প্রসঙ্গ : টিআইবি রিপোর্টে ২২ হাজার কোটি টাকা ঘুষের তথ্য। ঘুষই সমাজে সব অভাব থেকে অনিয়মের মূল কারণ। ঘুষ নির্মূলীকরণে পবিত্র দ্বীন ইসলামী আদর্শের প্রতিফলন ব্যতীত কোনো বিকল্প নেই

সংখ্যা: ২২১তম সংখ্যা | বিভাগ:

সব প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ ও সালাম মুবারক।

সেবা খাতে গেল বছরে দুর্নীতি হয়েছে ২১ হাজার ৯৫৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা। যা ২০১১-২০১২ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের ১৩ দশমিক ৬ ভাগ। জিডিপির হিসাবে তা ২ দশমিক ৪ ভাগ। টাকার অংকে এ দুর্নীতি ২০১০ সালের তুলনায় দ্বিগুণ।

২০১০ সালে এ খাতে মোট ৯ হাজার ৫৯১ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছিল। এক বছরের ব্যবধানে দুর্নীতির কারণে দেশের সাধারণ জনগণ ১২ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা ঘুষ হিসেবে বেশি দিতে বাধ্য হয়েছে। শতকরা হিসাবে এক বছরে সেবাখাতে দেশে দুর্নীতি বেড়েছে প্রায় ১৩০ ভাগ।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী গেল বছর সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত খাত ছিল শ্রম ও অভিবাসন খাত। নতুন অন্তর্ভুক্ত এ খাতের পরেই রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ভূমি প্রশাসন। দুর্নীতিতে গতবারের শীর্ষস্থান অধীকারী বিচারিক সেবাখাত চতুর্থ স্থান দখল করেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী গেল বছর প্রতিটি পরিবার গড়ে ১৩ হাজার ৮৪ টাকা করে ঘুষ দিয়েছে। বিভিন্ন সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে ‘ছোট দুর্নীতি’র আওতায় এ পরিমাণ ঘুষের লেনদেন হয়েছে। এর বাইরে পদ্মা সেতু কেলেঙ্কারি, সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক কেলেঙ্কারি, ডেসটিনি, যুবক ও সমবায়ের নামে অন্যান্য দুর্নীতির হিসাব এ সমীক্ষায় আসেনি। আর্থিক দুর্নীতি ও হয়রানির কারণে এসব প্রতিষ্ঠানে সেবাগ্রহিতার সংখ্যা কমে গেছে।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সেবা গ্রহীতাদের প্রায় ৭৬ শতাংশ দুর্নীতির শিকার হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ৮৯ শতাংশ লোক হাইওয়ে পুলিশের দুর্নীতির শিকার হয়। এছাড়া ট্রাফিক পুলিশের হাতে ৮৮ শতাংশ, স্পেশাল ব্রাঞ্চের হাতে ৮৩ শতাংশ ও থানা পুলিশের হাতে সাড়ে ৭৩ শতাংশ মানুষ হয়রানির শিকার হয়েছে।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীতে ঘুষ গ্রহণে এগিয়ে আছে স্পেশাল ব্রাঞ্চ। স্পেশাল ব্রাঞ্চের ৮৩ ভাগ সেবাগ্রহীতা ঘুষ দিতে বাধ্য হয়েছে। হাইওয়ে পুলিশকে ঘুষ দিতে বাধ্য হয়েছে ৮০ দশমিক ৭০ শতাংশ সেবাগ্রহীতা। ট্রাফিক পুলিশ ৮০ দশমিক ৬০ ভাগ ক্ষেত্রে ও থানা পুলিশ ৬৩ ভাগ ক্ষেত্রে ঘুষ আদায় করে।

এ দিকে সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে ঘুষ আদায়ের ক্ষেত্রে সংখ্যার বিচারে পিছিয়ে থাকলেও পরিমাণের দিকে এগিয়ে আছে থানা পুলিশ। গত বছর সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে থানা-পুলিশ গড়ে ৭ হাজার ৯১৩ টাকা করে ঘুষ আদায় করেছে। সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে ট্রাফিক পুলিশ গড়ে আদায় করছে ৩ হাজার ২৫ টাকা। সার্বিকভাবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে গড়ে ৭ হাজার ৮০ টাকা করে ঘুষ আদায় করছে।

উল্লেখ্য, স্বাধীনতা উত্তর এদেশে ঘুষ গ্রহণের হার প্রতিবছরই বাড়ছে। বাংলাদেশ দ-বিধিতে ১৬১ ধারায় ঘুষের শাস্তি ৩ বৎসর পর্যন্ত বর্ণিত হয়েছে। এছাড়া দুর্নীতি দমন আইন ২০০৪ সালের ৫ নং আইনের ১ ও ২ উপধারা এবং কাস্টমস এ্যাক্ট ১৯৬৯-এর ৮১ ও ৮২ ধারায় ঘুষের শাস্তি সম্পর্কে বলা হয়েছে। কিন্তু এতসব আইনের পরও দেশে ঘুষের প্রচলন কমেনি বরং উল্টো জ্যামিতিক হারে বাড়ছে। প্রতিভাত হচ্ছে প্রচলিত আইন তথা প্রচলিত ব্যবস্থায় আরো শক্ত আইন করলেও ঘুষ বন্ধ করা সম্ভব নয়।

ঘুষ মূলত তখনই বন্ধ করা যাবে যখন ঘুষের বিপরীতে ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার অর্থের পরিবর্তে চিরস্থায়ী দুনিয়ার আযাব-গযব, জাহান্নামের আগুন তথা মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের অসন্তুষ্টির কথা মুবারক বিশ্বাস করানো যাবে। ঘুষ সম্পর্কিত পবিত্র কুরআন শরীফ-পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আদেশ নিষেধ মুবারক বাণী জানানো ও বুঝানো যাবে।

পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ঘুষ প্রসঙ্গে ইরশাদ মুবারক করেন- “তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস কর না এবং মানুষের সম্পত্তির কিয়দাংশ জেনে শুনে অন্যায়রূপে গ্রাস করার উদ্দেশ্যে বিচারকদের ঘুষ দিও না।” (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৮৮)

পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ উনার পবিত্র আয়াত শরীফ ১৬৮ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “হে মানবজাতি, জমিনের মধ্যে যা কিছু রয়েছে, তা থেকে তোমরা হালাল ও পবিত্র বস্তুসমূহ খাও। আর শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করনা, কেননা সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।”

ঘুষের নিকৃষ্টতা সম্পর্কে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনেক হাদীছ শরীফ মুবারক রয়েছে। তিনি উম্মতকে ঘুষের ভয়াবহতা সম্পর্কে কঠোরভাবে সতর্ক করেছেন। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি “ঘুষ দাতা-গ্রহীতা উভয়কেই অভিসম্পাত করেছেন।” (পবিত্র তিরমিযি শরীফ ও পবিত্র আবু দাউদ শরীফ)

হযরত আমর ইবনে আস  রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি, যে সমাজে জেনা-ব্যভিচার সুদ-ঘুষ, দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়ে অথচ এর কোনো বিচার হয় না। সেই সমাজ দারিদ্র্য ও দুর্ভিক্ষের করাল গ্রাসে নিপতিত না হয়ে পারে না। আর যে সমাজে ঘুষের কারবার ছড়িয়ে পড়ে সে সমাজে ভীতি ও সন্ত্রাস সৃষ্টি না হয়ে পারে না (মুসনাদে আহমদ শরীফ)

প্রতিভাত হচ্ছে যে, ঘুষ শুধু ঘুষদাতা ও গ্রহীতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় বরং এটার কারণেই গোটা সমাজে অভাব থেকে আরম্ভ করে সব অনিয়মই বিরাজ করে। ঘুষ একটি সামাজিক ব্যাধি। এর বিরুদ্ধে ধর্মীয় মূল্যবোধ তথা পবিত্র দ্বীন ইসলামী মূল্যবোধ বিস্তারের কোনো বিকল্প নেই। সঙ্গতকারণেই তাই বলতে হয়, রাষ্ট্রধর্ম পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দেশ বাংলাদেশ যত তাড়াতাড়ি ঘুষ সম্পর্কিত পবিত্র দ্বীন ইসলামী উনার আদর্শের প্রতিফলন ঘটাতে পারবে তত তাড়াতাড়ি সব অভাব-অনটন-অনিয়ম অরাজকতা থেকে উত্তরণ লাভ করতে পারবে।

মূলত এসব অনুভূতি ও দায়িত্ববোধ আসে  পবিত্র ঈমান ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাদের অনুভূতি ও প্রজ্ঞা থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত মুবারক তথা ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ মুবারক। যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ সে মহান ও অমূল্য নিয়ামত হাছিল সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের তা নছীব করুন। (আমীন)

-মুহম্মদ আশিকুল্লাহ

খতমে নুবুওওয়াত প্রচার কেন্দ্র খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির “ইসলামী শরীয়তের হুকুম মুতাবিক যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হয় যেমন-  কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩ দিন এরপর তওবা না করলে তাদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।”

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৩

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১২

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২১

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩১