প্রায় সাড়ে ১৪০০ বছর পর মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের পক্ষ থেকে বিশেষভাবে ইলিম মুবারক প্রাপ্ত হয়ে মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত সুলত্বানুন নাছীর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুস সালাম মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত اِسْتَـوٰى (ইস্তাওয়া) শব্দ মুবারক উনার হাক্বীক্বত মুবারক প্রকাশ-২

সংখ্যা: ২৮৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

(২৮৪তম সংখ্যার পর)

ইস্তাওয়া সম্পর্কে হযরত ইমাম মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের অভিমত

 

আল্লামা হযরত ইমাম আবূ আব্দুল্লাহ মুহম্মদ ইবনে আহমদ ইবনে আবূ বকর ইবনে ফাররাহ্ আনছারী খাযরাজী শামসুদ্দীন কুরতুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিছাল শরীফ ৬৭১ হিজরী শরীফ) তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘তাফসীরে কুরতুবী শরীফ’ উনার মধ্যে বলেন,

وَلَـمْ يُـنْكِـرْ اَحَدٌ مِّنَ السَّلَفِ الصَّالِحِ اَنَّهُ اسْتَـوٰى عَلـٰى عَرْشِهٖ حَقِـيْـقَةً وَّخُصَّ الْعَرْشُ بِذٰلِكَ لِاَنَّهٗ اَعْظَمُ مَـخْلُوْقَاتِهٖ وَاِنَّـمَا جَهِلُوْا كَـيْفِيَّةَ الِْاسْتِوَاءِ فَاِنَّهٗ لَا تُـعْلَمُ حَقِيْـقَـتُهٗ

অর্থ: “সালফে ছালেহীন অর্থাৎ পূর্ববর্তী সমস্ত ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা প্রত্যেকেই এ বিষয়ে স্বীকৃতি দিয়েছেন যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার আরশে আযীম মুবারক-এ হাক্বীক্বীভাবে ইস্তাওয়া হয়েছেন। এর মাধ্যমে আরশে আযীম বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত হয়েছেন। কেননা আরশে আযীম হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার মাখলূকাতের মধ্যে সবচেয়ে সুমহান। ইস্তাওয়ার কাইফিয়্যাত সম্পর্কে ইমাম-মুজতাহিদ রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা প্রত্যেকেই অজ্ঞ অর্থাৎ উনাদের কারো এ বিষয়ে কোনো ইলিম নেই। কেননা এ বিষয়ের হাক্বীক্বত অজানা।” (তাফসীরে কুরতুবী ৭/২১৯)

এ সম্পর্কে আল্লামা হযরত ইমাম মুহইউস সুন্নাহ আবূ মুহম্মদ হুসাইন ইবনে মাস‘ঊদ বাগভী শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিছাল শরীফ ৫১০ হিজরী শরীফ) তিনি বলেন,

 ﴿ثُـمَّ اسْتَـوٰى عَلَى الْعَرْشِ﴾ قَالَ حَضْرَتْ اَلْكَلْبِـىُّ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَـيْهِ وَحَضْرَتْ مُقَاتِلٌ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَـيْهِ اسْتَـقَرَّ وَقَالَ حَضْرَتْ اَبُـوْ عُـبَـيْدَةَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَـيْهِ صَعِدَ وَاَوَّلَتِ الْمُعْتَزِلَةُ الْاِسْتِوَاءَ بِالْاِسْتِـيْلَاءِ فَاَمَّا اَهْلُ السُّنَّةِ يَـقُوْلُوْنَ اَلْاِسْتِوَاءُ عَلَى الْعَرْشِ صِفَةٌ للهِ تَـعَالـٰى بِلَا كَـيْفٍ يَـجِبُ عَلَى الرَّجُلِ الْاِيْـمَانُ بِهٖ وَيَكِلُ الْعِلْمَ فِـيْهِ اِلَـى اللهِ عَزَّ وَجَلَّ

অর্থ: “(ثُـمَّ اسْتَـوٰى عَلَى الْعَـرْشِ ছুম্মাস্তাওয়া ‘আলাল ‘আরশ এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার অর্থ) হযরত ইমাম কালবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এবং হযরত ইমাম মুক্বাতিল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অর্থাৎ উনারা বলেছেন, ‘অবস্থান করেছেন, স্থির হয়েছেন’। আর হযরত আবূ উবাইদাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, ‘তিনি আরোহণ করেছেন, উপরে উঠেছেন’। বাতিল ফেরক্বা মু’তাযিলারা ইস্তাওয়া শব্দের ব্যাখ্যা করে, ইস্তীলা’ শব্দ দ্বারা। যার অর্থ হচ্ছে- প্রধান্য ও বিজয় প্রতিষ্ঠা করা, কর্তৃত্ব করা ইত্যাদি’। আর আহলে সুন্নত ওয়াল জামা‘য়াত উনারা বলেন, ‘(আল ইস্তাওয়া ‘আলাল ‘আরশ) এটা হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার একখানা ছিফত মুবারক। যার কাইফিয়াত বা ধরণ অজানা। প্রত্যেক ব্যক্তির উপর এ বিষয়ে ঈমান রাখা এবং এ ব্যাপরে ইলিমকে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকটে ন্যস্ত করা বা অর্পন করা ওয়াজিব।” (তাফসীরে বাগবী ২/১৯৭)

