচ্ছে। খাদ্যে ভেজাল হিসেবে জুতার কালি ও কাপড়ের রংও উদ্ধার করেছে বিভিন্ন অভিযানের সময় মোবাইল কোর্ট।

মানুষ ভেজাল খেয়ে অসুস্থ হয়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়। কিন্তু ডাক্তার তো রোগ ভালো করার ওষুধ দিতে পারে, ভেজালমুক্ত খাবার নয়। তাই বেঁচে থাকার প্রয়োজনে রোগীকে ওষুধের সঙ্গে সেই ভেজাল খাবারই খেতে হচ্ছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) তথ্যমতে, বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ৪৫ লাখ মানুষ খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণে বিভিন্ন মরণঘাতী রোগে আক্রান্ত হয়।

শুধু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাই নয়, এ ধরনের ভয়াবহ চিত্র পাওয়া গেছে একাধিক গবেষণায়ও। কিডনি ফাউন্ডেশনের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশের ১৬ শতাংশ মানুষ কিডনি রোগে আক্রান্ত। এর মধ্যে প্রতিবছর এ রোগে মারা যাচ্ছে কমপক্ষে ৩৫ হাজার মানুষ। এ হিসাবে কিডনি রোগে মৃত্যুর সংখ্যা প্রতি ঘণ্টায় প্রায় পাঁচজন। দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, ৯০ শতাংশেরও বেশি কিডনি রোগীর মৃত্যু হয় বিনাচিকিৎসায়। এ ছাড়া ৮০ শতাংশ অকেজো হওয়ার পর রোগী জানতে পারেন, তার কিডনি অকেজো হয়েছে। জীবন ধারণের জন্য কিডনি অপরিহার্য অন্তত একটা সুস্থ কিডনি থাকতেই হবে। যদি দুইটা কিডনিই নষ্ট হয়ে যায়, তবে শেষ চিকিৎসা হলো কিডনি প্রতিস্থাপন। আমাদের দেশে প্রচুর রোগী কিডনি ফেইলিউরে আক্রান্ত। আমাদের ৮০ ভাগ দরিদ্র ও অসহায় তাদের পক্ষে এই ব্যয়ভার বহন করা যথেষ্ট কষ্টসাধ্য।

প্রসঙ্গত, ভেজাল রোধে এ দেশে কঠোর আইন আছে, কিন্তু প্রয়োগ নেই। ভেজাল খাবারই কিডনি রোগের মূল কারণ, তাই এটা প্রতিরোধে সরকারের জোড়ালো পদক্ষেপের পাশাপাশি ভোক্তাদেরও প্রতিবাদী ও সচেতন হতে হবে।

খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি মানুষসহ সকল মাখলুককে সৃষ্টি করে তাদের জন্য ব্যবস্থা করেছেন অন্ন-বস্ত্র বাসস্থানসহ প্রয়োজনীয় সবকিছু। বিশুদ্ধতা ও নির্মলতায় সমৃদ্ধ করে বিশ্ব-প্রকৃতিতে তিনি সৃষ্টি করেছেন হাজারো নিয়ামত। নির্ভেজাল খাদ্য তন্মধ্যে অন্যতম। পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে- “আর আকাশ থেকে আমি বিশুদ্ধ পানি বর্ষণ করি।” (পবিত্র সূরা ফুরকান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৪৮)

মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন- “হে মানবজাতি! পৃথিবীতে যা কিছু বৈধ ও পবিত্র খাদ্যবস্তু আছে তা থেকে তোমরা আহার করো এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয় সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।” (পবিত্র সূরা বাকারা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৬৮)

কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো- মানুষের কৃতকর্মের কারণেই মানুষ আজ ভেজালমুক্ত নিরাপদ খাদ্য থেকে বঞ্চিত। এর দায় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় পরিচালিত রাষ্ট্র তথা সরকারের। এর দায় আমাদের। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- “মানুষের কৃতকর্মের কারণেই স্থলে ও পানিতে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে।” (পবিত্র সূরা রুম শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৪১)

দেশবাসী ও জাতির নিরাপদ ও ভেজালমুক্ত খাদ্যের যোগান তখনই নিশ্চিত হবে এবং খাদ্যে ভেজাল প্রয়োগের মানবতা বিরোধী ও শরীয়ত গর্হিত এ প্রবণতা দূরীকরণে সর্বস্তরের ভোক্তা ও বিক্রেতার মাঝে তখনই সচেতনতা তৈরি হবে, যখন এদেশের ৯৮ ভাগ অধিবাসী মুসলমান উনাদের মধ্যে সম্মানিত ইসলামী অনুভূতি ও জজবা তৈরি হবে।

-আল্লামা মুহম্মদ আশিকুল্লাহ, ঢাকা

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৭

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৬

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩৫

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২৫ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস ওহাবী ফিরক্বাসহ সবগুলো বাতিল ফিরক্বা ইহুদী-নাছারাদের আবিষ্কার! তাদের এক নম্বর দালাল

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ‘সংবিধানের প্রস্তাবনা’, ‘মৌলিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা’ ‘জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতা’ এবং ‘জাতীয় সংস্কৃতি’ শীর্ষক অনুচ্ছেদের সাথে- থার্টি ফার্স্ট নাইট তথা ভ্যালেন্টাইন ডে পালন সরাসরি সাংঘর্ষিক ও সংঘাতপূর্ণ’। পাশাপাশি মোঘল সংস্কৃতির দান পহেলা বৈশাখ পালনও প্রশ্নবিদ্ধ।সংবিধানের বহু গুরুত্বপূর্ণ ও বিশেষ স্পর্শকাতর অনুচ্ছেদের প্রেক্ষিতে ৯৫ ভাগ মুসলমানের এদেশে কোনভাবেই থার্টি ফার্স্ট নাইট ও ভ্যালেন্টাইন ডে পালিত হতে পারে না।পারেনা গরিবের রক্ত চোষক ব্র্যাকের ফজলে আবেদও ‘নাইট’ খেতাব গ্রহণ করতে। পারেনা তার  নামের সাথে ‘স্যার’ যুক্ত হতে। পাশাপাশি মোঘল সংস্কৃতির দান পহেলা বৈশাখ পালনও প্রশ্নবিদ্ধ।