আল্লামা কাযী ছানাউল্লাহ পানিপথী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বিশ্বখ্যাত তাফসীরগ্রন্থ ‘তাফসীরে মাযহারী শরীফ’-এ বলেন,

ثُـمَّ اسْتَـوٰى عَلَى الْعَرْشِ قَالَ حَضْرَتْ اَلْـبَـغْوِىُّ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَـيْهِ اَوَّلَتِ الْمُعْتَزِلَةُ اَلْاِسْتِوَاءَ بِالْاِسْتِيْلَاءِ وَاَمَّا اَهْلُ السُّنَّةِ يَـقُوْلُوْنَ اَلْاِسْتِوَاءُ عَلَى الْعَرْشِ صِفَةٌ للهِ تَـعَالـٰى بِلَا كَـيْفٍ يَـجِبُ عَلَى الرَّجُلِ الْاِيْـمَانُ بِهٖ وَيَكِلُ الْعِلْمَ فِـيْهِ اِلَـى اللهِ عَزَّ وَجَلَّ

অর্থ: “(ছুম্মাস্তাওয়া ‘আলাল ‘আরশ এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার অর্থ) হযরত ইমাম বাগভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,  মু’তাযিলারা ইস্তাওয়া শব্দের ব্যাখ্যা করে, ইস্তীলা’ শব্দ দ্বারা। যার অর্থ হচ্ছে- প্রধান্য ও বিজয় প্রতিষ্ঠা করা, কর্তৃত্ব করা ইত্যাদি’। আর আহলে সুন্নত ওয়াল জামা‘য়াত উনারা বলেন, ‘(আল ইস্তাওয়া ‘আলাল ‘আরশ) এটা হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার একখানা ছিফত মুবারক। যার কাইফিয়্যাত বা ধরণ অজানা। প্রত্যেক ব্যক্তির উপর এ বিষয়ে ঈমান রাখা এবং এ ব্যাপরে ইলিমকে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকটে ন্যস্ত করা বা অর্পন করা ওয়াজিব।” (তাফসীরে মাযহারী ৩/৩৫৯)

হযরত আল্লামা ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত তাফসীরগ্রন্থ ‘তাফসীরে ইবনে কাছীর শরীফ’ উনার মধ্যে বলেন,

{ثُـمَّ اسْتَـوٰى عَلَى الْعَرْشِ} فَلِلنَّاسِ فِـىْ هٰذَا الْمَقَامِ مَقَالَاتٌ كَثِـيْـرَةٌ جِدًّا لَـيْسَ هٰذَا مَوْضِعَ بَسْطِهَا وَاِنَّـمَا يُسْلِكُ فِـىْ هٰذَا الْمَقَامِ مَذْهَبُ السَّلَفِ الصَّالِحِ حَضْرَتْ مَالِكٌ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَـيْهِ وَحَضْرَتْ اَلْاوْزَاعِـىُّ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَـيْهِ وَحَضْرَتْ اَلثَّـوْرِىُّ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَـيْهِ وَحَضْرَتْ اَللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَـيْهِ وَحَضْرَتْ اَلشَّافِعِـىُّ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَـيْهِ وَحَضْرَتْ اَحْـمَدُ بْنُ حَنْـبَلٍ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَـيْهِ وَحَضْرَتْ اِسْحَاقُ بْنُ رَاهَوَيْهِ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَـيْهِ وَغَـيْـرُهُمْ مِنْ اَئِمَّةِ الْمُسْلِمِيْـنَ قَدِيْـمًا وَحَدِيْـثًا وَهُوَ اِمْرَارُهَا كَمَا جَاءَتْ مِنْ غَـيْـرِ تَكْيِـيْفٍ وَلَا تَشْبِـيْهٍ وَلَا تَـعْطِـيْلٍ

অর্থ: “ (ছুম্মাস্তাওয়া ‘আলাল ‘আরশ)। এ স্থানে লোকেরা বহু মতামত পেশ করেছেন এবং বহু জল্পনা-কল্পনা করেছেন। এখানে এগুলোর ব্যাখ্যা দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। এ ব্যাপারে আমরা শুধুমাত্র পূর্ববর্তী গুরুজনদের মাযহাব অবলম্বন করেছি। উনারা হচ্ছেন- হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হযরত আওযা‘য়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হযরত সুফিয়ান ছাওরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হযরত লায়েস ইবনে সা’দ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হযরত ইমাম শাফি‘য়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হযরত ইসহাক্ব ইবনে রাহওয়াই রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিসহ পূর্ববর্তী ও পরবর্তী মুসলিম ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম। উনাদের অভিমত হচ্ছে- (ইস্তাওয়া সম্পর্কে) যেরূপ বর্ণিত রয়েছে, সেরূপ বিশ্বাস স্থাপন করা। কোনো কাইফিয়্যাত বা ধরণ, অবস্থা, সাদৃশ্যতা ও সংখ্যা নির্ধারণ ছাড়াই।” (তাফসীরে ইবনে কাছীর ৩/৪২৬-৪২৭)

তাফসীরে বাগভী, মাযহারী, আল আসমা ওয়াছ ছিফাত লিলবাইহাক্বী, লাওয়ামি‘উল আনওয়ারসহ আরো অন্যান্য কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন,

وَسَاَلَ رَجُلٌ حَضْرَتْ مَالِكَ بْنَ اَنَسٍ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَـيْهِ عَنْ قَـوْلِهٖ ﴿اَلرَّحْـمٰنُ عَلَى الْعَرْشِ اسْتَـوٰى﴾ كَـيْفَ اسْتَـوٰى فَاَطْرَقَ رَاْسَهٗ مَلِـيًّا وَعَلَاهُ الرُّحَضَاءُ ثُـمَّ قَالَ اَلِْاسْتِوَاءُ غَـيْـرُ مَـجْهُوْلٍ وَالْكَـيْفُ غَيْـرُ مَعْقُوْلٍ وَالْاِيْـمَانُ بِهٖ وَاجِبٌ وَالسُّؤَالُ عَنْهُ بِدْعَةٌ وَمَا اَظُنُّكَ اِلَّا ضَالًّا ثُـمَّ اَمَرَ بِهٖ فَاُخْرِجَ

অর্থ: “এক ব্যক্তি হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালাম মুবারক- (আর রহমানু ‘আলাল ‘আরশিস্তাওয়া) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলো যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি কিভাবে ইস্তাওয়া হয়েছেন? তখন তিনি উনার মাথা মুবারক অবনত করে সুদীর্ঘ সময় নিশ্চুপ থাকেন। আর উনার অবস্থা এমন হয় যে, প্রচুর পরিমাণ ঘাম ঝড়ে উনার পুরো শরীর ভিজে যায়, তিনি ক্লান্ত হয়ে যান। তারপর তিনি বলেন, ইস্তাওয়াটা সকলের জানা। এর কাইফিয়াত বা ধরণ সবার আক্বল বা বুঝের বাইরে। এই বিষয়ে ঈমান রাখা ওয়াজিব। আর এ সম্পর্কে প্রশ্ন করা বিদা‘য়াত তথা গোমরাহী। আমি তোমাকে গোমরাহ মনে করি। তারপর তিনি সুওয়ালকারীকে বের করে দেয়ার জন্য নির্দেশ দেন। তখন তাকে বের করে দেওয়া হয়।” (তাফসীরে বাগবী ২/১৯৭, তাফসীরে মাযহারী ৩/৩৫৯)

হযরত ইমাম আ’যম আবূ হানীফাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,

نُـقِرُّ بِاَنَّ اللهَ عَلَى الْعَـرْشِ اسْتَـوٰى مِنْ غَـيْـرِ اَنْ يَّكُوْنَ لَهٗ حَاجَةٌ اِلَـيْهِ وَاِسْتِـقْرَارٌ عَلَـيْهِ وَهُوَ الْـحَافِظُ لِلْعَرْشِ وَغَـيْـرِ الْعَرْشِ فَـلَوْ كَانَ مُـحْتَاجًا لَّمَّا قَدَّرَ عَلـٰى اِيْـجَادِ الْعَالَـمِ وَتَدْبِـيْـرِهٖ كَالْمَخْلُوْقِ وَلَوْ كَانَ مُـحْتَاجًا اِلَـى الْـجُلُوْسِ وَالْقَرَارِ فَـقَبْلَ خُلِقَ الْعَرْشُ اَيْنَ كَانَ اللهُ تَـعَالـٰى تَـعَالَـى اللهُ عَنْ ذٰلِكَ عُـلُـوًّا كَبِـيْـرًا

অর্থ: “(হযরত ইমাম আ’যম আবূ হানীফাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ‘আল ওয়াছিয়্যাহ’ নামক কিতাবে বর্ণনা করেন,) আমরা স্বীকৃতি দেই যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি আরশে আযীমের উপর ইস্তাওয়া হয়েছেন। যদিও আরশে আযীমের উপর ইস্তাওয়া হওয়ার এবং তার উপর স্থির হওয়ার উনার কোনো প্রয়োজন ছিলো না। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি আরশে আযীম এবং আরশে আযীম ব্যতীত সমস্ত সৃষ্টির হিফাযতকারী। যদি তিনি মুহতাজ হতেন, তাহলে তিনি সৃষ্টি জগৎকে অস্তিত্বে আনতে এবং তা পরিচালনা করতে সক্ষম হতেন না। না‘ঊযুবিল্লাহ! যেমন- সৃষ্টি জগৎ সক্ষম নয়। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি যদি বসা এবং অবস্থান করার মুহতাজ হতেন, তাহলে আরশে আযীম সৃষ্টি হওয়ার পূর্বে তিনি কোথায় ছিলেন? মহান আল্লাহ পাক তিনি এটা থেকে বহু উর্ধ্বে ছিলেন।” (আল ওয়াছীয়্যাহ্ ১০পৃ., শারহুল ফিক্বহিল আকবার ৬১ পৃ.,)

‘লাওয়ামি‘উল আনওয়ার’ কিতাবে উল্লেখ রয়েছেন,

وَرُوِىَ عَنِ الْاِمَامِ الشَّافِعِـىِّ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ اَنَّهٗ سُئِلَ عَنِ الْاِسْتِوَاءِ فَـقَالَ اٰمَنْتُ بِلَا تَشْبِيْهٍ وَصَدَّقْتُ بِلَا تَـمْثِـيْلٍ وَاتَّـهَمْتُ نَـفْسِىْ فِـى الْاِدْرَاكِ وَاَمْسَكْتُ عَنِ الْـخَوْضِ غَايَةَ الْاِمْسَاكِ

অর্থ: “আমাদের সম্মানিত ইমাম হযরত ইমাম শাফি‘য়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্পর্কে বর্ণিত রয়েছে যে, উনাকে ইস্তাওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো, তখন তিনি বলেছিলেন- ‘(ইস্তাওয়ার ব্যাপারে) আমি ঈমান এনেছি (তা) তাশবীহ ব্যতীত, বিশ্বাস করেছি (তা) সাদৃশ্যতা ব্যতীত, (এ বিষয়ে) জানার ব্যাপারে আমি নিজেকে অভিযুক্ত করেছি অর্থাৎ এই বিষয়ে আমার জানা নেই। আর এই ব্যাপারে সমস্ত প্রকার অনর্থক কথা-বার্তা থেকে নিজেকে বিরত রেখেছি।” (লাওয়ামি‘উল আনওয়ার ১/২০০, আল বুরহানুল মুআইয়্যাদ ১/১৮)

হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,

اِسْتَـوٰى كَمَا ذَكَـرَ لَا كَمَا يَـخْطُرُ لِلْـبَشَرِ

অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি ঐভাবে ইস্তাওয়া হয়েছেন, যেমন তিনি আলোচনা করেছেন। ঐ রকম না, যেরূপ মানুষের অন্তরে উদয় হয়।” (লাওয়ামি‘উল আনওয়ার ১/২০০)

হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরো বলেন,

نَـحْنُ نُـؤْمِنُ بِاَنَّ اللهَ عَلَى الْعَـرْشِ كَـيْفَ شَاءَ وَكَمَا شَاءَ بِلَا حَدٍّ وَّلَا صِفَةٍ يَّــبْـلُغُهَا وَاصِفٌ اَوْ يَـحُدُّهٗ اَحَدٌ فَصِفَاتُ اللهِ مِنْهُ وَلَهٗ وَهُوَ كَمَا وَصَفَ نَـفْسَهٗ لَا تُدْرِكِهُ الْاَبْصَارُ

অর্থ: “আমরা বিশ্বাস করি যে, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি আরশে আযীমের উপর আছেন, যেভাবে ইচ্ছা, যেমন ইচ্ছা, কোনো সীমারেখা ব্যতীত যা কেউ নির্দিষ্ট করেছে এবং কোনো ছিফত ব্যতীত যা কোনো বর্ণনাকারী বর্ণনা করে। কাজেই মহান আল্লাহ পাক উনার ছিফত মুবারক উনার থেকে এবং উনার জন্য। আর তিনি নিজেকে যেমন বর্ণনা মুবারক করেছেন, তিনি তেমন-ই। চক্ষুসমূহ উনাকে দেখেনি।” (তাযকিরাতুল হুফ্ফায)

হযরত ইমাম শায়েখ সাইয়্যিদ আহমদ কবীর রেফায়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘আল বুরহানুল মুআইয়্যাদ’ উনার মধ্যে বলেন,

سَاَلَ رَجُلٌ حَضْرَتْ اَلْاِمَامَ مَالِكَ بْنَ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ عَنْ قَـوْلِهٖ تَـعَالـٰى اَلرَّحْـمٰنُ عَلَى الْعَرْشِ اسْتَـوٰى فَـقَالَ اَلْاِسْتِـوَاءُ غَـيْـرُ مَـجْهُوْلٍ وَالْكَـيْفُ غَيْـرُ مَعْقُوْلٍ وَالْاِيْـمَانُ بِهٖ وَاجِبٌ وَّالسُّؤَالُ عَنْهُ بِدْعَةٌ وَمَا اَرَاكَ اِلَّا مُبْـتَدِعًا وَاَمَرَ بِهٖ اَنْ يَّـخْرُجَ وَقَالَ اِمَامُنَا الشَّافِعِـىُّ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ لَمَّا سُئِلَ عَنْ ذٰلِكَ اٰمَنْتُ بِلَا تَشْبِـيْهٍ وَّصَدَّقْتُ بِلَا تَـمْثِـيْلٍ وَّاتَّـهَمْتُ نَـفْسِىْ فِـى الْاِدْرَاكِ وَاَمْسَكْتُ عَنِ الْـخَوْضِ فِـيْهِ كُلَّ الْاِمْسَاكِ وَقَالَ حَضْرَتْ اَلْاِمَامُ اَبُـوْ حَنِـيْـفَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ مَنْ قَالَ لَا اَعْرِفُ اللهَ اَفِـى السَّمَاءِ هُوَ اَمْ فِـى الْاَرْضِ فَـقَدْ كَفَرَ لِاَنَّ هٰذَا الْقَوْلَ يُـوْهَمُ اَنَّ لِلْحَقِّ مَكَانًا وَّمَنْ تُـوْهَمُ اَنَّ لِلْحَقِّ مَكَانًا فَـهُوَ مُشَبِّهٌ. وَسُئِلَ حَضْرَتْ اَلْاِمَامُ اَحْـمَدُ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ عَنِ الْاِسْتِوَاءِ فَـقَالَ اِسْتَـوٰى كَمَا اَخْبَـرَ لَا كَمَا يَـخْطُرُ لِلْـبَشَرِ

অর্থ: “এক ব্যক্তি হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালাম মুবারক- (আর রহমানু ‘আলাল ‘আরশিস্তাওয়া) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। জবাবে হযরত ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, ইস্তাওয়াটা সকলের জানা। এর কাইফিয়াত বা ধরণ সবার আক্বল বা বুঝের বাইরে। এই বিষয়ে ঈমান রাখা ওয়াজিব। আর এ সম্পর্কে প্রশ্ন করা বিদা‘য়াত তথা গোমরাহী। আমি তোমাকে গোমরাহ মনে করি। তারপর তিনি সুওয়ালকারীকে বের করে দেয়ার জন্য নির্দেশ দেন। আর আমাদের সম্মানিত ইমাম হযরত ইমাম শাফি‘য়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে যখন ইস্তাওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো, তখন তিনি বলেছিলেন- ‘(ইস্তাওয়ার ব্যাপারে) আমি ঈমান এনেছি (তা) তাশবীহ ব্যতীত, বিশ্বাস করেছি (তা) সাদৃশ্যতা ব্যতীত, (এ বিষয়ে) জানার ব্যাপারে আমি নিজেকে অভিযুক্ত করেছি অর্থাৎ এই বিষয়ে আমার জানা নেই। আর এই ব্যাপারে সমস্ত প্রকার অনর্থক কথা-বার্তা থেকে নিজেকে বিরত রেখেছি।’ আর হযরত ইমাম আ’যম আবূ হানীফাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি বলবে, আমি জানিনা মহান আল্লাহ পাক তিনি কি আসমানে আছেন, নাকি যমীনে? তাহলে নিঃসন্দেহে সে কুফরী করলো। কেননা এর মাধ্যমে ধারণা করা হয় যে, মহান আল্লাহ পাক উনার একটি নির্দিষ্ট মাকান বা স্থান রয়েছে। আর যে ব্যক্তি এরূপ ধারণা করবে যে, মহান আল্লাহ পাক উনার একটি নির্দিষ্ট মাকান বা স্থান রয়েছে, সে মুশাব্বিহা ফিরক্বার অর্ন্তভুক্ত।’ হযরত ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে ‘ইস্তাওয়া’ সম্পর্কে সুওয়াল করা হয়। জবাবে তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ঐভাবে ইস্তাওয়া হয়েছেন, যেমন তিনি সংবাদ দিয়েছেন। ঐ রকম না, যেরূপ মানুষের অন্তরে উদয় হয়।” (আল বুরহানুল মুআইয়্যাদ ১/১৮-১৯)

বিশ্বখ্যাত মুফাসসির আল্লামা আবুল হাসান মুক্বাতিল ইবনে সুলাইমান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘তাফসীরে মুক্বাতিলে’ বলেন,

{ثُـمَّ اسْتَـوٰى عَـلَى الْعَرْشِ} يَـعْنِـىْ اِسْتَـقَـرَّ عَلَى الْعَـرْشِ

অর্থ: “ছুম্মাস্তাওয়া ‘আলাল আরশ অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি আরশে আযীম উনার উপর স্থির হয়েছেন।” (তাফসীরে মুক্বাতিল ২/১০৯)

‘তাফসীরে ত্ববারী শরীফ’ উনার ১৩ তম খণ্ডের ৪১১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছেন,

{ثُـمَّ اسْتَـوٰى عَـلَى الْعَرْشِ} فَاِنَّهٗ يَـعْنِـىْ عَلَا عَلَـيْـهِ

অর্থ: “ছুম্মাস্তাওয়া ‘আলাল আরশ অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি আরশে আযীম উনার উপর অবস্থান করেছেন।”

‘তাফসীরে ত্ববারী শরীফ’ উনার ১৭ তম খণ্ডের ৪৮০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছেন,

ثُـمَّ اِرْتَـفَعَ عَـلَى الْعَرْشِ الرَّحْـمٰنُ وَعَلَا عَلَـيْهِ

অর্থ: “অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি আরশে আযীম উনার উপরে উঠেছেন এবং অবস্থান করেছেন।”

‘তাফসীরে বাগভী শরীফ’ উনার ৪র্থ খণ্ডের ২৯৩ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছেন,

{ثُـمَّ اسْتَـوٰى عَـلَى الْعَرْشِ} عَلَا عَلَـيْهِ

অর্থ: “(ছুম্মাস্তাওয়া ‘আলাল আরশ) মহান আল্লাহ পাক তিনি আরশে আযীম উনার উপর অবস্থান করেছেন।”

‘তাফসীরে সাম‘আনী শরীফ’ উনার ২য় খণ্ডের ৩৬৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছেন,

{ثُـمَّ اسْتَـوٰى عَـلَى الْعَرْشِ} قَدْ بَــيَّــنَّا مَذْهَبُ اَهْلِ السُّـنَّةِ فِـى الْاِسْتِوَاءِ وَهُوَ اَنَّهٗ نُـؤْمِنُ بِهٖ وَنَكِلُ عِلْمَهٗ اِلَـى اللهِ تَـعَالـٰى مِنْ غَـيْـرِ تَاْوِيْلٍ وَلَا تَـفْسِيْـرٍ

অর্থ: “(ছুম্মাস্তাওয়া ‘আলাল আরশ) আমরা ইস্তাওয়া বিষয়ে আহলু সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের অভিমত বর্ণনা করেছি। আর তা হচ্ছে- মহান আল্লাহ পাক তিনি ইস্তাওয়া হয়েছেন এটা আমরা বিশ্বাস করি। আর আমরা এর কোনো প্রকার ব্যাখ্যা ও তাফসীর ছাড়া এর ইলিমকে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট অর্পন করেছি।”

এরূপ আরো অসংখ্য বর্ণনা রয়েছে। কলেবর বৃদ্ধির আশাঙ্কায় অতি সংক্ষেপে এখানেই শেষ করা হলো। প্রকৃতপক্ষে اِسْتَـوٰى (ইস্তাওয়া) সম্পর্কে বর্ণিত অভিমতগুলো কোনোটাই শুদ্ধ না। কেউ اِسْتَـوٰى (ইস্তাওয়া) শব্দের হাক্বীক্বতটা বুঝতে পারেনি।

 

‘اِسْتَـوٰى (ইস্তাওয়া) শব্দের হাক্বীক্বী অর্থ মুবারক

 

‘اِسْتَـوٰى (ইস্তাওয়া) শব্দের অর্থ কি হবে সৃষ্টির কারো জানা ছিলো না, কুল-কায়িনাতের কারো জানা ছিলো না। প্রায় সাড়ে ১৪০০ বছর অতিবাহিত হয়েছে কেউ اِسْتَـوٰى (ইস্তাওয়া) শব্দের অর্থ কি হবে, এটা ফায়ছালা দিতে পারেনি। এই সুদীর্ঘ বছর পর মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের পক্ষ থেকে বিশেষভাবে ইলিম মুবারক প্রাপ্ত হয়ে মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, আস সাফফাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত সুলত্বানুন নাছীর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি اِسْتَـوٰى (ইস্তাওয়া) শব্দ মুবারক উনার হাক্বীক্বত মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! যেই বিষয়ে সমস্ত সৃষ্টির, কুল-কায়িনাতের কারো কোনো ইলিম ছিলো না। কেউ কখনো জানতোও না।

মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, আস সাফফাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “এই মাসের ৩ তারীখ অর্থাৎ ১৪৪২ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৩রা শাওওয়াল শরীফ ইয়াওমুল আহাদ চাশতের সময় আমি দেখলাম- যিনি খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদের দুইজনকে। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) উনারা নিজ থেকে আমাকে জানিয়েছেন- ‘আসলে اِسْتَـوٰى (ইস্তাওয়া) শব্দের অর্থ এরা যা করে, এটা কোনোটাই এটার সাথে মিল নেই। এরা যা বলে, এটার সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা তো এটার মুহতাজ না। প্রকৃপক্ষে ইস্তাওয়া হচ্ছে- আলমে খ¦লক্ব আর আলমে আমরের মধ্যে একটা পার্থক্য সূচনা করা। আলমে খ¦লক্বের সর্বোচ্চে আরশে আযীমকে স্থাপন করা হয়েছে।” সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!

মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, আস সাফফাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত সুলত্বানুন নাছীর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ১৪৪২ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৯ই শাওওয়াল শরীফ লাইলাতুস সাব্ত শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘ফালইয়াফরহূ শরীফ’ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল মুবারক-এ ইরশাদ মুবারক করেন, “মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের সাথে এটার কোনো সম্পর্ক নেই। যেমন- মকতুবাত শরীফ-এ লেখা হয়েছে- “মহান আল্লাহ পাক তিনি ‘আল্লাহ’ শব্দ মুবারক থেকেও পবিত্র।” ঠিক মহান আল্লাহ পাক তিনি ইস্তাওয়া থেকেও পবিত্র। আসলে ইস্তাওয়ার সাথে মহান আল্লাহ পাক উনার কোনো সম্পর্ক নেই। মূল বিষয় হচ্ছে, মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, আমি ৬ ধাপে আসমান-যমীন সৃষ্টি করার পর আরশে ‘আযীমকে আলমে খ¦লক্বের সর্বোচ্চ স্থানে সুবিন্নস্তভাবে স্থাপন করে আলমে খ¦লক্ব ও আলমে আমরের মধ্যে পার্থক্য সূচনা করে দিয়েছি। এটাই হচ্ছেন ইস্তাওয়া হওয়ার হাক্বীক্বী অর্থ। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) অন্য কোনো অর্থ না। ‘আমি ইস্তাওয়া করবো। আমি উপরে উঠবো, বসবো কেনো?’ মহান আল্লাহ পাক তিনি তো ছমাদ, বেনিয়াজ, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি বেনিয়াজ।” সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!

মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, আস সাফফাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত সুলত্বানুন নাছীর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “জান্নাতের ছাদ হলো আরশে আযীমের নীচে। জান্নাত আরশে আযীমের নীচে। সবই আরশে আযীমের নীচে। আরশে আযীমকে আলমে খ¦লক্বের উপর স্থাপন করা হয়েছে। আরশে ‘আযীমের উপর হলো আলমে আমর আর এর নীচে হলো আলমে খ¦লক্ব। (মহান আল্লাহ পাক তিনি জানিয়েছেন) এর মধ্যে আমি  ইস্তাওয়া করেছি। আমি ইস্তাওয়া হবো কেন্? আমি তো বেনিয়াজ-ছমাদ, আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি ছমাদ। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) ওখানে স্থাপন করে দিয়েছি। দিয়ে এর মধ্যে আমি পার্থক্য সূচনা করে দিয়েছি। আলমে আমর উপরে, আলমে খ¦লক্ব নীচে। আলমে খ¦লক্বের শেষ স্থানে হলো আরশে আযীম। সর্বোচ্চ স্থানে। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)

এটা মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে কোনো সম্পর্ক নেই, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা বলেছেন, ‘আমাদের সথে اِسْتَـوٰى (ইস্তাওয়া)-এর কি সম্পর্ক আছে? আমরা তো এর মুহ্তাজ না। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) মানুষ অর্থ করে- উপবেশন করা, বরাবর হওয়া, সমান হওয়া। এটা কোনো অর্থ না। বরং আরশে ‘আযীমকে আলমে খ¦লক্বের সর্বোচ্চ স্থানে সুবিন্নস্তভাবে স্থাপন করে আলমে খ¦লক্ব ও আলমে আমরের মধ্যে পার্থক্য সূচনা করে দেওয়া হয়েছে, সীমানা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এটাই হচ্ছে ইস্তাওয়া।” (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)

মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, আস সাফফাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত সুলত্বানুন নাছীর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “মহান আল্লাহ পাক তিনি ‘اِسْتَـوٰى (ইস্তাওয়া) হয়েছেন, এটা বলা শুদ্ধ না। কারণ এটা বললে, মহান আল্লাহ পাক উনার ছমাদিয়াত থাকে না। মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই ইরশাদ মুবারক করেছেন, اَللهُ الصَّمَدُ ‘মহান আল্লাহ পাক তিনি ছমাদ তথা বেনিয়ায।’ (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ইখলাছ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২)

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইস্তাওয়া থেকেও বেনিয়ায। ইস্তাওয়ার সাথে মহান আল্লাহ পাক উনার কোনো সম্পর্ক নেই।” সুবহানা মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!

اِسْتَـوٰى (ইস্তাওয়া) সংশ্লিষ্ট সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফসমূহ উনাদের ছহীহ

তরজমাহ্ মুবারক

 

(১ ও ২)

اِنَّ رَبَّكُمُ اللهُ الَّذِىْ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضَ فِـىْ سِتَّةِ اَيَّامٍ ثُـمَّ اسْتَـوٰى عَلَى الْعَـرْشِ

অর্থ: “নিশ্চয়ই আপনাদের রব মহান আল্লাহ পাক যিনি আসমান-যমীন ৬ দিনে অর্থাৎ ৬ ধাপে সৃষ্টি করেছেন। ৬ ধাপে আসমান-যমীন সৃষ্টি করার পর আরশে ‘আযীমকে আলমে খ¦লক্বের সর্বোচ্চ স্থানে সুবিন্নস্তভাবে স্থাপন করে আলেম খ¦লক্ব ও আলমে আমরের মধ্যে পার্থক্য সূচনা করে দিয়েছেন।” সুবহানা মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আ’রাফ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৪, সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ইঊনুস শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত ৩)

(৩)

اَللهُ الَّذِىْ رَفَعَ السَّمٰوٰتِ بِغَــيْـرِ عَمَدٍ تَــرَوْنَـهَا ثُـمَّ اسْتَـوٰى عَلَى الْعَرْشِ

অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক যিনি আসমানসমূহ খুটি ব্যতিত স্থাপন করেছেন অর্থাৎ সৃষ্টি করেছেন। তোমরা তা দেখতে পাচ্ছো। তারপর তিনি আরশে ‘আযীমকে আলমে খ¦লক্বের সর্বোচ্চ স্থানে সুবিন্নস্তভাবে স্থাপন করে আলেম খ¦লক্ব ও আলমে আমরের মধ্যে পার্থক্য সূচনা করে দিয়েছেন।” সুবহানা মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা র’দ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২)

(৪)

اَلرَّحْـمٰنُ عَلَى الْعَـرْشِ اسْتَـوٰى

অর্থ: “করুণাময় মহান আল্লাহ পাক তিনি আরশে ‘আযীমকে আলমে খ¦লক্বের সর্বোচ্চ স্থানে সুবিন্নস্তভাবে স্থাপন করে আলেম খ¦লক্ব ও আলমে আমরের মধ্যে পার্থক্য সূচনা করে দিয়েছেন।” সুবহানা মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ত্বহা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫)

(৫)

اَلَّذِىْ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضَ وَمَا بَــيْـنَـهُمَا فِـىْ سِتَّةِ اَيَّامٍ ثُـمَّ اسْتَـوٰى عَلَى الْعَـرْشِ

অর্থ: “(মহান আল্লাহ পাক) যিনি আসমান-যমীন এবং উভয়ের মাঝে যা কিছু আছে সমস্ত কিছু ৬ ধাপে সৃষ্টি করেছেন। ৬ ধাপে সৃষ্টি করার পর আরশে ‘আযীমকে আলমে খ¦লক্বের সর্বোচ্চ স্থানে সুবিন্নস্তভাবে স্থাপন করে আলেম খ¦লক্ব ও আলমে আমরের মধ্যে পার্থক্য সূচনা করে দিয়েছেন। (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ফুরক্বান শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৯)

(৬)

اَللهُ الَّذِىْ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضَ وَمَا بَــيْـنَـهُمَا فِـىْ سِتَّةِ اَيَّامٍ ثُـمَّ اسْتَـوٰى عَـلَى الْعَرْشِ

অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক যিনি আসমান-যমীন এবং উভয়ের মাঝে যা কিছু আছে সমস্ত কিছু ৬ ধাপে সৃষ্টি করেছেন। ৬ ধাপে সৃষ্টি করার পর আরশে ‘আযীমকে আলমে খ¦লক্বের সর্বোচ্চ স্থানে সুবিন্নস্তভাবে স্থাপন করে আলেম খ¦লক্ব ও আলমে আমরের মধ্যে পার্থক্য সূচনা করে দিয়েছেন।” সুবহানা মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা সিজদাহ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৪)

(৭)

هُوَ الَّذِىْ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضَ فِـىْ سِتَّةِ اَيَّامٍ ثُـمَّ اسْتَـوٰى عَـلَى الْعَرْشِ

অর্থ: “তিনি সেই মহান আল্লাহ পাক যিনি আসমান-যমীন ৬ ধাপে সৃষ্টি করেছেন। ৬ ধাপে আসমান-যমীন সৃষ্টি করার পর আরশে ‘আযীমকে আলমে খ¦লক্বের সর্বোচ্চ স্থানে সুবিন্নস্তভাবে স্থাপন করে আলেম খ¦লক্ব ও আলমে আমরের মধ্যে পার্থক্য সূচনা করে দিয়েছেন।” সুবহানা মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা হাদীদ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৪)

‘اِسْتَـوٰى (ইস্তাওয়া) সংশ্লিষ্ট সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফসমূহে মহান আল্লাহ পাক উনার ৩ খানা সম্মানিত বিশেষ শান মুবারক

প্রকাশের বর্ণনা:

মুত্বহ্হার, মুত্বহহির, আছ ছমাদ, আস সাফফাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত সুলত্বানুন নাছীর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ১৪৪২ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১০ই শাওওয়াল শরীফ লাইলাতুল আহাদ শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘ফালইয়াফরহূ শরীফ’ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল মুবারক-এ ইরশাদ মুবারক করেন, “যিনি খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

كُلَّ يَـوْمٍ هُوَ فِـىْ شَاْنٍ

‘মহান আল্লাহ পাক তিনি একেক দিন, একেক সময় একেক শান মুবারক-এ থাকেন।’ (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আর রহমান শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২৯)

এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ব্যাখ্যা হচ্ছে- মহান আল্লাহ পাক তিনি ক্বদীম (অনাদী) এবং আযালী (চিরন্তন)। তিনি হাদেছ (সৃষ্টি) নন। উনার যাবতীয় সম্মানিত ও পবিত্র ছিফত মুবারকও ক্বদীম ও আযালী। তাই তিনি নতুন কোনো কাজ শুরু করেন না। তিনি শুরুতে যা করেছেন, এখনও তাই করেন। তবে উনার ক্বদীমী (অনাদী) এবং আযালী (চিরন্তন) সম্মানিত শান মুবারক থেকে কোনো কোনো শান মুবারক, কখনও কখনও প্রকাশ পান। সুবহানাল্লাহ!

যিনি খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

هُوَ الَّذِىْ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضَ فِـىْ سِتَّةِ اَيَّامٍ ثُـمَّ اسْتَـوٰى عَـلَى الْعَرْشِ

অর্থ: “তিনি সেই মহান আল্লাহ পাক যিনি আসমান-যমীন ৬ ধাপে সৃষ্টি করেছেন। ৬ ধাপে আসমান-যমীন সৃষ্টি করার পর আরশে ‘আযীমকে আলমে খ¦লক্বের সর্বোচ্চ স্থানে সুবিন্নস্তভাবে স্থাপন করে আলমে খ¦লক্ব ও আলমে আমরের মধ্যে পার্থক্য সূচনা করে দিয়েছেন।” সুবহানা মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা হাদীদ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৪)

এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক উনার ৩ খানা সম্মানিত বিশেষ শান মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ মুবারক ঘটেছে। প্রথম হচ্ছে- মহান আল্লাহ পাক তিনি আসমান-যমীন ৬ ধাপে সৃষ্টি করেছেন। ৬ ধাপে আসমান-যমীন সৃষ্টি করার পর তিনি আরশে আযীমের দিকে বিশেষ দৃষ্টি দান বা বিশেষ শান মুবারক প্রকাশ করে আরশে আযীমকে তারতীব দান করেন। এটা হলো প্রথম শান মুবারক। দ্বিতীয় শান মুবারক হচ্ছেন- এই শান মুবারক প্রকাশ করে মহান আল্লাহ পাক তিনি আরশে আযীমকে আলমে খ¦লক্বের সর্বোচ্চ স্থানে সুবিন্নস্তভাবে স্থাপন করেন। এর মাধ্যমে আরেকটা শান মুবারক প্রকাশ করেন।

আর তৃতীয় শান মুবারক হচ্ছেন- আরশে আযীমকে আলমে খ¦লক্বের সর্বোচ্চ স্থানে সুবিন্নস্তভাবে স্থাপন করে আলমে খ¦লক্ব ও আলমে আমরের মধ্যে একটা পার্থক্য সূচনা করে দিয়েছেন। এটা হচ্ছে তৃতীয় শান মুবারক প্রকাশ। অর্থাৎ ইস্তাওয়া করেন। আর এটাই হচ্ছেন ইস্তাওয়া হওয়ার হাক্বীক্বী বা প্রকৃত অর্থ মুবারক।” (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)

মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, আস সাফফাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত সুলত্বানুন নাছীর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হাক্বীক্বী শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উপলব্ধি করে উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করার, উনার সম্মানিত গেলামীর আনজাম মুবারক দেয়ার এবং উনার সম্মানার্থে দায়িমীভাবে অনন্তকালব্যাপী মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘ফালইয়াফরহূ শরীফ’ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!

-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আমীন ইবনে ছিদ্দীক্ব।

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম